somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ নাদিয়া আইরিন

২২ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



-আরে শ্লা তলে তলে এতো দুর !

আমি সাদির কথার আগা মাথা কিছুই বুঝতে পারলাম না । না বুঝতে পেরে বললাম, কি বলছিস?
সাদি আবার বলল, ঢং করিস না । সব কিছু ধরা পড়ে আবার ঢং করছিস?
-আরে বাবা কি হয়েছে বলবি তো ? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না ।
-তোর যে তলে তলে নাদিয়া আইরিনের সাথে প্রেম চলে এইটা কোন দিন স্বীকার করোস নাই । এতো বড় দাও মারলি কিভাবে বলতো দেখি?
নাদিয়ার নাম টা শুনতেই আমি একটু চমকে গেলাম । কি ব্যাপার, এই নাম সাদি জানলো কিভাবে ! নাদিয়ার নাম জানাটা সমস্যা না । সমস্যা হচ্ছে আমার সাথে তার পরিচয় এটা কিভাবে জানলো সে ? এমন তো হওয়ার কথা না । আমি কোন মতে বললাম, কি বলছিস তুই? কোথায় নাদিয়া আইরিন আর কোথায় আমি !
সাদি আমাকে বলল, শুন বেটা #$% । আমার সাথে এতো ঢং করবি না । ওর ফেসবুক পেইজে গিয়ে দেখ । তোর চেহারা যদিও পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে না তবে যারা তোকে চেনে তারা ঠিকই চিনে ফেলবে এটা তুই ।

আমি ফোন রেখে ফেসবুক ওপেন করলাম এবং বুকের ভেতরে এসে একটা ধাক্কা লাগলো । নাদিয়া আমার সাথে তোলা একটা ছবি আপলোড দিয়েছে । তবে আমার চেহারা বোঝা যাচ্ছে না । তবে সাদি সত্যিই বলেছে যে আমাকে যারা ভাল করে চেনে তারা ঠিকই চিনতে পারবে । আমি সাথে সাথে নাদিয়াকে ফোন দিলাম । রিং বাজার সাথে সাথে ফোন ধরলো ও । যেন ফোনটা হাতে নিয়েই ছিল ও । আমি বললাম, এসব কি?
-কি মানে কি? তোমাকে আসতে বললাম আসলে না কেন?
-আমি মিটিং এ ছিলাম ।
-গুলি মারো তোমার মিটিংয়ের । আমি ডেকেছি মানে আসতে হবে। এরপর যদি এইরকম হয় তাহলে ঐ ছবিটা আছে না ঐ যে তোমার খালি গা ....
আমার শরীর কেঁপে উঠলো । নাদিয়ার সাথে আমার বেশ কিছু ছবি রয়েছে । এমন কিছু ছবি আছে যারা মানুষের সামনে প্রকাশ হলে আমার নাদিয়ার দুজনেরই খবর আছে । কিন্তু নাদিয়ার কি সেই ভয় আছে ! সে কি এসবে কিছু ভয় পায় !
নাদিয়া বলল, বুঝতে পেরেছো তো কোন ছবির কথা বলছি ? সেই ছবি পোস্ট করবো । সাবধান । কালকে অফিস বন্ধ । সোজা বাসায় আসবে ।
-বিকেলে আসি ।
-না সকালে ! সকালে সকালে সকালে !
আমি বুঝলাম ওর সাথে তর্ক করে লাভ নেই । ও যখন বলেছে সকালে আসতে হবে তখন সকালেই । নয়তো আবার কি করবে কে জানে ! আমি বললাম, আচ্ছা বাবা সকালে । সকালে আসবো । ঠিক আছে ।
-গুড বয় । এখন ঘুম দাও । গুড নাইট !


নাদিয়াকে চেনে না এমন মানুষ বুঝি খুব কমই আছে । আমিও তাকে চিনতাম আগে থেকেই । কিন্তু কোনদিন ভাবতে পারি নি যে এই মেয়ের সাথে আমার একদিন ভাব হয়ে যাবে । কিভাবে যে হয়ে গেল সেটা আমি নিজেও জানি না ।
নাদিয়াকে বলা যায় অনলাইন সেলিব্রেটি । তার প্রতিটা স্টাটাসে হাজার হাজার লাইক পরে । আর কত যে কমেন্ট আসে তার কোন সীমা নেই। সেই সাথে তার লেখার হাতও বেশ চমৎকার । যে কোন বিষয় নিয়ে নাদিয়া চমৎকার লেখালেখি করতে পারে । বই মেলাতে কয়েকটা বই বের হয়েছে এবং সেগুলো বেস্ট সেলারও হয়েছে । কিন্তু এসব ছাড়াও তার অন্য যে প্রধান পরিচয় রয়েছে সেটা হচ্ছে সে একটি বে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা । আমার সাথে তার পরিচয় ঠিক এখানেই । আমি সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ইভিনিং এমবিএ করেছি এবং নাদিয়া সেখানে আমার ক্লাস নিত । সেখান থেকেই ওর সাথে আমার সরাসরি পরিচয় ।

সেদিনের ঘটনা আমার পরিস্কার মনে রয়েছে । ক্লাস শেষ করে সেদিন বের হতে হতে বেশ রাতই রয়েছে যায় । আমার এক প্রোফেসরের সাথে একটা টপিক নিয়ে কিছু কথা ছিল । সেটা শেষ করে সিড়ি দিয়ে একতলা নিচে নামতেই নাদিয়াকে দেখতে পেলাম । রাত হয়ে যাওয়ার কারণে ছাত্রদের ব্যবহার করার লিফট বন্ধ হয়ে গেছে । সুতরাং সিড়ি দিয়েই নামতে হল । এক তলা নামতেই নাদিয়াকে দেখতে পেলাম । নিজের কেবিনের সামনে একটা বারান্দা । সেই বারান্দার রেলিং ধরে দাড়িয়ে রয়েছে । একটা পা তুলে রেখেছে একটা প্লাস্টিকের চেয়ারের উপরে । প্রতিটি অফিসের সামনে পিয়নদের বসার জন্য একটা চেয়ার থাকে । এটা সেই চেয়ার । নাদিয়ার হাতে জলন্ত সিগারেট !
পুরো করিডোরটা অন্ধকার । কেবল তার অফিসে আলো জ্বলছে । সেই আলোতে নাদিয়াকে দেখা যাচ্ছে । সে আপন মনে সিগরেট টানছে । আমার নিঃশব্দে কেটে পরার জন্য পা বাড়ালাম তখনই অদ্ভুত কান্ডটা ঘটতে দেখলাম । দেখলাম পাশের চেহারে সে দুই পা তুলে উঠে দাড়ালো । তারপর একটা একটা পা দিল রেলিংয়ের উপরে । আমার মোটেই বুঝতে কষ্ট হল না কি হতে যাচ্ছে ।
নাদিয়া সুইসাইড করতে যাচ্ছে !
ও মাই গড !
আমার মাথায় আর অন্য কিছু এল না । আমি ব্যাগ রেখে সিনেমার নায়কদের মত দৌড় দিলাম নাদিয়াকে বাঁচাতে ।

