পার্কিং লটে গাড়ি টা পার্ক করে দ্রুত পায়ে লিফটের কাছে এসে... কি একটা মনে পরতেই স্পর্শ আবার ফিরে গেল গাড়ির কাছে...
একটু পরই ফিরে এল হাতে হালকা নীল র্যাপিং পেপারে মোড়ানো একটা বাক্স নিয়ে...বাক্সের উপর গোটা গোটা অক্ষরে লেখা " শুভ জন্মদিন অধরা "
নীল রং টা ভিষন পছন্দ অধরার.. নীল এর পরিবর্তে লাল অথবা রুপোলী চকমকে কাগজে মোড়ালে ঠিক বলত..."তোমার না রুচি বলতে কিছু নেই...কি সব গিফ্ট এনেছ তা তো জানিই....একটা সুন্দর র্যাপিং পেপার ও কি পেলে না?"
আনমনেই হাসলো স্পর্শ...
বাহিরে মেঘ কালো করেছে...অন্ধকার হয়ে আছে বসার ঘরটা ...
বিশাল জানালা টা খুলে দিতেই ঝংকার তুলল জানালার পাশে ঝুলন্ত উইন্ড চাইম টা...অধরার বেশ পছন্দের জিনিস....অধরার রুমের জানালার পাশে ছিল এমন একটা....সে যখন ফোনে কথা বলত তখন সবসময় পেছনে টুংটাং করে শব্দ হত আর তার তালে তালে নেঁচে নেঁচে কথা বলত অধরা।
বাহিরে টুপ টাপ করে বৃষ্টি শুরু হয়েছে...কফির মগ হাতে স্পর্শ চলে এল "জল রুম" এ...নাম টা আজিব বটে...এটাও অধরার সৃষ্টি...অর্নবের এর কোনো একটা গানের লাইন ছিল "বৃষ্টি দিয়ে ছাঁদ বানিয়ে শুই"...ব্যাস এই গান শুনেই তার মাথায় এই পাগলামি চাপল তার বৃষ্টির ছাদ চাই যেটার নিচে কি না শোয়া যায়....! নিজেই ভেবে ভেবে আবিষ্কার করল কাঁচ দিয়ে ছাদ বানালেই বৃষ্টির ছাদ পাওয়া সম্ভব....
এমন একটা রুম বানাতে কতই না কাঠ খড় পোড়াতে হয়েছে স্পর্শের...তবুও অধরার আবদার বলে কথা !
কাচের স্লাইডিং ডোর টা খোলা...বৃষ্টির ছাট এসে মুখে লাগছে ...তবুও ঠায় দাড়িয়ে আছে স্পর্শ...
বৃষ্টি হলেই যেন মন স্মৃতির যাবর কাটতে শুরু করে..কতদিন আগের কথা....অথচ মনে হয় এই বুঝি দিন দুই গেল একসাথে দুজন ভিজেছে বৃষ্টি তে ....ভিজে জর ও বাধিয়েছে বটে...
সেইবার ও অধরার জন্মদিন এর দিন বৃষ্টি হচ্ছিল....একটা রুপোর নুপুর দিয়েছিল সে অধরা কে...তাই পরে তার বৃষ্টি তে ভেজা চাই...বৃষ্টির রিমঝিম এর মাঝে সেই নুপুরের রুনঝুন এখনও কানে বাজে ..
কিন্তু এখন আর নুপুর পরে বৃষ্টি তে ভিজে না অধরা..
বুকের ভেতর টা আবার হু হু করে ওঠে স্পর্শের....নিয়তি কেন এত নির্মম খেলা খেলে?
ভালোবাসার প্রতিটি বিন্দু দিয়ে যে মন্দির সে গড়ে তুলেছে... সেই মন্দিরে আজ দেবী ই নেই...সকলের ধরা ছোঁয়া ও স্পর্শের বাহিরে আজ সত্যিই সে অধরা!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




