somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জনপ্রিয় টিভি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের নন্দিত উপস্থাপক ফজলে লোহানীর ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সাংবাদিক, লেখক, চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক ফজলে লোহানী। সাংবাদিক-সাহিত্যিক-চলচ্চিত্র প্রযোজকের পরিচয় ঢাকা পড়ে গিয়েছিল তার উপস্থাপিত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের আড়ালে। বাংলাদেশের টেলিভিশনের প্রথম জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান যদি কিছু মনে না করেন এর সফল উপস্থাপক তিনি। বলা হয়ে থাকে টিভি মিডিয়ার ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের জনক তিনি। কথা বলার অসাধারণ অঙ্গভঙ্গি আর অভিব্যক্তি তাকে অসাধরণ করে তুলেছিলো। মিডিয়ায় তার গড়ে তোলা ট্রেন্ডের মাঝে আজও ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সব ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। আজ ৩০ অক্টোবর বিশিষ্ট টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ফজলে লোহানীর ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮৫ সালের আজকের দিনে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৫৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুদিনে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।


জনপ্রিয় মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফজলে লোহানী ১৯২৮ সালের ১২মার্চ সিরাজগঞ্জ জেলার কাউলিয়া গ্রামে এক শিক্ষিত ও সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আবু লোহানী ছিলেন সেই সময়ের সুপরিচিত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক এবং মা ফাতেমা লোহানী ছিলেন কলকাতা করপোরেশন স্কুলের শিক্ষিকা। ফজলে লোহানী সিরাজগঞ্জ বিএল স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি সমমনা কয়েকজনের সাথে ঢাকা থেকে সাপ্তাহিক পূর্ববাংলা নামে একটি পত্রিকা প্রকাশের সাথে যুক্ত হন। ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে এমএসসিতে ভর্তি হন ফজলে লোহানী তবে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেননি তিনি। এরপর ১৯৪৯ সালে তাঁর সম্পাদনায় ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয় উন্নতমানের সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা ‘অগ্যতা’। পঞ্চাশের দশকে তিনি ইংল্যান্ডে যান এবং বিবিসিতে কাজ করেন। লেখক হিসেবেও তিনি যথেস্ট খ্যাতিমান ছিলেন। ষাটের দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশে ফিরে এসে ফজলে লোহানী সাংবাদিকতা ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। এ সময় মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন এবং মওলানা ভাসানীর সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। লেখক হিসেবেও তিনি অনেক সুনামের অধিকারী ছিলেন। সর্বশেষ ফজলে লোহানী 'পেনশন' নামে একটি সৃজনশীল চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন।


১৯৭৭-১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে টেলিভিশনে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান যদি কিছু মনে না করেন উপস্থাপনা ও পরিচালনা করেন। এই অনুষ্ঠানে শেষ অংশে থাকতো একটি করে টিভি রিপোর্টিং। আশির দশকের গোড়ার দিকে বাংলাদেশে টিভি রিপোর্টিং এর প্রবর্তন ঘটানোর মতো যুগান্তকারী কাজ তিনি করেছেন। বিশ্বখ্যাত টিভি রিপোর্টারদের মতোই গভীর অভিব্যক্তি নিয়ে হৃদয়ছোঁয়া ভঙ্গিমায় তার করা টিভি রিপোর্টিং মানুষকে কখনো হাসাতো, কাঁদাতো, কখনোবা করে তুলতো বেদনা ভারাক্রান্ত কিংবা ক্ষুব্ধ। ফজলে লোহানীর এই টিভি রিপোর্টিং দেখার জন্য লক্ষ লক্ষ টিভি দর্শক বিপুল আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতো। অনুষ্ঠানটি ১৯৭৯ সালে থেকে তার মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত ছিল জনপ্রিয়তার শীর্ষে। প্রসঙ্গতঃ তার বড় ভাই ফতেহ লোহানীও ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেতা, আবৃত্তিকার, চিত্রপরিচালক, সাহিত্যিক, অনুবাদক ও বেতার ব্যক্তিত্ব। ফজলে লোহানী ১৯৮৫ সালের ৩০ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৫৮ বছর বয়সে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। আজ তাঁর ৩৪তম মৃত্যুদিন। যদি কিছু মনেনা করেন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের জনক ফজলে লোহানীর মৃত্যুদিনে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের টাকা দিয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলো কি জুয়া খেলে?

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:০৫



ইসলামি শরিয়া ভিত্তিক দেশের পাঁচ পাঁচটি ইসলামি ব্যাংকের আজ বেহাল দশা, তারা গ্রাহকের টাকা ফেরৎ দিতে পারছে না। সবগুলো ব্যাংকই এখন দেউলিয়ার পথে, বাধ্য হয়ে সরকার এই পাঁচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বি ডি আর বিদ্রোহ ও পিলখান হত্যাকান্ডের কিছু অপ্রাকাশিত সত্যঃ (পর্ব ০২)

লিখেছেন মেহেদী আনোয়ার, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৪৭

বিডিআর এর ডিজি নিহত হয় সকাল সাড়ে দশটায়। ভারতীয় টিভি চ্যানেল 'চব্বিশ ঘন্টা' বিস্ময়করভাবে অতি অল্পসময়ের মধ্যে বিডিআর ডিজি ও তার স্ত্রী নিহত হবার সংবাদপ্রচার করে সকাল এগারটায়। ভারতের আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মানুষ মানুষকে কীভাবে এত অপদস্ত করে এই ব্লগে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৪

আমি তো কারও সাতেও নাই পাঁচেও নাই। এত সময়ও নাই মানুষকে ঘাঁটার। ব্লগের ব্লগারদের সম্পর্কেও তেমন কিছু জানি না। তবে পোস্ট পড়ে কিছুটা আন্দাজ করা যায় -কে কী রকম। আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ কি শিখিয়েছে?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:০৬






অপমান, অপদস্থ থেকে বাঁচার উপায় শিখাইনি? ওস্তাদ মগা শ্যামী পাহাড়ে বসেও এসবের সমাধান করতে পারে, আপনি সামান্য অসুস্থতার জন্যও ব্লগে মিলাদ দেননি, দোয়া করেছেন কার জন্য? খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওরা দেশের শত্রু; শত্রু দেশের মানুষেরও...

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৮

ওরা দেশের শত্রু; শত্রু দেশের মানুষেরও...

অন্তর্জাল থেকে নেওয়া সূর্যোদয়ের ছবিটি এআই দ্বারা উন্নত করা হয়েছে।

ইসলামের পবিত্র আলো ওদের চোখে যেন চিরন্তন গাত্রদাহের কারণ। এই মাটি আর মানুষের উন্নয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×