কিন্তু সিনেমার মত কিছুই ঘটলো না । আমি এতোই উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম আর বারান্দাটা একটু অন্ধকার হওয়ার কারণে ছোট ফুলের টবটা আমার চোখ পড়লো না ঠিক মত । সেটাতে পা বেঁধে হুড়মুড় করে পড়লাম নাদিয়ার সামনে । হাটুতে বেশ ভাল ব্যাথা পেলাম । যখন মাথা তুলে তাকিয়েছি দেখি নাদিয়া আমার দিকে খানিকটা অবাক আর বিরক্তমাখা চোখে তাকিয়ে রয়েছে ।
বলল, এভাবে দৌড়ানোর মানে কী?
-না মানে আপানকে দেখছিলাম যে ....
-ভাবলেন যে আমি ঝাপ দিবো? আমি নিজে ফেসবুকে এতো এতো মোটিভেশনাল স্পিচ দিয়ে আমি নিজেই সুইসাইড করবো এমনটা ভাবছিলেন ?
-আসলে .....
-বেশি স্মার্টনেস দেখাতে যাবেন না কোথায় । তাহলে এমন করে হুড়মুড় করে পড়বেন । বুঝেছেন?
-জি !

আমি প্যান্টের ধুলা ঝাড়তে ঝাড়তে উঠে দাড়ালাম । ঘুরে চলে যাচ্ছিলাম তখন নাদিয়া ডাক দিল । আমি ঘুরে দাড়ালাম । নাদিয়া বলল, আপনার প্যান্ট ছিড়ে গিয়েছে । কেটেও গিয়েছে দেখা যাচ্ছে । অফিসে আসুন । স্যাভলন লাগিয়ে দিচ্ছি ।
-না ঠিক আছে । খুব একটা সমস্যা নেই ।
-সমস্যা নেই বুঝলাম । আসুন !

আমার জন্য অপেক্ষা না করে সে নিজের অফিসের ঢুকে পড়লো । আমি বাধ্য হয়ে তার পিছু পিছু তার অফিসে ঢুকলাম । একটু পরে দেখি সে নিজেই যত্ন করে আমার ছেলা অংশে স্যাভলন লাগিয়ে দিল । এবং ঘটনা এখানেই থেমে থাকলো না । সে নিজের গাড়িতে করে আমাকে আমার বাসার সামনে । এই ছিল আমাদের মাঝে সরাসরি পরিচয় হওয়ার প্রথম দিন ।
আমি ভেবেছিলাম হয় এই ঘটনা এখানেই শেষ হয়ে যাবে । তবে সেখানে শেষ হল না ।

আমি খুব ভাল করেই জানতাম যে নাদিয়া আইরিন আর আমার রাস্তা একেবারে আলাদা । কোন ভাবে সেটা একে অন্যের দিকে মিশ খাওয়ার মত না । খাওয়ার কথাও না । আমি তেমনটা ভেবেই পরদিন অফিসের পরে ক্লাস করতে হাজির হলাম । ক্লাস শেষ করে যথারীতি বের হতে যাবো তখন একজন পিয়ন এসে আমাকে বলে গেল যে আমাকে নাকি নাদিয়া ম্যাম তার অফিসে দেখা করতে বলেছে । একটু অবাক লাগলো । নাদিয়া আইরিনের ক্লাস আমাদের সপ্তাহে একদিন । আজকে তার ক্লাস ছিল না । তাই আজকে তার সাথে দেখা হয় নি ।

আমি আস্তে ধীরে তার অফিসের সামনে গিয়ে হাজির হলাম । সে নিজের ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে কী যেন করছিলো । আমাকে আসতে দেখে সেটা বন্ধ করলো । তারপর বলল, আসুন। বসুন !
আমি রুমের ভেতরে ঢুকলাম । আমাদের ক্লাসের বেশির ভাগ স্টুডেন্টই আমার মত সবাই অফিসগামী । এবং প্রায় সবাই নাদিয়া আইরিনের চেয়ে বয়সে বড় কিংবা সমবসয়ী । তবে এই ব্যাপারটা নাদিয়াকে মোটেও অস্বস্তিতে ফেলে না । বরং এটা যেন সে বেশ উপভোগ করে । এবং পুরো ক্লাস তার নিয়ন্ত্রনে থাকে বেশ ভাল ভাবেই । সব সময় চোখে একটা কর্তৃত্বের ভাব লেগেই থাকে । ঠিক এখন যেমনটা লেগে রয়েছে । আমার কেন জানি মনে হল যে আমাকে সে ডেকে এনেছে গতকালকের জন্য ধমক দিতে । আমি তার সামনে একটু শান্ত হয়ে বসলাম । সে আমার দিকে একভাবে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে বলল, মিস্টার অপু হাসান !
-জি বলুন ।
-আপনার পায়ের কী অবস্থা ? ব্যাথা আছে?
-একটু । তবে সমস্যা নেই । জলদিই সেরে যাবে ।
-কালকে ওভাবে কেন দৌড় দিলেন শুনি? সত্যিই ভেবেছিলেন যে আমি লাফ দিবো?

আমি একটু অস্বস্তিতে পড়লাম । আমার গতকাল সত্যই এমনটাই মনে হয়েছিলো । বললাম, আসলে আমি সত্যিই ভেবেছিলাম যে আপনি লাফ দিতে যাচ্ছেন । ওভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আমার আসলে সেটাই মনে হল ।
-তারপর কী মনে হল? নায়কের মত আমাকে রক্ষা করে ফেলবেন । তাই তো ! তারপর আমাদের মাঝে প্রেম হবে ভালোবাসা হবে ?
আমি একটু অস্বস্তিতে পড়লাম । তারপর বললাম, আসলে ওটাতো ভাবি নি । তবে রক্ষা করতে চেয়েছিলাম । এটা সত্যি ।

