somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাঁচটি ছোট গল্প (ভলিউম ০২)

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গল্প নং ০১
------------


সিহাব ফেসবুকে খুব পরিচিত । সবাই তার পোস্টে খুব লাইক কমেন্ট করে । তার লেখাকে বাহবা দেহ । বিশেষ করে মেয়েরা তার লেখা খুবই পছন্দ করে । তার কারন হচ্ছে সে সব সময় নারীবাদী লেখা লেখে । তার পছন্দের লেখার টপিক হচ্ছে মেয়েদের গায়ের রং নিয়ে লেখা । মেয়েদের গায়ের রংটাই আসল না তাদের নিজেস্ব যোগ্যতা এবং মনটাই যে আসল এই বিষয়ে তার কয়েক শ লেখা আছে ।
মেয়েরা তার এই দিকটা অনেক পছন্দ করে । প্রতিদিনই অনেক মেয়ের সাথে সিহাবের কথা হয় ইনবক্সে । কেউ কেউ ওর সাথে কেবল কথাই নয় দেখাও করতে চায় ।
তবে ইদানিং একটা মেয়ে ওর সাথে খুব বেশি কথা বলছে । কয়েকবার বলেছেও দেখা করতে । মেয়েটা ওর সাথে কথা বলে আর ওর লেখার প্রসংশা করে । বিশেষ করে ওর নারীবাদী মনভাব মেয়েটার অনেক ভাল লাগে । সিহাব কেবল হাসে মনে মনে ! এই একটা অস্ত্র দিয়ে অনেক মেয়েকে সে এর আগেও ঘায়েল করেছে । তুমি কি বিশ্বাস কর কিংবা কি কর সেটাতে অনলাইণ জগতের কিছু যায় আসে না । কেবল তোমার সামনের মানুষটাকে বিশ্বাস করাতে হবে যে তুমি তার পছন্দের জিনিসটাই বিশ্বাস কর । ব্যাস ! আর অনলাইনে এর থেকে সহজ কাজ আর কিছু নেই । মেয়েটার সাথে অনেক কথা হয় সিহাবের ফ্রেন্ড লিস্টের এক ছোট ভাইয়ের সাথে মিউচ্যুয়াাল আছে মেয়েটা । ফেসবুকে বেশ কিছু ছবিও আছে মেয়েটার । মেয়েটার নাম অনন্যা । দেখতেও বেশ । সিহাব এতো অপেক্ষা করছিলো ঠিক তেমনই একটা মেয়ে !
একদিন দেখা করার প্ল্যান করে ফেলে তারা । সিহাবের মনে মনে বেশ ফূর্তি কাজ করে সারা দিনে । কিন্তু যখন অনন্যার সাথে দেখা হল তখন সিহাব যেন আকাশ থেকে পড়লো । অনন্যা তার ফেসবুকের ছবির মত মোটেই নয় । গায়ের রং বেশ কালো । মুখটাও অতখানি সুন্দর না ! সব ফটোশপ আর ডিএসএলআরের কাজ ।
এখন সিহাব বুঝতে পারলো কেন অনন্যা এতো গায়ের রং নিয়ে ওর সাথে কথা বলতো । আগে বুঝতে পারে নি । এখন বুঝতে পারছে । দুর শালা ! মনে মনে বলল । এতো বড় ভুল হয়ে গেল । সেদিন অনন্যা অনেক কথা বলল । বলল যে তার যোগাযগ করতে পেরে বেশ ভাল লাগছে । মুখে কিছু না বললেও সিহাব মনে মনে বেশ বিরক্ত হল ।
ওখান থেকে আসার পরপরই সিহাব অনন্যার সাথে যোগাযোগ একদম কমিয়ে দিল । মেসেজ প্রথম প্রথম সিন করতো কিন্তু রিপ্লাই দিতো না । ফোনের নাম্বারটাও ছিল ব্ল্যাক লিস্টে । এরপর আর মেসেজ সিন করাই বন্ধ করে দিল । কদিন পরে আইডিটা ব্লক করে দিল !
তারপর কেটে গেল আরও মাস খানেক ! অনলাইনেরই একটা ইভেন্টে অনেকে এক সাথে মিলিত হল । তারা একটা সচেনতা মূলক র‌্যালি করবে ! সিহাবও থাকবে সেখানে । বিশেষ করে কিছু ছবি তোলা আর আড্ডা দেওয়াই তার লক্ষ্য ! সকাল সকালই হাজির হয়ে গেল । অনেকে চলে এসেছে ।
সিহাব দাড়িয়ে দাড়িয়ে সবাইকে দেখতে লাগলো । ঠিক তখনই একটা চমৎকার মেয়ের উপর ওর চোখ গেল । গায়ের রং যেমন সুন্দর তেমনি তার মুখ খানি ! লাল রংয়ের সেলোয়ার কামিজে মেয়েটাকে যেন পরীর মত লাগছে ! আর একটু ভাল করে তাকাতেই সিহাবের চেহারা কেমন যেন পরিচিত মনে হল ।
ঠিক তার কয়েক মুহুর্ত সিহাব অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো সামনে ঐ চমৎকার মেয়েটা আর কেউ নয়, তার সাথে দেখা করা সেই অনন্যা !
এই মেয়েটা এতো চমৎকার হয়ে গেল কিভাবে ? কিছু সময় যে কোন কথাই বলতে পারলো না ! ঠিক তখনই পাশ থেকে একজন বলে উঠলো
-কি অবাক লাগছে ভাইয়া !
সিহাব তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে তার পাশে দাড়িয়ে । আরেকটু ভাল তাকাতেই ছেলেটাকে চিনতে পারলো । অনন্যার সাথে যে ছেলেটা মিউচ্যুয়াল ছিল সে ! সিহাব কিছু বুঝতে পারছে না ! বলল
-মানে ?
-ছেলেটা হাসলো । তারপর বলল
-না মানে আপনার দেখা অনন্যা আর এই অনন্যার ভেতরে কত পার্থক্য । তাই না ?
-হাউ ?
-ভাবছেন এটা মেক আপ ? ভুল । আপনার সাথে যেদিন ও দেখা করতে গেছিলো ওদিন ও মেকাপ করে গিয়েছিলো । মিডিয়াতে ওর এক মামা আছে মেকাম আর্টিস্ট ! কালোকে ফর্সা আর ফর্সাকে কালো বানানো তার কাছে কিছু না !
সিহাব কিছু বুঝতে পারছিলো না ! কেবল বলল
-কেন ? করলো ওটা ?
-ও করে নি । আমার প্লান ছিল । ও আপনার ভক্তই ছিল । কিন্তু আপনার আসল রূপটা দেখাতেই ওকে এটা করতে বলি ! তাই আপনি দেখিয়ে দিয়েছেন ! এখন কেবল অনন্যাই জানে না, আপনার আসল চেহারাটা অনেকেই জানে । খেয়াল কি করছেন যে ইদানিং আপনার কাছে আর আগের মত মেয়েরা ইনবক্স করে না ! আর এবার থেকে ভন্ডামীটা একটু কম করবেন । নিজে যা বিশ্বাস করেন তা ফেসবুকে লিখবেন না ! তাহলে কিন্তু হাতে হাড়ি ভেঙ্গে দিব !
