somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার চলচ্চিত্র দর্শন-দ্যা স্পীড

১৮ ই মে, ২০১২ রাত ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশ ও জাতির উন্নয়নে আমার খরচকৃত ১৫০ টাকার কথা ভুলিয়াই গিয়াছিলাম।সেই সর্বভূক ছোটভাই নতুন দুরালাপনী কিনিবে বলিয়া আমাকে আবারো সেই বসুন্ধরায় লইয়া গেলো।বিশাল অংকের কাগজীমুদ্রা খরচ করিয়া ফেলিয়া একখানা স্পর্শকাতর দুরালাপনী কিনিতেই আমার ভিতরের আবুল হোসেন সত্ত্বা জাগিয়া উঠিলো।বলিলাম,''ইহার ১০% কমিশন কই??'' । ছোটভাই বলিলো,''ভ্রাতঃ,পকেটে অল্প কিছু মুদ্রা আছে,চলেন,৮ম তলায় গিয়া জীবনে গতি সঞ্চার করিয়া আসি'' !

মুহূর্তের জন্য বিভ্রান্ত হইলাম।৮ম তলার টবি ওয়ার্ল্ডে গিয়া খেলনা গাড়ীতে চড়িয়া গতি সঞ্চার করিবার বয়স তো আমাদিগের নহে-সেইটা তাহাকে মনে করাইয়া দিতেই সে আমার প্রতি তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো,বলিলো,''অনন্তের পেশীবহুল বক্ষ না দেখিলে জীবনে গতি নাই!চলেন দ্যা স্পীড দেখি!''।বিগত সময়ের ধরা খাইবার স্মৃতি তখনো আমার মনে অম্লান,সুতরাং গাঁইগুঁই করিতেই সে এমন রুল দিলো,যাহা আমি খারিজ করিতে পারিলাম না।টিকেট মায় খাদ্যখরচা -সবই তাহার!


যথাসময়ে হলে প্রবেশ করিয়া দেশ ও জাতিকে আরেকবার ধন্য করিলাম।আসন গ্রহন করিবার সময় আশেপাশে দুষ্টবালক-টাইপ কেহ আছে কিনা তাহা দেখিয়া লইলাম।এইবার ভাগ্য মনে হয় সুপ্রসন্ন!বামদিকে চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তি ও তাহার স্ত্রী আর ডানদিকে দুইজন বোরখা পরিহিতা আসন গ্রহন করিয়াছেন।এসি চালু থাকা সত্ত্বেও ততক্ষনে বোরখা পরিহিতা তাহার বোরখা খুলিয়া টপস ও জিনস পরিহিতারুপে আবির্ভূতা হইয়াছেন,বিষয় কি বোধগম্য হইলোনা।পতাকা প্রদর্শন শুরু হইতেই কেউ আর ভুল করিলোনা,দাড়াইয়া সম্মান দেখাইলো।হঠাৎ শুনিলাম,পাশের ব্যক্তি বলিতেছে,'পারিবোনা,পারিবোনা!'',তাকাইয়া দেখি পাশের লোককে তাহার স্ত্রী গুতাঁইতে গুঁতাইতে বলিতেছেন,'ওঠ ওঠ,পুরুষ মানুষের কি পেটে ব্যথা হয় নাকি? '' । কাহাদিগের সহিত চলচ্চিত্র দেখিতে আসিয়াছি,ভাবিতে ভাবিতে চলচ্চিত্র শুরু হইয়া গেলো।