নাদিয়া বেশ কিছুটা সময় আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো । তারপর আমাকে খানিকটা অবাক করে দিয়ে বলল, আমি সত্যি সত্যিই গতকাল লাফ দিতে যাচ্ছিলাম । আপনি না আসলে হয়তো লাফ দিয়েও ফেলতাম !
-সেকি !
-হ্যা ।
-কেন ?
-জানি না । কেন জানি নিজের উপরে আর নিয়ন্ত্রন থাকে না । কী যে করি কখন করি সে সব আমার আয়ত্ত্বের বাইরে চলে যায় মাঝে মাঝে । কালকে অনেকটা সময় এসব নিয়ে ভাবছিলাম । তারপর মনে হল এই জীবন আর রাখবো না । অবশ্য এটা নিয়ে আমি অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম ।
-এসব কী বলছেন আপনি ? আপনাকে কত মানুষ ফলো করে জানেন?
-জানি । কিন্তু আমি কী করবো ?
আমি বললাম, এক কাজ করুন । সব কিছু থেকে একেবারে ছুটি নিন । সব কিছু থেকে । কয়েক দিনের জন্য কোথা থেকে ঘুরে আসুন । নিজের ফোনটা বন্ধ রাখুন । কোন প্লান না । কেবল মনে যা আসবে তাই করুন । দেখবেন আবার সব কিছু ঠিক লাগছে ।
নাদিয়া হাসলো । তারপর বলল, আমার কথা আমাকেই শোনাচ্ছেন ?
-অনেক টা ।
-তাহলে চলুন আপনিও ।
-কী ?
-বললাম চলুন আপনিও । দেখুন আমার সব ঝামেলা সব কালকেই শেষ হয়ে যেত । কিন্তু আপনার কারণে হয় নি । তাই আপনার একটা দায় দায়িত্ব রয়েছে এর পেছনে !
-মানে কী ? কি বলছেন এসব ? আরে আমি কীভাবে যাবো ?

নাদিয়া কোন কথা না বলে আমার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে বলল, শুনুন । কোন কথা শুনতে চাই না । এই সেমিস্টারে আমার কোর্স আছে আপনার । যদি সেখানে ভাল মার্ক পেতে চান তাহলে আজকে রাতেই আপনি আমার সাথে বের হবে । আর কোন আর্গুমেন্ট শুনতে চাই না । এখন রাত আট টা বাজে । আমি ঠিক সাড়ে এগারোটার সময় আপনার বাসা থেকে আপনাকে পিক করে নিবো ।

আমি জীবনে এতো অবাক হয়েছি কিনা আমি জানি না । আমি এই পরিস্থিতিতে কোন দিন পড়বো সেটা আমি কোন দিন ভাবি নি । বাড়ির দিকে রওয়ানা দিলাম । হিসাব করে দেখলাম আমি অনেক দিন বাইরে বের হয় নি, কোথাও ঘুরতে যাই নি । কাজ কর্ম আর পড়াশুনা নিয়ে এতো ব্যস্ত ছিলাম যে ঘুরাঘুরির কথা আসলে মনেই আসে নি । আর প্লান করে আমি কোন দিন কোথাও যেতে পারি নি কোন দিন । কোন না কোন সমস্যা ঠিকই সামনে চলে আসতো সব সময় । আজকে এই উছিলাতে যদি যাওয়া হয় তাহলে হোক ।

বাসা এসে দ্রুত ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম । তারপর অফিসে বসের কাছে একটা ছুটির ইমেল পাঠালাম । যদিও একটু মিথ্যা কথা লিখতে হল ইমেলেই তবুও লিখলাম ! ঠিক করলাম যে আর ইমেল খুলে দেখবো না । ইমেল বস সকালে অফিসে যাওয়ার আগে সম্ভবত দেখবে না । সুতরাং যতক্ষণে সে দেখবে ততক্ষণে আমি অন্য কোথাও থাকবো । বাসায় জানিয়ে দিলাম যে কয়েকদিনের জন্য একটু বাইরে যাচ্ছি ফোনে নাও পেতে পারো ।

সাড়ে এগাড়োটার সময় নাদিয়া ঠিকই আমার বাসায় সামনে এসে হাজির হল । আমি ওর গাড়িতে উঠতেই আমার কাছ থেকে ফোন নিয়ে নিল । তারপর সেটা সুইচ অফ করে দিয়ে একটা বক্সের ভেতরে রেখে দিল । দেখলাম সেখানে ওর নিজের ফোনটা আগে থেকেই রয়েছে । আমার দিকে তাকিয়ে বলল, যদি আমরা কোন বিপদে না পড়ি তাহলে এই ফোন ঢাকার আসার আগে আর সুইচ অন হবে না ! ওকে ?
আমি বললাম না কিছু । কিছু বলে যে লাভ নেই সেটা আমি জানি খুব ভাল করে !

যদি সব কিছু আমার কাছে কেমন যেন মনে হচ্ছে । আমার এখনও ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমি নাদিয়া আইরিনের সাথে কোথাও বেড়াতে যাচ্ছি । আমার আসলে কোন ভাবেই এই মেয়েটার সাথে এখন গাড়িতে করে যাওয়ার কথা না । কিন্তু ঠিক ঠিক বেড়াতে যাচ্ছি । কোথায় যে যাচ্ছি সেই ব্যাপারে যদিও আমি নিজেও জানি না ।
গাড়ি চলতে শুরু করেছে । আমি নাদিয়াকে বললাম, আমরা তাহলে কোথায় যাচ্ছি?
নাদিয়া সামনে দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে । আমার দিকে একটু তাকিয়ে আবার সামনের দিকে তাকালো । তারপর বলল, জানি না ।
-জানি না মানে কী?
-তুমি খুব মানে কী মানে কী কর ! এতো মানে জেনে কী হবে শুনি?

আমি তখন আবিস্কার করলাম যে নাদিয়া আপনি থেকে তুমিতে নেমে এসেছে । এই মেয়ে এতো ফাস্ট হবে কেন সব কিছুতে ?
আমিও তুমিতে নেমে আসবো ? নাকি আপনি চালিয়ে যাবো?
আমার মনের কথা যেন নাদিয়া সাথে সাথেই বুঝে গেল । একটু হেসে বলল, তুমি আমাকে তুমি করে বল । সামনের কটা দিন যেহেতু আমরা এক সাথে যাচ্ছি তাই আমাদের মাঝে আপনি টাপনি ডাকা ভাল দেখায় না । তুমিই ভাল । চল দেখা যাক সামনে আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে ।

