somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুঁই

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জ্বি, বলেন আপনার সমস্যা কি?
- স্যার, ওর শরীর থেকে সুইঁ বের হয়।
- কি বললেন ? আবার বলেন!
-জ্বি মানে, ডাক্তার সাহেব...। বলেই লোকটা খুক্‌ খুক্ করে দুইবার কেশে নিল। সুর্দীর্ঘ ইতিহাস বলার পূর্ব প্রস্তুতি। আমি একটু বিরক্ত হলাম। আমার অভিজ্ঞতা বলে, দুইবার কাশি দিয়ে যে ইতিহাস শুরু হয় তা পাকিস্তান আমল থেকে শুরু হয়।
মাথা ব্যথার রোগীকে হয়ত প্রশ্ন করলাম “সমস্যাটা কবে থেকে”?
রোগী একটু কেশে নিয়ে শুরু করল, “হইছে কি স্যার, তহন আছিল আইয়ুব খানের আমল। নিয়ম কানুনের হেবি কড়াকড়ি। আমার বিবিরে নিয়া ট্রেনে কইরা যাব জামালপুর। ভুল কইরা বিবির সাথে সাথে নিজেও উইঠা পড়লাম লেডিস কম্পার্টমেন্টে ...”। অধিকাংশ রোগীরাই তাদের রোগের ইতিহাস এভাবেই বলতে পছন্দ করে। মূল প্রসংগে আসতে তাদের অনেক সময় লাগে। তখন লিডিং কোশ্চেন করে তাদের লাইনে আনতে হয়। কিছু রোগী আবার একটু বেশী সরেস। লিডিং কোশ্চেনগুলো গায়ে মাখে না। বরং প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলতে থাকে “তারপর শুনেন না স্যার, পুরাডা বলি। না বললে আপনি বুঝবেন না”। মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগে তবে প্রকাশ করিনা। ডাক্তারদের বিরক্ত হলে চলে না।

যাই হোক, যে গল্পটা বলছিলাম সেটা বলি। চেহারায় ‘বিরক্ত হচ্ছি না’ ভাবটা এনে আমি তাকালাম লোকটার দিকে। লোকটার বয়স চল্লিশ হবে। পাশে বসা একটি মেয়ে, বয়স ষোল-সতের। মেয়েটির দৃষ্টি টেবিলের নিচে। বুঝলাম মেয়েটি রোগী। লোকটি অভিভাবক- আমরা বলি এ্যটেনডেন্ট। এ্যটেনডেন্ট যখন সমস্যা বর্ণনা করে তখন পরিস্থিতি হয় আরো ভয়াবহ। আমি যথাসম্ভব শান্ত স্বরে বললাম:

- যেটা বলছিলেন ... আবার বলেন!
- স্যার ওর শরীর থেকে সুইঁ বের হয়।
আমি খুবই অবাক হলাম। এরকম কথা কখনো শুনিনি। শোনার কথাও না। চিকিৎসা বিজ্ঞানে অলৌকিকতার জায়গা নেই। বিষয়টা ভালো করে বুঝতে হবে।
- আপনি ওর কে হন?
- আমি ওর মামা, ওর মার বড় ভাই।
- আপনি নিজে দেখেছেন সুঁই বের হতে?
- শুধু আমি না সবাই দেখেছে। চাইলে আপনি ও দেখতে পারেন স্যার। হীরা দেখাও তো সুঁইগুলো।


