মাইক্রোম্যানেজমেন্ট, অর্থাৎ একজন কর্মীর প্রতিটি ছোটো কাজ পর্যবেক্ষণ ও বারবার আপডেট চাওয়া, একজন দক্ষ ও আগ্রহী কর্মীর মানসিক শক্তি ধ্বংস করার এক কার্যকর পন্থা। এর জন্য কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন নেই।

যদি প্রতিদিন কর্মীকে তার কাজের একই আপডেট সম্পর্কে চাপ দেয়া হয় এবং তার নিজস্ব দায়িত্ববোধ ও স্বাধীনতার জায়গায় বারবার হস্তক্ষেপ করা হয়, তাহলে খুব দ্রুত তার মধ্যে থাকা কাজের প্রতি আগ্রহ ও সৃজনশীলতা হারিয়ে যেতে শুরু করে।
ধরা যাক, কোনো কাজের জন্য একজন কর্মী জানিয়েছে যে, নির্দিষ্ট একটি কোম্পানি থেকে ৭ দিনের মধ্যে আপডেট আসবে। এই ৭ দিন ধরে যদি তাকে প্রতিদিনই চাপ দেয়া হয় “আপডেট কী?”, তাহলে সে ধীরে ধীরে দায়িত্বশীলতার বদলে কেবল নির্দেশ ফলো করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। আগে যেখানে সে নিজে থেকে আপডেট নিতো, এখন সে কেবল অপেক্ষা করবে কখন আবার তার কাছে আপডেট চাওয়া হবে। এর ফলে, সে রোবটিক আচরণ করতে শুরু করে—প্রতিবার শুধু নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে এবং নিজের উদ্যোগ হারিয়ে ফেলে।
অনেকক্ষেত্রে কর্মীরা এই পরিস্থিতিতে চাকরি ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবতে পারে, কিন্তু সেই সুযোগও যদি তার সামনে না থাকে, অর্থাৎ তাকে যদি শুধু বেতন বাড়িয়ে চাকরিতে আটকে রাখা হয়, তাহলে টাকার লোভে সে চাকরি ছাড়তে পারবে না। অথচ তার কাজের মান, কর্মস্পৃহা ও সৃজনশীলতা ধ্বংস হতে থাকবে।
এই কৌশলের পেছনে কিছু মানুষ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে থাকতে পারে। কেউ কেউ মনে করে কর্মীদের ব্যস্ত রাখতে হবে যাতে তারা কাজ থেকে মনোযোগ সরাতে না পারে, আবার কেউ হয়তো কর্মীর প্রতি আস্থাহীনতার কারণে এমনটি করে থাকে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কর্মী যদি উৎসাহী, দায়িত্ববান ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারে, তবে তার কাজের গুণগত মান ও তার প্রতিষ্ঠানে অবদানের মান হ্রাস পায়।
সর্বোপরি, একজন কর্মীর দক্ষতা ও আগ্রহ ধরে রাখতে তাকে স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ দেয়া, তার প্রতি আস্থা রাখা এবং কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন প্রদান করাই একজন সফল ম্যানেজারের দায়িত্ব।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