শুরুতেই অনন্তকে দেখিলাম ধুমাইয়া শরীর গঠন করিতেছেন,কুঁদিতেছেন,দৌড়াইতেছেন।ট্রেডমিলে তাহার দৌড়ের গতি '১৬ কিমি' দেখিয়া আশান্বিত হইলাম,ছবিতে 'স্পিড' আছে বটেক !নাঁকিসুরে ভারী গলার অনন্ত বিশাল একজন কেউকেটা ব্যবসায়ী,দেশনেত্রী-জননেত্রী-শান্তিকন্যা-সমুদ্রকন্যা-ধানকন্যা-ডিগ্রিকন্যা'র ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপরেখা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে তিনি সৎভাবে ব্যবসা করিতেছেন,অন্যদিকে তাহার সৎ ব্যবসার অগ্রযাত্রায় ভীত হইয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাধা দিবার চেষ্টা করিতেছে কিবরিয়া খান(আলমগীর) নামক দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী।অনন্তের পরিবারে একমাত্র সদস্য বলিতে আছে তাহার ভাতিজি দৃষ্টি (দিঘী)।দেখিলাম,দিঘী কি নিয়া রাগ করিয়াছে,খাদ্য খাইবেনা।ছোটভাই জিজ্ঞেস করিলো,''দিঘীর সেবিকাগুলা এমন মোটা আর বয়স্কা,তাহাদের হাফপেন্টুল পরাইয়াছে কেন,ভ্রাতঃ?'' ।ছবি দেখার শুরুতেই বাজে প্রশ্ন শুনিয়া মনোযোগে বিঘ্ন ঘটিলো,ক্ষুব্ধস্বরে বলিলাম,''দেখিতেছিস না,দিঘীর খাবার খাইয়া খাইয়া মোটা হইয়া গিয়াছে বলিয়া এখন দিঘী সেই ভয়ে খাদ্য খাইতে চাইতেছেনা?'' ।ছোটভাই চুপ করিলো।

ইহার মাঝেই কিবরিয়া সাহেব এক নেতার কাছে গুন্ডা পাঠাইয়াছেন,সেই গুন্ডা নেতাকে শুন্যে তুলিয়া ঠিক সেই রুপেই ছুড়িয়া মারিলো-যেরুপে আমি ছোটবেলায় বিড়লের লেজ ধরিয়া ঘুরাইয়া ছুড়িয়া মারিতাম।গুন্ডার ভারোত্তলনে এই সাফল্য দেখিয়া কিবরিয়া সাহেব তাহাকে অনন্তকে মারিবার মিশনে পাঠাইলেন,আমিও আলমগীরের এই বিবেচক ভাবনায় মুগ্ধ হইলাম।আর যাই হোক,অনন্তের ওজন কুসুম শিকদারের সাথে এক কেজির হেরফের হইতে পারে,সুতরাং এই গুন্ডার দরকার আছে।
উহারা অনন্তের সামনের ও পিছনের গাড়িকে রকেট লঞ্চার মারিয়া উড়াইয়া দিলো,মাঝখানের গাড়ি হইতে অনন্ত বাহির হইলো।তাহার লিপস্টিক লাগানো ঠোট আর সাদা শার্ট পড়া দেখিয়া মেঘদেবতা রং সিগন্যাল পাইলেন,নায়িকা ভাবিয়া বৃষ্টিপাত ঘটাইয়া দিলেন।অনন্তের উর্ধাঙ্গে এক্সট্রা কিছু পড়ানো দরকার ছিলো-আমি ভাবিতে থাকিলাম। মারামারি শেষে স্বচ্ছবসনা অনন্ত কিবরিয়াকে হুমকি দিয়া আসিলেন,''নীতিবানেরা দুর্নিতীবাজেদের চ্যােঞ্জ করেনা,থ্রেট করে!'' ।দুরালাপনী ক্রয়বাবদ আমার চাওয়া ১০% কমিশনের থ্রেট এই সুত্র অনুযায়ী প্রমান করিলো-দূর্যোধন নীতিবান।