হীরা তার কোলে রাখা ভ্যানেটিব্যাগ থেকে কথিত সুঁই গুলো বের করছে। আমি ততক্ষণে ওর নাম লিখে ফেললাম, হীরা। হীরা গজ কাপড়ে মোড়ানো চারটা সুঁই রাখলো আমার টেবিলে। আমি সুঁই গুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলাম। দুটোতে আংশিক জং ধরেছে।
-এগুলো কতদিন আগে বের হয়েছে?
-এই দুইটা একবছর, এই দুইটা ছয়মাস।
হীরা এই প্রথম মুখ খুললো। গলার স্বর স্বাভাবিকের চেয়ে একটু নিচু। দৃষ্টি আগের মতোই নিচের দিকে।
-কিন্তু এগুলো কি সত্যিই ওর শরীর থেকে বের হয়েছে?
-আমি বুঝি স্যার এটা বিশ্বাস করা কঠিন। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি বিশ্বাস না করেও উপায় নেই। নিজের চোখে দেখা। সুঁই পুরোপুরি বের হয় না। চামড়ার নিচে এসে জমা হয়। মুখটা যখন একটু বের হওয়ার চেষ্টা করে তখন খুব ব্যথা হয়। তখন একজন সার্জারীর ডাক্তার দিয়ে আমরা সুঁই গুলো বের করি। এইযে স্যার ডাক্তার সাহেব এর কার্ড। উনি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে আছেন। ডাক্তার সাহেব আমার ওয়াইফের সম্পর্কে চাচাতো ভাই। খুব ভালো মানুষ। উনিই স্যার আপনার কথা বলেছেন।
এ পযন্ত কয়বার অপারেশন হয়েছে?
-দুইবার। এই যে স্যার লাস্ট সুঁইটা এখান থেকে বের হয়েছে। লোকটা মেয়েটার বামচোখের নিচটা আংগুল দিয়ে দেখালো।
-ওর মা বাবা কোথায়?
-ওর বাবা নেই। ওরা ময়মনসিং থাকে। ময়মনসিং শহরেই ওদের বাড়ী। ওরা মোট তিন বোন, বড়টার বিয়ে হয়েছে। দ্বিতীয় বোনটা বাইরে ওয়েটিং রুমে বসে আছে। ওদের বাবা মারা যাওয়ার পর গার্জেন বলতে স্যার আমিই। আমি মোহাম্মদপুর থাকি। একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে ছোটখাটো জব্‌ করি। স্যার আমি গরিব মানুষ। ওর মা স্বামী হারা অসহায় মহিলা। স্কুলের মাষ্টারি করে মেয়েগুলোকে বড় করেছে। এখন এমন এক সমস্যা হল স্যার, কাউকে বলতেও পারিনা।

আমি প্রত্যেকটা কথাই মনোযোগ দিয়ে শুনলাম। অনেক সময় এরকম হয়, অল্পবয়সী মেয়েরা পরিবারে তার গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য এরকম উদ্ভট দু’একটা কথা প্রচার করে। কিন্তু সমস্যা হলো মেয়েটির মামা বলছে সে নিজেও দেখেছে সুঁই বের হতে। সার্জন পর্যন্ত ও গিয়েছে। এত কিছু অবিশ্বাস করা কঠিন। মেয়েটির মামাকে আমার যথেষ্ঠ দায়িত্বশীল এবং আন্তরিকই মনে হচ্ছে।
আমি একটু থেমে জিজ্ঞেস করলাম।
-আপনার নাম?
-স্যার, আফজালুর রহমান মৃধা।
-শোনেন, মৃধা সাহেব। সুঁই একটা ধাতব পদার্থ। সুঁই লোহা অর্থাৎ আয়রনের তৈরী। মানুষের শরীরে এত আয়রন নেই যে তা দিয়ে একের পর এক সুঁই তৈরী হতে পারে। বরং শরীরে আয়রনের ঘাটতি নিয়ে রোগীরা ডাক্তারের কাছে আসে। মানুষের শরীরে সুইঁ তৈরী হওয়ার মতো কোন ব্যবস্থাও নেই। মানবদেহ সুঁইয়ের মত ধারালো কোন জিনিস তৈরী করতে পারে না। মানব শরীর যা কিছু তৈরী করে তার সবই মসৃণ।
মৃধা সাহেব আমার কথা মনে হল মন দিয়ে শুনলেন। একটু থেমে বললেন।
-স্যার আমি বি.এস.সি পাশ। মেট্রিক থেকেই পিওর সাইন্স নিয়ে লেখাপড়া করেছি। আমি বুঝি বিষয়গুলো। কিন্তু স্যার, এই সুঁই তাহলে কোত্থেকে আসবে। ওর শরীরের চামড়া কেটে এগুলো বের করা হয়েছে। এর ব্যাখ্যা কি?