গাড়ি ছুটে চলল অজানার উদ্দেশ্যে । নাদিয়া গাড়িতে মৃদু শব্দে গান চালিয়ে দিল। আমার দিকে তাকিয়ে নাদিয়া বলল, জানো আমার এই ভাবে অজানার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার শখ ছিল অনেক দিনের । কিন্তু কোন দিন বের হতে পারি নি । জীবনের প্রতি এমন একটা বিতৃষ্ণা চলে এসেছিলো যে কী বলবো । এমন কিভাবে হয়ে গেলাম আমি নিজেও জানি না ।
-কেন এল এমন বিতৃষ্ণা?
-জানি না ।
আমি বুঝতে অসুবিধা হল না যে নাদিয়া কিছু একটা লুকাতে চাইছে । আমার কাছে বলতে চাইছে না । আমার কেন জানি মনে হল এর ভেতরে প্রেম ঘটিত কোন ব্যাপার আছে । কদিন আগে অবশ্য ভাসাভাসা ভাবে শুনতে পেয়েছিলাম যে কোন ক্রিকেটারের সাথে নাকি নাদিয়ার কিছু একটা চলছে । দেশ বরেণ্য বিখ্যাত প্লেয়ার সে । হয়তো তাদের ভেতরে কোন সমস্যা হয়েছে । এমন কিছু হতে পারে । অবশ্য এসব নিয়ে আমার এতো চিন্তা না করলেও চলবে । যদি নাদিয়া কোন দিন বলতে চায় তাহলে বলতে পারে । না বলতে চাইলে না বলবে । আমার এতো চিন্তা করার কোন দরকার নেই ।

হঠাৎ নাদিয়া বলল, তোমার খবর বল শুনি?
-আমার খবর বলতে?
-তোমার প্রেমিকা কিংবা বউ?
-বউ ? না আমি এখনও বিয়ে করি নি ।
-সে কি ! কেন বিয়ে কর নি শুনি? ভাল চাকরি করছো? বিয়ের বয়স তো হয়ে গেছে । তাহলে বিয়ে না করার কারণ শুনি?
-আসলে এমন কোন কারণ নেই । মনের মত মানুষ এখনও পাই নি ।
নাদিয়া আমার দিকে না তাকিয়ে বলল, অপু হাসান মনের মানুষ খুজে পাওয়া সম্ভব না । বুঝতে পেরেছ? এই জগতে কেউ কারো মনের মত হয় না । সবাই আলাদা । বিয়ে করতে হলে কিছু কম্প্রমাইজ করতেই হবে । কিছু ছাড় দিতেই হবে !
-তা তুমি এখনও বিয়ে করো নি কেন শুনি?
প্রশ্নটা টা শুনে নাদিয়া কিছু সময় যেন চুপ করে রইলো । আমার মনে হল যে এই প্রশ্নটা করা একেবারে ঠিক হয় নি । তবে দেখলাম নাদিয়া সামলে নিল । আমাকে বলল, আমি বিয়ে করি নি কারণ আমি করতে পারি নি । বিয়ে করতে চেয়েছিলাম ।
-তারপর ?
-তারপর আর কি । ছেলে পালিয়েছে ।
-মানে কি?
-আবারও মানে কি !
এই বলে নাদিয়া হাসলো । গাড়িটা নির্জন রাস্তার এক পাশে দাড় করালো । ততক্ষনে খেয়াল করলাম যে আমরা অজানা একটা স্থানে চলে এসেছি । কোথায় চলে এসেছি আমি সেটা চিনতে পারলাম না ।
নাদিয়া গাড়ি থেকে নেমে পড়লো । আমিও ভয়ে ভয়ে নেমে পড়লাম। জায়গাটা কেমন হবে ঠিক বুঝতে পারছি না ।
নাদিয়া গাড়ির সাথেই হেলান দিয়ে দাড়ালো । আমি ওর পাশে গিয়ে দাড়ালাম । আশে পাশে বেশ ভাল করে চোখ বুলাতে লাগলাম । সব দিকে কেমন নির্জন হয়ে আছে ।

নাদিয়া বলল, জায়গাটা কী নির্জন । তাই না ?
-হুম । কী যেন বলছিলে?
-ও হ্যা । বিয়ে । আসলে আমিও বিয়ে করতে চেয়েছিলাম ।
-তারপর?
-তারপর সে পালিয়ে গেল । পালিয়ে গেল বলতে বিয়ে করতে চাইলো না ।

আমি কারণ টা জিজ্ঞসে করবো কিনা ভাবছি এমন সময়ে নাদিয়া আবারও বলতে শুরু করলো, তোমরা পুরুষরা খুব ভন্ড হও !
আমি মানে কি বলতে গিয়েও সামলে নিলাম । নাদিয়া বলল, তোমরা মুখে বল এক কথা আর ভেতরে অন্য কথা । এই যে সারা দিন নারী স্বাধীনতার কথা বল অথচ নিজের বউয়ের বেলায় চাও যে বউ একেবারে বাধ্যগত হবে, বাইরে কাজ করতে পারবে না, স্বামীর মুখের উপর কথা বলতে পারবে না । তোমরা আসলে বউ চাও না, দাসী চাও, যে তোমার মনের মত হবে ! তুমিও তো বলল যে মনের মত কাউকে পাচ্ছো না বলে বিয়ে করতে পারছো না !

আমি প্রতিবাদ করে বলল, এটা মোটেও বলি নি । মনের মত কাউকে না পাওয়া মানে তুমি যেটা বলছো সেটা মোটেও না !
-আচ্ছা ? তো শুনি তোমার মনের মত মেয়ে কেমন ?
-শুনো আমি সারা জীবন কোন দিন ভাবি নি যে আমার বউ কথা মত উঠবে বসবে ! কোনদিনও না । বিয়ের পরে বউ কী করবে সেটা একান্তই তার নিজের সিদ্ধান্ত হবে । সে চাইলে চাকরি করবে নয়তো না । এটার ব্যাপার আমার কোন সে নেই । আমি যা বলবো সেটাও তাকে শুনতে বাধ্য হতে হবে না । সে ঠিক সেটা করবে ঠিক তেমনি ভাবে সে যা বলবে সেটাই আমাকে শুনতে হবে এমনও না । দুজন মিলে সমাধান হবে । যদি একান্তই সমাধান করা সম্ভব না হয় তাহলে আলাদা হয়ে যেতে হবে । ব্যাস এই হচ্ছে আমার চাওয়া । আর মনের মত মেয়ে বলতে আমি বুঝিয়েছে যার সাথে কথা বলে আমি শান্তি পাই, যার সাথে কথা বলার সময় যেন কখনও কথা হারিয়ে না যায় ! এটাই কেবল আমার চাওয়া ছিল । আর কিছু না !

