somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুঠো মুঠো জীবন!

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বেড়ানোর জন্য মাঝে মধ্যে আমি নিউমার্কেটে যাই। মানুষ দেখি, তেরিন বার্গার খা্ই আর বইয়ের দোকান ঘুরি। অনেকবার প্রশংসনীয় রিভিউ পাওয়া একটা বই কিনলাম। বাসে উঠে চারপাশ ভুলে বইটা মেলে ধরি। আড়াই বছরের পোকা আর কিশোরী পুটি'র গল্পে মনোযোগী হই। একটা ছেলে পাশে বসলো। সেলফোনে অপর প্রান্তে নারী কন্ঠ। তুলকালাম ঝগড়া আর অসন্তোষ ! ছেলেটি চিৎকার করে “সমস্যা কী তোমার”। মেয়েটার উত্তর জানা গেলো না। পাশাপাশি সিটে বসে আমি বই থেকে মুখ তুলে জানালার বাইরে তাকাই। সম্পর্কের অবনতিতে সবাই সমস্যা খোঁজে, অবজ্ঞাটা সেখানে অদৃশ্য থেকে যায়। ৫মিনিট- ১০ মিনিট -১৫ মিনিট..... টানাপোড়েন চলতে থাকে……।

ছেলেটা উঠে পিছনের সিটে চলে যায়। আমি আব্দুল খালেক আর রেখার সাংসারিক আলাপে মগ্ন হই। তাদের অবলম্বন টুকুর কথা পড়ি। ফাঁকা সিটটাতে একজন বয়স্ক ছেলে বসেন। পকেট থেকে সমসাময়িক দারুন হ্যান্ডসাম সেলফোন বের করে স্ক্রিনে মগ্ন হয়। গল্পে রেখা তার দাম্পত্য শীতলতা নিয়ে চিন্তিত। দেশ বিভাগে প্রতিবেশি’রা বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করেছে।

বেশ সময় নিয়ে পাতা ওলটাতে হচ্ছে। কেননা পাশের সহযাত্রীর সমস্ত আগ্রহ এখন আমার হাতের বইয়ে। মাঝখান থেকে পড়ে তিনি কী বুঝচ্ছেন জানিনা, তবে পড়ছেন। ইচ্ছে করছে কাহিনির শুরুর দিকের গল্পটুকু শেয়ার করতে। করা হয় না। স্টপেজে পৌঁছে যাই। বইটা হয়তো আজকেই সমাপ্ত হবে। কেবল গল্প বলার ইচ্ছেটুকু অসমাপ্ত থেকে যাবে ………

####

সিএনজিতে বসে বসে মানুষ গুনছিলাম। জ্যামে বসে সময় কাটানো আর কী। ঠিক পাশে দাঁড়ানো বাইকে দুজন আরোহী। চালকের পেছনে যিনি বসে আছেন তিনি সম্ভবত বছর ২৪-২৫ এর এক তরুনী হবেন। হালকা গড়ন। গায়ের রং শ্যামলা। মায়াময় চোখ। আমি মানুষ গোনা বাদ দিয়ে এখন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মেয়েটাকে দেখি।

লাল রংয়ের জামদানিতে সোনালি জরির কাজ। ম্যাচিং ব্লাউজ। শাড়ীতে অনেক গুলো সেফটিপিন লাগানো। সম্ভবত শাড়ী পড়তে খুব একটা অভ্যস্ত তিনি নন। অলংকারের অনাধিক্য তাকে আরো সুন্দর করে উপস্থাপন করেছে। যাকে বলে চোখের আরাম! আচ্ছা, তিনি কী কোথাও যাচ্ছেন নাকি ফিরছেন? ভাবতে ভাবতে হিসাব কষি।


হঠাৎ চোখ আটকে যায় কোলের উপর রাখা নীল রংয়ের ক্রাচে! আমি দ্বিতীয় বার অবিশ্বাসের চোখে তাকাই। হ্যাঁ ক্রাচ! প্রথমে ভাবি, ক্রাচ জোড়া বোধহয় ছেলেটার। না, সেটা হবে না। ক্রাচে ভর করে যে ছেলে চলাফেরা করেন; তিনি আর যা-ই করুন বাইক চালাবেন না। তাহলে?

আমি আশংকা নিয়ে মেয়েটার পায়ের দিকে তাকাই। ওর বাম পা-টা খালি, অন্য পায়ে স্লিপার পরা। আমি আবার তাকাই। না, এবার আর পায়ের দিকে নয়। ক্রাচের উপর অবহেলায় পড়ে থাকা হাতের দিকে। তার হাতের চার গাছি রেশমি চুড়ি দেখি। শীত সন্ধ্যার বেদনা ভুলে যেতে আমি তার পিঠের উপর ছড়ানো চুলে হারিয়ে যাই। হারিয়ে যেতে যেতে ভাবি শাড়ীটা একেবারে হৃৎপিডের মতো লাল! ডালিমের দানার মত লাল! কিংবা ঐ লাল রংটা?....... উপমারহিত লাল!!