সত্যিই তাই আগের থেকে অনেক কমে গেছে ইনবক্সে মেসেজ আসা ! ছেলেটা হাসতে হাসতে চলে গেল ওর সামনে দিয়ে । সিহাব তাকিয়ে দেখলো ছেলেটা অনন্যার কাছে গিয়ে ওর হাত ধরলো । তারপর দুজন একেবারে ভীড়ের শেষের দিকে চলে গেল ! সিহার কেবল তাকিয়ে রইলো । বুকের ভেতরে একটা কষ্ট হতে লাগলো ওর । এভাবে ধরা খাইয়ে দিল ওকে !
তখনই সিহাব মোবাইল বের করে স্টাটাস লিখলো "অনালইনে বিশ্বাস জিনিসটা নেই বললেই চলে । চারিদিকে ছল-চতুরী আর ছলনা"
সেই পোস্টে সবার আগে হাহা ইমো দিল দুইজন । একটা ঐ ছেলেটি অন্যটা ছিল অনন্যার অন্য এক আইডি থেকে !





গল্প নং ০২
-------------


সুপ্তির সাথে এভাবে আবার দেখা হবে যাবে আমি কোন দিন ভাবি নি । একটা ধরনা ছিল যে কোন দিন ওর সাথে আমার দেখা হবে । তবে সেটা যে এমন ভাবে সেটা আমি কোন দিন ভাবিও নি । ও নিশ্চয়ই ভাবে নি । ওর চেহারা দেখেই আমি সেটা বুঝতে পেরেছি ।
সুপ্তির হাসব্যান্ড ডা. নিয়েল সুপ্তির দিকে তাকিয়ে বলল
-কই দেখো তোমার কোনটা পছন্দ ?
সুপ্তি নিজেকে সামলে নিল । তারপর বলল
-আমার তো সব গুলোই ভাল লাগছে ।
-আরে বিয়ের আর মাত্র একমাস বাকি । এর ভেতরে ফ্ল্যাটের সব কাজ শেষ করতে হবে । আর উনি তো আমাদের জন্য বসে থাকবে না । উনার আরও কাজ করতে হবে নাকি !
তাহলে এখনও বিয়ে হয় নি । সামনের মাসে বিয়ে । যাক ভাল ।
কেন জানি এটা জানতে পেরে নিজের কাছেই ভাল লাগলো । কোন কারন নেই তবুও ভাল লাগলো ।
সুপ্তি ওর হবু হাজব্যান্ডের দিকে তাকিয়ে বলল
-আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখছি । তোমার না হাসপাতালে যাওয়ার কথা !
-হ্যা ! কিন্তু তোমাকে নামিয়ে দেব না ?
-লাগবে না । তুমি চলে যাও । আমি ওনার সাথে বসে আরও একটু ভাল করে দেখি । তারপর ঠিক করি কোন ডিজাইনটা নিব ! কোন ঘরে কোনটা নিবো সেটাও একবার দেখেই ঠিক করার কথা না !

ডাক্তার সাহেব কি যেন ভাবলেন ! তারপর বললেন
-আচ্ছা ঠিক আছে । আমি তাহলে উঠি এখন !
আমাদের রেখেই উনি উঠে চলে গেলেন ! সুপ্তি আমার দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকলো কিছুটা সময় ! তারপর বলল
-কেমন আছো ?
আমি কি জবাব দিবে খুজে পেলাম না । এতো দিন পরে দেখা !
সুপ্তির সাথে !
আমার সেই ছোট্ট নিশ্চুপ সুপ্তি !
তখন সবে মাত্র ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি । কিন্তু ক্লাশ শুরু হয় নি । ক্যাম্পাসে একটা ঝামেলা চলছিলো বলেই আমাদের ক্লাস শুরু হতে দেরি হচ্ছিলো । আমার অবশ্য সেটা নিয়ে চিন্তা ছিল না । আমি আরাম করে বাসায় ছিলাম । তবে আবেদ স্যার আমাকে শান্তি মত থাকতে দিলেন না । বললেন যে আমি নিউ ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্টের ক্লাস নিই । স্যারের কোচিংয়েই ক্লাস করে পাশ করেছি । তাই মানা করতে পারলাম না । রাজি হতেই হল ।
সুপ্তিসেই ক্লাসেরই একজন স্টুডেন্ট ছিল । সুন্দরী হিসাবে পুরো এলাকা জুড়ে তার খ্যাতি ছিল । অবশ্য আরও একটা কারন ছিল । মেয়েটি ছিল স্থানীয় মেয়রের মেয়ে । আর তার চাচা ছিল পুরো এলাকার এমপি ! সবাই তাকে এক নামে চিনতো । পুরো এলাকা জুড়েই ছিল তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি ! সবাই এক নামে চিনতো ।
ওকে অংক দেখাতে দেখাতে বুঝতে পারছিলাম আমি ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছি । নিজের লিমিট আমি জানতাম কিন্তু নিজেকে ওর পথ থেকে সরানো সম্ভব হল না যখন জানতে পারলাম সুপ্তি আমার উপর একই অনুভুতি পেষন করে । ভয় করলেও কেন জানি জড়িয়ে গেলাম । সব কিছু আস্তে আস্তে চলছিল কিন্তু একদিন আমরা ধরা পরে গেলাম ।
সেদিন অবশ্য একটা বেশি সাহস দেখিয়ে ফেলেছিলাম । ওকে নিয়ে ওর কলেজের পাশের নদীর পাড়ে বসে বসে গল্প করছিলাম । কেউ দেখে ফেলে আমাদের তারপর সে খবর চলে যায় ওদের বাসায় । ওর ছোট চাচা আমাকে কয়েক ঘা লাগিয়ে ওকে নিয়ে যায় । আমি ভেবেছিলাম ব্যাপারটা ওখানেই শেষ কিন্তু সন্ধ্যায় সময় যখন পুলিশ এসে আমাকে ধরে নিলে গেল তখন মনে হল সব কিছু এখানেই শেষ না ।
তারপর ঘটনা খুব দ্রুত ঘটতে লাগলো । ক্ষমতা যে ওদের ছিল সেটা আমি আর আমার ফ্যামিলি দেখতে শুরু করলাম । আমার বাবা সব সময় নীরিহ গোছের মানুষ ছিল । সরকারি ব্যাংকে অফিসার ছিল । ব্যাস । এর বেশি তার আর কোন ক্ষমতা ছিল না । দেখতে দেখতে কেস উঠে গেল কোর্টে এবং উকিল প্রমানও করে ফেলল যে আমি আসলেই এই কাজটা করেছি । অবাক হয়ে দেখতে শুরু করলাম আমার সব পরিচিত মানুষেরা আমার বিরুদ্ধে সাক্ষি দিতে শুরু করেছে । অবাক হয় দেখলাম আবেদ স্যারও আমার বিরুদ্ধে চলে গেল । কিন্তু সব থেকে বড় ধাক্কাটা লাগলো যখন সুপ্তি নিজের মুখে বলল যে আমি ওকে ভুলিয়ে ভালিয়ে ঐ নদীর পাড়ে নিয়ে গেছি ।
আমার বয়স তখন সবে ১৯ হয়েছে । আর ও তখনও নাবালিকা ! সুতরাং আমি ওকে ভুলিয়ে ভালিয়ে নিতেই পারি ! আমাদের উকিলের আর কিছু করার ছিল না । করার থাকার কথাও না ! আমার ৭ বছরই জেল হত কিন্তু বয়স কম বলে ৩ বছরের জেল হল ! আমাকে বাবাকে ওখানে থেকে বদলি করে দেওয়া হল !
