‘যা কিছু পাওয়া যায়না তার প্রতি যে টান থাকে সে টানের নাম আসলে ভালোবাসা নয়। সে টানের নাম হলো দূরত্ব। যে চায় আর যা কিছু চাওয়া হয় তার মাঝখানে এ দূরত্ব বড়ো নিশ্চিন্তে দুঃখ দিতে থাকে।‘
'পৃথিবীতে অনেক মুখ চোখে পড়ে, কিন্তু এক-একটি মুখ বলা কহা নাই একেবারে মনের মধ্যে গিয়া উত্তীর্ণ হয়। সে কেবল সৌন্দর্যের জন্য নহে, আর-একটি কী গুন আছে। সে গুনটি বোধ করি স্বচ্ছতা। '
একজন বিষন্ন মানুষকে ভুলে যেতে কতদিন লাগে?
খুব বেশি দিন লাগার কথা নয়... ইচ্ছে করলেই হয়তো অবসেশন কাটিয়ে ওঠা যায়... কিন্তু কেন যেন, ভুলে যেতে মায়া লাগে... থাকুক না ....মাঝে মধ্যে পড়ুক মনে ... !! ... ক্ষতি কী?
কিছু গল্পের শেষ হতে অনেক লম্বা সময় লাগে । হয়তো ঠিক তত দিনই যত দিনে মানুষ বদলাতে বদলাতে নিজের কাছেই অপরিচিত হয়ে যায়, তার ইচ্ছা করে মৃদু আলোতে সঙ্গ দিয়ে চলা নিজের ছায়াটার থেকেও পালিয়ে গিয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে ডুবে থাকতে।
সবারই গোপন-গোপন দুঃখ থাকে... মনের কোনে, নিজের একার ... কারো কারো গোপন কিছু সুখও থাকে... ন্যাপথলিনে মুড়ে নিরাপদ কুঠুরিতে রাখা !
গভীর গোপন কোনো অ-সুখকে অনেক দিন ধরে আগলে রাখলে সেটার প্রতি এক ধরনের ভালোবাসা জন্মে যায়। কিংবা বলা ভালো, একটা অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়। দূরবর্তী কারনের চেয়েও নিকটবর্তী প্রাত্যাহিক সহচার্য-ই তখন স্বাভাবিকতা হয়ে ওঠে।
আস্থা রাখা যায় এমন মানুষদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে বললে কম বলা হয়, বলা উচিৎ আশংকাজনক হারে কমে যাচ্ছে। চারিদিকে এত এত নাম, এত এত পরিচিত মুখ, এত এত চরিত্র, মানুষ আসলে ক'জন? সত্যিকারের মানুষ, স্বচ্ছ মানুষ, বলিষ্ঠ মানুষ। চরিত্র গুলো নানান ভূমিকায় নিপুন অভিনয় করে চলেছে। এতখানি অন্ধকার নিজেদের মধ্যে লুকিয়ে রাখে যে, কোনটা মুখ আর কোনটা মুখোশ বুঝে ওঠা মুশকিল!
আমাদের ব্যস্ত জীবনে চেনাজানা মানুষ অনেক। তার মধ্যে কিছু মানুষ থাকে, যাদেরকে আমরা মনে রাখি। গুটিকয়েক জনের সান্নিধ্য আমাদেরকে আনন্দ দেয়। সংখ্যায় আরও কিছু কম মানুষের সাথে আমরা আরাম বোধ করি। সারাজীবনে হাতে গোনা দুই-তিন জন হয়ে উঠতে পারেন আমাদের আশ্রয়! আর 'এভাবেই চিরকাল আমরা বিপরীতে আছি বলেই একটা গোটা জীবন ভালোবেসে গেলাম...'
বোকারা কেন স্বর্গে বাস করে জানো, তারা মানসিকভাবে কলুষতা মুক্ত। ঢাকায় এসে আমি প্রথম "His -His = Who's - Who's" শব্দটার সাথে পরিচিত হই। কী হৃদয়হীন একটা শব্দ! শুনলে এখনো আমার দম বন্ধ লাগে। যার যার, তার তার বলে কিছু আছে নাকি? তাহলে, আমাদের পরিবার, সমাজ, কাছের মানুষেরা, বন্ধু, শত্রু এরা থাকে কেন!! অথচ এটাই সম্ভবত সবথেকে দামী শব্দ। কেবল আমি-ই এর মূ্ল্যমান বুঝি না।
পৃথিবীর সবথেকে কঠিন কাজ নিজের উঠোন পেরোনো। সেটা পার হবার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে দেখলাম, সীমানা অসীমে গিয়ে ঠেকেছে!! কতটা পেরোলে আসলে নিজেকে পেরোনো যায় ? নিজেকে পেরোনো মানে কী গন্ডির বাইরে নাকি স্মৃতির বাইরে ? মায়াময় ধূলোর আস্তরন মুছতে গিয়ে দেখলাম, বহুদিনের অভ্যাসে তা কেমন অবিচ্ছেদ্য হয়ে গেছে! সমস্ত পৃথিবীকে পেলাম ‘নিজস্ব উঠোন’ করে।
ধরো দূরপাল্লার এক বাস জার্নিতে তুমি অনেক কষ্টে জানালার পাশে একটা সিট ম্যানেজ করলে। সব ঠিকঠাক। বাস ছেড়ে দেয়ার পর বুঝতে পারলে, জানালার গ্লাসটা স্থায়ী ভাবে লকড! কিছু কিছু মানুষের ভাগ্যটা ঠিক এমন... এইসব কিছু কিছু মানুষদেরর জীবনের গল্পটা আরেকটু সুলিখিত হতে পারতো...। ঈশ্বরকে তবে প্রশ্নাতীত ভাবে ভালোবাসতে পারতাম!! আর অদৃষ্টকে দাওয়াত করে এনে বলে দিতাম , ‘তোমার জন্য আমার তুলতুলে বেদনাবোধ হচ্ছে !’
‘নিরবতা একটা খাঁজওলা তীক্ষ্ণ কাঁচখন্ডের মতো বিছিয়ে থাকে, যে প্রথম একে ভাংগার চেষ্টা করবে, তার নির্ঘাত খোঁচা লাগবে। দারুন খোঁচা...’
'আরেকটি বার মরে যাওয়ার তীব্র আকাংক্ষাতে,
ইচ্ছে করে জীবনটাকে দু'হাত ভরে খরচ করি'
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৬