somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১ শাওয়াল ১৪৪৩ হিজরী, পবিত্র ঈদুল ফিতর আজঃ সবার জন্য ঈদের শুভেচ্ছা -

০৩ রা মে, ২০২২ সকাল ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ সোমবার ৩ মে ২০২২ ইং, ২০ বৈশাখ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ১ শাওয়াল ১৪৪৩ হিজরী পবিত্র ঈদুল ফিতর। রমজানের শেষে এই ঈদ আসে আনন্দের বার্তা নিয়ে; সারা বিশ্বের মুসলমান এটি পালন করেন একটি খুশির উৎসব হিসেবে। তবে গত বছরের মতো এই বছর উৎসব কোভিড–১৯ মহামারি মুক্ত সস্তির পরিবেশে। গত দুই বছর বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চল মিলে এই মহামারিতে মারা গেছেন ৩৩ লক্ষাধিক মানুষ; বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা ৪ লাখের উপরে। এবারের পরিস্থিতিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগমনে ঘরে ঘরে আনন্দ, আশা ও প্রত্যয় জাগুক যে আমরা সবাই মিলে এই দুর্যোগ ও দুঃসময় পেরিয়ে আবার সুস্থ, স্বাভাবিক, কর্মচঞ্চল জীবনে ফিরে এসেছি । তাই এ বারের ঈদ হোক সস্তির পরিবেশে, মেতে উঠি সামাজিক ও পারিবারিক আনন্দে। যা হোক ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দুটো সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের একটি ঈদুল ফিতর। দ্বিতীয়টি হলো ঈদুল আযহা। ঈদুল ফিতর অর্থাৎ "রোযা ভাঙার দিবস"। ধর্মীয় পরিভাষায় একে ‍ইয়াউমুল জাএজ‍ (অর্থঃ পুরস্কারের দিবস) হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে। ঈদ শব্দটি আরবি, যার অর্থ হলো আনন্দ, উৎসব, পুনরাগমন, পুনরাবৃত্তি ইত্যাদি। প্রতি বৎসর পর্যায়ক্রমে এই ঈদের পুনরাগমন হয় বলে ইহাকে ঈদ বলা হয়। এক কথায় ঈদুল ফিতর অর্থ হলো রোজা না রাখা বা রোজা ভাঙার পর্ব বা উৎসব। অর্থাৎ সুদীর্ঘ এক মাস সিয়াম-সাধনার পর আল্লাহর নির্দেশে আমরা এ দিন রোজা ভাঙি তাই এ দিনটির নাম ঈদুল ফিতর। এ নাম রাখার কারণ : যেহেতু ঈদুল ফিতর প্রতি বছরই যথাসময়ে আমাদের মাঝে ঘুরেফিরে আসে এবং এ দিনটিতে আমরা একটি মাস সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও ইন্দ্রিয়সম্ভোগে লিপ্ত না হওয়ার যে বিধান ছিল তা ভঙ্গ করি বলে এ দিনটিকে ঈদুল ফিতর নামকরণ হয়েছে। দুনিয়াতে প্রতিটি ধর্মে আনন্দ উদযাপনের জন্য রয়েছে কয়েকটি দিন, সেভাবে মদিনাবাসীও বছরে দুটি নির্দিষ্ট দিনে আমোদ প্রমোদে মেতে ওঠতো, তারা বসন্ত ও হেমন্তের রজনীতে নওরোজ এবং মিহরিজান নামে দুটি উৎসব পালন করতো। এই দুইটি উৎসবে যেই আচার-অনুষ্ঠান হতো ইসলামে তা সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল। মদিনায় আসার পর হুজুর (সাঃ) যখন এটা দেখলেন, তখন তাদেরকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন এই নির্দিষ্ট দিনে তোমাদের আনন্দ উৎসবের কারণ কি? মদিনার নবমুসলিম সাহাবাগণ বললেন- আমরা জাহেলি যুগে এই দিন দু’টিতে এভাবে আনন্দ উৎসব করতাম। যা আজ পর্যন্ত আমাদের মধ্যে প্রচলিত। তখন হুজুর সা. ইরশাদ করলেন- মুসলমান জাতির ঈদ ও উৎসব হবে ইবাদত-বন্দেগীর উৎসব, ঈমানী ও রুহানী উৎসব। অন্য জাতির সংস্কৃতি, নাচ-গান, বাদ্য-বাজনা, আনন্দ, উৎসবের মত হতে পারে না। কেননা এগুলি নফসানি ও শয়তানি উৎসব যা কোন অবস্থাতে ইসলাম ধর্ম সমর্থন করে না। আল্লাহ পাক তোমাদের জন্য এই দুটি দিনে আনন্দ উৎসবের পরিবর্তে আরও উত্তম দুটি দিন নির্ধারণ করে দিয়েছেন। একটি ঈদুল ফিতর অন্যটি ঈদুল আযহা। তোমরা পবিত্রতার সঙ্গে এ দুটি ঈদ বা উৎসব পালন করবে।’ [আবু দাউদ ও নাসায়ি]। দ্বিতীয় হিজরিতে হুজুর সা. প্রথম ঈদের নামাজ আদায় করেন। একই হিজরিতে শা’বান মাসে রমজানের রোযা ফরজ হয় এবং সদকায়ে ফিতর, ঈদুল আযহা ও কুরবানি ওয়াজিব হয়। (হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা, দ্বিতীয় খন্ড, পৃঃ ২০)


