somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুভ জন্মদিন মীম

০৩ রা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৪:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৌনে বারটা থেকে মীমের মোবাইল বন্ধ । ফেইসবুকের একাউন্টটাও ডিএকটিভেট করা । রাফিদ যেন ওর সাথে কোন রকম ভাবেই যোগাযোগ করতে না পারে সে জন্যই এই ব্যবস্থা করা । আজ একটা বিশেষ দিন তাই মীম খুব ভাল করে জানে রাফিদ ওর সাথে যোগাযোগ করতে চাইবে !!
কিন্তু মীম ওর সাথে যোগাযোগ করতে রাজি নয় ।
মোবাইল বন্ধ করার সাথে সাথে মীমের এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করছিল মনের ভিতর । ১২ টা বাজার সাথে সাথে অস্থিরতাটা যেন আরো বেড়ে গেল ।
বারবার মনে হচ্ছে রাফিদ নিশ্চই ওকে ফোনে ট্রাই করছে কিন্তু পাচ্ছে না । নিশ্চই ও অস্থির হয়ে উঠছে !!
মীমের মনে আছে একবার রাফিদের সাথে রাগ করে ও রাতে মোবাইল বন্ধ করে রেখেছিল । সকাল বেলা যখন মোবাইল ওপেন করল একটা মেসেজ আসল । মিসকল এলার্টের মেসেজ । রাফিদের মোবাইল থেকে ওর নাম্বরে ৭১১ বার ফোন এসেছে । মাই গড!!
তারপর থেকে মীম আর সাধারনত মোবাইল বন্ধ করে রাখে না । কিন্তু কয়দিন থেকেই রাফিদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখার চেষ্টা করছে । চেষ্টা করছে যেন ওকে ভুলে থাকা যায় । এর পেছনে অবশ্য ওর যুক্তিযুক্ত কারনও আছে ।
কিন্তু তবুও আজকের দিনটাতে মন কোন যুক্তি মানতে পারছে না । বার বার মনে হচ্ছে রাফিদ নিশ্চই আজ ফোন করবে । আজ যে ওর জন্মদিন এটা রাফিদের নিশ্চই মনে আছে । থাকতেই হবে !
তাহলে কি করবে ?
একবার কি ফোনটা ওপেন করবে ??
নাহ !!
মীম নিজের মন কে বোঝালো !!
এরকম ছেলেমানুষী আবেক কে প্রশ্রয় দেওয়ার কোন মানে হয় না । কি হবে যদি রাফিদের মুখ থেকে বার্ডে উইশ না শুনলে ??
কিছুই হবে না !!
মীম মনে করে এখনকার এই ছেলেমানুষী আবেক কে বা প্রশ্রয় দিয়ে সামনের দিনের কথা ভাবা উচিৎ !! হয়তো এখন ওর কষ্ট হবে কিন্তু পরে গিয়ে ওর জন্যই ভাল !! সবার জন্য ভাল !! রাফিদের জন্যও ভাল !
নাহ! কতবার মনে হয় যে এই ছেলেটার কথা ও একদমই ভাববে না তবুও ভাবনা চলে আসে !!
পুরো রাত ও অস্থিরতার মধ্যে পার করলো ।
সকাল বেলা যখন ও মোবাইল চালু করলো আবার ও আগের মত মিসকল এলার্টের মেসেজ এসে হাজির । অনেকেই ফোন করেছে ওকে কিন্তু ওর কাঙ্খিত নম্বরটা কোথায়ও পেল না !!
রাফিদ ফোন করে নি !!!!
রাফিদের মনে নেই !!
কয়েক জন মেসেজেও উইশ করেছে কিন্তু ওর নাম্বার থেকে কোন মেসেজ আসে নি !!
মীম তো এটাই চাচ্ছিল কিন্তু তাহলে ওর কেন এতো খারাপ লাগছে ??
মীম তো নিজেই রাফিদ কে বলেছিল ওর সাথে যোগাযোগ না করতে । রাফিদ সেদিন একটা কথাও বলেনি !
ওর কঠা গুলো চুপ করে শুনলো ! ওর যুক্তি গুলো মন তিয়া শুনলো । মেনেও নিল চুপচাপ ! কেবল যাওয়ার সময় বলেছিল যে ভাল থেকো !!