জেল থেকে বের হয়ে আমার আর পড়া লেখা হয় নি । অনেক দিন বাসায় বসে ছিলাম । কারো সাথে মিশতাম না । তারপর মনে হল জীবন তো বসে বসে কাটবে না । ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কয়েকটা কোর্স করে মানুষ জনের ঘর সাজানোর কাজে গেলে গেলাম । আর কপালটা কি আমি কি না এতো গুলো বছর পরে এলাম সুপ্তির ঘর সাজাতে !
সুপ্তি অনেকটা সময় আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-বললে না কেমন আছো ?
-আছি ভাল ।
-বিয়ে কর নি ?
-রেপিস্টদের এতো সহজে বিয়ে হয় না !
একটু যেন কঠিন কন্ঠেই কথাটা বললাম । যদিও জানতাম এটা বলা হয়তো ঠিক হয় নি । সুপ্তি যে রকম পরিস্থিতির ভেতরে ছিল ওর হয়তো আর কোন উপায় ছিল না । আর কোন পথও খোলা ছিল না তার ! সুপ্তির মুখটা কালো হয়ে গেল । আমি বললাম
-আমার মনে হয় এখানে কাজ করা হবে না । তোমার হবু জামাইকে বল যে তিনি অন্য কাউকে খুজে নেন !
-নো, প্লিজ !
-না আমার পক্ষে এটা করা সম্ভব হবে না ! সরি ! আমি চলে যাচ্ছে !
আমি ল্যাপটপ নিয়ে উঠতে যাবো সেই সময় সুপ্তি আমার হাত চেপে ধরলো ! তারপর বলল
-প্লিজ যেও না !
আমি এক ঝাটকাতে হাত ছাড়িয়ে নিলাম ! যখন ল্যাপটপটা ব্যাগে ভরবো তখন সুপ্তি অবাক করা একটা কাজ করলো ! ওর ব্যাগের ভেতর থেকে একটা সার্জিক্যাল নাইফ বের করলো ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি জানো আমি ডাক্তার !
আমি কোন কথা না বলে তাকালাম ওর দিকে । ও নাইফটা ওর হাতের কব্জির কাছে নিল । তারপর বলল
-আমি জানি কোথায় কাটলে খুব দ্রুত রক্ত বের হবে । আর আমি মারা যাবো । যদি তুমি এখন এখান থেকে চলে যাও তাহলে আমি দরজা বন্ধ করে এই নাইফ চালাবো । আই সোয়ার আই উইল ডু ইট !
আমি সুপ্তির কন্ঠের মাঝে একটা বেপরোয়া ভাব দেখতে পেলাম । সত্যিই পেলাম । মনে আসলেই ও এমনটা করবে ! আমি কিছু সময় তাকিয়ে থেকে আবারও বসে পড়লাম ।
-ওকে ফাইন !
আস্তে আস্তে দেখলাম সুপ্তির চেহারার সেই বেপরয়া ভাবটা অনেকটাই কমে আসলো । আমি আবারও ল্যাপটপ বেরকরে ওকে দেখাতে লাগলাম কোন ডিজাইণ ওর পছন্দ ! কিন্তু ওর সেদিকে নজর আছে বলে মনে হল না । এক পর্যায়ে বলল
-তোমার বাবা মা কেমন আছে ?
-আছে এক রকম ! তোমার বাবা কেমন আছে ?
-জানি না !
-জানি না মানে ?
আমি খানিকটা অবাক হয়ে সুপ্তির দিকে তাকালাম । কিছু যেন বুঝতে পারলাম না । সুপ্তি বলল
-আমি ঐদিনের পর আর বাবা সাথে কোন দিন কথা বলি নি ! আমাকে বাবাই সব থেকে বেশি ফোর্স করেছিলো তোমার বিরুদ্ধে .....
আমি অবশ্য আগেই জানতাম এমণই কিছু হয়ে থাকবে । এমনই হওয়ার কথা ছিল । পরিস্থিতি এমনই ছিল হয় তো ! সুপ্তি বলল
-ইন্টারের পর আমি ঢাকায় চলে আসি । তারপর এখান থেকে মেডিক্যালে ভর্তি হই । এর মাঝে আমি খুব কমই শহরে গেছি । যতবার গেছি একবারও বাবা কিংবা চাচাদের কারো সাথে কথা বলি নি কোন দিন ! বাবা এখন এখানেই থাকে তবুও আমি বাসায় যাই না ।
আমার কিছু বলা উচিৎ । কিন্তু কি বলবো আমি খুজে পেলাম না । সুপ্তি বলল
-কিন্তু তবুও আমি নিজেকে কোন দিন ক্ষমা করতে পারি নি । গত আট টা বচর আমি কি পরিমান অপরাধ বোধ নিয়ে বেঁচে আছি তোমাকে আমি বোঝাতে পারবো না । কতবার যে সুইসাইড করতে গেছি কিন্তু পারি নি । বারবার কেবল মনে হয়েছে তোমাকে সত্যি কথাটা না বলে যেতে পারলে আমি মরেও শান্তি পাবো না ।
কথা গুলো বলতে বলতে সুপ্তি কেমন যেন হাপাতা লাগলো । কান্নার জন্য ঠিক মত যেন কথা বলতে পারছে না । আমি বলল
-আচ্ছা ঠিক আছে । আমি জানতাম এমন কিছুই হয়ে থাকবে ! তোমার উপরে আসলে আমার কোন রাগ নেই । আমার কপালে লেখা ছিল এটা !
