somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাসে দাড়িয়ে থাকা মেয়েটির সাথে ব্লগার কাল্পনিক_ভালবাসার সম্ভাব্য প্রেমের গল্প !! ;)

০৮ ই মে, ২০১৪ দুপুর ২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি স্বপ্নবাজ অভি আর কাল্পনিক_ভালবাসা ভাই হাজির হলাম মিরপুর দশ নাম্বার । আমাদের লক্ষ্য আমিন ভাইকে দেখতে যাবো । দুপুর থেকেই আমিন ভাইয়ের শরীর খারাপ । আমাদের উদ্দেশ্য তার বাসায় যাবো । কিন্তু উনি নিজের বাসায় নেই । মামুন ভাইয়ের (*কুনোব্যাঙ*) বাসায় আছে । পরিচিত ভাইদের সাথে অনেক দিন দেখাও হয় না সেইটাও একটা কারন অবশ্য !
গোলচত্তর ক্রস করে ১২ নাম্বারের দিকে এলাম । এখান থেকে বাসে উঠতে হবে । আমাদের গন্তব্যের জন্য নির্দিষ্ট বাসে আমরা উঠে বসলাম । কয়েক মিনিট পরেই বাস ভরে উঠলো । আমরা নিজেদের ভিতর গল্পে ব্যস্ত তখনই দেখলাম একটা মেয়ে বাসে উঠল । দেখতে মাশাল্লাহ ! আমরা তিন জন নেহতই ভালা পুলা ! তাই একবার তাকিয়ে আবার নিজেদের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম ! এখন দয়া করে এটা জানতে চাইবেন না যে কি সেই ব্যস্ত কাজ ! যাই হোক মেয়েটি বাসে উঠেই ব্যস্ত হয়ে পুরো বাস টা একটু দেখে নিল । কোন ফাঁকা সিট আছে নাকি দেখার জন্য ।
কিন্তু মেয়েটির কপাল খারাপ, ততক্ষনে প্রতিটি সিট ভর্তি হয়ে গেছে । মেয়েটি কে দাঁড়িয়ে থাকতে হল ।
কি ? আমরা থাকতে একটি মেয়ে দাড়িয়ে থকবে আর আমরা সেইটা চেয়ে চেয়ে দেখবো ?
এমন টা তো হতেই পারে না ।
আগেই বলেছি আমরা ভালা পুলা ! আমি আর অভি বয়সে ছোট ! সেই হিসাবে আমাদের দুজনের একজন কেই উঠে সিট টা খালি করে দেওয়া উচিৎ ! আমরা থাকতে কাভা ভাই উঠে দাড়াবেন তা তো হয় না !
কাভা ভাই বসেছেন জানালার পাশে, তার পাশে অভি । আমি বসেছি এই পাশের সিটে । আমি দাড়াবো নাকি অভি দাঁড়াবে এটা ভাবছি এমন সময় দেখলাম অভি উঠে দাড়ালো । অভি নিজের পিঠটা একটু চুলকাচ্ছিল ! যেন কোন একটা খোঁচা খেয়েছে ! বুঝলাম পিছন দিয়ে কাভা ভাইয়ের একটা হালকা গুতা অভি খেয়েছে ।
অভি মিষ্টি হেসে মেয়েটিকে বলল
-আপু এখানে বসেন ।
-না না ঠিক আছে ।
মেয়েটাও কম ভদ্র না ! বসবেই না ! কিন্তু আমরাও তো ভালা পুলার দল ! অভি বলল
-না আপু । প্লিজ বসেন ।
দেখলাম মেয়েটি একটু মিস্টি হাসি দিয়ে বসে পড়লো । এদিকে কাভা ভাইয়ের মুখে একটা মিষ্টি হাসি দেখতে পেলাম, দুষ্টামি ভরা মিষ্টি হাসি ।

আমাদের যাত্রা শুরু হল । আমি অভি এক পাশে । অভি আমার সাথে গল্প করতে লাগলো দাঁড়িয়ে । এদিকে কাভা ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে দেখি ভাই মেয়েটির সাথে কথা বলা শুরু করে দিয়েছে । দুই মিনিটও হয় নাই এমন ভাবে কথা বলছে যেন কত দিনের চেনা !

আমরা তো সবাই জানি কাভা ভাইয়ের কথার মাঝে একটা আলাদা মাধুর্য আছে । তার উপর আজকে কাভা ভাই এসেছে একটা অন্য লুক নিয়ে । মুখে খোচা খোচা দাড়ি, কেমন একটা জেন্টেল জেন্টেল ভাবের সাথে একটা কিলার লুক । যে কোন মেয়ে দেখলে পাগল হয়ে যাবে নিশ্চিত । মেয়েটির চোখে ঠিক তেমনি একটা দৃষ্টি দেখতে পেলাম । কাভা ভাই এক নাগারে কথা বলে চলেছে আর মেয়েটি মুগ্ধ হয়ে সেই কথা শুনছে । আমি আর অভি দেখছি আর হাসছি মুখ লুকিয়ে ।

কিন্তু দেখতে দেখতে আমাদের গন্তব্য চলে এল । এখন নেমে যেতে হবে । বিরহের সময় চলে এসেছে কিন্তু আমাদের কে অবাক করে দিয়ে দেখলাম মেয়েটিও আমাদের সাথে নেমে পড়লো ।
আমরা বাস টার্মিনালে দাড়িয়ে রইলাম কিছু সময় । মেয়েটিও আমাদের সাথে দাঁড়িয়ে । খানিকঅটা দ্বিধা নিয়ে ।
কাভা ভাই মেয়েটির দিকে একটু মিষ্টি হাসি হেসে বলল
-আচ্ছা । তাহলে এবার আসি । আবার হয়তো দেখা হবে ।
মেয়েটিও হাসলো , বলল
-হা হয়তো ! ভাল থাকবেন । আপনার সাথে কথা বলে ভাল লাগলো ।

