somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেষ বিকেলে নিয়েছিলাম নিঃস্ব হওয়ার ঝুঁকি...

২২ শে মে, ২০২০ রাত ১১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



'দেখবো দেখাবো পরস্পরকে খুলে
যতো সুখ আর দুঃখের সব দাগ,
পরীক্ষা হোক কার কতো অনুরাগ'…

মেঘে মেঘে আকাশে যে ছবির লেখালিখি হয় রোজ, তা সুন্দর হলেও বড় ক্ষণায়ু। অর্থহীন, সামঞ্জস্যহীন এই জীবন থেকে পালিয়ে বেড়াই অপ্রত্যাশিত পুরষ্কারের ভয়ে। জীবনের সব ক্ষোভ শেষমেশ ছোট্ট একটুখানি দুঃখে রূপ নিয়েছে। ব্যথার স্থান অবশ হয়ে গেছে, ক্ষত হয়েছে পুরনো। তাই হয়তো ভদ্রতা এবং সৌজন্যতা মর্মান্তিকভাবে অনুভব করে এক আশ্চর্য ইচ্ছে! আমরা কেউই ঠিক স্বার্থপর হতে পারি না। অথচ যাদের জন্য ত্যাগ, তাদের প্রতিও মনে মনে বিদ্বেষ পোষণ করি। নিজেদের কাছে ক্রমাগত ছোট হতে থাকি। অথচ জানি না, ঠিক কি চাই। আসলে আমরা দুজনেই অনেক আকাংক্ষা পরস্পরের কাছে গোপন করে যাচ্ছি, নিজের কাছে মহৎ থাকার তাড়নায় পরস্পর ছদ্মবেশ পরছি। খুব কান্না পায়, অথচ কাঁদবার মতো কোনো নিজস্ব জায়গা নেই আমাদের।

টানাপোড়েন শব্দটা আমাদের চেয়ে ভালো আর কারা বেশি জানে। ক্লাসরুটিন- পাঞ্জাবীর পকেট থেকে বেরনো গোলাপ- এপ্যয়নমেন্ট লেটারের খাম! স্বপ্নের সাথে সত্যের খাদ তখনো এতটা মেশে নাই। আশাবাদী হওয়ার মত সুন্দর বিকেলের মত কল্পকথার সময় ছেড়ে পরস্পর থেকে বিপরীত মুখে হেঁটেছি সহস্র ক্রোশ। পথ বাড়লো কেবল, দূরত্ব বাড়লো না কোথাও। জীবন আসলে এক মহাসংগীত: না উচ্চারিত, না অনুচ্চারিত। তাকে ছেড়ে এলাম কবেই, তবু আমার দু’চোখ ভিজে আছে। ঘরের আয়নাটাও জানে, প্রতিচ্ছবির মানুষটার ভেতরটা কতটা ভাঙ্গাচুরা। জীবনের ভগ্নাংশের গল্প বলা কি এত সহজ? বেদনায় ভরা হ্রদয়ের অব্যক্ত কথা জন্ম দেয় নীরবতার। কিছু নীরবতা বরফের মতো ঠান্ডা এবং শক্ত। সেই নীরবতার ব্যাখ্যা করাও অত সহজ নয়। কিছু ব্যথা উপশমের জন্য ঔষধের চেয়েও সান্নিধ্য বেশি জরুরি। ‘বন্ধুরাও জানে দিব্যি আছি, নিয়মমাফিক ফিরে আসছি ঠিকানায়, কে বললো একটা মানুষ হারালে আরেকটা মানুষ মরে যায়?’

হোম কোয়ারেন্টিনে ভাববার অখন্ড অবসর পেয়ে বুকের ভেতর খুচরো স্মৃতির ঝনঝনানি আমাকে রাতভোর জাগিয়ে রাখে। যদিও ভাবনা হচ্ছে ভাষার অভাব! তবুও স্মৃতি হাতরে আমি নিজেকে খুঁজি। নিকটতম দু:খটাই সর্বাপেক্ষা বেশি কষ্টদায়ক। 'জীবন' ছোট্ট এই শব্দটাকে নিয়ে আমার কি কোন আক্ষেপ আছে, কিংবা আফসোস? যদিও অতীত সংশোধন করার সুযোগ মেলে না, তবুও নিজের মুখোমুখি দাঁড়াই। আমি যা সেটা দুনিয়া মেনে নেয়ার আগে, আমার নিজের মেনে নেয়াটা অসম্ভব জরুরি। নিজেকে প্রশ্ন করলাম দ্বিতীয় জীবনে যেকোন একটা বিষয় সংশোধন করার সুযোগ থাকলে কোনটা করবে নন্দিনী? মস্তিষ্ক এবং হৃদয় একই সাথে উত্তর দিলো- ভালোবাসবো।

মর্মের বেদনাবোধ ঢাকতেই হয়তো কিছু লাল মর্মান্তিক রকমের লাল হয়। বিচ্ছেদ; কি ভীষণ নগ্ন আর নিঃশব্দ! ভালোবাসা অনেকটা ঝিনুকের বুকে সঞ্চিত মুক্তোদানার মতন। যে মুক্তো ধারন করে তার আর সৌন্দর্য উপভোগ করা হয় না। আর যারা সৌন্দর্য উপভোগ করে তারা ঝিনুকের বেদনাবোধ সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারনা রাখে না। ভালো তো সবাই বাসতে পারে না; এবং একমাত্র মহান হৃদয়ই পারে সেই ভালোবাসাকে ধরে রাখাতে। রোজকার অভাবেবোধ জুড়ে থাকা অনুভূতিরাও জানে ‘তুমি ফুরোলে, ব্যথারা ঘুমোলে, বিষাদ ভাবে কী নিদারুণ অপচয়!’

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৫
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×