-না । ছিল না । আমার জন্য হয়েছে । আমি চাইলেই ওখানে বলতে পারতাম যে তুমি কিছু কর নি । পারতাম ! আমি পারতাম ....।
তারপরই সুপ্তি হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিল । ওর কান্না শুনে দেখি বাড়ির কাজের মহিলাটা ছুটে চলে এল । আমার হাত ধরে বসে ও কাঁদছে এমন দৃশ্য নিশ্চয়ই সে আশা করে নি । কিন্তু সুপ্তির সেদিকে লক্ষ্য নেই । ও কথা বেলই চলেছে । এক পর্যায়ে আমাকে সত্যি সত্যিই জড়িয়ে ধরলো । তারপর ফোঁফাতে ফোঁফাতেই বলল
আমাকে প্লিজ এই কষ্ট থেকে মুক্তি দাও ! প্লিজ !
-আমি তো বললাম । আমি আগে থেকেই জানি এমন কিছু হবে ।
আমি তাকিয়ে দেখলাম কাজের মহিলা আস্তে করে ঘর থেকে বের হয়ে গেল । কত সময় পরে ওকে আমাকে ছাড়লো আমি নিজেই বলতে পারবো না । আমার সাথেই ও ঘর থেকে বের হয়ে এল । আমাকে আমার অফিসের সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল হাসপাতালে ! তবে আমার কেন জানি মনে হচ্ছি এই ঘটনা এখানেই শেষ হবে না । শেষ হলও না । সন্ধ্যার সময়ই ডা. নিয়েলের ফোন পেলাম । আমার সাথে সে জরুরী কথা বলতে চায় । কি বিষয়ে কথা বলতে চায় সেটাও আমার বুঝতে কষ্ট হল না । আমি ফোন রেখে যাবো কি না ভাবছি তখনই দেখি আমার অফিসের সামনে সুপ্তি এসে হাজির । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-নিয়েল তোমাকে ফোন দিয়েছিলো ?
-হ্যা ! আমি ওখানেই যাচ্ছিলাম ।
-যেতে হবে না ।
-যেতে হবে না ?
-না ! ওকে আমি সব কথা বলেছি ! আর এও বলেছি যে ওকে আমি বিয়ে করছি না !
-মানে কি ?
-মানে আমি ওকে বিয়ে করবো না । তোমাকে বিয়ে করবো !
আমি ছোট খাটো একটা ধাক্কার মত খেলাম । আমি জানতাম ও খানিকটা পাগলামো করবএ । ওর চোখ মুখেই সেটা বলছিল । কিন্তু এমন কিছু করবে সেটা আমি নিজেও ভাবি নি । আমি কোন মতে বললাম
-মানে কি ?
-কোন মানে টানে নেই । তোমাকে বিয়ে করবো এবং সেটা এখনই !
-দেখো !
-আমি কিছু দেখতে চাচ্ছি না । আমি বাসাও ফোন করে বলে দিয়েছি । আজকে প্রায় আট বছর পরে আমি বাবাকে ফোন দিয়ে বলেছি যে তোমাকে আমি বিয়ে করতে যাচ্ছি !
-তাই নাকি ? তিনি কি বললেন ?
-তার তো কিছু বলার নেই । তার কাছে তো অনুমুতি চাই নি । কেবল জানিয়েছি !
আমার ভেতরে একটা মিশ্র অনুভুতি হচ্ছিলো । আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কি করবো ! যখন ওর সাথে কাজী অফিসে ঢুকলাম তখনও বিশ্বাস হচ্ছিলো না । বারবার মনে হচ্ছিলো আমি আমি যেন স্বপ্ন দেখছি ।
তবে আমি খানিকটা কনফিউজ যে এতো গুলো বছর পরেও মেয়েটার মাঝে আমার জন্য ভালবাসা থেকে এই কাজটা করছে নাকি ও অপরাধ বোধ থেকে । তবে যাই থেকে কাজটা করুক না কেন আমি কেন আমার কেন খারাপ লাগছে না । বিশেষ করে ওর চোখে আমার জন্য বেপরোয়া ভাবটা দেখতে ভাল লাগছে ।
আমি ভেবেছিলাম বিয়েতে হয়তো আমরা একা একাই থাকবো । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম যে সুপ্তির বাবা সেখানে উপস্থিত ! তবে আগের সেই চেহারা আর তার নেই । রাস্তায় আসার পথে সুপ্তি আমাকে অনেক কথাই বলেছে । ওর সরকার বদলানোর সাথে সাথে ওদের প্রভাবও নাকি অনেক কমে এসেছে । তারপর ওর বড় চাচার সাথে জমিজমা নিয়ে ওর বাবার একটা ঝামেলা হয় । গত বছর থেকে সে ঢাকাতেই থাকে ! এর মাঝে একবার নাকি তার হার্টএটাকও হয়েছিলো । সুপ্তি নাকি তখনও তার সাথে কথা বলে নি । তারপর থেকে সুপ্তির বাবা অনেক নরম হয়ে গেছে ! এখন আর সুপ্তি ছাড়া আর কেউ নেই তার । সেই মেয়েই তার সাথে আট বছর ধরে কথা বলে নি । যে কোন বাবার জন্যই এটা অনেক কষ্টের একটা ব্যাপার !
তিনি এখানে কেন হাজির হয়েছেন সেটাও আমার বুঝতে কষ্ট হল না । তিনি হয়তো মনে করেছেন এটার পর যদি তার মেয়ে তার সাথে কথা বলা শুরু করে !
আমি অবশ্য বাসায় ফোন করে বলার সাহস পাই নি । যদিও বাবা আমাকে কিছুই বলে না কোন দিন । জেল থেকে ফেরার পর থেকে আমাদের মাঝে কথা বার্তা অনেক কম হয় ! মায়ের সাথেই আমি যা কথা বলি । মাকে যখন আজকে বললাম সুপ্তির কথা মা অনেক অবাক হয়েছিলো । প্রথমে রাগ পরে সব খুলে বলাতে কিছুটা শান্ত হয়ে এল । এখন যদি মাকে বলি যে ঐ মেয়েকেই আমি বিয়ে করে ফেলেছি তাহলে তার মনভাব কেমন হবে আমি সেটা বুঝতে পারছিলাম না !
সুপ্তির বাবা নরম কন্ঠেই আমাদের জন্য দোয়া করলেন । আমার দিকে তাকিয়ে বললেন যে যা হয়েছে সেটাকে যেন আমি ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করি । আর সম্ভব হলে তাকে যেন ক্ষমা করে দেই । যদিও উনি ওনাদের বাসায় যেতে বলছি সুপ্তি রাজি হল । ও আমার সাথে আমাদের বাসায় যাওয়ার জন্য রিক্সায় উঠলো !
রিক্সা যখন চলতে শুরু করলো তখনও আমি ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে সেই কবেকার দেখা স্বপ্নটা এভাবে এমন করে সত্যি হয়ে যাবে । হয়তো এভাবেই আমার আর সুপ্তির ভাগ্যটা লেখা ছিল !



