সৌদি আরবের আকাশে গতকাল শনিবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। সে কারণে আগামীকাল রোববার দেশটিতে শেষ রমজান পালিত হবে। ৩০ রোজা শেষে আগামী সোমবার (২রা মে) ঈদুল ফিতর উদযাপন করবে সৌদি আরববাসী।
সৌদি কর্তৃপক্ষ গতকাল এ ঘোষণা দিয়েছে বলে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস জানিয়েছে। এর আগে আবুধাবি-ভিত্তিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সেন্টার (আইএসি) বলেছে, শনিবার (৩০ এপ্রিল) মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখতে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এর মানে আজ রবিবার (১ মে) ওই অঞ্চলে রমজান মাসের শেষ দিন। এর পরের দিন (২ মে) সোমবার উদযাপিত হবে ঈদুল ফিতর।
তবে আফগানিস্তানের কয়েকটি শহর থেকে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে জানিয়ে আজ রোববার (১ মে) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির তালেবান সরকার
তাই আজ আফগানিস্তানে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
বাংলাদেশে সাধারণত সৌদি আরবের এক দিন পর ঈদ উদযাপিত হয়ে থাকে। কেনো বাংলাদেশে সৌদি আরবের এক দিন পর ঈদ উদযাপিত হয় তা আজকে সামুতে প্রকাশিত ব্লগার " প্রতিদিন বাংলা" এর নিবন্ধ "৷সৌদি আরবের পরদিন কেন বাংলাদেশে ঈদ,আজ জানলাম! ।" পাঠ করলে বিস্তারিত জানা যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে রবিবার চাঁদ দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সেক্ষেত্রে মঙ্গলবার ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানে ইদ পালিত হতে পারে। তার পরেও নিয়ম মাফিক আজ রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা হবে। যদি আজ শাওয়ালের চাঁদ দেখা যায় তাহলে আগামীকাল সোমবার বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর তা না হলে ৩০ রোজা শেষে মঙ্গলবার ঈদ উদযাপন করবেন বাংলাদেশের মানুষ।
তবে ব্যতিক্রম হলো বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করবেন যারা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে বাংলাদেশ থেকে একদিন আগে পবিত্র রমজানের সিয়াম সাধনা শুরু করেছিলেন। অথচ হাদিস শরিফে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন—
তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো এবং চাঁদ দেখে ঈদ করো। কিন্তু যদি আকাশে মেঘ থাকে, তাহলে গণনায় ৩০ পূর্ণ করে নাও।
বুখারি, হাদিস : ১৯০৯; মুসলিম, হাদিস : ১০৮১
অন্য বর্ণনায় রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা (নতুন চাঁদ) না দেখা পর্যন্ত রোজা রেখো না এবং তা (নতুন চাঁদ) না দেখা পর্যন্ত রোজা ছেড়ে দিয়ো না।’ (মুআত্তা মালিক, হাদিস : ৬৩৫)
এই হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, রমজান শুরু কিংবা ঈদ করার ব্যাপারটা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। কোনো এলাকায় চাঁদ দেখা না গেলে তাদের জন্য রোজা রাখা নিষিদ্ধ।
কেউ কেউ মনে করেন, এই হাদিসের মাধ্যমে একই দিনে বিশ্বব্যাপী রোজা ও ঈদ পালন করা সাব্যস্ত হয়। তাদের দাবি, মহান আল্লাহ মধ্যপ্রাচ্যকে মধ্যস্থল বানিয়েছেন। তাই সেখানে চাঁদ দেখা গেলে সারা বিশ্বে রোজা ও ঈদ পালন করতে হবে! অথচ পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তারা আপনাকে (seরসুল সাঃ) নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, তা হলো মানুষ ও হজের জন্য সময় নির্দেশক।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৯)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরবিদরা বলেন, এখানে ‘আহিল্লাহ’ শব্দ আনা হয়েছে, যার অর্থ একাধিক নতুন চাঁদ, যা একেক উদয়স্থলে একেক দিন উদিত হয়। সুতরাং যে দেশে যে দিন রমজানের চাঁদ দেখা যাবে তার পরদিন থেকে রোজা এবং রমজান শেষে শাওয়াল মাসের চাঁদ উদিত হলে পরের দিন ১ম শাওয়াল ঈদ পালন করতে হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন এখানে (সম্পাদিত)
সুত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো/ইত্তেফাক/সমকালসহ বিভিন্ন পত্রিকা এবং বহু অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০২২ রাত ১১:৪১