গাড়ির হেড লাইটের আলোতে চারিদিকটা একটু আলোকিত হয়ে আছে । সেই আলোতেই দেখতে পেলাম নাদিয়া আমার দিকে অর্থপূর্ন চোখে তাকিয়ে আছে । আমি আবার বললাম, বিয়ে বল কিংবা সম্পর্ক বল, দুই উদ্দেশ্যেই আমি কয়েকটা মেয়ের সাথে মিশেছি । বিশ্বাস কর কয়েক সপ্তাহ পরেই এমন হয়েছে যে তাদের সাথে বলার মত আমি আর কোন কথা খুজে পাচ্ছি না । এমন মেয়ের সাথে কিভাবে সারা জীবন সংসার করবো ? না, আমি তাদেরকে মোটেই দোষ দিচ্ছি না । তারা কেবল আমার মনের মত নয় এবং আমিও তাদের মনের মত নই । এই যা !

নাদিয়া আমার দিকে আরও কিছু সময় তাকিয়ে রইলো । তারপর বলল, যাকে পছন্দ ছিল সে প্রথম প্রথম খুব বলতো সে সে বউ হিসাবে আমাকে চায় আমি যা করি সেসব তার খুব পছন্দ । যখন বিয়ের কথা শুরু হল তখন সে বলতে লাগলো চাকরি করলে কিভাবে সংসার হবে বাচ্চা কাচ্চা কে দেখবে ! তারপর এক সময় আমার উপর খবরদারী করা শুরু করলো । আমি যা করবো সেটা তার পছন্দ হতে হবে, নয়তো সেটা করা যাবে না এই ছিল তার বক্তব্য ! এটাই নাকি হয়ে আসছে । এটাই নাকি নিয়ম ! নিয়ম মাই ফুট !
আমি বললাম, আসলে তাকে দোষ দিয়েও লাভ নেই । সে সারা জীবন এই দেখে এসেছে তার আশে পাশে । তারা বাবা দাদারা একই ভাবে তাদের বউদের সাথে এমন আচরণ করে এসেছে ।
-সে দেখে এসেছে বলে নিজে কিছু ভাববে না? কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক চিন্তা করবে না? একজন মানুষ কেন অন্য একজনের এপ্রুভাল নিয়ে তারপর কাজ করতে হবে ?
আমি নাদিয়ার গলার উত্তাপ বুঝতে পারছিলাম । বললাম, আচ্ছা বাদ দাও এই কথা । যে চলে গেছে তাকে নিয়ে আর চিন্তা করে লাভ নেই ।
-আসলে বলতে চাই না । সে চলে গেছে এই নিয়ে আমার মনের ভেতরে কোন দুঃখ নেই । বরং আমি খুশি । কিন্তু আমার নিজের পরিবার এটা বুঝতে পারে নি । তাদের বক্তব্য যে দোষ নাকি আমারই । আমারই সব কিছু মেনে নেওয়া দরকার ছিল । আত্মীয় স্বজন সবাই । এতো ভাল পাত্র আমি কেন হাত ছাড়া করলাম । এমন কি ব্রেকাপের আমার বাবা মা তাদের বাসায় পর্যন্ত গিয়েছিলো ! নিজেকে কী যে ছোট মনে হয়েছিলো ! মেয়ে হওয়ার জন্য ঘৃণা ধরে গিয়েছিলো । সেদিন বাড়ি ছেড়ে চলে আসি আমি ।
-এখন একা থাকো?
-হ্যা । কিন্তু তবুও চারপাশের কথা বার্তা কী ঠেকানোর উপায় আছে ! আমাকে তারা একটু একা থাকতেও দেয় না । একটু শান্তিতে থাকতে দেয় না ! মাঝে মাঝে সব কিছু অসহ্য হয়ে ওঠে !

আমরা দুজন কিছু সময় চুপ করে রইলাম । রাতের নির্জনতা উপভোগ করতে থাকলাম । এক সময় নাদিয়া বলল, চল যাওয়া যাক ।
গাড়িতে উঠে গাড়িটা স্টার্ট দিতে গিয়েই বাঁধলো বিপত্তি । গাড়ি আর চালু হয় না । বেশ কিছু সময় গুতাগুতি করেও কোন লাভ হল না । নাদিয়া খানিকটা অবাক হয়েই বলল, আমার গাড়িটা তো এমন করে না কখনও ? আজকে হঠাৎ এমন কেন করছে ?
-হয়তো আমাদের এক সাথে যেতে দিতে নারাজ? আমাকে হয়তো পছন্দ করছে না তোমার গাড়ি?
-আচ্ছা । এমনটাই হয়েছে । হয়তো গাড়ির মনের মত নও তুমি !

এই বলে হাসতে শুরু করলো । আমিও ওর হাসিতে যোগ দিলাম । আমি তারপর বললাম, এবার কি ফোনটা ওপেন করার অনুমুতি পাবো?
-নোপ !
-মানে কি?
-আবারও মানে কি? শোন আজকের রাতে আমরা ফোন চালু করবো না । ইমাজিন যে এটা ১৯৮০ সাল । তখন হলে আমরা কী করতাম শুনি?
-ইমাজিন করার কোন দরকার নেই । এট যেহেতু ২০২১ আমাদের কাছে উপায় রয়েছে । ফোন করে সাহায্য নিয়ে আসি ।
নাদিয়া বলল, নো ফোন । আগেই বলেছি ! কোন ফোন না ।
আমি খানিকটা অসহায়ের মত নাদিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম । এই মেয়ের জেদের সাথে আমি কোন ভাবেই পারবো না । আমি বললাম, তো এখন কী করবো শুনি?
-চল বাইরে বের হই । দেখি কোথাও সাহায্য পাওয়া যায় কিনা !
-তুমি সত্যিই সিরিয়াস?
-হ্যা । চল সামনে যাই তো আগে । যদি একেবারেই কিছু না হয় তাহলে আবার ফিরে আসবো এখানে । আর মোবাইল রয়েছে বক্সের ভেতরে । সেটা লক করা পিন নম্বর দিয়ে । পিন নম্বর কেবল আমি জানি । । সুতরাং আমার ইচ্ছাই সব !
বুঝলাম যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই ।

গাড়ি থেকে বের হলাম দুজন । তারপর হাটা শুরু করলাম । কোন দিকে যে যাচ্ছি সেটা আমার কোন ধারণা নেই । আমরা গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি ঘন্টা দুয়েক হবে । গাজীপুর চৌরাস্তা পার হয়েছিলো এই টুকু আমার মনে আছে । তারপর নাদিয়া কোন দিকে যে গাড়ি নিয়েছে সেটা আমার মোটেও খেয়াল ছিল না । ওর সাথে কথা বলছিলাম । রাস্তার দিকে মনযোগ দিতে পারি নি । এতো নির্জন রাস্তায় কোথায় আছে সেটা আমি নিজেও জানি না । নাদিয়া কোন দিকে গাড়ি নিয়ে গেছে কে জানে !

