somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর ১২৫তম জন্মবাষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবীদের একজন ক্ষুদিরাম বসু। যখন তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন এবং পরিণামে ফাঁসির দড়ির স্পর্স লাভ করনে তখন তিনি নিছক একটি শিশু। ফাঁসির সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর, ৭ মাস ১১ দিন। ক্ষুদিরাম বসু বন্দে মাতারাম ও গীতা পবিত্র শব্দ থেকে স্বাধীতনা সংগ্রামে অংশ গ্রহণের অনুপ্রেরণা যুগিয়ে ছিলো। ১৮৮৯ সালের আজকের দিনে তিনি ভারতের মেদিনিপুর জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। আজ তার ১২৫তম জন্মবাষিকী। ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের কিংবদন্তি বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।


ক্ষুদিরাম বসু ১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিম বাংলার মেদিনীপুর জেলা শহরে কাছাকাছি হাবিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ত্রৈলকানাথ পিতা বসু ছিল নাদাজল প্রদেশের শহরে আয় এজেন্ট। তার মা লক্ষীপ্রিয় দেবী। তিন কন্যার পর তিনি তার মায়ের চতুর্থ সন্তান। তার অপর দু'ভাই আগেই মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর আশংকায় তার মা তখনকার সমাজের নিয়ম অনুযায়ী তার পুত্রকে তার বড় বোনের কাছে তিন মুঠি খুদের (শস্যের খুদ) বিনিময়ে বিক্রি করে দেন।খুদের বিনিময়ে ক্রয়কৃত শিশুটির নাম পরবর্তীতে ক্ষুদিরাম রাখা হয়।ক্ষুদিরাম বসু পরবর্তিতে তার বড় বোনের কাছেই বড় হন। তিনি গ্রামের স্কুলে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন তারপর হ্যামিলটন স্কুল এবং পরে ১৯০৩ সালে মেদিনিপুর কলেজিয়েট স্কুল ভর্তি হন। সেখানে তিনি অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেকা করেন। ক্ষুদিরাম বসু তার প্রাপ্তবয়সে পৌছানোর অনেক আগেই একজন ডানপিটে, বাউন্ডুলে, রোমাঞ্চপ্রিয় তরুন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। পড়া লেখায় ক্ষুদিরাম বসু ছিলেন একজন মেধাবী ছাত্র। কিন্তু কিশোরসুলভ সাহস এবং সত্যেন্দ্রনাথ বোস এবং গেয়ানানন্দ নাথ বোস এর দেশপ্রেমী কার্যক্রমের প্রচারাভিযান একটি গুপ্তসভার নেতৃত্ব তাকে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য প্রভাবিত করেছিলো।


ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের কিংবদন্তি সুপারহিরো ক্ষুদিরাম বসু ব্রিটিশ শাসকদেরআতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছিলো। ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে ক্ষুদিরাম বসু ছিল একজন ব্যতিক্রমী মুক্তিযোদ্ধা। ভারতের জন্য তার তীব্র দেশ প্রেম ছিলো। তার যুদ্ধ ছিলো ব্রিটিশদের কাছ থেকে ভারতের মানুষের জন্মাধিকার "স্বাধীনতা" ছিনিয়ে আনার যুদ্ধ । এ সময় তিনি বাংলার পালনকর্তা ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড কার্জনের (বড় লাট) বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে স্বদেশী আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেন।১৯০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর রেলওয়ে স্টেশনে Magistrate Kingsford এর উপর বোমা হামলায় সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন ক্ষুদিরাম। কিন্তু এই বোমা হামলায় ক্ষুদিরাম বসুর দুঃভাগ্য কারণ সৌভাগ্য ক্রমে বেঁচে যান Magistrate Kingsford কিন্তু নিহত হন ওয়াটসন এবং Bamfylde নামে দুই ব্রিটিশ নাগরিক।


১৯০৮ সালে, তিনি ওয়াটসন এবং Bamfylde, নামক দুই ব্রিটিশ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা প্রমানিত হলে তাকে মৃত্যু দণ্ড প্রদান করা হয় । ১৯০৮ সালের ১১ আগষ্ট ভোর ৬টায় মুজঃফরপুর জেলে ক্ষুদিরাম বসুকে ফাঁসির রজ্জুতে ঝুলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। ভারতের মুক্তি সংগ্রামে অন্যতম পথিকৃৎ ক্ষুদিরাম বসু,ফাঁসির মঞ্চে প্রথম শহীদ। তাঁর ফাঁসির খবরে কলকাতার অমৃতবাজার পত্রিকা (১২ অগাষ্ট১৯০৮) লেখেন "মুজফরপুর ১১ই আগষ্টঃ অদ্য ভোর ছয় ঘটিকার সময় ক্ষুদিরামের ফাঁসি হইয়া গিয়াছে। ক্ষুদিরাম দৃঢ় -পদক্ষেপে প্রফুল্ল চিত্তে ফাঁসির মঞ্চের দিকে অগ্রসর হয়।এমনকি যখন তাহার মাথার উপর টুপিটা টানিয়া দেওয়া হইল,তখনো সে হাসিতেছিল।"


ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর ১২৫তম জন্মবাষিকী আজ। ভারতের ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের কিংবদন্তি বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×