৩ নভেম্বর ২য় মানবতার মৃত্যু ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ এরপর । আজ জেলহত্যা দিবস । জাতীয় চার নেতার সম্মানে আমার ক্ষুদ্র একটি লেখা ...
১৯৪৭ সালে ধর্মভিত্তিক জাতীয়তার মাধ্যমে ভারত ভাগ হয়েছিল। সৃষ্টি হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্র। বাস্তবে এই দ্বিজাতিতত্ত্ব এদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে পারে নি। বরং পাকিস্তান নামে যে রাষ্ট্রের জন্ম হয় তারই দুটি অংশ পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান সৃষ্টি হয়। পশ্চিম পাকিস্তানীরা পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের উপরে সীমাহীন শোষণ চালায় ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে শোষিত বাংলাদেশিরা ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে নতুন একটি দেশের জন্ম দেন যার নাম বাংলাদেশ।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার ঠিক আগ মূহুর্তে পাকিস্তানী সামরিক জান্তারা বুঝতে পেরেছিলেন এদেশের মানুষকে আর শোষণ করা যাবে না। ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল বদর, আল-শামসরা হত্যা করেন এদেশের বুদ্ধিজীবী দের। এটি ছিল জাতিকে মেধাশূণ্য করার নীল নকশা। পৃথিবীর ইতিহাসে এই বর্বর ঘটনা সবাইকে স্তম্ভিত করেছিল।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জন্য আরেকটি শোকবহ দিন। ঐ দিন স্বাধীনতা বিরোধী কুচক্রীরা স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেন। বাংলাদেশকে অভিভাবক শূণ্য করেন। এরপর সামরিক জান্তারা আবার ফিরে আসেন তবে আর পাকিস্তানী নাম নিয়ে নয় পাকিস্তানী প্রেতাত্মা হিসেবে। স্বাধীন বাংলাদেশের বুকে ক্রুশবিদ্ধ করেন এই প্রেতাত্মারা।
স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি কাজে ছায়ার মতো ছিলেন জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, এম মনসুর আলী এবং এইচএম কামরুজ্জামান। এই চারজন ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। ১৫ আগস্টের পর এদেশের বুকে আরেকবার প্রেতাত্মারা ক্রুশবিদ্ধ করেন ৩ নভেম্বর, ১৯৭৫। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরিন থাকা অবস্থায় এই মহান জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বুকে কলঙ্ক তিলক একে দেন প্রেতাত্মারা। বাংলাদেশকে আরেকবার পিছিয়ে দেন।
ঘাতকরা বাংলাদেশ থেকে স্বাধীনতা মুক্তিকামী স্বপ্নদ্রষ্টাদের চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেবার জন্য যে রক্তের হলি খেলা খেলে গেছে জাতি আজ অবধি সে শূণ্যতা পূরণ করতে পারে নি । অভিশাপ দিচ্ছি তাদের যারা এই কূ সংগঠনের পিছে নটের ভূমিকায় ছিলেন । কৃতজ্ঞতা তাদের প্রতি যারা বাঙালির এই বীর সন্তানদের অবদান স্বীকার করেন । হে বীর ! তোমাদের মৃত্যুতে আমরা ভীত নয় আমরা গর্বিত তোমাদের মত নির্ভীক দেশপ্রেমিক পূর্বপুরুষ পেয়ে ।
তোমাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৩