আমি আর যুক্তি তর্কে গেলাম না। বুঝলাম ওরা আমার কাছে ডাক্তার সুলভ একটা সমাধান চাচ্ছে। তাছাড়া আমি নিজেও কিছুটা কনফিউজড। সুঁই যদি শরীরের ভেতর থেকে না-ই বের হয় তাহলে সুঁই কোত্থেকে এল?
বুঝে গেলাম এর পুরোপুরি গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে হলে আমাকে আরেকটু প্রস্তুত হতে হবে।
- দু’একদিনের মধ্যে বের হবে এরকম কোন সুঁই কি আছে শরীরে?
- সেই জন্যইতো আসা। হীরা দেখাওতো।
হীরা জামার হাতা তুলে দেখালো। উর্দ্ধ বাহুর ভেতরের দিকের চামড়াটা ফুলে উঠেছে। যেন কিছুক্ষণের মধ্যেই বের হবে সুইঁটা। শরীরের নিয়মই তাই- সে তার ভেতরে কোন ‘ফরেন বডি’ সহ্য করেনা।
আমি জিজ্ঞেস করলাম
-আর কোথাও?
মেয়েটা কামিজের ওপর দিয়ে নাভির পাশটা আংগুল দিয়ে দেখাল। গলার নিচেও দেখাল। এক্সামিনেশন টেবিলে মেয়েটাকে শুতে বললাম। কাড়টা সরিয়ে চামড়াটা পরীক্ষা করলাম। চামড়ার নিচে সত্যি সত্যি সুঁই। আমি প্রেসক্রিপশনে এক্স-রে করার কথা লিখে দিলাম। রিপোর্টসহ পরদিন সন্ধায় দেখা করবে। রাতে বাসায় ফিরে সাধারণত টিভি নিয়ে বসি, টিভিতে অর্থহীন কিছু অনুষ্ঠান হয়। সেগুলো দেখার চেষ্টা করি। আজ এসবের কিছুই করলাম না। বাসায় এসেই আমি সাইকিয়াট্রির বই নিয়ে বসলাম। আমি মেডিসিনের লোক। সাইকিয়াট্রি আমার বিশেষ পড়া হয়না।

পরদিন চেম্বারে যখন ঢুকলাম প্রথম সিরিয়ালেই ‘হীরা’। এক্স-রে করা হয়েছে। ভিউ বক্সের লাইট জ্বালালাম।