দীর্ঘ এক মাস রোযা রাখা বা সিয়াম সাধনার পর মুসলমানেরা এই দিনটি ধর্মীয় কর্তব্যপালনসহ খুব আনন্দর সাথে পালন করে থাকে। বাংলাদেশ সহ অন্যান্য মুসলিম-প্রধান দেশে ঈদুল ফিতরই হলো বৃহত্তম বাৎসরিক উৎসব। ঈদের দিন ঘরে ঘরে সাধ্যমত বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয়। ঈদের দিনে সেমাই বা অন্যান্য মিষ্টি নাস্তা তৈরি করার চল রয়েছে। ঈদের দিনে সেমাই সবচেয়ে প্রচলিত খাবার। এবং বিশেষ আরো অনেক ধরনের খাবার ধনি গরিব সকলের ঘরে তৈরী করা হয়। এ উৎসবের আরো একটি রীতি হল আশেপাশের সব বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া। এবং প্রত্যেক বাড়িতেই হালকা কিছু খাওয়া। এ রীতি বাংলাদেশে সবাই মেনে থাকে। ঈদের দিনে সকালে প্রথম আনুষ্ঠানিকতা হল নতুন জামা-কাপড় পরে ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়া। মুসলমানদের বিধান অণুযায়ী ঈদের নামাজ আদায় করতে যাওয়ার আগে একটি খেজুর কিংবা খোরমা অথবা মিষ্টান্ন খেয়ে রওনা হওয়া সওয়াবের (পূন্যের) কাজ। ঈদুল ফিতরের ব্যাপারে ইসলামী নির্দেশসমূহের মধ্যে রয়েছে গোসল করা, মিসওয়াক করা, আতর-সুরমা লাগানো, এক রাস্তা দিয়ে ঈদের মাঠে গমন এবং নামাজ-শেষে ভিন্ন পথে গৃহে প্রত্যাবর্তন। এছাড়া সর্বাগ্রে অযু-গোসলের মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়ার বিধানও রয়েছে। ইসলামে নতুন পোশাক পরিধান করার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও বিভিন্ন দেশে তা বহুল প্রচলিত একটি রীতিতে পরিনত হয়েছে। ঈদের নামাজ সবার জন্য। নামাজেরপর সবাই একসাথে হওয়া, দেখা করা। ঈদের দিনে সালামি গ্রহণ করা প্রায় সব দেশেই রীতি আছে। তবে এর ধর্মিয় কোন বাধ্যবাধকতা বা রীতি নেই। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদেরকে যে কল্যাণকর বিধান দান করেছেন এবং তা পালন করার তাওফীক দিয়েছেন এজন্য আল্লাহর শোকরগোযারী করা এবং তাঁর মহত্ব ও বড়ত্ব বর্ণনা করাই হল ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য।


আসমানী হিদায়াতের গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা এবং এর সুফল ও কল্যাণপ্রসূতা সম্পর্কে মু’মিনের মন আশ্বস্ত ও প্রশান্তত থাকে। এই প্রশান্তির মূলে হল তাঁর ঈমান। মহান রাববুল আলামীনের প্রতি বিশ্বাস ও সুধারণা এবং তাঁর অসীম জ্ঞান ও প্রজ্ঞা সম্পর্কে, সৃষ্টির প্রতি তাঁর অনুগ্রহ ও সদাশয়তা সম্পর্কে অটুট প্রত্যয় মুমিনকে তাঁর বিধান ও নির্দেশনা সম্পর্কেও প্রত্যয় দান করে। জীবন ও জগতের অভিজ্ঞতা তাঁর সে প্রত্যয়ে প্রশান্তির পরশ বুলায়মাত্র এবং এটা শুধু আসমানী নির্দেশনার অনিবার্যতা ও অপরিহার্যতা এবং এর যথার্থতা ও কল্যাণপ্রসূতাকেই তার সামনে পরিস্ফুট করে তোলে। তবে একথা বলাই বাহুল্য যে, এটা তাঁর বিশ্বাস ও প্রত্যয়ের মূল ভিত্তি নয়, মূল ভিত্তি হল তাঁর ঈমান। আর এজন্যই সে মু’মিন ও বিশ্বাসী। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে এই কল্যাণকর বিধান ও নির্দেশনা লাভের ওপর এবং সে বিধান পালনের তাওফীকপ্রাপ্ত হওয়ার ওপর আল্লাহ তাআলার শোকরগোযারী করা অপরিহার্য। রোযার বিধান যেমন আল্লাহ তাআলা দান করেছেন, তেমনি এর ওপর শোকরিয়া আদায়ের শিক্ষাও আল্লাহ তাআলাই দিয়েছেন। উপরোক্ত আয়াতের শেষ অংশে এ বিষয়টিই উল্লেখিত হয়েছে। বান্দার সমগ্র সত্ত্বায় আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব ও মহত্বের সমর্পিত বহিঃপ্রকাশ বান্দাকে পূর্ণ শোকরগোযার বান্দায় পরিণত করে। ঈদুল ফিতর উদযাপনের পুরো বিষয়টিই ‘আল্লাহু আকবার’-এর চেতনা ও মর্মবাণীকে প্রকাশিত করে। এজন্য মৌখিকভাবেও ‘আল্লাহু আকবার’ বলা এ সময়ের একটি বিশেষ যিকির। সাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে সালেহীন ঈদের রাতে ও ঈদের সকালে তাকবীর পাঠ করতেন। ঈদগাহে যাওয়ার সময়ও নিম্ন স্বরে তাকবীর বলা মুস্তাহাব। ঈদের নামাযের অতিরিক্ত তাকবীর এবং ঈদের খুতবার তাকবীরগুলো ঈদুল ফিতরের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।


ঈদের দিন করণীয় ও বর্জনীয় কাজ সমুহঃ
১। রোজা না রাখাঃ ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম। এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা). থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই ঈদের দিন (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা) রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।’ [বুখারি]
২। গোসল করাঃ হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা). থেকে বর্ণিত, ‘রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে গোসল করতেন।’ [মুয়াত্তা ইমাম মালিক]।
৩। কিছু খাওয়াঃ রোজার ঈদে নামাজ পড়ার জন্য যাওয়ার আগে কিছু আহার করার কথা হাদিসে আছে। বিশেষ করে হাদিসে খেজুর বা মিষ্টি জাতীয় জিনিস খাওয়ার কথা উল্লেখ আছে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম খেজুর না খেয়ে ঈদগাহে যেতেন না।’ [বুখারি]।
৪। আতর বা সুগন্ধি ব্যবহার করাঃ ইমাম মালিক (রহ.) বলেন, ‘প্রতি ঈদে সুগন্ধি ব্যবহার করা ও সুসজ্জিত হওয়া মুস্তাহাব।’ [আল মুগনি]।
৫। সুন্দর পোশাক পরিধান করাঃ ঈদের আরেকটি করণীয় হলো এ দিনটিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সুন্দর পোশাক পরিধান করা। হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি সুন্দর জুব্বা ছিল যা তিনি দুই ঈদে ও জুমার দিন পরতেন।’ [বায়হাকি]।
৬। সাদাকাতুল ফিতর আদায়ঃ রমজানের শেষে শরিয়ত নির্দেশিত অন্যতম আর্থিক ইবাদত ফিতরা। ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর ঈদের আনন্দে গরিব-অসহায় মানুষকে অংশীদার বানানোর বিশেষ সুযোগ তৈরি করে দেয়। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, একদিনের জন্য হলেও গরিব মানুষের অসহায়ত্ব দূর করতে ফিতরা দেওয়ার জন্য সচ্ছল মুসলমানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই ফিতরার জন্য বর্ণিত পাঁচ ধরনের খাদ্য খেজুর, পনির, যব, কিশমিশ ও গমের মধ্য থেকে যে কোনো একটির নির্দিষ্ট পরিমাণ উত্তম জিনিস অথবা তার মূল্য ফিতরা হিসাবে দান করা সচ্ছল মুসলমানদের কর্তব্য। যদিও আমাদের দেশে শুধু গম বা আটার মূল্য ধরেই ফিতরা দেওয়ার রেওয়াজ চলে আসছে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘শরিয়তে সাদাকাতুল ফিতর প্রদান করাকে ওয়াজিব করা হয়েছে; যা একদিকে ত্রুটিযুক্ত রোজাকে পবিত্র করে, অন্যদিকে এর দ্বারা অসহায়-নিঃস্বদের প্রয়োজন কিছুটা হলেও পূরণ হয়।’
৭। হেঁটে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য যাওয়া এবং এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসাঃ সাইদ ইবনে জুবাইর রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক রাস্তা দিয়ে ঈদের নামাজে যেতেন এবং অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসতেন।’ [বুখারি]।
