
তর্ক না বিতর্ক !!
নূর মোহাম্মদ নূরু
তর্ক আর বিতর্ক, স্বাভাবিক দৃষ্টিতে শব্দ দুটি প্রায় সমার্থক হলেও তর্কে যুক্তির কোন বাধ্য-বাধকতা নেই,পক্ষান্তরে বিতর্ক হচ্ছে সুশৃঙ্খল অভ্যাস।
আসুন প্রথমেই জেনে নেই তর্ক কিঃ তর্ক হচ্ছে অহেতুক বিষয় নিয়ে উভয়পক্ষের ইচ্ছেমতো কথা কাটাকাটি। তর্ক শব্দটির সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দ হচ্ছেঃ
প্রতর্ক, তর্কাতর্কি, কথা-কাটাকাটি, উত্তর-প্রত্যুত্তর, বাদানুবাদ, অনুমান সন্দেহ ইত্যাদি।
নিজের মত বা ইচ্ছাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য, অর্থাৎ আমি যা পছন্দ করি, আমি যা চাই, তা পাওয়ার জন্য যে শব্দ, বাক্য আমরা উচ্চারণ করি সেটাই তর্ক। হীন ও কুতর্কে লিপ্ত হওয়া নিন্দনীয় ও দোষনীয়। এতে সত্য উন্মোচিত হওয়ার পরিবর্তে মনে জেদ ও রাগ বাড়ে। জেদের বশবর্তী হয়ে প্রতিপক্ষকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে। পরিণামে মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ-হিংসা ও কলহের সৃষ্টি হয়।
তর্ক যে কোনো ভিত্তিতে, যে কোনোভাবে করা যেতে পারে এবং তাতে যুক্তির বাধ্য-বাধকতা মোটেই নেই। কোন বিষয় নিয়ে তর্ক হবে আগে থেকে তার আভাসও পাওয়া যায়না। হঠাৎ করেই দুই পক্ষ তর্কে জড়িয়ে পড়ে। যেখানে একে অপরের কুৎসা আর নিন্দা ছাড়া কোন
কিছুরই চর্চা হয়না। এই জন্যই জ্ঞানীরা বলেছেন, ‘তর্কে জেতা বুদ্ধিমানের কাজ নয়, তর্কে না জড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ।’
এবার বিতর্কঃ আমরা অনেকেই বিতর্ক নিয়ে কম-বেশি ধারণা রাখি। স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনেকেই সরাসরিভাবেই বিতর্কের সাথে সম্পৃক্ত থাকেন। বিতর্ক হচ্ছে যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করা। একটি নির্ধারিত বিষয়ের পক্ষে-বিপক্ষে নিজের যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে নিজের বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠিত করাই বিতর্কের মূল উদ্দেশ্য।বিতর্কের মাধ্যমে নিজের বলার ও জানার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। ব্যাকরণগতভাবে ‘তর্ক’ শব্দটির আগে ‘বি’ প্রত্যয় যোগ হয়ে এতে যোগ করেছে অর্থের বিশেষ মত্রা। বিতর্ককে সাধারণ তর্ক থেকে আলাদা করে একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য, আর তা হচ্ছে যুক্তি। বিতর্কর মূল ভিত্তি যুক্তি। শুধুই যুক্তি। যুক্তিময় এই চর্চা ব্যক্তিকে সমৃদ্ধ করে। সাফল্যের পথে সহযোগিতা করে। বিতার্কিকের উচ্চারণ, বাচনভঙ্গি, ভাষার ব্যবহার হতে হবে শুদ্ধ এবং স্পষ্ট। ভালো উচ্চারণ ও শব্দচয়ন সহজেই শ্রোতাকে আকৃষ্ট করে।
বিতর্ক হচ্ছে যুক্তি-তর্কের খেলা। বিতর্কের মাধ্যমে যুক্তির আয়নার নিজের ভাবনাগুলোকে প্রতিফলিত করা যায়। এর ফলে বাড়ে চিন্তার পরিধি, জ্ঞান আর প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান। অতি সম্প্রতি ব্লগে কপি পেষ্ট নিয়ে বিতর্কের নামে তর্ক শুরু হয়্রছে।
কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় আমরা তথা কথিত বিতর্কের নামে নোংরা তর্কে লিপ্ত হয়ে
নিজেদের আভ্যন্তরীন কুৎসিত চেহারাটা জনসম্মুখে প্রাকাশ করে নিজেকে হাস্যকর করে তুলছি। এর থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের সবাইকে বিতর্কের জন্য তর্ক পরিহার করতে হবে।
প্রকাশকালঃ ঢাকা-২৮ এপ্রিল ২০২২ ইং
বিঃদ্রঃ লেখাটি তৈরী করতে গুগলের সাহায্য নেয়া হয়েছে।
কেউ কপি পেষ্টের গন্ধ শুকবেন না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


