মোহাম্মাদপুরের ১১ বছরের মেয়ের গুম হয়ে যাওয়া এবং রে তার খোজ পাওয়ার ঘটনা নিয়ে আজকে পুরো অনলাইন গরম ছিল। ব্লগে এসে দেখি এখানেই দুই তিনটা পোস্ট চলে এসেছে। গতকালকেই এই মেয়েটাকে নিয়ে যারা চিন্তিত ছিলেন আজকে তারা বিরক্ত এই মেয়েটার উপর। সত্যিই বলতে আমার নিজেরও মেজাজ চরম খারাপ হয়েছে সংবাদটা শোনার পরে। না, প্রেম ভালোবাসা নিয়ে আমার কোন আপত্তি নেই। প্রেম করে ঘর ছেড়ে বের হয়ে যাওয়ার ঘটনা অসংখ্য আছে। এইট নাইনে পড়া মেয়েদের এমন ঘটনা নতুন নয়। আমার মেজাজ খারাপের কারণটা হচ্ছে পালিয়ে গেছিস ভাল, বাসায় তো অন্তত এই একটা খবর দিয়ে জানাইতে পারতি যে তুই গেছিস নিজের ইচ্ছায়। তাহলে পুরো অনলাইনবাসী তোর জন্য এমন চিন্তা করতো না ।
তবে একটা ব্যাপার আপনারা হয়তো খেয়াল করে দেখেন নি। এই মেয়েটার হারিয়ে যাওয়ার সংবাদ অনলাইনে ছড়িয়ে যাওয়ার পরে মুহুর্তের ভেতরেই মানুষ এটার পেছনে পরে ছিল। এবং পড়ে ছিল বলতে কেবল কিন্তু ফেসবুকে শেয়ারের ভেতরেই ব্যাপারটা সীমাবদ্ধ ছিল না ব্যাপারটা। মানুষজন রীতিমত এই মেয়েটার ছবি নিয়ে ঐ স্থানে স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছে, মানুষজন কে জিজ্ঞেস করেছে, তার খোজ খবর নিয়েছে। থানায় থানায় ঘুরেছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এবং এই কাজগুলো করেছে এমন সব মানুষ যারা মেয়েটাকে চেনেও না। এই একটা অপরিচিত মানুষের জন্য এমন ভাবে নিজের খেয়ে বনের মেষ তাড়ানোর মত দৌড়ে বেড়ানো, ব্যাপারটা আপনাদের কাছে ভাল লাগছে না?
বাঙালি তো বদমাইশ আছেই কিন্তু বাঙালির ভেতরে কিন্তু এই চমৎকার ব্যাপারটাও আছে।
আরেকটা চমৎকার ব্যাপার বলি। সম্ভবত সপ্তাহ খানেক আগের ঘটনা। এক ফকির মহিলা ভিক্ষা করে করে প্রায় ৭০ হাজার টাকা জমিয়েছিল। সেই টাকা যখন সে ব্যাংকে জমা দিতে যাচ্ছিল তখন কোন ভাবে সেই টাকা তার কাছ থেকে খোয়া যায়। মহিলার কান্না দেখে এই ব্যাপারটা একজন ফেসবুকে পোস্ট করে। মাত্র কয়েক ঘন্টার ভেতরেই মানুষ জন সাহায্য করে সেই মহিলার ৭০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছে । এই রকম আরো অসংখ্য চমৎকার ঘটনা আপনার চোখে পড়বে আর এগুলো এই এদেশের বদমাইশ বাঙালিরাই করে।
সত্যি বলতে আমি মোটামুটি ধরেই নিয়েছিলাম মেয়েটার সাথে খারাপ কিছু হয়েছে। হয়তো দুয়েকদিন পরেই ভয়ংকর কোন সংবাদ হোমপেইজে দেখবো। বেশির ভাগ মানুষেরই এই ধারণাটাই ছিল বলে আমার বিশ্বাস । এই হারিয়ে যাওয়ার সংবাদটা শোনার পর থেকেই সবার মনেই এই অচেনা মেয়েটার জন্য এই দুঃশ্চিন্তা ছিল। তবে যখন এমন কোন সংবাদ এল না বরং মেয়েটার ঠিকঠাক মত ফিরে আসার সংবাদ ফিরে এল তখন সবার মনে একটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। আমরা যত বিরক্তি প্রকাশ করি না কেন সত্যি বলছি আই ফিল রিয়েলি হ্যাপি যে আমাকে আরেকটা দুঃসংবাদ শুনতে হয় নি। তবে সেই সাথে ঐ মেয়ের বাবার কাছে একটা অনুরোধ আমার অবশ্যই থাকবে। সেটা হচ্ছে বাসায় ফেরার পরে সবার আগে ঐ বদ মেয়ের গালে যেন একটা কষে চড় তিনি মারেন। সম্ভব হলে, ফেসবুক লাইভে এসে চড়টা যেন মারেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:২৪