কিবরিয়া সাহেব এই মারামারিতে পর্যুদস্ত হইয়া বিদেশী গুন্ডা অ্যান্ড্রু'র(নিনো) শরনাপন্ন হইলেন।ঐদিকে পিআইএ'র বিমানে কেহ আসিতেছে দেখিয়া সাথে সাথে ছোটভাইকে গুতাইলাম,'দেখ দেখ পাকিস্তানী প্লেনে ভিলেন আসিতেছে,ড়াজাকার কাঁহিকা! ''।পাকিস্তানী প্লেন হইতে নামিলেন নায়িকা সন্ধ্যা(পারভিন),আমার অনুমান ভুল প্রমান হইতে দেখিয়া সেই খুশীতে নাকি নায়িকাকে দেখিয়ে খুশীতে চিমটি কাটিতে লাগিলো।নায়িকা হইলেন বিলাতফেরতা ফ্যাশন-ডিজাইনার,অনন্তের জিএম এর ভগিনী।জিএম ভাই পথে আসিবার সময় ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপরেখায় জয় ও জলিলের ভুমিকা ব্যাখ্যা করিলেন।সুতরাং নায়িকা আসিয়াই তাহার ভাইয়ের সাথে গার্মেন্টস পরিদর্শনে চলিয়া গেলেন।গার্মেন্টসের আপিসের দেয়ালে দেয়ালে অনন্তকে ঝুলিয়া থাকিতে দেখিয়া তাহার মনে প্রেম জাগিয়া গেলো।সেই প্রেমকে আরো কনসেন্ট্রেটেড রুপ দেয়ার উদ্দেশ্যে পরিচালক গার্মেন্টসে আগুন লাগাইয়া দিলেন।আগুন লাগিয়াছে,সেই ভয়াবহতা বোঝাইবার জন্য দলে দলে গার্মেন্টসকর্মীরা অত্যন্ত শৃঙ্খলার সাথে সিনক্রোনাইজডভাবে ক্যামেরার সামনে দিয়া ছোটাছুটি করিতে লাগিলো।সদ্যবিদেশফেরতা নায়িকা সম্ভবত ফেসবুকে বেশি বেশি লাইক পাইবার জন্য সেই সুশৃঙ্খল ছোটাছুটির ভিডিও করিতে লাগিলেন।নায়ক সাহেব গাদাখানেক জোম্বির মাঝে একখানাকে লইয়া লেক্সাসকে এম্বুলেন্স বানাইয়া নিজের 'উদার ও নীতিবান মালিক' চরিত্র দেখাইয়া দিলেন।নায়িকা নিশ্চিতভাবেই প্রেমের পাঁকে পড়িয়া গেলো।


নায়িকা বাসায় ফিরিয়া সেই ভিডিও দেখিতে দেখিতে বেডরুমের ভিতরে প্রবেশ করিলেন,আমি ও আমার ছোটভাই হতচকিতভাবে দেখিলাম,সেই বেডরুমের ভিতর আগে হইতেই অনন্তের অনেক ছবি লটকাইয়া রাখা হইয়াছে।ছোটভাই বলিলো,''ক্যামনে কি?নায়িকা ল্যান্ড করিলো আজ,নায়কের ছবি কি তবে নায়িকার ভাই ঝুলাইলো?'' । আমি উদাসভাবে বলিলাম,''তা-ই হইবে!গে-চীফ তো ব্লগেই থাকিবে এমন তো না,সিনেমায়ও আসিতেই পারে!''।আমার ধারনা ভুল প্রমান করিয়া তাহা নায়িকার হ্যলুসিনেশনরুপে দেখানো হইলো,একখানা গানও হইয়া গেলো!নায়িকার শরীরের বক্রময়তার সাথে প্রতিযোগিতামূলকভাবে অনন্ত ভুঁড়ি বাকাঁইয়া ধীরগতিতে নাচিয়া লইলেন।
নায়িকা ইতমধ্যে দেয়ালে দেয়ালে 'অনন্ত লটকানো' আপিসে চাকুরিও বাগাইয়া লইলেন।দিঘীর স্কুল তাড়াতাড়ি ছুটি হইয়া যাওয়ায় উনি তাহাকে নিয়া ঘুরতে এইদিক-সেইদিক গেলেন।দিঘীর জন্য ব্যাকুল অনন্ত ঘন্টাখানেকপর দিঘীর ফোন পাইয়া বলিলেন,''i am cumming'' ।ছোটভাই বলিলো হাসেন কেন?আমি বলিলাম,''অনন্ত হইলো নায়ক কাম প্রযোজক কাম ব্যবসায়ী কাম আমদানীকারক কাম ভবিষ্যত পরিচালক ! এত কামের চোটে ব্যাটা কামুক হইয়া ভুলবশতঃ cumming বলিলো কিনা,তাহা বুঝিবার চেষ্টা করিতেছি!''।