-এই কি ভাবছো এতো ?
অপুর কথায় মীম যেন বাস্তবে ফিরে এল ।
-কই না তো । এমন কিছু না ।
মীম নিজের বিষন্নতাকে আড়াল করতে একটু হাসার চেষ্টা করল । কিন্তু খুব বেশি লাভ হল না । অপু বলল
-তোমার চেহারা এমন লাগছে কেন ?
-সারা রাত ঘুম হয় নি অপু ।
-কেন ?
মীমের একটু খারাপই লাগল । অপুরও মনে নেই ওর জন্ম দিনের কথা । থাক মন খারাপ করে আর কি হবে । নিজেকে বোঝাল । যার মনে রাখার কথা তারই মনে নেই ।
-অপু আজ আমার জন্মদিন ।
-ও মাই গড ! থার্ড জুলাই আজ ? আমার একদম মনে নেই । আই ভেরি সরি ।
-না ঠিক আছে । কোন সমস্যা নাই ।
-সমস্যা নেই ? বন্ধু হয়ে বন্ধুর জন্মদিনের কথা মনে রাখবো না ? এটা কেমন কথা !
অপু আরো অনেক ভাবে সরি বলল । ভার্সিটির বন্ধুদের মধ্যে মোটামুটি অপুর সাথেই ওর কাছের রিলেশন । অপুর সাথে মোটামুটি সব কিছুই শেয়ার করে ও ।
রাতের কথা গুলো সব অপুকে বলে ফেলল । বলে ফেলার পর কেমন জানি হালকা লাগছিল ওর মনে । আসলে কাল রাত থেকেই মনের মধ্যে যে গুমট ভাবটা ছিল সেটা খানিকটা কেটে গেল ।

ভার্সিটি থেকে বাসায় এসেও মনটা খারাপই হয়ে রইল । রাফিদের কি একটুও মনে নেই ওর কথা ?
বারবার মনে হচ্ছিল আর চোখ ফেটে কান্না আসছিল । একটা বারও কি আসা যায় না ?
একটা বার কি ফোন করা যায় না ?
যতই মীম মানা করুক , এমন একটা দিনতো আর প্রতিদিন আসে না । তাহলে একটা বারকি ফোন করে উইশ করা যায় না ?

-আপু ?
জিম ঘরে ঢুকল । খুব গোপনে চোখের পানিটা আড়াল করে বলল
-কি বল !
-একটু ছাদে আসবা ?
-কেন ?
-চল না ? কতদিন তোমার সাথে ছাদে যাই না । চল প্লিজ চল ।
জিম এক প্রকার জোর করেই ওকে ছাদে নিয়ে গেল । মীম যখন ছাদে গেল দেখল ছাদের একটা বড় টেবিলের উপর একটা কেক রাখা ! খানিকটা অবাকই হল ।
কেক ! জিম কেকের ব্যাবস্থা করেছে !
কিন্তু কাছে গিয়ে কেকের উপর লেখাটা পড়ার পর ওর বুকের ভিতরটা ধক করে উঠল । ঠিক তখনই ওর পেছন থেকে কেউ ওকে খানিকটা জড়িয়ে ধরার মত করে ধরে কানের কাছে ফিসফিস করে বলল
-শুভ জন্মদিন পাখি !
মীম নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলেও ছাড়িয়ে নিতে পারলো না । অবশ্য ও যে খুব একটা চাইছিল তাও কিন্তু না । কিন্তু জিমের সামনে এরকম করাটা মোটেই ঠিক হচ্ছে না । মীম বলল
-ছাড়ো । জিম দেখছে ।
-দেখছে না । ও চলে গেছে ।
মীম কি বলবে ভেবে পেল না । খানিকক্ষন কেকের দিকেই তাকিয়ে থাকলো । রাফিদ বলল
-কেক পছন্দ হয় নি বাবু ?
-হয়েছে । কিন্তু তোমাকে না বলেছিলাম আমার সাথে যোগাযোগ না করতে !
-কই ? তুমি বলেছিলে ফোন না করতে । আমি তো ফোন দেই নি ।
মীম আবার বলল
-ছাড়ো আমাকে । কেউ চলে আসবে ।
রাফিদ ওকে ছেড়ে দিল । কিন্তু মীমের মন কেন ছেড়ে দিল । ওর বাহু বন্ধনে নিজেকে কি পরিমান পরিপূর্ণই না মনে হচ্চিল ।
এবার মীম নিজেই রাফিদকে জড়িয়ে ধরল । বলল
-আজ যদি তুমি না আসতে তাহলে আমি সত্যি সত্যিই মরে যেতাম ।
-ছিঃ । বাবু এমন কথা কখনও বলবা না । সব সময় মনে রাখবে তুমি আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ । তোমার সব কিছু আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ । আর তোমার জন্মদিনের কথা আমার মনে থাকবে না , তাই কি হয় !
মীম মনে মনে বলল সত্যিই তো !!
তাই কি হয় !!!
তারপর রাফিদ বলল
-তোমার জন্য একটা গিফট এনেছি । নিবা ?
- কি?
-তার আগে আমাকে কিছু দিতে হবে ?
-কি?
মীম রাফিদের চোখে দিকে তাকিয়েই বুঝে ফেলল ও কি চাচ্ছে !
-যাও !! ফাজিল ! এসব হবে না !!
-কেন না? একটা মাত্র ! কতদিন পর তোমাকে দেখলাম ! আর আজকে আমমি কোন কিছু শুনবো না !!
মীম খানিকটা লজ্জা পায় । :!> :!> :!>
কি করবে ও.................


