বাংলাদেশে করোনাভাইরাসটি প্রবাসীদের মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করেছে। প্রবাসীরা অনেকে হয়তো নিজের দেশকে নিরাপদ মনে করে দেশে চলে এসেছে। আবার অনেকেই যেসব দেশে ছিল সেসব দেশে হয়তো ইমিগ্রান্ট হওয়ার কারণে, জরুরি মুহূর্তে স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে না তাই নিজের দেশকে নিরাপদ মনে করেছে। কোনো কারণে আমরা যদি ভয় পাই তাহলে আমরা নিজের ঘরে এসে আশ্রয় নিই। প্রবাসীরাও সেটাই করেছে। এখন প্রবাসীদেরকে আপনারা গালাগালি করছেন একজন প্রবাসীর বেকুবি মার্কা কথাবার্তা জন্য। ওই বেকুব পুরো প্রবাসীদের রিপ্রেজেন্ট করে না।
করোনাভাইরাস সমস্যাটি অনেকদিন ধরেই আলোচিত বিষয়। এই ভাইরাসটি আমাদের দেশে যেকোন ভাবেই প্রবেশ করবে এটা বুঝতে খুব বেশি গবেষণার দরকার ছিল না। আপনি যখন জানবেন আপনি কোন সমস্যায় পড়তে যাচ্ছেন তখন আপনি চেষ্টা করবেন সমস্যাটি প্রতিরোধ করতে। আর যদি সেটা না পারেন তাহলে চাইবেন আপনার ক্ষতির পরিমাণ যেন কম থাকে।
ইউরোপ থেকে যেসব প্রবাসীরা এসেছে, তাদেরকে আপনি কোয়ারেন্টাইন রাখবেন তার ব্যবস্থা আপনার অনেক আগ থেকেই করা উচিত ছিল। যেসব লোক গুলোকে কোয়ারেন্টাইনে রাখবেন, তাদের জন্য সেই জায়গায় পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা রাখতে হবে। ইতালি, জার্মানি এসব দেশে খুব বেশি বাঙালি থাকেনা। এরা যারা এসেছে তাদেরকে আপনি হাজী ক্যাম্পে রাখবেন কিন্তু সেখানে আপনি থাকার মতো পরিবেশ আগে থেকেই সৃষ্টি করে রাখবেননা, তা হতে পারে না। যে লোক গুলো প্রবাস থেকে এসেছে, তাদের সবাই নিশ্চয়ই এই ভাইরাসে আক্রান্ত ছিল না!
তাদেরকে আপনি এক জায়গায় গাদাগাদি করে রাখার চেষ্টা করলে, যে আক্রান্ত না, সেও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবে। সেক্ষেত্রে সেই লোকটি এমন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে চাইবে না, এটাই স্বাভাবিক। সারা বিশ্বে যখন এই সমস্যাটি চলছে, তখনই আপনি কোয়ারেন্টাইন করার জন্য যে নির্দিষ্ঠ জায়গাটি বাছাই করেছেন, সেটাকে মানসম্পন্ন করে তৈরি রাখা উচিত ছিল। সেখানে প্রত্যেকের জন্য আলাদা কেবিন সিস্টেম করে রাখা উচিত ছিল। সাথেসাথে পর্যাপ্ত পরিমান ডাক্তার ও নার্সদের দরকারি সরঞ্জাম দিয়ে সেখানে নিয়োগ দিতে পারতেন। এতে যারা বাহির থেকে এসেছে তারা এমন পরিবেশ দেখে কিছুটা হলেও স্বস্তি বোধ করতো। বিমান থেকে নেমে তারা যখন ডাক্তার না দেখে পুলিশ দেখে তখন তারা হতাশ হবেই।
আমাদের প্রশাসন যারা চালাচ্ছে এরা বেশিরভাগই অজ্ঞ এবং স্বার্থপর। এদের দ্বারা এসব জরুরী মুহূর্ত ট্যাকেল দেওয়া সম্ভব নয়। যেখানে একটি ব্যস্ত রাস্তায় ম্যানহোলের ঢাকনা দিনের পর দিন খোলা থাকে সেখানে এসব ব্যুরোক্রেটরা কতটুকু দক্ষতার সাথে এমন বিপর্যয় মোকাবেলা করবে সেটা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কিছু কর্মকর্তাকে ইতালি পাঠানো দরকার, করোনাভাইরাস কিভাবে মোকাবেলা করা যায় তার অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য। জানিনা এসব কর্মকর্তারা এখন এমন অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ইতালি সফর করবেন কিনা কে জানে?
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৩২