সত্যি সত্যিই সুঁইগুলো দেখা যাচ্ছে চামড়ার নিচে। স্পষ্ট ধাতব সুঁইয়ের ছায়া। বাজারে যে, সুঁই পাওয়া যায়, যা দিয়ে কাঁথা সেলাই হয়, রিপু করা হয় সেই সুঁই। সুঁইয়ের পেছনে সুতা পরাবার ছিদ্র। সবই বোঝা যাচ্ছে এক্সরের ছবিতে।
আমি সিদ্ধান্ত নিলাম সবার সাথে আলাদাভাবে কথা বলব। হীরা’র মামীর সাথে যে কথা হল তার সারমর্ম এই, “হীরা খুবই নরম স্বভাবের একটি মেয়ে। চুপচাপ থাকে, কারো সাতে-পাঁচে নেই। বাড়ীতে মেহমান এলে সবাই হৈচৈ, গল্পগুজবে মেতে উঠে হীরা এসবের মধ্যে নেই। পড়াশুনায় মোটামুটি ভাল। তবে সুঁই সংক্রান্ত অসুখের পর থেকে তার পড়াশুনায় অবনতি।”
হীরার মামী চেয়েছিলেন আমি যেন তার ‘হোল বডি সিটি স্ক্যান’ করি। তবে আমি রজি হইনি বলে তিনি একটু মনক্ষুন্ন।
হীরার বোনের কাছেও প্রায়ই একই রকম তথ্য পেলাম। তবে আমার বিশেষ কিছু প্রশ্নের উত্তরে সে জানালো হীরা বাথরুমে অনেক সময় ধরে থাকে। একবার গোসলে ঢুকলে একঘন্টা। হীরা গান শোনে প্রচুর। টিভি অল্প স্বল্প দেখে।
আমার যা বোঝার তার অনেকটাই বোঝা হয়েছে। এখন হীরার সাথে আলাদা করে কথা বলতে হবে। হীরাকে রম্নমে ডাকলাম। হীরা আমার মুখোমুখি বসা। দৃষ্টি নিচের দিকে।
-হীরা আমার চোখের দিকে তাকাও।
হীরা আমার চোখের দিকে তাকায়। শান্ত, নির্লিপ্ত দৃষ্টি।
-কবে প্রথম তোমার শরীর থেকে সুইঁ বের হয়?
-২০০৬ এর ডিসেম্বরে।
-তুমি যে নিজেই তোমার শরীরে সুইঁ ঢোকাও এটা কেউ দেখতে পায়নি কোনদিন?
হীরা বিরক্ত চোখে আমার দিকে তাকাল। ভ্রুকুঁচকে বলল ‘কেউ কি নিজের গায়ে নিজে সুইঁ ফোটায়? আপনি পারবেন?’
আমি আর ও প্রসংগে গেলাম না। কথা অন্য দিকে ঘুরালাম। তার প্রিয়শিল্পী কে, বই পড়ে কিনা এইসব প্রশ্ন। প্রশ্নের উওরে তেমন কোন ক্লু নেই। শেষে প্রেম ট্রেম আছে কিনা সেই প্রশ্নে যাই।
হীরা খুব সহজ ভাবেই উওর দেয়, প্রেম নাই।
-অতীতে ছিল কি?
-ছিল। ভেঙ্গে গেছে। (হীরা কথা গুলো বলে যন্ত্রের মতো)
-কতদিনের প্রেম?
-ছয় মাস।
-কবে থেকে সর্ম্পক ভেঙ্গে গেছে?
-২০০৬ এর অক্টোবরে।
ভেঙ্গে যাওয়ার পরে মন খারাপ হয়নি?
-নাহ্‌, ছেলেটা ভালো ছিল না।
-তো কি হয়েছে? ভালো তো বেসেছিলে। ভালোবাসা ভেঙ্গে গেছে। যাকে ভাল বাসলে, জানতে পারলে সে খারাপ, মন খারাপ হবে না?
-না, রাগ হয়েছিল।
-কেন?
-ও আমার সাথে এমন করল কেন?
-কি করল?
-ও একটা প্রতারক। ও আমার সাথে প্রতারনা করেছে।