গল্প নং ০৩

মা এমন কিছুই বলবে আমি ভাল করেই জানতাম । তাই অবাক হলাম না । আমি যদি মায়ের জায়গাতে থাকতাম তাহলে আমার মনভাবও হয়তো এমনই হত । মা আমার দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে বলল
-তুই কোন হিসাবে ঐ মেয়েটাকে বিয়ে করতে চাস শুনি ?
-কোন হিসাবে না ! পছন্দ হয়েছে ব্যাস !
-এভাবে তো জীবন চলে না ! মেয়ে একে তো এতিম তার উপর একবার বিয়ে হয়েছিলো । আর সব থেকে বড় কথা মেয়ে একটা বাজা....
-প্লিজ মা ! এই শব্দটা ব্যব হার না করলে হয় না !
-কেন করবো না ? এটা কি মিথ্যা ?
আমি কোন কথা বললাম না । এখনও ঠিক বুঝতে পারছি না এই তথ্যটা মাকে কে দিলো । খুজে পাচ্ছি না ! আমি বললাম
-এটার জন্য ওর নিজের কোন দোষ নেই । এমন কিছু তো আমার সাথেও হতে পারতো নাকি !
-এই সব বাজে কথা বলবি না ! আমি ঐ মেয়েকে ঘরের বউ করে আনবো না ব্যাস । কথা এখানেই শেষ ।
আমি জানি কথা বলে লাভ নেই । তবুও অহীনের কথা শুনেই আমি মায়ের সাথে কথা বলতে এসেছিলাম । মা যে রাজি হবে না সেটা আমি আগে থেকেই জানতাম !
অহীনের সাথে পরিচয় খানিকটা ইয়ার্কি মারতে গিয়ে । কোন সিরিয়াস কিছু মানে ছিলও না । মাঝে মাঝেই আমি পত্রিকার পাত্র চাই বিজ্ঞাপন গুলো মন দিয়ে পড়ি ! কেন জানি আমার খুব মজা লাগে । এমন ভাবে একটা বিজ্ঞাপন দেখে আমি এক ঘটককে ফোন দেই । তাকে বলি বেকার কোন ছেলেকে কোন মেয়ে বিয়ে করতে চায় কি না দেখেন তো ! কয়েক মিনিট কথাও হয় সেই ঘটকের সাথে । তারপর আমি ফোন টা রেখে দেই । কিন্তু কোন দিন ভাবিও নাই পরে এই ঘটক আমাকে আবার ফোন দিবে !
ঠিক দুই সপ্তাহ পরে ঘটকের আমাকে ফোন এসে হাজির । এবং সে আমাকে জানালো যে একটা মেয়ে পাওয়া গেছে । বেকার হলেও সমস্যা নেই । কিন্তু মেয়েটার আগে একবার বিয়ে হয়েছিলো । আমি তখনও সিরিয়াস না । ভাবলাম কাজ যখন নেই যাই দেখা করেই আসি !
কিন্তু যখন দেখা করতে গেলাম সত্যি সত্যিই আমি বড় রকমের একটা ধাক্কা খেলাম । মানুষের চেহারায় যে এমন মায়াময় হতে পারে আমি অহীনকে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না । ও যখন আমার সাথে কথা বলছিলো তখন আমি কেবল ওর চেহারার দিকে তাকিয়ে ছিলাম । বুঝতে পারছিলাম যে আমার ভেতরে কিছু একটা পরিবর্তন হচ্ছে ।
অহীন কথাই বলল সে । তার আসলে এই পৃথিবীতে কেউ নেই । একজনকে বিয়ে করেছিলো আকড়ে ধরে বাঁচার জন্য কিন্তু কদিন পর থেকেই সে অহীনকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করতে শুরু করে । অহীনের নামে দুটো ফ্ল্যাট ছিল সেগুলো লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে । অহীন হয়তো লিখেও দিতো তবে একটা সময় জানতে পারে যে সেই ছেলেটার নাকি আরও কয়েকজনের সাথে সম্পর্ক আছে ! আর সে লিখে দেয় নি । কারন জানতো লিখে দিলেই ওকে ছেড়ে দিবে সে । আর ও একেবারে অস হায় হয়ে পড়বে !
তবুও একটা ফ্ল্যাট নাকি ওর হাত ছাড়া হয়ে গেছে ! ওর আগের স্বামীই নিয়ে নিয়েছে । যাক সেটাতে অহীনের কোন দুঃখ নেই । তারপর থেকেই একাই আছে সে । তবে একটা সময় এসে বুঝতে পারে একা থাকাটা কতটা কষ্টের !
ঐদিনের পর থেকেই আমি অহীনের সাথে যোগাযোগ শুরু করি । একটা মাস প্রায় নিয়মিত দেখা সাক্ষাতের পর অহীন আমাকে আরও একটা সত্য কথা বলে । ওর যে কোন দিন সন্তান হবে না এই সত্যটা ও প্রথমে আমাকে বলে নি । তবে আমার সাথে কথা বলার পরে ও ওর মনে হয়েছে আমাকে ও ঠাকাচ্ছে । তাই সত্যটা বলেই দিল । আমার কেন যেন মনটা পরিবর্তন হল না । আমি ওকে বিয়ে করবো বলে মনস্থির করেই ফেললাম !
মাকে কিছুই বলি নি তবে মা কেমন করে যেন জেনে গেল । বুঝতে কষ্ট হল না কিভাবে জেনে গেল । আমার বাবা পুলিশে চাকরি করে । বড় ভাইও পুলিশে ঢুকেছে । ছোট বেলা থেকেই আমি কি করি না করি সব খবর কেমন করে যেন মায়ের কাছে পৌছে যেত । মা সব জানতে পেয়ে চিৎকার চেঁচামিচি শুরু করে দিলেন । কোন ভাবেই তিনি এই বিয়েতে মত দিবেন না !
তবে আমার মত বদলালো না ! কিন্তু অহীনের এই ব্যাপারে একটু আপত্তি ছিল । ও আমাকে বলল যেন আমি বাসাতে রাজি করাই । ও আসলে ওমতে বিয়ে করতে চাচ্ছে না ! আমি কয়েকবার বললাম যে লাভ নেই । তবুও শুনলো না !
সন্ধ্যাবেলা অহীনের সাথে একটা রেস্টুরেন্টে দেখা হল । যখন অহীনকে মায়ের না রাজী হওয়ার কথা বললাম ওর মুখ কালো হয়ে গেল ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তোমার উচিৎ হবে না আমাকে বিয়ে করা !
আমি বললাম
-তুমি আমার দিকটা দেখছো না ?
-না অপু ! ফ্যামিলি খুব জরূরী একটা বিষয় ! আমার নেই তো আমি জানি !