বিভিন্ন ঘটনার মাঝে পারভীনের সাথে জলিলের বিবাহ হইয়া গেলো।বিবাহের রাতে অনন্ত দিঘীর উপস্থিতিতে বাসর রাত করিতে চাহিলেন,কেননা দিঘী তাহার আদরের ভাতিজি!দিঘী বয়সে খাটো হইলেও স্ক্রিপ্টরাইটার তাহাকে সময় অনুযায়ী বিজ্ঞের ডায়লগ থ্রো করিবার সুযোগ দিয়াছেন,সুতরাং দিঘী জলিল ও পারভীনকে বেশি রাত না জাগিবার আদেশ দিয়া ঘুমাইতে গেলো!বাসরের রাত্রে পুরুষকূলই নারীদের তাড়া করে বলিয়া জানিতাম,পারভীনের ধাওয়ায় সম্ভ্রম হারানোর ভয়ে মু্গীর ন্যায় পলায়নপর জলিলকে দেখিয়া বুঝিলাম-পুরুষ মানুষ লিপস্টিক লাগাইলে তাহার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও লুপ্ত হইতে পারে!

এইসময় এইসব দেখিয়া দর্শকেরা হুটোপুটি খাইয়া হাসিতে লাগিলো।আমার পাশের ভদ্রলোককে দেখিলাম পেটে হাত দিয়া 'ব্যথা ব্যথা' বলিতেছেন।ভাবিলাম-হাসিতে হাসিতে পেট ব্যথা হইবার মতন কি পাইলো এই লোক?অতঃপর পাশের একদা বোরখাওয়ালীর দিকে তাকাইলাম,উনি মনে হইলো তাহার গুরুশ্রেনীর(পিতা/মাতা) কাউকে বলিতেছেন,''আমি ফার্মগেটে ,আসিতেছি'' । মোবাইল মানুষকে মিথ্যুক বানাইয়া দিয়াছে-একটি দীর্ঘশ্বাস চলিয়া আসিলো।

দিঘি জিজ্ঞেস করিলো হানিমুনে দেশের বাইরে কোন জায়গায় যাওয়ার প্ল্যান আছে।দেশপ্রেমিক জলিল বলিলেন যে,আমাদের দেশেই অনেক অনেক পর্যটনের স্থান আছে,যেমন -কক্সবাজার,সুন্দরবন,আটরশীর পীর,টুঙ্গিপাড়া,চন্দ্রিমা উদ্যান,মগবাজার.....ইত্যাদি ।সুতরাং তাহার কক্সবাজারে গেলেন।ত্রৈমুখিক পারিবারিক সঙ্গিতের এক পর্যায়ে দোজবর ও নববধুকে শান্তিতে বাসর করিয়া দিবার সুবিধার্থে অবশ্যম্ভাবীরুপে দিঘী মারা গেলো।বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ,অস্ত্র উদ্ধারে নিয়া যাওয়া ভিলেনের লুকিয়ে থাকা স্যাঙ্গাতের গুলিতে ড়্যাব পাল্টা গুলি ছোড়ে।ক্রসফায়ারেই..... !

হাসপাতালে নেয়া হইলো দিঘীকে।বিশালবপুর শ্লথগতির নার্সের কারনেই দিঘিকে বহনকারী ট্রলীর গতি 'স্পিডি' হইলোনা।ডাক্তার আসিবা সত্বেও নার্সের কম স্পিডের কারনে রোগি মারা গেলো।