হীরার কথা গুলোতে উত্তেজনা নেই। আর্শ্চযরকম শীতলতা ওর গলায়। তবে আমি ওর ভেতরের ক্ষরনগুলো বুঝতে পারি। আমি আর কথা বাড়াই না। হীরাকে বাইরে বসতে বলি। হীরার মামা-মামীকে ডাকি।
আপনি তো বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন। আপনি একটু লক্ষ্ করলেই বুঝবেন। এক্সরে ফিল্মটা দেখুন। আমি ভিউ বক্সের লাইট জ্বেলে দেই। “এখন বলুন সুই কি বের হয়, না ঢোকানো হয়?”
হীরার মামা মৃধা সাহেব কথাটা বুঝতে পারেন না।
-দেখুন সুইঁয়ের মুখটা অর্থাৎ ধারালো প্রান্তটা ভেতরে দিকে, সুতা পরাবার ছিদ্রটা বাইরের দিকে।
-হুম।
-তার মানে কি? সুইঁ আসলে ঢোকানো হয়।
-কে ঢোকাবে সুঁই?
-ও নিজেই ঢোকায়।
-অসম্ভব! নিজের গায়ে নিজে, কিভাবে সম্ভব! এটা হতে পারে না, স্যার। ‘অন্য কেউ ঢুকিয়ে দেয়’ এটা বললেও বিশ্বাস করা যায়। হীরার মামী এবার মুখ খোলে, “ জ্বিন টিনের কোন ব্যাপার থাকতে পারে, স্যার”।
-না, জ্বিনের কোন ব্যাপার নেই। এটা এক ধরনের মানসিক রোগ। এটাকে বলে ‘ফ্যাকটিশাস ডিজঅর্ডার’। এ রোগের একটা বৈশিষ্ট্য হল, ‘টেনডেনসী অব সেলফ হার্‌ম’, নিজেই নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা। ও যে নিজেই কাজটা করে তার একটা প্রমাণ হলো কোন সুইঁ ওর পিঠে ঢোকেনি, শরীরের এমন সব জায়গায় ঢুকেছে যেগুলোতে ওর নিজের হাত সহজেই যায়।
হীরার মামা-মামী দুজনেই চুপ হয়ে যান।
আমি বললাম ‘‘আমি মেডিসিনের ডাক্তার। তারপরও বিষয়টাতে কৌতুহল জেগেছিল বলে আমি শুরুতেই আপনাদের রেফার করিনি। পুরো বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করেছি। তাছাড়া শুরুতেই মানসিক রোগের ডাক্তারের কাছে পাঠালে আপনারা হয়ত বা বিরক্ত হতেন, রাজি হতেন না। তাই বিষয়টা আপনাদের কাছে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি।”
যাই হোক। আগে ওর এবারকার সুঁই গুলো বের করার ব্যবস্থা করি।
পাশের চেয়ারেই সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ইমতিয়াজ আছেন। আমি ওনাকে বলে দিচ্ছি। আগে সুঁই গুলো বের হোক। তারপর একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করব। ওর সাইকোথেরাপী দরকার।
-স্যার ওর এই অসুখ কেন হলো? কারণ কি?
-সব কারন আসলে আমাদের জানা হয় না। জানার দরকারও নেই। শুধু এটুকু জেনে রাখুন প্রচন্ড মানসিক আঘাত ওকে ভেতরে ভেতরে অনেক খানি অসুস্থ করে তুলেছে। হয়ত একই ধরনের আঘাত আমরা অনেক সময় খুব সহজ ভাবে নেই। অথবা আঘাত পেলেও আস্তে আস্তে মানিয়ে নেই, ও পারে নি। তবে আমাদের চিকিৎসা শাস্ত্র বলে, ওর যে অসুখ ‘ ফ্যাকটিশাস ডিজঅর্ডার’, এই অসুখের রোগীরা আরো ভয়ংকর সব কাজ করে। ইন্টারনেটে দেখলাম, আমেরিকার এক লোক নিজের এক চোখ নিজেই কাটা চামচ দিয়ে গেলে ফেলেছে। কী ভয়ংকর!
হীরার মামা-মামী আমার দিকে অবাক হয়ে তাকায়।


সেদিন চেম্বার শেষ করে আমি গাড়ী নিয়ে বেরিয়ে পড়ি উত্তরার দিকে। ড্রাইভারকে আগেই ছেড়ে দেই। নিজে গাড়ী চালিয়ে যাই উত্তরা ছেড়ে আশুলিয়ার রাস্তায়। গাড়ীর সিডি প্লেয়ারে গান বাজছিল। আমি গান বন্ধ করে দেই। নীরবতা ভাল লাগে। গাড়ীর এসি বন্ধ করে জানালার কাঁচগুলো নামিয়ে দেই। হালকা ঠান্ডা বাতাস আমার মনকে ভিজিয়ে দেয়। হীরার কথা মনে হয়। পাথরের মতো অভিব্যাক্তিহীন মুখে শীতল কন্ঠের উচ্চারণ ‘ ও আমার সাথে এমন করল কেন’!
মানুষের মন বড়ই বিচিত্র, বড়ই রহস্যময়...।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১২:১১
১১টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×