####

খুব প্রিয় একজনকে অনেক দিন হয়ে গেল কোনো উপহার দেই না। মনটা খচখচ করছিল। মঙ্গলবার যাকে দুইবার কল দিয়েছিলাম এবং সে কল রিসিভ করে নাই। না করার অপরাধে তাকে এখন OSD করে রাখা হয়েছে।

অনেক সময় নিয়ে উপহার খুঁজি। খুঁজতে খুঁজতে আমি অন্যদের কেনাকাটাও দেখি। এক বয়স্ক দম্পতি। ৭০ দশকে অগ্রসারও মান। পুরো বাক্য বলতে তাদের অন্তত একবার থামতে হয়। তারাও ঘুরে ঘুরে জিনিস পছন্দ করছেন।

দুই সেট থ্রিপিস, একসেট পাঞ্জাবি-পাজামা, সাড়ে তিন বছরের গ্রান্ড চাইল্ডের জন্য দু'টো ফুলেল ফ্রক এখন পর্যন্ত কাউন্টারে পাঠিয়েছেন। বাচ্চাটার জন্য একসেট স্কার্ট-টপস নিয়ে তারা দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছেন। তাও নিলেন। আমি টুকিটাকি কেনাকাটা করি। আর ঘুরে ফিরে তাদের দেখি।

কাউন্টারে সিরিয়ালে আমি ওই দম্পতির পেছনে দাঁড়ায়। তাদের বিল এসেছে ১৭,৬৭৮/- টাকা। ভদ্রমহিলা বেশ কয়েকবার গুনে টাকাটা দিলেন। সেলস পার্সন ছেলেটা টেপরেকর্ডার এর মতো করে বলে চলেন, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে একবার যে কোন আউটলেট থেকে একবার পরিবর্তন করা যাবে। তবে ক্যাশমেমোটা লাগবে।

ভদ্র মহিলা ম্লান করে হাসেন। বলেন, পনের দিনের মধ্যে ওদের হাতে পৌঁছে যাবে। তারপর বদল করার সিদ্ধান্ত নিশ্চয় প্রবাসী সেই সন্তানের ইচ্ছা-অনিচ্ছায় নিয়ন্ত্রিত হবে। ভদ্র লোক এতোটা সময়ে একটি বারের জন্যেও কোনো কথা বলেননি। সংসার থেকে অনেক আগেই অবসরে গিয়েছেন বোধকরি। এখন অপেক্ষা করছেন, বিদেশ থেকে দারুন সব সাফল্যের সংবাদ শোনার।

আমি নিজের কেনাকাটার বিল মেটায়। ব্যাগ হাতে রিকশায় উঠি। মৃদু ঠান্ডা বাতাসে ভাবতে থাকি আজ রাতে নিশ্চয় তারা এই পোশাক গুলো বার বার দেখবেন। পনের দিনের মধ্যে পাঠিয়ে দিতে কালই হয়তো পৌঁছে দিবেন কারো হাতে। ফোন করবেন পছন্দ হয়েছে কিনা। তারপর..... এই পোশাক পরা গ্রান্ড চাইল্ডের ছবি দেখে নিজেদের মধ্যে আলাপ করবেন; দেখ, পুতুলটাকে কেমন মানিয়েছে। আবার অপেক্ষা শুরু করবেন..... আরেকটা উপলক্ষ্যের।

সেলফোনটা বেজে ওঠে, আমি ব্যাগের ভিতর ফোন সেটটা খুঁজতে খুঁজতে হিসাব মিলায় "কে ডাক পাঠালো এই সময়ে!" আমার মা, "বাসায় ফিরছো?" চাদর সাথে আছে? আচ্ছা সাবধানে যাও......

####

সময় পেলেই শপিং মল। কেনাকাটার চেয়েও মানুষ দেখতে আমার বেশি ভালোলাগে। আজ হাতে ব্যয় করার মতো সময় এবং অর্থ দু’টোই যথেষ্ট পরিমানে ছিলো। তাই আড়ং-এ গেলাম। খুব মনোযোগ দিয়ে পাঞ্জাবী দেখছি। হঠাৎ আমার মনোযোগ গেল দুজন মানুষের দিকে। বিশেষ করে তাদের আড়ষ্ঠতার দিকে।

