
বর্তমানে অনেকেই প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (PR) বা ভোটের অনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন পদ্ধতির পক্ষে কথা বলছেন। তাদের মূল যুক্তি, এতে নাকি সংসদে প্রত্যেক ভোটারের প্রতিনিধি থাকবেন। বিষয়টি শুনতে যতটা চমকপ্রদ, বাস্তবতা ততটাই জটিল। মূলত, তারা সংসদ সদস্যের প্রকৃত দায়িত্ব ও ভূমিকা সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে না জেনেই এ ধরনের দাবি করছেন।
একজন সংসদ সদস্যের প্রধান কাজ হলো সংসদে জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট বিল উত্থাপন ও তাতে মতামত প্রদান করে ভোটের মাধ্যমে আইন প্রণয়ন করা। এখন ধরুন, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল সংসদে তোলা হলো এবং সেটি ১৫১ জন এমপির ভোটে পাস হলো, বাকি ১৪৯ জন এমপি এই বিলে বিরোধিতা করলেন। প্রশ্ন হলো, বাকি ১৪৯ জন এমপির ভোটের কী মূল্য থাকলো?
এখন আপনি যদি বলেন, এ ১৪৯ জন তো PR পদ্ধতিতে বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে এসেছেন, তাহলে সেই জনগোষ্ঠীর মতামতের প্রতিফলন সংসদে কোথায়?
বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নেওয়া সিদ্ধান্তে সংখ্যালঘু মতামত কার্যকর প্রভাব ফেলতে পারছে না। তাহলে এখানে PR পদ্ধতির নামে যেটা হচ্ছে, সেটা তো এক ধরনের বিভ্রান্তি—"যে লাউ, সে কদুই!"
ঠিক একই ধরণের ঘটনা আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে দেখতে পাই। সেখানে যদি একটি পার্টি কোনো রাজ্যে মাত্র এক ভোট বেশি পায়, তাহলে পুরো ইলেক্টোরাল ভোট সেই পার্টির ঝুলিতে চলে যায়। বিপরীত পক্ষ যে লক্ষ লক্ষ ভোট পেয়েছে, তা কার্যত মূল্যহীন হয়ে পড়ে। এটাই বাস্তবতা।
সুতরাং, নির্বাচনে ভোটের অনুপাত নয়, বরং সংসদে ভোটের কার্যকারিতা এবং আইন প্রণয়নের বাস্তব কাঠামো বোঝাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০২৫ সকাল ১১:০২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


