কিছুদিন আগে জয়া আহসান তার সাক্ষাৎকারে বলেছিল যে, তিনি ঢাকাতেই থাকেন,ঢাকাই তার প্রথম নিবাস। তবে কলকাতা ভাল লাগে। কেনো? সে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন আমাদের থেকে কলকাতার মানুষজন পুরোনো ঐতিহ্য সম্পর্কে আগ্রহী, সচেতন ও ভালবাসে। পশ্চিমবঙ্গে এখনো বহু পুরোনো বাড়ি আছে যেগুলো ওরা খুব নান্দনিক সজ্জায় সাজিয়েছে। এজন্য ঢাকার থেকে কলকাতায় তার ভালো লাগে।
এবার আসি আমাদের এখানকার পরিস্থিতি। চোখের সামনে, বাসার পাশে আমরা যারা ঢাকায় থাকি, তারা ক'জন নান্দনিক কিছু দেখতে পান? ক'টা গাছ? রমনা আর চন্দ্রিমা উদ্যান বাদ দিলে ঢাকায় কি থাকে? ২০১৫ সালে রমনায় যতগুলো গাছ ছিল এখন তার ৪০% নেই। রাস্তা বড় করেছে, সুন্দর করেছে, লেকের পাশে রেলিঙের দেয়াল করেছে। যেই উদ্যানটা গাছের ছায়া ঘেরা নিবিড় ছিল, এখন সেখানে গাছই নেই। হাটার জন্য অতবড় রাস্তার কি দরকার? ঘাসগুলো মরে যাচ্ছে। গাছের ছায়া পড়েনা কোথাও। আমাদের জাতিগত স্বভাব আমরা গাছ দেখতে পারিনা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তো গাছ নেই বল্লেই চলে। এগুলো একধরনের আক্ষেপ হয়ে দাড়িয়েছে।
সাহিত্য পড়া ছাত্ররা ইঞ্জিনিয়ার হয়না বোধয়। যার কারনে গাছের এমন উজাড় দশা। সাহিত্যের সাথে যার সম্পর্ক ঘটে তার প্রকৃতির সাথে একটা আত্মিক যোগাযোগ তৈরি হয়। একটা দূর্বা ঘাসের লতিকার জন্যও তার বড্ড মায়া হয়।
ফেসবুক থেকে ছবি দুইটি নেয়া। এরকমটা যদি একই স্থানের চিত্র হয় সেক্ষেত্রে অতি গরম বিষয়টা আপনার মেনে নিতে হবে চোখ বন্ধ করে। প্রকৃতি এমন বিষয় যে আপনাকে অফুরন্ত দেবে কিন্তু আপনি যতই ক্ষতি করবেন ততই আপনার প্রয়োজন বাড়বে এবং কৃত্রিম সৃষ্ট বস্তুর প্রতি আগ্রহী হবেন। ফলাফল স্বরুপ আপনার টেবিলে প্লাস্টিকের ফুলগাছ শোভা পাবে এবং নিজেকে একজন প্রকৃতি প্রেমী হিসেবে দাবী করবেন।
আমার বন্ধুর এক ওস্তাদ বলেছিল "টাকা দিয়ে জৌলুশ কেনা যাবে কিন্তু রুচিবোধ নয়।" কথা মনে ধরেছিল। আমাদের নব্য ধনী সম্প্রদায় প্লাস্টিকের ফুলদানিতে রঙ্গিন আলোর পসরা সাজিয়ে আনন্দ লাভ করে এবং বনের গাছ উজার করে জৌলুশ কিনে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:২২