গল্প এখানেই শেষ
বাকিটা নিজে নিজের মত কল্পনা করে নিন সবাই



আমার কথাঃ লেখাটা অনেক তাড়াহুড়া করে লেখা । মাথায় কোন প্লট আসছিল না । তবুও লিখলাম আমার ফ্রেন্ডটার জন্য ! আজ সত্যি আমার বন্ধুটার জন্ম দিন । আর গল্পের অপুর মত আমি সত্যি সত্যিই ওর জন্ম দিনের কথা ভুলে গেছিলাম ।
সবাই আমার এই তার জন্য একটু দোয়া করবেন !! সে যেন তার ভালবাসার মানুষটাকে নিয়ে খুব ভাল থাকে !

শুভ জন্মদিন মীম
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ৯:৫৯
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শিক্ষাঙ্গনে অপ্রীতিকর ঘটনার মুল দায় কুৎসিত দলীয় লেজুরভিত্তিক রাজনীতির

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫

সোস্যাল মিডিয়ার এই যুগে সবাই কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবি সাজতে চায়। কিন্ত কেউ কোন দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে রাজী নয়। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটা মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে । এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোমলমতিদের নিয়ে আমি কি বলেছিলাম?

লিখেছেন সোনাগাজী, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



আমি বলেছিলাম যে, এরা ভয়ংকর, এরা জাতিকে ধ্বংস করে দেবে।

ড: ইউনুসের সরকারকে, বিশেষ করে ড: ইউনুসকে এখন খুবই দরকার; উনাকে টিকিয়ে রাখতে হলে, কোমলমতিদের থামাতে হবে; কিভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিটিয়ে মানুষ মারার জাস্টিফিকেশন!

লিখেছেন সন্ধ্যা প্রদীপ, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩

এদেশে অনেক কিছুই সম্ভব।বর্তমান এলোমেলো সয়য়ে যা সম্ভব না বলে মনে করতাম তাও সম্ভব হতে দেখেছি।তবে মানুষকে কয়েক ঘন্টা ধরে পিটিয়ে মারাকে ইনিয়েবিনিয়ে জাস্টিফাই করা যায় এটা ভাবিনি।তাও মেরেছে কারা?
একদল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসন্ন দুর্গাপূজা নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত গভীর ষরযন্ত্র লিপ্ত। মুর্তি ভাঙ্গা,আগুন বিস্ফোরণ ও বোমা হামলা হতে পারে তাই দেশবাসীর সর্তক থাকুন।

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪৪


পিনাকী ভট্টাচার্য ও বললেন ভারত ভেঙ্গে ১০ টুকরা হওয়ার পথে। যাদের বিন্দুমাত্র ভূ-রাজনৈতিক জ্ঞান আছে তারা এই একই কথা বলবে৷ আমি সেটা পিনাকীর আগেই বলেছিলাম। যাদের দিল মে হিন্দুস্তান তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আহা তোফাজ্জল

লিখেছেন সামিয়া, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৪




মৃত্যু এখন এমনি সহজ
ভিডিও করতে করতে;
কথা বলতে বলতে
ভাত খেতে দিতে দিতে;
কনফিউজড করতে করতে
মেরে ফেলা যায়।

যার এই দুনিয়ায় কেউ অবশিষ্ট নাই
এমন একজনরে!
যে মানসিক ভারসাম্যহীন
এমন একজনরে!
যে ভবঘুরে দিক শূণ্য
এমন একজনরে!
যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×