নতুন বছরে কি বাজিকরদের হাত থেকে মুক্তি মিলবে?
ওলি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ চৌধুরী
বছর শেষ হয়েছে দু'টি বিতর্ক দিয়ে। একটি বিতর্কের বিষয়বস্তু হচ্ছেন প্রধানত: গ্রামীন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেল লরিয়েট ড: ইউনুস। অপর বিতর্ক টি্আইবি'র দূর্নীতি-বিষয়ক জরিপ নিয়ে। সরকারের কিছু কিছু কর্তাব্যক্তী এই সুযোগে দু'টি প্রতিষ্ঠানকেই একহাত দেখে নেওয়ার প্রয়াস পেয়েছেন।
ড: ইউনুস মনে হয় নোবেল পেয়ে একটি অপরাধই করে ফেলেছেন। তাই নরওয়ের টেলিভিশনে একটি প্রতিবেদন প্রচার হওয়ার পরপরই এক শ্রেণীর লোক বিনা তদন্তে প্রফেসর ইউনুসের উপর ঝাপিয়ে পড়ার প্রয়াস পায়। এই তালিকায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরপরই অনতিবিলম্বে যোগ দেন।
ট্যান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল যখন দূর্নীতি নিয়ে তার জরিপ প্রকাশ করে, তখনও সরকার এবং প্রশাসনযন্ত্র থেকে হা-রে-রে রব উঠে।ট্যান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং নির্বাহী পরিচালককে আসামী করে বিভিন্ন জায়গায় মামলা দায়েরের হিড়িক পড়ে। কি সেই হিড়িক! এক আদালত থেকে এমনকি তাদের নামে পরোয়ানাও বেরিয়ে যায়।
অবশ্য উদ্যম থেমে যায় অচিরেই। বিচারক হয়তো বুঝতে পারেন যে টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডে ক্ষমতাশীনদের ঘনিষ্ট লোকজনও আছেন। শেষে পরোয়ানা জারির ফল হিতে-বিপরীত হতে পারে। পিছটান দেন বিচারক, বিকেলেই মামলা খারিজ করে দেন তিনি। এই ছোট্র ঘটনাই বিচার বিভাগ নিয়ে আকলমন্দ কে লিয়ে ইশারা!
টিআইবি ২৩ ডিসেম্বর সেবা খাতে দুর্নীতিসংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলেছে, দেশের ১৩টি সেবা খাতের মধ্যে বিচার বিভাগে গিয়ে সবচেয়ে বেশি হয়রানি, অনিয়ম, ঘুষ দেওয়া তথা দুর্নীতির শিকার হয়েছে সাধারণ মানুষ। ২০০৯-১০ সালে বিচারপ্রার্থীদের ৮৮ শতাংশ শুনানির সময় নির্ধারণ থেকে শুরু করে নথিপত্র গায়েব, উৎকোচ দেওয়াসহ নানা অনিয়মের শিকার হয়েছে। নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত—বিচার বিভাগের প্রতিটি স্তরে ঘুষের দৃষ্টান্ত থাকলেও জরিপের শীর্ষে রয়েছেন উচ্চ আদালত। ২০০৯ সালের ৯ জুন থেকে এ বছরের ২০ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিভাগীয় শহর ও গ্রামাঞ্চলের ছয় হাজার খানার (পরিবার) ওপর পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০১০’ প্রকাশ করা হয়।
অবশ্য টিআইবি'র রিপোর্ট প্রকাশের আগেই অক্টোবরে "State of the Governance in Bangladesh 2009 " প্রকাশিত হয়। এর প্রকাশনা উংসবে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের মন্তব্য ব্যপক আলোচনার জন্ম দেয়। তার ভাষ্য যা পরদিন সমকালে প্রকাশিত হয় তাতে তিনি বলেন, "দেশ এখন বাজিকরদের হাতে। ভর্তিবাজি, নিয়োগবাজি, টেন্ডারবাজি, দলবাজি, মতলববাজির রকমফের দেখে মানুষ দিশেহারা"।
২০১১ সালে কি পরিস্থিতির উন্নতি হবে?
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ৭:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




