দেশের বিখ্যাত কোম্পানীর সিইও হোটেল থেকে বের হয়েছেন, এমন সময় তাকে একজন ঠান্ডা মাথায় গুলি করে খুন করল। সিসিটিভিতে সেই গুলি করার দৃশ্য স্পষ্ট ধরা পড়ল। এখন মানুষের মন ভাব কোন দিকে যাবে? নিশ্চয়ই যে খুন হয়েছে তার দিকে। কিন্তু আশ্চর্য জনক ভাবে মানুষ ঐ খুনীর পক্ষ নিচ্ছে। ঐ খুন হওয়া সিইওকে নিয়ে মিম বানাচ্ছে হাসাহাসি করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যবীমা প্রতিষ্ঠান ‘ইউনাইটেড হেলথকেয়ার’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রায়ান থম্পসন হত্যা কাণ্ডের ঘটনা নিয়ে। এই হত্যা কাণ্ডে রাজনীতিবিদ বা বড় কোম্পানীগুলো নিন্দা প্রকাশ করলেও সাধারণ মানুষ খুনীর পক্ষ নিচ্ছে। মারা যাওয়া ব্রায়ান থম্পসনের প্রতি তাদের বিন্দমাত্র সমবেদনা নেই। এই খুনের অভিযোগে লুইজি মাঞ্জিওনি নামে ২৬ বছরের এক যুবককে ধরেছে পুলিশ । এরইর মধ্যে ইন্টারনেটে সে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। একটু আগের খবরে দেখলাম তার জন্য এক তহবিলে ৩১ হাজার ডলারের বেশি অনুদান জমা পরেছে।
আসলে সিইও ব্রায়ানের প্রতি মানুষের এই ক্ষোভের কারণ কী?
এটা বুঝতে যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা সেবার দিকে একটু তাকাতে হয়। আমাদের দেশে স্বাস্থ্যের মান খারাপ এটা আমরা জানি কিন্তু সেটা সস্তা । কিন্তু আমেরিকার চিকিৎসা সেবা প্রচন্ড ব্যববহুল । কিন্তু সেটা সহজ করতে তৈরি হয়েছে স্বাস্থ্যবীমা কোম্পানী। এই কোম্পানীতে আপনি বীমা করবেন, এবং প্রতিমাসে প্রিমিয়াম দিবেন এবং যখন আপনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবে তখন এই কোম্পানী সেটার বিল দিবে। আমাদের দেশেও এমন স্বাস্থ্যবীমা আছে। চাইলে আপনিও করতে পারেন । এখন ধরেন আপনি এমন স্বাস্থ্য বীমা করলেন। দিনের পর দিন নিজের আয়ের একটা অংশ আপনি সেই বীমাতে জমা দিলেন। এখন এক পর্যায়ে আপনার শরীর খারাপ হল । কিন্তু যখনই আপনি বীমা চাইতে গেলেন কোম্পানী আপনাকে নগন্য কোন কারণ দেখিয়ে বীমার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাল। এই যে কোম্পানীর সিইও খুন ঠিক এই কাজটা করত। তাদের বীমা রিজেক্টের পরিমান ৩২%। এটা আমেরিকার সকল স্বাস্থ্যবীমা কোম্পানীর মধ্যে সর্বোচ্চ। এই কোম্পানীর মোট রেভিনিউয়ের পরিমান প্রায় চারশ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। শুধু গত বছরই তাদের আয় ছিল ৩২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। মানুষের টাকা মানুষকে না দিয়ে দিয়ে এই টাকা তারা আয় করেছে। নিচে মানুষের রিএকশানের একটা ভিডিও দিলাম। এই রকম আরও অনেক ভিডিও পাবেন ইউটিউবে আর টিকটকে।
ব্যাপারটা আরও বিস্তারিত ভাবে বুঝতে নিচের ভিডিওটা দেখতে পারেন।
তবে অনেক্ক দিন পরে আমেরিকার সাধারণ মানুষ আবারও কোন ব্যাপার নিয়ে একেবারে এক ছাদের তলে এসেছে। মানুষ সব সময়ই অন্যায়, আগ্রাসানের বিরুদ্ধে এক জোট হয়। এই খুন থেকে অবশ্যই অন্যান্য সিইওদের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ যে মানুষের ক্ষোভের কারণ হওয়া ঠিক না । কারণ মানুষ আপনার মৃত্যুতে ন্যূনতম সহানুভূতিটুকুও দেখাবে না। এই যে এতো টাকা পয়সার মালিক সিইও, কী হল বলেন জীবনে! অকালে তো মরলো সেই সাথে তার মৃত্যুকে মিম বানিয়ে ছাড়ল। সারা জীবন মানুষ তাকে এই রক্তচোষা হিসাবেই মনে রাখবে।
আরো পড়তে পারেন
ইউনাইটেড হেলথের সিইও খুন
নেপথ্যে আততায়ীর পিঠে ব্যথার ইতিহাস?
Facebook source
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৮