শোকে তাপে নিমজ্জমান জলিল রাগে জলন্ত হইয়া গেলো।রাগ নিভাইতে তাহারা মালয়েশিয়ায় এক নাচাগানার আয়োজন করিলো।সেইখানেও হাঙ্গামা।নিনো'র স্যাঙাতেরা নৃত্যরত নায়িকাকে তুলিয়া নিয়া গেলো।'স্পীড ছবির নায়কের তাহাদের ধাওয়া দিলেন,দুঃখের বিষয় এইবেলায় তাহার দৌড়ের স্পীড ঘন্টায় ৪-৫ কিমির উপরে উঠিলোনা।শ্লথগতির নায়ক ঠিক হৃদপিন্ডে গুলি খাইলেও সম্ভবত গুলি বেচারা জানিতোনা -ইহা জলিলের হৃদপিন্ড।সুতরাং তাহাকে নিরাশ করিয়া জলিল বাঁচিয়া গেলো।বাচিঁবা মাত্রই জলিল জানিতে পারিলো,পারভীনকে দুরে কোথাও একখানা গ্যাস চেম্বারে আটক করিয়া রাখা হইয়াছে।হাতে সময় পাঁচ দিন,পাঁচ ভিলেনের রেটিনা স্ক্যান করিয়া তাহাকে ঐ চেম্বারের পাসওয়ার্ড খুলিতে হইবে।অন্যথায় অক্সিজেন কমিবে,বাড়িবে কার্বনডাইঅক্সাইড,বিপন্ন হইবে নায়িকা ও মালদ্বীপসহ সকল নিম্নাঞ্চলের জীবন।নায়ক সম্ভবতঃ এনালগ আমলের মানুষ,কাঁটা দেখিয়া সময় ঠাহর করিতে পারেনা-তাই তাহাকে হাদিয়া হিসাবে পাঠানো হইয়াছে ডিজিটাল ঘড়ি।সময় শেষ হইয়া আসিতেছে ,সুতরাং খিঁচিয়া দৌড়াও।

নায়ক বাহির হইয়া প্রথমেই দুঃখের গান গাহিয়া লইলেন।গান গাওয়া শেষ করিয়া মালয়েশিয়ান রুশ তরুনীকে কতিপয় 'খামান খামান' টাইপ গুন্ডার হাত হইতে বাঁচাইলেন।অতঃপর সেই রুশ তরুনীকে লইয়া বন্দুক পিস্তল কিনিয়া মক্সো দেখাইবার সময় আবার ভিলেন দ্বারা গুলি খাইলেন।রুশ তরুনী তাহার সেবা করিয়া আইটেম সং দেখাইয়া মিনিটখানেক পরই পটল তুলিলো।এইভাবে একের পর এক ভিলেনকে শেষ করিয়া শেষ ভিলেনকে মারিবার উদ্দেশ্যে বন্দুক পিস্তল ছুঁড়ি ও ছুরির পাশাপাশি ল্যাংটাবাবা সায়েদাবাদীর ফুঁ সম্বলিত তাবিজ লইয়া লইলেন।

সব ভিলেনের রেটিনা স্ক্যান শেষ করিয়া জলিল এইবার আলমগীরের সামনে আসিয়াছেন।উনি রেটিনা স্ক্যান করিবার পূর্বেই ইহধাম ত্যাগ করিলেন।জলিল সাহেব শরীরে পাঁঠা ও হস্তিনীর সম্বিত শক্তি থাকিবা সত্বেও মুর্দা আলমগীরের চক্ষুর পর্দা টানিয়া খুলিতে পারিলেন না।রেটিনা স্ক্যানও হইলোনা।ভগ্নহৃদয়ে উনি কাঁচের চেম্বারে গুলি করিয়া দেয়াল ফাটাইবার চেষ্টা করিলেন,গুলি করিয়া সার্কিটও উড়াইয়া দিলেন।কিছুতেই কিছু না হইয়া যখন নায়িকা ঢলিয়া পড়িবে,তখন সাইদাবাদীর কুদরতী তাবিজ বাহির করিয়া দোয়া চেম্বার খুলিবার দোয়া চাইলেন।
নিশ্চিতভাবেই গুপ্তদ্বার খুলিয়া গেলো!!