আমি কি বলবো খুজে পেলাম না । ওর মুখ দেখেই মনে হল কথা গুলো বলতে ওর ভেতরটা কষ্টে শেষ হয়ে যাচ্ছে তবুও ও বলছে । আমি ওকে বসিয়ে রেখে ওয়াশ রুমের দিকে গেলাম । আয়নার সামনে দাড়িয়ে অনেকটা সময় ঠিক করলাম ওকে কিভাবে রাজি করাবো ! নিজের সাথেও একটা বোঝা পড়া করে নিলাম । মা বাবা হয়তো রাগ করবে তবে তারা একেবারে আমাদের ফেলে দিতে পারবে না ।
যখন ফিরে এসেছি তখন দেখলাম আমাদের টেবিলে একটা লোক অহীনের সাথে কথা বলছে । আরও একটা কাছে যেতেই বুঝলাম যে লোকটা ওর সাথে কথা বলছে না ওকে খানিকটা টিজ করছে !
আমি লোকটা কাধে হাত দিয়ে বললাম
-কি হচ্ছে ব্রাদার ?
লোকটা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-নিজের চরকায় তেল দিন !
-জি এটা আমারই চরকা ! আপনি কে ?
-আমি কে ?
লোকটা যেন এই কথা শুনে বেশ মজা পেল ! তারপর বলল
-আমি ওর জামাই !
আচ্ছা ! এই তাহলে সেই ভদ্রলোক ! আমি বললাম
-আপনি ওর হ্যাজব্যান্ড ছিলেন ! এখন আর নেই !
-আচ্ছা ! আপনি কে ?
-আমি ওর টু বি হাজব্যান্ড !
লোকটা তারপর অহীনের দিকে তাকিয়ে বলল
-আচ্ছা তাহলে এরই ভেতরে আরেক জন জুটিয়ে ফেলেছো ? বাহ ! তোমার তো .....
আমি কেবলই অনুভব করলাম যে আমার শরীরে একটা তীব্র রাগ অনুভুত হচ্ছে । আমি যথা সম্ভব নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম
-ব্রাদার আপনি আপনার নিজের সিটে যান প্লিজ !
-আরে রাখেন ! এই বা....
আমি কেবল একটা বার অহীনের চোখের দিকে তাকালাম । ও ততক্ষনে কাঁদতে শুরু করেছে । শব্দটার প্রথম অক্ষর শুনে আমার নিজের উপর সব নিয়ন্ত্রন হারিয়ে গেল ! আমি গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে লোকটা নাক বরাবার একটা ঘুসি মারলাম ! ব্যাস ! আর কিছু করতে হল না । লোকটা যেন উল্টে গিয়ে সামনের টেবিলের উপর পড়লো । যখন উঠলো ততক্ষনে নিজের নাক চেপে ধরেছে । সেখান দিয়ে রক্ত পরতে শুরু করেছে ! আমি বেটাকে আরেকা ঘা দিতে যাবো তখন অহীন আমার হাত চেপে ধরলো ! বলল
-প্লিজ ! স্টপ !
রেস্টুরেন্টের ম্যানেজের দৌড়ে এল । লোকটা আমাদের নামে কিছু বলতে গেলেই আমি তেড়ে গেলাম । বললাম শ্লা #@%& আমার ওয়াইফ কে তুই বাজে কথা বলবি তোকে কোলে তুলে আদর করবো ?
আমার কথার সমর্থনে দেখলাম দুটো মেয়ে উঠে দাড়ালো । তারা বলল যে তারাও দেখেছে সে লোকটা অহীনে ডিস্টার্ব করছে । সাথে সাথে আরও কয়েকজনও একই কথা বলল ! ম্যানেজার তবুও আমাদেরকে বাইরে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলো !
আর বেশি ঝামেলা না করে বাইরে চলে এলাম । যাওয়ার আগে লোকটা আমাকে বলে গেল আমাকে দেখে নেবে ! যদি সে ও আমার ব্যকগ্রাউন্ড জানতো তাহলে হয়তো এতো কনফিডেন্ট দেখাতো না !
অহীনকে নিয়ে রিক্সা করে যাওয়ার সময়ও ও কাঁদছিলো । তবে সেই সাথে ও আমার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলো । আমার নিজেকে নিয়ে ভয় ছিল না । ঐ লোক আমার কিছু করতে পারবে না । কিন্তু অহীনকে নিয়ে একটা ভয় ছিল । যদি ওর কাছে যায় তখন ?
আমার মাথায় আর কোন কিছু কাজ করলো না । এক প্রকার জোর করেই আমি অহীনকে কাজী অফিসে নিয়ে গেলাম । ও মানা করতে চাইলেও ওকে বিয়ে করেই ফেললাম !
বাসায় ফোন করতেই মা বলল যে আমি যেন ঐ বাসাতে না যাই ! ব্যাস গেলাম না । অহীনকে নিয়ে ওর ফ্ল্যাটে উঠে পড়লাম ! রাতের বেলা যখন ও আমার জন্য টেবিলে খাবার দিচ্ছিলো তখনও আমার ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিলো না যে আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে । অহীন ভাত দিতে দিতে বলল
-এভাবে একা একা বিয়েটা না করলে হত না ?
-আরে তুমি চিন্তা কর না তো ! মা রাগ করেছে তবে দেখো কদিনের ভেতরেই মেনে নিবে সব !
অহীন শুকনো মুখে আমার পাশে বসলো ! আমি বললাম
-তবে তোমার এক্স হাজব্যান্ডকে একটা ধন্যবাদ দিতেই হয় !
-কেন ?
ও খানিকটা অবাক হল আমার কথা শুনে ! আমি বললাম
-বেটার সাথে না দেখা হলে এমন কিছু হত না । আর এভাবে আমাদের বিয়েটাও হত না । আসলে সব কিছুর জন্য একটা ধাক্কার দরকার । সেটা ঐ বেটার তৈরি করেছে । ভাবছি একদিন বেটাকে দাওয়াত করে খাওয়াবো ! কি বল !
অহীন আমার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে হেসে ফেলল ! মায়াময় হাসি ! তারপর হাসি থামিয়ে বলল
-আমাকে ছেড়ে যাবে না তো কোন দিন ?
এমন ভাবে এর আগে কেউ আমাকে এই কথটা জানতে চায় নি । কথাটা একেবারে বুকের ভেতরে গিয়ে লাগলো । চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে ওর কপালে একটা চুমু খেলাম ! তারপর বললাম
-তোমার সাথে এমন ভাবে আঠার মত লেগে থাকবো যে তুমি বিরক্ত হয়ে বলবে দুরে যাও তো !
-কোন দিনও বলবো না !
ওর চোখে আমি আবার অশ্রু টলমল করতে দেখলাম । আমি যে সত্যি কথাই বলছি ওর সেটা বুঝতে কষ্ট হচ্ছে না ! সামনে আমাদের চমৎকার দিন অপেক্ষা করছে !



গল্প নং ০৪

ফাইজা আরেকবার তাকালো পেছন ফিরে । অপু তখনও আকাশের দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে । ফাইজার মনটা খানিকটা খারাপ হল । ছেলেটা এমন কেন ?