কত সময় হাটার পরে হঠাৎই আমরা আবিস্কার করলাম যে আমরা এমন একটা জায়গাতে চলে এসেছি যেখানে মাঝ দিয়ে সোজা একটা রাস্তা চলে গেছে এবং দুই পাশে পানি । একটু মনে করতেই আমি জায়গাটা চিনে ফেললাম । অনেক দিন আগে আমি এই এলাকাতে এসেছিলাম । গাজিপুরের জয়দেবপুরের একটা স্থান । বর্ষা কালে এখানে এমন ভাবে পানি জমে । আমরা সেই রাস্তাতেই চলে এসেছি । এতো সময় ধরে আমরা কেবল গাজিপুর এসেছি ! একবার মনে হল নাদিয়াকে বলি তারপর মনে হল থাকুক । কী দরকার বলার । মনের ভেররে একটু আগে যে সংঙ্কাটা কাজ করছিলো সেটা আপাতত চলে গেল । আমি এখন জানি যে আমরা কোথায় রয়েছি । সুতরাং ভয় পেই ।

নাদিয়া চারিদিক তাকাতে তাকাতে রাস্তার ধারে ঠিক পানির পাশেই বসে পড়লো । আমাকেও বসতে হল ওর পাশেই । আমরা দুজনে সামনের দিকে তাকিয়ে রয়েছি । আমি আসলে কিছুই ভাবছি না । সব কিছু কেমন স্বপ্নের মত মনে হচ্ছে । আমার মনে হতে লাগলো নাদিয়া আসলে আমার প্রেমিকা । রাতের বেলা ওকে নিয়ে আমি ঘুরতে বের হয়েছি । তারপর এই চমৎকার স্থানে এসে পৌছেছি ।
হঠাৎ নাদিয়া বলল, এই এই ওটা কী?
আমি সামনে তাকিয়ে দেখলো অনেক দুরে পানির উপরে আলোর মত কী যেন দেখা যাচ্ছে ! আমি একভাবে বেশ কিছুটা সময় সেদিকে তাকিয়ে থাকার পরে ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম । অনেক গুলো জোনাক পোকা এক সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে । সেটাই এতো দুর থেকে মনে হচ্ছে যেন কোন অয়বয় একসাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে যেন । আমি সেটা বুঝতে পেরে নাদিয়া বললাম, আসলে এমন জলাশয়ের ভেতরে অনেক মানুষ মারা যায় ডুবে । তখন সেই মানুষের আত্মা গুলো রাতের বেলা এইভাবে এখানে ঘুরে বেড়ায় ।
-ভাল হবে না বলে দিচ্ছি ।

নাদিয়ার কন্ঠে কেমন যেন একটা বাচ্চা সুলভ রাগ টের পেলাম । তবে সেই সাথে নাদিয়া আমার দিকে একটু এগিয়ে এল বটে । আমি নাদিয়ার শরীরের গন্ধ পেলাম খুব কাছ থেকে । এই রাতের বেলা ও খানিকটা ভয়ই পেয়েছে । আমি এবার ওকে অভয় দিয়ে বললাম যেন ও মোটেই ভয় না পায় । আমি রয়েছি ওকে রক্ষা করার জন্য ।

আমাদের চোখ তখন সেই আলোর দিকেই রয়েছে । সেটা এক মোটে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে । আমরা সেটা দেখছি । দেখলাম আস্তে আস্তে সেটা একেবারে আমাদের কাছে চলে এল । নাদিয়া সেটার দিকে একভাবে বেশ কিছু সময় তাকিয়ে থেকে বলল, কী সুন্দর !
-হুম । এই সুন্দর দেখেই তুমি ভয়ে মরে যাচ্ছিলে !
-মোটেই ভয়ে মরে যাচ্ছিলাম না । আমি কেবল জানতে চেয়েছিলাম যে ওটা কী ! শুনো নাদিয়া আইরিন এতো সহজে ভয় পায় না বুঝেছো !
-বুঝলাম । নাদিয়া আইরিন বড় সাহসী !

আমরা আবারও খানিকটা সময় চুপ করে রইলাম । আসলে আমরা প্রকৃতির এই সৌন্দর্য দেখছিলাম এক সাথে । রাতের অন্ধকারের ভেতরে আমরা অচেনা একস্থানে বসে রয়েছি । দুই পাশে পানি আর পানি । মাঝ দিয়ে চলে গেছে একটা রাস্তা । আমরা বসে রয়েছে । একে অন্যকে খুব ভাল করে চিনিও না যেন । তবুও কী অদ্ভুত ভাবেই না আমরা এক সাথে হয়ে এখানে বসে রয়েছি । ব্যাপারটা কিন্তু মন্দ না ।
এক সময় নাদিয়া হঠাৎ বলল, রায়হান আকিবকে চেন না?
-কোন রায়হান আকিব ! ঐ যে ক্রিকেটার । সাবিকের পরেই যাকে সেরা অলরাইন্ডার ধরা হয় ?
-হ্যা ।
-হ্যা কেন চিনবো না।
-ও আমার বয়ফ্রেন্ড ছিল !
-তাই নাকি? কিন্তু ওর তো.....।

কথাটা বলতে গিয়েই থেমে গেলাম । রায়হান আকিবের মাস ছয়ের আগে বিয়ে হয়ে গেছে । বিশাল আয়োজন করে বিয়ে হয়েছে ।
নাদিয়া বলল, আমার সাথেই ওর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল । সব কিছু ঠিকঠাক চলছিলো । ওর সাথে আমার পরিচয় হয় একটা ফাংশনে । নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক একটা সেমিনারে ও গেস্ট স্পিকার ছিল । জানো এতো চমৎকার ভাবে কিছু কথা বলল নারী জাগরন আর উন্নয়ন সম্পর্কে ! আমার স্পিচ শেষ হতেই নিজ থেকে এগিয়ে এসে কথা বলল। তারপর .....
-তারপর?
-তারপর আর কী ! যা হয় তাই । আমাদের মাঝে প্রেম হল । এরপর যখন বিয়ের ব্যাপারটা আসতে শুরু করলো তখন ওর সেই ডোমিনেটিং ব্যাপারটা আস্তে আস্তে চোখের সামনে আসতে শুরু করলো । এটা করা যাবে না ওটা করা যাবে না । তার মন মত চলতে হবে । ওখানে যেতে হলে তার অনুমুতি লাগবে । নিজেকে আমি তবুও বদলে নিয়ে আসছিলাম । কিন্তু এক সময়ে বলে যে চাকরি করাও যাবে না । ইউনিভার্সিটিতে চাকরি করলে সন্ধ্যার পরে ক্লাস থাকবে । বাসায় পৌছাতে রাত হবে । এটা সে মেনে নিতে পারবে না । জানো একবার কী ইচ্ছে হয়েছিলো !
-কী?
-ইচ্ছে হয়েছিলো যে এই মুখে সে নারী উন্নয়নের কথা বলে অথচ বউ চায় নিজের কথায় উঠবে বসবে এমন । এই ব্যাপারটা সবার সামনে নিয়ে আসি । পুরুষেরা নারী উন্নয়ন কেবল ঘরের বাইরেই দেখতে চায় । নিজ ঘরে তারা নারীকে কেবল নারী হিসাবে দেখতে পছন্দ করে । মানুষ হিসাবে না ।
-আরে আরে ! এখানে আবার পুরুষ কে নিয়ে কথা বলছো কেন ! সব পুরুষ এমন না মোটেই । অন্তত আমি তো নই ই ।
-হয়েছে ! তুমিও আসলে সেই একই দলে । আমার সামনে ঢং করছো !
-তোমার সামনে ঢং করে আমার কী লাভ শুনি? তুমি তো আর আমার প্রেমিকা না । নাকি ! আমি তো আর তোমাকে ইম্প্রেস করতে চাইছি না যে আমাকে মিথ্যা বলতে হবে ! শুনো আমি যেমনটা ফিল করে সেটা আমি তোমাকে আগেই বলেছি । এবং আমি সেমনই মনে করি । বুঝতে পেরেছো কি?
-বুঝলাম ।

