জমিদারের ছেলে গেরস্তরের বাড়ি থেকে গরু চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে । ধরা পড়েছে আবার হাতেনাতে । গরুর মালিক গোয়াল ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছিলো । সেই ক্যামেরাতে স্পষ্ট ধরা পরেছে এবং এরই সাথে তাকে গরুর দড়ি ধরা অবস্থায় দুজন ধরে ফেলেছে। মানে হচ্ছে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই যে জমিদারের ছেলেই চুরি করেছে । এখন চুরির বিচার বসেছে ।
কাজী সাহেব জমিদারের ছেলেকে বললেন, কী ব্যাপার তুমি চুরি করেছো কেন?
জমিদারের ছেলে বলল, আরে আমার নিজের বাড়িতেই তো অনেক গরু আছে । আর এই গরুতে গেরস্তর এটা তো সবাই জানে । এটা তো চুরি বলে না !
বিচারে অনেক জন উপস্থিত ছিল । একজন বলল, আরে হ্যা, দেখতে একই রকম তার মানেই তো চুরি না ।
সাথে সাথে আরেকজন দাড়িয়ে গিয়ে বলল, জমিদারের অনেক টাকা পয়সা অনেক গরু । তার তো গরু চুরির দরকার নেই ।
পাশ থেকে আরেকজন বলল, চাইলেই এমন গরু সে অনেক কিনতে পারে ।
অন্য আরেকজন বলল, সে অনেক ভাল মানুষ । আমার সাথে অনেক ভাল ব্যবহার করে ।
এক বুড়ো বলে উঠলো, আসলে গেরস্ত ঠিক মত গরু পালতে পারে না । জমিদারের ছেলের অনেক গরু দেখে তার হিংসা হচ্ছে ।
পাশ থেকে আবারও একজন বলে উঠলো, আরও তো চুরি হয়, তাদের নিয়ে তো কথা হয় না ।
একেবারে শেষের দিকে বসা একজন, আরে থাকুক না ভাই যে যা করুক তা নিয়ে থাকুক । কী দরকার ঝামেলা করার !
মোটামুটি এই হচ্ছে একটা চুরির সাফাই ।
সামু হচ্ছে একটা লেখালেখির প্লাটফর্ম । এই যে কয়টি অপরাধ হতে পারে তার মধ্যে অন্য তম জঘন্য অপরাধটা হল লেখা চুরি । কপিপেস্ট করা । যেখানে সকল ব্লগারদের এই কপিপেস্টের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা উচিৎ সেখানে অবাক হয়ে খেয়াল করে দেখার ব্যাপার হচ্ছে বহু মানুষ এই কপিপেস্টার বিরুদ্ধে সাফাই গেয়ে চলেছে কী নির্লজ্জ ভাবে !
কপিপেস্টের বিপরীতে আসলে কি ধরলের সাফাই আসার কথা ? একজনের নামে কপিপেস্ট লেখা চুরির অভিযোগ আসলে তার শুভাকাঙ্খি, ভাই ব্রাদার প্রিয় জন কিভাবে সেই চুরির বিরুদ্ধে সাফাই গাইবে । সাফাই হবে সে চুরি করেছে কি করে নি এটাই তো ! কিন্তু অবাক হয়ে খেয়াল করা যাচ্ছে যে কপি করেছে কি করে নি সেটা নিয়ে কোন কথাই নেই । সাফাইয়ে আসছে অন্য সব কথা ! আমি এই কদিনে কী ধরনের সাফাই দেখতে পাচ্ছি তার একটা লিস্ট তৈরি করে দিলাম ।
এগুলো কপি পেস্ট লেখার বিপরীতে দেওয়া সাফাইয়ের একটা লিস্ট । একটাও আমি বানিয়ে লিখি নি ।
১. এতো মানুষ থাকতে আপনি তার কপিপেস্ট নিয়ে কেন লিখছেন ?
২. আপনি আসলে লিখতে জানেন না ।
৩. সে (কপিপেস্টার) ভাল ব্লগার । সে ভাল লিখে ।
৪. সে সামুতে অনেক সময় দেয় ।
৫. সে অনেক সময় দেয়, অনেক মন্তব্য করে ।
৬. লাইন মিলে গেলেই তো আর কপিপেস্ট হয় না ।
৭. কপিপেস্ট হলে রিপোর্ট করুন এভাবে প্রকাশ কেন করবেন।
৮. আপনি তাকে হিংসা করেন ।
৯. আপনি ব্লগের পরিবেশ নষ্ট করছেন ।
১০. তাকে তার মত থাকতে দেন না ।
এখন আপনারা বলেন একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে কপিপেস্টের এমন সাফাই দেওয়া কি সম্ভব? ব্লগে কেবল দুই ধরনের মানুষ কপিপেস্টকে সমর্থন করেন । এক হচ্ছে যে নিজে কপিপেস্ট করে । একচোর তো অন্য চোরকে সমর্থন করবেই । এটাই তো স্বাভাবিক । আর দ্বিতীয় গ্রুপ হচ্ছে যে উক্ত কপিপেস্টারের চামচামি করে। ওস্তাদের সম্মান রক্ষা তো করতে হবে । সাফাই দেওয়ার সময় এই কারণে এদএর হুশ জ্ঞান থাকে না ।
কারো যদি মনে উক্ত সাফাইগুলো নিয়ে সন্দেহ থাকে তাহলে বলতে পারেন, আমি স্ক্রিনশন পর্যন্ত প্রকাশ করতে পারি !
অনেকে সুশীলতা দেখিয়ে বলেন যে পোস্ট দেওয়ার দরকার কি রিপোর্ট করলেই তো হয় । তাদের জানার জন্য বলি যে আগে রিপোর্টই করি । কিন্তু রিপোর্ট কাজ হয় না খুব একটা । এমন কি সেটা প্রথম পাতা থেকেও সরে না । এখনও একটা পোস্ট নির্বাচিত পাতায় রয়েছে । সেটা নিয়ে রিপোর্ট করা হয়েছে তবুও ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৯:৩৭