প্রতিবার যখন দেখা শেষ করে যে যার বাসার দিকে এগিয়ে যায় তখন ফাইজার আশা করে থাকে যে যতটা বার ও পেছন ফিরে তাকাবে অপু যেন ওর দিকেই তাকিয়ে থাকে । কিন্তু এমনটা একবারও হয় না । প্রতিবার ফিরে যাওয়ার সময় ফাইজার মনে হয় পরের বার যখন আবার দেখা হবে তখন অপুকে আচ্ছা করে বকে দিবে । কিন্তু কোন পরের বার আর বলা হয় না ।
আজকেও কত কিছু বলার জন্য এসেছিলো কিন্তু বলতে পারলো না । আজকের পর হয়তো আর কোন দিন ওর সাথে দেখাও হবে না । এই কথাটাই শত চেষ্টা করেও বলতে পারে নি ও ! অপু যেন আজকে আকাশের দিকেই বেশি তাকিয়ে ছিল ! ও সব সময় বলতো ওর আকাশ টাকেই বেশি আপন মনে হয় । সবাই ওকে ছেড়ে চলে গেলেও আকাশটা ওকে কোন দিন একলা করে ছেড়ে যাবে না !
অপুর তাই আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে ভাল লাগে । এমন কি যখন ওর সাথে তখনও মাঝে মাঝে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে । একবার ফাইজা বিরক্ত হয়ে বলেছিলো
-এতো যদি আকাশ ভাল লাগে তাহলে আমি কেন এসেছি !
অপু প্রথমে বুঝতে পারে নি ফাইজার বিরক্তির কারন । তবে একটু পরে যখন বুঝতে পারলো তখন বলল
-আমার জীবনে তুমি আর আকাশ ছাড়া আর কে আছে বল !
-আমার থেকেও আকাশটা বেশি প্রিয় তোমার কাছে ? অন্তত আমি যখন সাথে থাকি তখন তো আমার দিকে তাকাও !
অপু এই কথাটার জবাব সাথে সাথেই দেই নি । কিছু সময় ওর চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে তারপর বলেছিলো
-তোমার চোখের দিকে বেশি সময় তাকালে কেমন যেন নেশা ধরে যায় ! সেই নেশা কাটানোর জন্যই আকাশের দিকে তাকাতে হয় !
-হয়েছে ! আর তেল দিতে দিতে হবে না !
-তেল না । সত্যি বলছি !
ফাইজা আর কথা বাড়ায় নি । কারন ও ভাল করেই জানতো যে আসলেই অপু মিথ্যা বলছে না । এই ব্যাপারটা ওর নিজের ভেতরেও আছে । অপুর চোখের দিকে খুব বেশি সময় সে তাকিয়ে থাকতে পারে না !
কিন্তু আজকে আসলেই ফাইজার মনে হচ্ছে অপুর আসলেই ঐ দুরের আকাশের কাছে একলা রেখেই সে চলে যাচ্ছে ! আর কোন দিন দেখা হবে ওদের !
রিক্সাটা একেবারে চোখের আড়াল চলে যাওয়ার আগে ফাইজা আরেকবার পেছন ফিরে তাকালো । দেখলো অপু মোবাইলে কি লিখছে !
কয়েক সেকেন্ড পরেই ওর মোবাইলের ম্যাসেজ টোন বেজে উঠলো ! অপুর মেসেজ ! সেখানে লেখা
"আজকে তোমার চোখের দিকে একটাবারও তাকাতে পারি নি । তাকালেই হয়তো তুমি বুঝে যেতে যে আমি সব কিছু জানি"
মেসেজার দিকে তাকিয়ে ফাইজার চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করলো । বুকের ভেতরে কেমন একটা ফাঁকা ফাঁকা লাগতে শুরু করলো । মনে হল যেন ও ঠিক মত নিঃশ্বাস নিতে পারছে না ! ফাইজা রিক্সাওয়ালাকে বলল
-মামা রিক্সা ঘুড়ান !
-কি কইলেন ?
-বললাম রিক্সা ঘুড়ান !
-আফা কি হইছে ? আপনে কি কানতেছেন ?
-যা বলছি করেন !
রিক্সা আর বেশি কথা বলল না । রিক্সাটা ঘুড়িয়ে আবার আগের জায়গাতে নিয়ে গেল । ফাইজা ঝাপসা চোখে দেখলো অপু তখনও একই জায়গাতে দাড়িয়ে আছে । ওর দিকে তাকিয়ে আছে অবাক হয়ে । ওকে এভাবে আবার দেখবে ভাবে নি !
ফাইজা বলল
-রিক্সাতে ওঠ !
অপু কোন কথা না বলে রিক্সাতে উঠে এল ।
-মামা চলেন !
রিক্সাতে চলতে শুরু করলো । প্রথম কয়েক মুহুর্ত কেউ কোন কথা বলল না ! তারপর ফাইজা অপুর হাতটা শক্ত করে ধরে বলল
-সারাদিন আকাশের দিকে তাকিয়ে এতো কি শুনি ? এই হাতটা শক্ত করে ধরে বলা যায় না যে আমাকে ছেড়ে যেও না !
অপু বলল
-এই কথা কেন বলতে হবে ?
ফাইজা খানিকটা চিৎকার করে বলল
-কেন বলতে হবে মানে কি ? তোমার সামনে তোমার প্রেমিকাকে কেউ বিয়ে করে নিয়ে যাবে আর তুমি চেয়ে চেয়ে দেখবে ! প্রেমিকার দিকে তাকালেও না হয় উনি তাকিয়ে থাকবে আকাশের দিকে !
-আকাশ আবার কি করলো !
-চুপ ! আজকের পর থেকে আকাশের দিকে তাকালে একেবারে চোখ তুলে নিবো ! এই দেখো সিপটিপিন এটা দিয়ে গেলে দিব !
এই বসে সত্যি সত্যি জামায় লাগানো সিপটিপিন খুলে অপুকে দেখালো !
অপু খানিকটা অবাক হতে গিয়ে হেসে ফেলল ! তারপর বলল
-তোমার কি হয়েছে বল না ! আর আমরা কোথায় যাচ্ছি ? তোমার না সামনের সপ্তাহে আংটি পড়াতে ছেলে পক্ষ আসছে !
ফাইজা কোন কথা না বলে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো । অপু সব কিছু জানতো ! এখন ওর ইচ্ছে করছে ওকে ধাক্কা দিয়ে রিক্সা থেকে ফেলে দিতে । কেন রাগ উঠছে ও নিজে সেটা বলতে পারবে না । এই রাগের কোন ব্যাখ্যা ওর কাছে জানা নেই ।
অপু বলল
-আচ্ছা ঠিক আছে আর কিছু বলতে হবে না । অন্তত বলবে তো আমরা কোথায় যাচ্ছি ?
-জাহান্নামে !
-ও ! তাই নাকি ! এটা তো ভুল রাস্তা !