ছবির পজিটিভ দিক লইয়া আমিও ভাবা শুরু করলাম-

@অবশ্যই জলিল।উনি না থাকিলে বাংলাদেশের সিনেমায় বিদেশী উচ্চারনে নোয়াখালীর ভাষা আর উচ্চারিত হইবেনা।'ইশটপ','কিশটিনা','আই কোনটাক','ও মাই গোট' ...পারফেক্ট বিনোদন!
@আলমগীরের নাক এবং তার সংযম এই ছবির আরেকটা পজেটিভ দিক।এই নাক পুরা ছবিতেই একটি সিগারেট শুঁকিতে ব্যয় হইয়াছে।বম্ব ডিফিউজিং টীমের কাছে এই নাক ভাড়া দেয়ার আবেদন থাকিলো।
@ছবি দেখিয়া আমার বদ্ধমূল ধারনা হইয়াছে,জলিলের গার্মেন্টসের পাশাপাশি লিপস্টিকেরও ফ্যাক্টরী আছে। যেহেতু মালিক হিসেবে উনি নিয়মিত ব্যবহার করেন,অবশ্যই উহা ১০০ ভাগ বিদেশে রপ্তানীযোগ্য পন্য!
@জাপানে পুরুষদের বক্ষবন্ধনী জনপ্রিয় হইয়াছে।বাংলাদেশে সেই রীতি চালুর জন্য অগ্রপথিক হিসেবে জলিলকে বিবেচনা করা যায়।পুরো ছবিতেই তাহার উর্ধাঙ্গের জন্য বিশেষ কিছুর প্রয়োজন মনে করিয়াছি।
@নিশ্চিতভাবেই এখন হইতে বসুন্ধরার আনলকিং সফটওয়্যারের দোকানের ব্যবসায় মার যাইবে।ল্যাংটাবাবার দোয়াসম্বলিত তাবিজ সাথে রাখিলে লকড দরজা,মোবাইল এবং চেষ্টা চরিত্র করিলে কাপড়ও খোলা যাইতে পারে।


ছবি শেষ হইবার কিঞ্চিৎ পূর্বে 'পেট ব্যথা' বলিয়া পাংশুমুখে থাকা ভদ্রলোক আমাকে বলিলেন,''টয়লেটের গেটটা ঠিক কোনটা?'' নিশ্চিত না হইয়াই কোনো এক গেটের দিকে আঙ্গুল তুলিয়া দিলাম।ভদ্রলোক উর্ধ্ব''স্পীডে'' সম্ভবত ভুল নির্দেশনায় দৌড়াইলেন।পাশের বোরখাওয়ালী হয়তো ফোনে ধরা পড়িয়াছেন,ছবি শেষ হইবার মিনিটখানেক পূর্বে উনাকে যেই ''স্পীডে'' বোরখা পড়িয়া হলত্যাগ করিতে দেখিলাম,ঐ 'স্পীডে' আমি কাউকে কাপড় খুলিতেও দেখিনাই।


_____________________________________________________________
একই ছবি নিয়ে ব্লগে প্রকাশিত অন্য লেখাগুলোও দেখতে পারেন-

*দ্য স্পিড: গন্ডির ভেতরে গতিময়- দারাশিকো
*গতি-দ্য স্পীড। বাংলা চলচ্চিত্রের এক নতুন দিগন্ত!-কবুতর মিয়া
*দ্যা স্পিড (ইশপিড) - একটি নির্মল বিনোদনমূলক ছায়াছবি-সাজিদ ঢাকা
*দেখে আসলাম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র 'দ্যা স্পীড' - (চলচ্চিত্র রিভিউ)-রফিকুল ইসলাম তনি
*ইশটপ!!!!! ইপ ইউ ডিড নট উয়াচ ইশপিড - দ্যা গতি-বিষাক্ত মানুষ(আমরা বন্ধু ব্লগ)
*Movie review: The Speed


_______________________________________________________________
***একই সাথে নিজস্ব ব্লগস্পটে প্রকাশিত।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১২ রাত ৯:৪৯
২২৯টি মন্তব্য ২২৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×