আমার গল্প - ১ এবার ভিসা না পাওয়াতে আসলেই খুব হতাশ হয়ে পড়লাম। আব্বা আম্মা সান্তনা দিলেন । আল্লাহর উপর ভরসা করলাম আর শেষ আরেকবারের মত চেষ্টা করার ইচ্ছা মনেই গোপন রাখলাম । আবার প্রফেস্যর কে mail দিলাম পরের সেমিস্টারে admission defer করার জন্য ... কিন্তু রাজি হলেন না

। আবার কিছু ইমোশনাল কথা বার্তা লিখে mail করলাম , ফান্ড ট্রান্সফার সহ admission defer করতে রাজি হলেন । so , আবারো ইউনিভার্সিটির কাগজ পত্র আসার অপেক্ষা ... আর এর মধ্যে samsung r&d এর জব অফার টাও পেয়ে গেলাম; জয়েন করলাম, আর বাহিরে যাওয়ার ইচ্ছাটা আস্তে আস্তে কমে এলো

... কিন্তু ভাইয়ার চাপাচাপিতে আবারো ভিসা application জমা দিয়ে আসলাম।
কুরবানির ঈদ করলাম আর পরিচিত কেউ কানাডার কথা জিজ্ঞাসা করলেই মন খারাপ করে বলতাম আরে ধুর সব বাদ

... ২ বার ভিসা reject হওয়ার পর আসলেই কোনো আশা ছিল না। ডিসেম্বর ৪' ২০১১১ ... VFS অফিস থেকে ফোনে করলো পাসপোর্ট return নেয়ার জন্য। পাসপোর্ট এর খাম এর এক কোনা ছিড়ে পাসপোর্ট বের করে দেখলাম এবারো ভিসা দেয় নাই

... বাসায় ফোনে জানিয়ে দিলাম, আম্মা যথারীতি খুশিই (!!!!) হলেন বলা যায় আর সান্তনা দিলেন। সারাদিন অফিস করে রাতে বাসায় গিয়ে খামটা ভালো করে ছিড়ে দেখি ভিসা reject করেনি এবার

মেডিকেল করতে বলেছে। খুশি হলাম না ভয় পেয়ে গেলাম বুজলাম না

... ভাইয়া কে বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে আমার আর এখন বাহিরে যাওয়ার ইচ্ছা নাই ... ভাইয়ার আর আব্বার একটাই কথা .. কাল গিয়ে মেডিকেল করে পাসপোর্ট আবার জমা দাও। কি আর করা ... এত দিন যেই ভিসার জন্য crazy ছিলাম আজ তার ভয়ে পুরা কাহিল হয়ে গেলাম

।
২০ ডিসেম্বর ২০১১ তে ভিসা পেলাম। তাড়াহুড়ো করে অফিসে রিজাইন দিলাম। আর আত্মীয় স্বজনদের congrts call receive করতে লাগলাম

... শুরু করে দিলাম শীতের দেশের কাপড় কেনাকাটা ; সকালে এই মার্কেট তো বিকালে আরেক মার্কেট। ভাইয়া ২৯ ডিসেম্বর রাত ৯ টার বিমান টিকেট কনফার্ম করে ফেললেন। এরই মধ্যে ২২ ডিসেম্বর অফিসের কলিগরা এক ইমোশনাল farewell দিলেন। দেখতে দেখতে কিভাবে যেন দেশের দিনগুলো শেষ হয়ে গেল

।
২৯ তারিখ বিকালে আত্মীয় স্বজনরা এলেন বিদায় দেবার জন্য। সকলের দোআ নিয়ে আম্মা আর ভাইয়াদের সাথে চলে এলাম এয়ারপোর্টে। ভাইয়া, আম্মা কে কাঁচের দেয়ালের ওপাশে রেখে চোখের পানি জোর করে ধরে রেখে দাড়িয়ে গেলাম ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য ...এত দিন ধরে বিভিন্ন জনের বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সম্পর্কে যে negative মন্তব্য শুনতাম সেটার অভিজ্ঞতা (!!!) অর্জন করেই এক সময় dragon air এর বিমানে উঠে বসলাম বুক ভরা দীর্ঘশাস নিয়ে।