৮। তাকবির বলাঃ তাকবির বলতে বলতে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য যাওয়া। হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বিভিন্ন সনদে বর্ণিত আছে, রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘর থেকে বের হয়ে ঈদগাহে পৌঁছার আগমুহূর্ত পর্যন্ত তাকবির বলতেন। তাকবির বলতে হবে এভাবে : আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
৯। ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ঃ ঈদের দিন পারস্পরিক ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করা। এভাবে শুভেচ্ছা বিনিময় করা ‘তাকাব্বালুল্লাহা মিন্না ওয়া মিনকুম’ (আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে কবুল করুন) ইত্যাদি।
১০। ঈদের নামাজ আদায়ঃ ঈদের দিন ঈদের নামাজের আগে অন্য কোনো নামাজ আদায় করা ঠিক নয়। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের দিন বের হয়ে শুধু ঈদের দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। ঈদের নামাজের আগে বা পরে (সঙ্গে সঙ্গে) নফল বা অতিরিক্ত কোনো নামাজ আদায় করতেন না।’ [বুখারি, মুসলিম ও তিরমিজি]।
১১। খুতবা শোনা ও দোয়া করাঃ ঈদের নামাজের পর ইমাম খুতবা প্রদান করবেন এবং মুসল্লিরা তা মনোযোগ দিয়ে শুনবে। এটি পালন করা ওয়াজিব। ইত্যাদি।


উপরোক্ত বিধানগুলো পালনের সঙ্গে সঙ্গে জগতের সকল মিথ্যা বড়ত্বের দাবিদারকে পরিত্যাগ করে লা শরীক আল্লাহর বড়ত্বকে স্বীকার করে নেওয়া মু’মিনের ঈমানের দাবি। আসমানী বিধানের সমান্তরালে যেসব মত ও ব্যবস্থা মানুষ তৈরি করে নিয়েছে, মিথ্যা প্রচার-প্রচারণার কারণে যে গলিত সংস্কৃতিকে মানুষ নতশিরে কুর্ণিশ করেছে আর অর্থ ও সম্পদ এবং চাহিদা ও প্রবৃত্তিকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছে-এই সকল মিথ্যা ‘ইলাহ’র প্রতি অস্বীকৃতি জানিয়ে এক লা শরীক আল্লাহর বড়ত্বে ও কর্তৃত্বে প্রত্যাবর্তন আর চিন্তা ও চেতনায় এবং কর্মে ও সাধনায় আল্লাহর আনুগত্যে সমর্পণই হল এ দিনের মর্মবাণী। তাই আসুন, এই দিনে আমরা সকল মুসলিম ‘আল্লাহু আকবারে’র প্রেরণায় উজ্জীবিত হই এবং সকল মিথ্যা ‘ইলাহ’র দাসত্ব পরিত্যাগ করে এক আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্যে সমর্পিত হই। আল্লাহর মুহাববত ও আল্লাহ-নির্ভরতাই হোক আমাদের পরিচয়। ঈদুল ফিতরের আনন্দ উপভোগের সময় আমরা যেন আমাদের পার্শ্ববর্তী গরীব মানুষটির কথা না ভুলে যাই। তার সন্তানের মুখেও যেন একটুখানি আনন্দের হাসি ফুটে উঠতে পারে, খুরমা-ফিরনীর একটুখানি আয়োজন যেন তার পর্ণকুটিরেও হয়-এটা যেন আমরা ভুলে না যাই। আসুন! সত্যিকার অর্থেই ঈদের আনন্দে-উৎসবে সবাই মেতে উঠি। ধনী-গরিব কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিই। কেউ কারো পর নয়, ভাইয়ে ভাইয়ে নয় দূরত্ব-দ্বন্দ্ব সবাই ভ্রাতৃত্ববোধের চেতনায় জেগে উঠি। চারপাশের গরিব মানুষগুলোর মুখেও হাসি ফুটুক, সবার যোগে-মিলনে ঈদ হয়ে উঠুক উৎসবমুখর। তবে সবাই বর্তমান করোনা অবস্থার প্রতি খেয়াল রাখব। যাতে কোনোভাবেই স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার যে নিয়মপদ্ধতি দেওয়া আছে তা লঙ্ঘিত না হয়।। সামুর মডারেটর, কর্মকর্তাসহ সকল সহব্লগার, পাঠক,সুভানূধ্যায়ীদের সবাইকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানাই। ‘জীবনে যাদের হররোজ রোযা’ তাদেরকেও যেন না ভুলি।
সূত্রঃ পুনঃপ্রকাশ

সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[link|https://bangla24breakingnews.wordpress.com/|ব্রেকিং নিউজ২৪.কম]
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০২২ বিকাল ৪:০৫
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×