অপু তারপর রিক্সাওয়ালে বলল
-মামা আপনি উল্টা পথে যাচ্ছেন ! ঐ মগবাজার কাজী অফিসের দিকে যান ! শুনেন নাই ম্যাডান জাহান্নামে যেতে চাচ্ছে !
ফাইজা অপুর দিকে অগ্নি চোখে তাকাতে গিয়েও বেশি সময় রাগ ধরে রাখতে পারলো না ! হেসে ফেলল ! এই ছেলেটাকে ছেড়ে ও চলে যাচ্ছিলো এটা ভাবতেও ওর এখন কেমন যেন লাগছে । একে ছেড়ে থাকা কি ওর পক্ষে সম্ভব !! ফাইজা আরও একটু শক্ত করে অপুর হাত টা ধরলো !
রিক্সা টুংটাং করে এগিয়ে চলছে মগবাজার কাজী অফিসের দিকে !



গল্প নং ০৫

মিতুর মনে হল কেউ যেন ওকে ডাকছে । ইচ্ছে হল চোখ বন্ধ করে আরও কিছুটা সময় শুয়ে থাকে । কিন্তু কন্ঠটা খুব বেশি পরিচিত । চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে অপু ওর মুখের সামনে তাকিয়ে আছে ! খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে গেল ও । তবে সেটা ভাল লাগার দিকে প্রবাহিত হতে একটুও সময় লাগলো না !
মিতু বলল
-কটা বাজে !
অপু হাসলো । তারপর বলল
-প্রায় দুইটা !
-কিইইইই !!
চোখ কপালে তুলে মিতু বিছানা থেকে উঠে চাইলে অপু ওকে আটকালো । বলল
-এতো ব্যস্ত হতে হবে না ! তোমার শরীর ভাল না । শুয়ে থাকো !
-আরে রান্না করতে হবে না ! তুমি .....
তখনই ওর মনে হল আজকে তো ছুটির দিন না । অপু বাসায় কি করছে ! অপুর দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি বাসায় কেন ? অফিস ?
-গিয়েছিলাম । ছুটি নিয়ে চলে এসেছি ।
মিতুর কেন জানি খুব বেশি ভাল লাগলো । ওর শরীরটা গতকাল বিকাল থেকেই ভাল নেই । জ্বর জ্বর ভাব ছিল সেই সাথে মাথা ঘুরাচ্ছিলো । অপু অফিস থেকে এসেই ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলো । ডাক্তার অবশ্য তেমন কিছু বলে নি কেবল কিছু টেস্ট করতে দিয়েছে । সেই সাথে বলেছে পুরোপুরি রেস্ট থাকতে কদিন ।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতে গেলে অপু ওকে বাধা দেয় । নিজেই ওর জন্য পাউরুটি আর ডিম ভেজে আনে । তারপর ওকে ঘুমাতে বলে । সেই যে সকালে নাস্তা করে ঘুমিয়েছে এখন ঘুম ভেঙ্গে দেখে দুপুর হয়ে গেছে । তবে অপু যে ওর পাশ রয়েছে এটা দেখে ওর খুব বেশিই ভাল লাগছে । মিতু বলল
-তুমি খাবে না ? দুপুর হয়ে গেল তো !
-আরে বাবা আস্তে আস্তে ! আমি এতো সময় কি করেছি !
-মানে ?
-মানে হল তোমার মত চমৎকার রান্না করতে পারলেও আমি কিন্তু রান্না করতে পারি !
মিতু অবাক হয়ে বলল
-তুমি রান্না করেছো ?
-হাট মুখ ধুয়ে এসো ! টেবিলে গরম গরম খাবার হাজির !
মিতু আরও খানিকটা সময় বিশ্ময় নিয়ে অপুর দিকে তাকিয়ে রইলো । একটা অজানা ভাল লাগা নিয়ে ওয়াশ রুমের দিকে গেল । গতকাল কেই শরীর খারাপ নিয়ে খুব খারাপ লাগছিলো । আর আজকে মনে হচ্ছে, শরীর খারাপ হয়েছে ভালই হয়েছে । নয়তো অপুর এই দিকটা সে দেখতে পেত না ।
খাবার টেবিলে এসে খানিকটা অবাকই হয়ে গেল । ভেবেছিলো এক পদের খাবার থাকবে হয়তো কিন্তু বেশ কয়েক রকমের খাবার দেখে অবাক না হয়ে পারলো না । মিতু বলল
-এসব তুমি রান্না করেছো ?
-সব না ! এই মুরগির মাংসটা আসার সময় নিয়ে এসেছি ! আর ইলিশ মাছ, টাকি মাছের ভর্তা আর ভাজিটা আমি করেছি । মাস রান্না যদি খারাপ হয় তাহলে তুমি কি দিয়ে খাবে এই ভেবে মাংশটা কিনে এসেছি ! আর ...
-আর কি ?
-ডাল রান্না করেছিলাম । কিন্তু রংরা ভাল হয় নি । দেখতে ভাল লাগছে না তাই নিয়ে আসি নি।
মিতু বলল
-কই নিয়ে এসো !
-আগে এগুলো দিয়ে খাও তো !
-আরে নিয়ে এসো তো !
অপু উঠছে না দেখে মিতু নিজেই চলে গেল রান্না ঘরে । নিজেই নিয়ে এল ডালটা ! রংটা আসলেই খানিকটা অন্য রকম হয়েছে । চামচ দিয়ে মুখে দিয়ে দেখলো স্বাধটা একেবারে সূস্বাধু না হলেও খারাপ হয় নি !
মিতু মুরগির মাংসটার দিকে হাত বাড়িয়েও দেখলো না । ভাজি আর ভর্তা দিয়ে শুরু করলো । শেষ করলো ডাল আর মাছ দিয়ে ! কাল রাতে একটুও খেতে ইচ্ছে করছিলো না কিন্তু আজকে একেবারে পেত ভর্তি করে খেল । বিয়ের পর এতোটা আনন্দময় সময় ওর জীবনের এসেছে কি না ও বলছে পারবে না ! ইচ্ছে হচ্ছে টেবিলে থাকা সব টুকু তরকারি খেয়ে ফেলতে ।
অপুর খাচ্ছে চুপচাপ ! ওর দিকে তাকিয়ে বলল
-খেতে পারছো ?
-হুম !
হাসলো একটু ! তারপর বলল
-সব বউদের স্বামীর হাতের রান্না খাওয়ার সৌভাগ্য হয় না ! এবার থেকে প্রতি ছটির দিনে রান্না করবে তুমি ! মনে থাকবে ! ডালের রংটা কিভাবে আনতে হয় সেটা আমি তোমাকে শেখাবো !
দুজনেই হাসলো একে অন্যের দিকে তাকিয়ে । সামনের চমৎকার দিন গুলোর কথা ভেবে !

গল্পঃ টুকরো জীবন দৃশ্য
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৬
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×