আমাদের মাঝে আর বেশি কথা হল না । আমাদের চোখ আবারও সেই জোনাক আলোর দিকে চলে গেল । আরও কয়েকটা ঘুরে বেড়াচ্ছে পানির উপরে । নাদিয়া সেই দিকেই তাকিয়ে রইলো । ও এখনও আমার সেই কাছেই বসে রয়েছে । হঠাৎ খেয়াল করলাম আমার কাধে হেলান দিল । মৃদু স্বরে বলল, একটা হেলান দিলাম ! আরাম করে দেখি ব্যাপারটা !

এইভাবেই সময় কেটে গেল । এক সময় অনুভব করলাম নাদিয়া ঘুমিয়ে পরেছে । ওর নিঃশ্বাসের আওয়াজ ঘন হয়ে এসেছে । রাতের অন্ধকার হলেও খেয়াল করে দেখলাম আকাশ থেকে একটু যেন আলো বের হয়ে এসেছে । সেই আলোতে নাদিয়ার মুখটা বেশ ভাল ভাবেই আমি দেখতে পাচ্ছিলাম । এতো চমৎকার লাগলো সেটা । আমি সেই দিকেই একভাবে তাকিয়ে রইলাম কেবল । অন্য কিছু আমার মনে আর রইলো না ।
এভাবে আমিও কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম একটু সেটা আমার নিজেরও মনে নেই । সকালে বলা পাশ দিয়ে একটা ট্রাক যাওয়ার আওয়াজে দুজনের ঘুম ভাঙ্গলো । দুজনই খানিকটা অপ্রস্তুত হলাম এভাবে রাস্তার পাশে ঘুমিয়ে পরার জন্য । উঠে পড়লাম । এভাবে এখানে এক সাথে ঘুমিয়ে পড়বো কোন দিন ভাবি নি । নাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো কেবল । তারপর পানিতে হাত মুখ ধুয়ে আমরা গাড়ির দিকে রওয়ানা দিলাম ।

এবার অবশ্য মোবাইল বের করতে দিল সে । আমি মোবাইল নিয়ে আশে পাশে মেকানিক খুজে নিয়ে এলাম ।

এরপর থেকে নাদিয়ার সাথে আমার একটা আলাদা ভাব হয়ে গেল। প্রায় দিনই আমরা এভাবে এক সাথে বের হয়ে গেলাম । যেদিকে চোখ যায় আসলে সেদিকে । কোন ঠিক ঠাকানা ছিল না । এক সময়ে অনুভব করতে পারলাম যে আমরা দুজন দুজনের কাছে সব কিছু শেয়ার করছি । সব কিছু বলছি । আমাদের একে অন্যের সাথে কথা বলতে ভাল লাগছে । সকল কাজের ফাঁকেও আমরা একে অন্যের খোজ খবর নিতে মোটেই ভুলছি না । তারপর ঘটলো সেই ঘটনাটা ।

সেদিন নাদিয়ার সাথে ঘুরতে গিয়েছি । এবার গিয়েছি ঢাকার বাইরে । প্রতি বৃহস্পতিবারই আমরা বের হয়ে যেতাম । সেদিন গিয়েছি সিলেট । তখনও আমাদের প্রেম শুরু হয় নি । হোটেলে উঠলেও আমরা দুইটা রুম নিতাম সব সময় । সেদিন সকালে হোটেলে চেক ইন করতে গিয়ে আমি যখনই দুইটা রুম নিতে যাবো নাদিয়া এগিয়ে এসে বলল, একটা ডাবল রুম প্লিজ !
আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম । নাদিয়া মুখ স্বাভাবিক রেখে এমন ভাবে রিসিপশনের দিকে তাকিয়ে কথা বলল যেন এটা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার । চাবি হাতে নিয়ে ওর আমার হাত ধরলো । এমন একটা ভাব ধরলো যেন আমি ওর প্রেমিকও না, সরাসরি হাসব্যান্ড ! আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না ।

পরে গিয়ে বুঝতে পারলাম । কোন একটা ন্যাশনাল লিগ চলছিলো । সিলেটে কয়েকটা ম্যাচ হবে । সেই ম্যাচ খেলতে এসেছে খেলোয়াররা এবং তারা আমাদের সাথে এই একই হোটেলেই উঠেছে। এই খেলোয়ারদের ভেতরে নাদিয়ার এক্স বয়ফ্রেন্ড রয়েছে । সে সকালে নাস্তা খেতে লবিতেই বসে ছিল । আমাদের দেখছিলো ।

আসল ঘটনা ঘটলো পরদিন রাতের বেলা । হোটেলের পাশেই চমৎকার একটা বাগান মত রয়েছে । আমরা আর নাদিয়া রাতের বেলা সেখানেই ঘুরছিলাম । এমন সময় রায়হান সাহেব এসে হাজির আমাদের সামনে । নাদিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, কেমন আছো?
-নাদিয়া একটু থমকে গেলেও সামলে নিলো সাথে সাথেই । এমন একটা ভাব করে বলল যেন রায়হানকে দেখেই নি আগে । ওকে এই প্রথম দেখে অবাক হচ্ছে । বলল, আরে তুমি এখানে ?
-হ্যা । আমাদের লীগ চলছে!
-ও আচ্ছা । এখন আর এসব লিগ ফিগের খেয়াল থাকে না । তা তুমি কোন দলের হয়ে যেন খেলতে !