নিন্মধ্যবিত্ত দুজন মানুষ। তারা এর আগে কখনো আড়ং এ এসেছেন বলে মনে হলো না। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে তাদেরকে দেখছিলাম। তারা ভেবে চিন্তে একেবারে দেখতে সাধারণ পন্যগুলো ধরে। নিজেদের মধ্যে নিচু স্বরে আলোচনা করে রেখে দেয়। তো আমি একটা পাঞ্জাবী হাতে নিয়ে দেখছি, ১,৩৮৬টাকা দামের পাঞ্জাবীটার দিকে তাদেরও বেশ আগ্রহ। তারা কেন জানি না, আধুনিক মানুষদের মতো ড্যামকেয়ার ভাব ধরা এখনো শিখে নাই। তারা বেশ সংকোচ নিয়েই পাঙ্গাবীটার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি সেলস পার্সনকে আরেকটা কপি দিতে অনুরোধ করলাম। এবং সিনেমার ক্লাইমেক্সের মতো সেটার ঐ একটা পিস-ই আছে।

আমি পাঞ্জাবীটা তাদের দেখিয়ে রেখে দিয়ে, গভীর মনোযোগী ভাব নিয়ে অন্য আরেকটা দেখতে লাগলাম। তারা এবার পাঞ্জাবীটা হাতে নিয়ে নিচু স্বরে আলাপ করে বেশ সংকোচের সাথে সেটা নিয়ে কাউন্টারে দিলো… বিল পরিশোধ করলো……… যাবার আগে আরো একবার আমার দিকে তাকালো। আমি দূর থেকে তাদের এই অমূল্য সৌজন্যতাটুকু যত্ন করে তুলে নিলাম।

ভালো লাগলো এটা ভেবে, পকেটে পয়সা না থাকলেই বোধহয় জড়তা, সৌজন্যতার মতো পার্থিব বিষয় গুলো থাকে। পকেটে পয়সা আসতে শুরু করলেই মানুষের ঔদ্ধত্যপূর্ন আচরন বের হয়ে আসে। তখন তো বলা যায়, “I am, what I am”. অন্যরা কী ভাবলো তাতে বিত্তবানদের কিছু এসে যায় না। বিত্তহীনদের বোধহয় আসে যায়।

বাহানা বিহীন, ভাঁজ করা দিন ! তুলে রাখা দিন!!

####

প্রায় দিনই ঘুম থেকে উঠে আমার ২০বছর আগে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে। স্কুল ড্রেস পরে, বইয়ের ব্যাগ কাঁধে, পানির পট হাতে নিয়ে গুটগুট করে পথে নামতে ইচ্ছে করে। রং পেন্সিল, জ্যামিতি বক্স, বার্ষিক পরীক্ষা! স্কুল জীবনে আমার একমাত্র বিলাসিতা ছিলো প্রতি বছর নতুন ক্লাসের জন্য একটা করে নতুন ব্যাগ।জীবনে পাওয়া প্রথম পেন্সিল বক্সটা আমার এখনো আছে!

দুপুরের ভাত ঘুম শেষে বিকেল হলেই ফুলেল ফ্রক, রঙ্গিন বেলুন, আদিগন্ত মাঠ। আমরা কম্পাউন্ডের বাচ্চার খেলতে নামতাম মাঠে। মাগরিবের আজান হলেই যে যার বাসায়, বার্ষিক পরীক্ষার পরে সেই বাধা নিষেধের নিয়মও শিথিল হয়ে যেত।

মাটির ব্যাংক, কাপড়ের পুতুল, ম্যাচ বাক্সের ফোন, হাওয়াই মিঠায়, চালতার আচার, রঙ্গীন ঘুড়ি, ব্যাড মিন্টন! পুকুর পাড়ে আমরা অনেক বিকেল গল্প শুনে কাটিয়েছি। আমাদের গল্পের ভান্ডার সুব্রত দাদা। তার গল্পে থাকতো বাস্তব চরিত্র। সেটা যোগ্যতা অনুযায়ী ভাগ করে দেয়া হতো। সবদিন সবসময়-ই কলি দিদিকে দেয়া হত কুটিল চরিত্র। তারপর মাঝ পথে ব্যঙ্গ বুদ্রুপ, দাদা দিদির মনোমালিন্যতা। আমরা তখন নাদান বাচ্চা। হুট করে একদিন কলি দিদি’র বাবা এডিসি আংকেল এর বদলী হয়ে যায়। আমাদের মন খারাপ। ভীষন মন খারাপ!

গতকাল রাতে সেট করে রাখা এ্যালার্ম বেজে ওঠে। Get ready- Get ready ….. RUN-RUN-RUN!! আমি বাস্তবে বড় হয়ে যাই। পূরণ করতে হবে, এমন স্বপ্নের পিছনে ছুটতে থাকি। আমাকে নিজের কাংক্ষিত অবস্থানে পৌঁছাতে হবে যে!!!

####
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৯
২৮টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠিক কোন বিষয়টা মৌলবাদী পুরুষরা শান্তি মত মানতে পারে???"

লিখেছেন লেখার খাতা, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ছবি - গুগল।


ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, রোজগার এর একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্মও। একটু স্মার্ট এবং ব্রেন থাকলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম থেকে রোজগার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×