প্রথম যেইদিন আমার বাবা আমারে শিখাইছিলো
কিভাবে মুরুব্বিদের পায়ে ধইরা সালাম করতে হয়
সেইদিন থেইকাই আমি এই কবিতাটা লিখতাসি।
সেইদিন থেইকা লিখতাছি যেইদিন ক্লাসের আর্ট টিচার
দেখাইসিলো নীল আর হলুদ রং মিল্যা সবুজ রং হয়।
যেইদিন জীবনে প্রথম দেখসিলাম কুয়াশা পড়তে,
যেইদিন প্রথম ঝিনুক কানে ধইরা শুনছিলাম সমুদ্রের গর্জন,
যেইদিন আম্মার বলা গল্প শুইনা রাতে ডরে ঘুমাইনাই,
সেইদিন থেইকাই এই কবিতা লেখা শুরু করছিলাম।
একদিন একটা চড়ুই পাখি ঘরে ঢুইকা ফ্যনের বাড়ি খাইয়া মইরা গেলো,
একদিন উকি দিয়া দেখলাম কাজের মাইয়াটা আপুর লিপস্টিক ঠোঁটে ডলতাসে লুকাইয়া,
একদিন বাজার থেইকা আনা কই মাছের ঘাই খাইলাম, রক্তারক্তি ব্যাপার,
একদিন দেখলাম বৃষ্টির পানির সাথে ছোট ছোট শিল পড়তাছে আর মানুষের সে কি দৌড়,
আমি কইলাম কবিতাটা লেখা থামাইনাই।
কবিতা লেখা চলতেছিলো যখন প্রথম প্রেমিকারে চুমু খাইসিলাম,
যেইদিন প্রথম রাত কাটাইলাম তার সাথে আমি কবিতা লেখতেসিলাম,
যেদিন ফকির বইলা গালি দিয়া সে আমারে ছাইড়া গেলো আমি কবিতা লেখতেছিলাম,
যেদিন বাসা থেইকা ফোন কইরা জানাইলো আব্বা আর নাই আমি কবিতা লেখতেসিলাম।
কবিতা লিখছি যেইদিন প্রথম রাতের ঢাকার পথে একা একা হাঁটলাম,
কবিতা লেখছি যেদিন প্রথম টান দিলাম গাঞ্জায়, দিলাম মদের গ্লাসে চুমুক,
কবিতা লেখছি যেদিন বন্ধুদের সাথে বেড়াইতে গেলাম রাঙামাটি-সাজেক,
কবিতা লেখছি যেদিন বুঝলাম আমি আসলে অপদার্থ একটা, পরিবারের ব্ল্যাক শীপ।
প্রথম যেদিন বসন্ত দেখছি সেদিন থেইকাই কবিতা লেখা শুরু হইছিল,
যেদিন গাছ থেকে সবুজ পাতাগুলা ঝইড়া যাইতে দেখসি একে একে,
রাস্তার ঐপাশের খালি জায়গাটায় যেদিন থেইকা সাত-তালা দালান উঠলো,
যেদিন বিয়ে হইয়া আপু হইয়া গেলো অন্য পরিবারের বউ,
যেদিন নিজে চইলা গেলাম পেটের দায়ে দেশের আরেক মাথায়,
কবিতা লেখা শুরু হইছিল যেদিন একজনরে দেইখা মনে হইলো এইবার থামা যায়।
তারপর একদিন, বয়স যখন যোগ হইছে আর তিন কিংবা চার,
জন্ম নিলো অখ্যাত এক হাসপাতালে যখন সন্তান আমার,
আমি হয়তো জীবনে প্রথমবার কলম-খাতা সরাইয়া রাইখা,
অন্যরকম সেই সৃষ্টিটারে হাতে নিয়া আদরে মাইখা,
ভাবলাম আমার এখন এরেই শিখাইয়া যাইতে হইবো কিভাবে কবিতা লেখা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:১৭