দেখলাম রায়হান সাহেব একটু যেন অপমানিত বোধ করছে । বিশেষ করে তার মত বিখ্যাত প্লেয়ার কোন টিমের হয়ে খেলছে সেটা না জানা মানে হচ্ছে তাকে অপমান করা । আমার দিকে তাকিয়ে বলল, তোমাকে বলেছিলাম না একটা ছেলের কথা । ইনিই হচ্ছে সেই ।
-ও আচ্ছা আচ্ছা । ক্রিকেট খেলে বলেছিলে !
আমিও এমন একটা ভাব করলাম যে রায়হানকে যেন আমি ঠিক মত চিনিই না । আমি সেটাকে আরেকটু বাড়িয়ে দিতে রায়হানের দিকে তাকিয়ে বললাম, আসলে আমার খেলার বিষয়ে আগ্রহ একদম কম । কোন খেলারই দেখা হয় না একদম ।
নাদিয়া এবার আরও একটু টিটকারি মেরে বলল, তা তোমার বউ রান্না করে খাওয়াচ্ছে তো ঠিকঠাক !

দেখলাম রায়হান সাহেব আর বেশি সময় দাড়ালো না । ওখান থেকে চলে গেল । সে চলে যাওয়ার পরপরই নাদিয়া এমন হাসতে লাগলো । সাথে আমিও যোগ দিলাম হাসিতে । সেই দিন রাতেই আসলে আমাদের মাঝে প্রথম অঘটন টা ঘটলো । হোটেলের বিছানাটা বড় । আমরা মাঝে একটা বড় কোলবালিশ দিয়ে ঘুমাতাম । রাতে শুয়েছি এমন সময় নাদিয়া আমাকে বলল, তোমার কী মন খারাপ হয়েছে?
-কেন ? মন খারাপ কেন হবে?
-না এই যে তোমাকে ব্যবহার করলাম রায়হানকে টিজ করার জন্য !
-আরে না । আমার বরং মজাই লাগলো ।
-একটা কথা বললে কী বিশ্বাস করবে?
-বল?
-আমি রায়হানকে মুছে ফেলার জন্য কখনই তোমার সাথে মিশি নি । তোমার সাথে মিশেছি কারণ আমার মিশতে ভাল লেগেছে । তোমার সাথে কথা বলতে ভাল লাগে আমার । সময় কাটাতে ভাল লাগে !
-আামরও তাই । এই জন্যই মিশি !

এরপর অনুভব করলাম নাদিয়া মাঝের কোল বালিশ সরিয়ে আমার কাছে চলে এল । একেবারে আমার কাছে । আরও একটু বেশি ঘনিষ্ট হয়ে হয়ে ! আমার বুকের ভেতরে কেমন যেন করে উঠলো । তারপর.....

পরদিন সকালে আমাদের বিছানাকান্দি যাওয়ার কথা ছিল । কিন্তু আমরা গেলাম না । হোটেলের ভেতরেই রয়ে গেলাম । দুজন দুজনকে তখন আরও কাছে পাওয়া শুরু করেছি । এই আকর্ষণ সব আকর্ষণ বেশি ।
এরপর থেকেই আমাদের প্রেম যেন চরমে উঠল । তখনও সেটা গোপনেই রয়ে গেল । যদিও খানিকটা কানা ঘুষা শোনা যেতে লাগলো নাদিয়ার নতুন বয়ফ্রেন্ড সম্পর্কে । কিন্তু সেটা যে কে কেউ বলতে পারলো না । কিন্তু এখন সেটা অনেকেই জানে । অন্তত আমার পরিচিতরা তো জানেই ।


আমি নাদিয়ার কথা মত যথারীতি ওর বাসায় গিয়ে হাজির হলাম । আমি ঘরে ঢুকতেই ও আমার দিকে ওর ট্যাবলেট টা এগিয়ে দিল । সেখানে একটা নিউজ শেয়ার করা । শিরোনাম টা হচ্ছে, বিখ্যাত অলরাউন্টের নামে নারী নির্যাতনের মামলা । আগাম জামিনের আবেদন !

নাদিয়া আমার একদম কাছে এসে বসলো । তারপর বলল, সেদিন তুমি যদি আমাকে না বাঁচাতে তাহলে একজন অযোগ্য আর খারাপ মানুষের জন্য আমি নিজেকে শেষ করে দিতাম । থ্যাংঙ্কস টু ইউ !
বললাম, শুধু খালি মুখে থ্যাংঙ্কস ?
-আর কী চাও শুনি?
-তুমি জানো আমি কী চাই ।
নাদিয়া একটু হাসলো । তারপর চোখ পাকিয়ে বলল, এসব হবে না আর । কালকে আসতে বলেছিলাম, যদি আসতে পেতে । এখন আর না । এবার একেবারে বিয়ে পরে । আর না ।
-মানে কী ?
-মানে এই ই !


আমি কিছু বলতে যাবো তখনই দেখলাম বন্ধু সাদির ফোন এসে হাজির । ফোন ধরতেই সাদি বলল, তুই শালা সত্যি একটা চিজ !
-আবার কী হল !
-আবার বলিস আবার কী হল ! নাদিয়াকে কিভাবে পটিয়ে ফেললি বল তো !
-মানে কি?
-আরে বেটা তোর ছবি সে পোস্ট করেছে নিজের পেইজে । এবার ভাল করে দেখ । আর কত লুকাবি বন্ধুদের কাছ থেকে ।

আমি ফোন রেখে ফেসবুকে ঢুকলাম । দেখি সত্যি সত্যি নাদিয়া আমার আর ওর একটা ফেসফি পোস্ট করেছে । দুতিন মাস আগে । বান্দরবান গিয়েছিলাম। জাদিপাই ঝর্ণার সামনে আমার গালে একটা চুমু খাওয়া অবস্থাতেই ছবিটা তুলেছিলাম। সেটা পোস্ট করে দিয়েছে । আমি নাদিয়ার দিকে তাকালাম ।
নাদিয়া বলল, হোয়াট ? আর কতদিন লুকিয়ে রাখবো শুনি !
-আমাকে জানাবে তো একবার নাকি?
-না । আমার ইচ্ছে ।
আমি কী বলবো খুজে পেলাম না । অবশ্য রাগ করার কোন কারণ নেই আসলে । কেনই বা করবো । এবার বিয়েটা করে ফেলাই উত্তম । বিয়ের বয়স তো পার হয়ে যাচ্ছে ।


গল্পটা আগে নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত




pic source
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:৩৪
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×