যত দোষ, নন্দ ঘোষ !!
(মজা দেই, মজা লই)
© নূর মোহাম্মদ নূরু
নিরীহ এক কাজের যন্ত্র আমি মোবাইল ফোন,
সকল কাজের কাজী আমি মন দিয়ে তা শোন।
সময় দেখো ছবি তোলো হিসাব নিকাশ করো,
ফোনের মাঝে রিং বাজিলে আমায় কানে ধরো।
বিশ্ব থাকে হাতের মুঠোয় থাকলে ফোনে নেট,
দিন দূনিয়ার খবর যে পাই জানি মুদ্রার রেট।
কোন দেশেতে কখন খড়া ঝড় তুফান কোন দেশে,
কোন দেশেতে যুদ্ধ বাঁধে কেনো, কোন আক্রোশে।
লেখা পড়ার নানান খবর মোবাইলেতে পাই,
এত কিছু দেবার পরেও আমার সুনাম নাই।
সবাই আমার নিন্দা করে মোবাইল নাকি বাজে,
মোবাইলেই খাইছে সমাজ ব্যঘাত ঘটায় কাজে।
পোলা মাইয়া সারাটা দিন মোবাইল নিয়া ঘাটায়,
লেখা পড়া শিকেয় তুলে টিকটকে দিন কাটায়।
কেউ আবার সেলফি তুলে নানান ভঙ্গি করে,
দেখে তাদের বাঁকা ফেস লজ্জাতে যাই মরে।
মোবাইল নাকি সৌজন্যতা খাচ্ছে গিলে গিলে,
আরো নানান দোষ যে চাপায় চমকে ওঠে পিলে।
মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করে,
জিনের বাদশার প্রতারণায় লজ্জাতে যাই মরে।
আমি নাকি অবৈধ প্রেমের জনক না জননী,
আমায় নিয়ে পার করে দেয় কত যে রজনী।
তাদের সকল মন্দ কথার সাক্ষী আমি হই,
এমন শত অভিযোগে মরমে মরে রই।
নিজের বউ ঘুমিয়ে থাকে একা বিছানাতে ,
পরের বউয়ের সাথে কথা বলে নিশি রাতে।
ছেলে মেয়ে পালিয়ে যায় ফোনে প্রেমে পড়ে,
সব হারিয়ে রিক্ত বেশে ফিরে আসে ঘরে।
এখানেতেই শেষ নাহি হয় মোবাইল ফোনের দোষ,
ঘরের বউ মোবাইল ফোনে রাত করে দেয় শেষ।
পরকীয়া মত্ত তারা ঘরে থাকতে নিজের স্বামী,
কেউ আবার ভাগছে নিয়ে নিজের আপন মামী।
অনেক পাগল লাইভে এসে আত্ম হত্যা করে,
ছুড়ি চালায়, গলায় দড়ি আবারামি পিস্তল দিয়ে মরে।
যে মরে তার হয়নাকো দোষ আমায় করে দোষী,
আমি নাকি লাইভ দেখিয়ে হইছি অনেক খুশি!
এর পরেও হয়না যে শেষ অভিযোগের পালা,
লজ্জা আর ঘৃণাতে তাই কানে লাগাই তালা।
আমি মোবাইল যেমন করে নাচাও তেমন নাচি,
দোষের ভাগী আমিই হলে কেমন করে বাঁচি।
যত দোষ নন্দ ঘোষের দই হলো কেন টক?
যা চেয়েছো তাইতো দিছি তুমিই আসল ঠগ।
বায়না দিলে টক দই দিতে অতিথি কম খাবে,
এখন কেনো সেই দোষেতে নন্দের মান যাবে?
আমার উপর দোষ দিওনা নিজে ভালো হলে,
শান্তি রবে ঘরে তোমার গুরুজনে বলে,
সকল কাজে নিও আমার ভালো যে গুণ আছে,
তুমিও রবে শান্তি সুখে আমারও সন্মান বাঁচে।
প্রকাশকালঃ ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং
উৎসর্গঃ প্রিয় সহব্লগার জগতারন দাদা, যার ফরমায়েশে ছড়াটি লেখা।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৭