মেয়েটি অন্ধকারে হারিয়ে গেল । ক্ষণিকের জন্য কাভা ভাইয়ের চেহারায় কেমন একটা বেদনা দেখতে পেলাম । অবশ্য সেইটা তিনি সামলে নিলেন মুহুর্তেই , আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন
-চল কিছু খাওয়া যাক । তারপর যাই আমিন ভাইয়ের কাছে ।

পাশের একটা টংইয়ের দোকানে বসে চা খেলাম গল্প করলাম । তারপর সামনে হাটা দিলাম । সামনে আমাদের আরেক টা যানে উঠতে হবে । কাভা ভাই আজকে আমাদের শর্টকার্ট রাস্তায় নিয়ে যাবেন আমিন মামুন বাসায় ।
কিছুদুর গিয়ে দেখতে পেলাম একটা মুড়ির টিন দাঁড়িয়ে আছে । কাভা ভাই জানালো এটাই নাকি আমাদের যান বাহন । কয়েকজন যাত্রীও দেখলাম অপেক্ষা করছে ভিতরে । আমরা যেই না ভিতরে উঠে বসলাম আমাদের কে একটু চমকালাম । কারন বাসের সেই মেয়েটি কে দেখলাম আগে থেকেই মুড়ির টিনের ভিতরে বসে আছে । আমাদের দিকে তাকিয়ে বিশেষ করে কাভা ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিলো । সঙ্গে সঙ্গে কাভা ভাইয়ের মুখে বিস্তৃত হাসি দেখতে পেলাম । আমরা এবার বসলাম মুখো মুখি । এমন ভাবে বসলাম যেন কাভা ভাই আর মেয়েটি একেবারে মুখে মুখি বসে । আবারও আমাদের যাত্রা শুরু হল ।
হঠাৎই মেয়েটি বলল
-আপনারা কোথায় যাচ্ছেন ?
-কালসি
-ওখানেই থাকেন ?
-না । আমাদের এক বড় ভাইয়ের বাসায় যাচ্ছি । হঠাৎ এই কথা কেন ?
-না এইটা রুট টা সবাই চিনে না । কেবল স্থানীয়রাই এটা চিনে ।
কাভা ভাই বলল
-আমি তো ঢাকার ছেলে । সব কিছু চিনি ।
-তাই ?
-হুম । কেবল জায়গা না ! মেয়েদেরকেও চিনি ! কোন এলাকার মেয়ে কেমন !
আবার মেয়েটির মিষ্টি হাসি । প্রতি উত্তরে কাভা ভাইয়ের হাসি ।
এইভাবে আবারো কথা চলতে শুরু করলো । কাভা ভাই এমন ভাবে মেয়েটির সাথে কথা বলা শুরু করলো যেন কত দিনের চেনা । আর সাথে আমাদের কে যেন চিনে না ।
এমনই হয় জগতে ।
যাক আমি আর অভি চুপ করে তাকিয়ে রইলাম ।

আবারো যাত্রা শেষ হল । যেখানে মুড়ির টিন থামলো সেখানেই আমিন ভাইয়ের বাসা । একদম কাছে । আমরা মানে কাভা ভাই আবারও মেয়েটির কাছে বিদায় নিল ।
-আবার দেখা হবে কি ?
-কে জানে ?
মেয়েটি আবারও হাটা দিল । আমরা অবাক হয়ে দেখলাম মেয়েটির ঠিক পিছন পিছন আমরা হাটতে লাগলো । আশ্চার্য !
মেয়েটির পিছনে হাটছি কেন ?
মেয়েটি যে গেট দিয়ে ঢুকলো আমাদের কে অবাক করে দিয়ে কাভা ভাই সেই বাড়িতে ঢুকলো ।
একি ?
আমরা অবাক ।
সাথে মেয়েটিও ।
কাভা ভাই মিচকি মিচকি হেসে বলল
-আমার বড় ভাই এই বাসাতেই থাকে ।
-তাই নাকি ?
-ক'তলা ?
-পাঁচ তলা ।
-আচ্ছা ।
মেয়েটি দুতলার একটা দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেল । কাভা ভাই এদিকে মুখে একটা বিস্তৃত হাসি নিয়ে পাঁচ তলার একটা দরজায় বেল টিপতে লাগলো । আমরা দুজন কাভা ভাইয়ের সেই হাসির রহস্য কিছুতেই বের করতে পারলাম না ।

দরজা খুলতেই মামুন ভাইকে দেখতে পেলাম ।
কাভা ভাই তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল
-ভাই এই বাসা ভাড়া নেওয়ার জন্য আপনাকে কি কইয়া যে ধইন্যা দিবো !! চলেন চলেন ভিরতে চলেন !

এদিকে মামুন ভাই কিছুই বুঝতে পারে না । কেবল একটু বোকার মত হাসতে লাগলো ।
কাভা বলল
-আরে চলেন চলেন । আপনার সাথে জরুরী কথা আছে ।

আমরা দুজনেই বুঝলাম কি জরুরি কথা !! আপনারাও বুঝে নেন ...

:D :D :D
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×