বাংলা ব্লগ সম্পর্কে কবে কখন কার কাছ থেকে প্রথম শুনেছি মনে নেই । তবে আমি প্রথম সামু নিয়ে ফেসবুকেই জেনেছি । আমি মানুষ হিসাবে খুব বেশি মজার নই । মাঝে মাঝে ডুব দেয়া আমার সহজাত অভ্যাস । তবে এই বাজে অভ্যাসটার জন্য আমার কিছু অদ্ভুত অভ্যাস দাড়িয়ে গেল । যেমন প্রচুর বই পড়া হত আমার, হাতের কাছে যা পেতাম তাই পড়তাম । আর প্রচুর মুভি দেখা হত । এই অভ্যাসগুলো আমার এখনও আছে ।
তবে একটা জিনিস যে ফেসবুক আমায় কখনও টানত না । আমি নেটে ফেসবুক ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতাম । আস্তে আস্তে একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম যে নেটে বাংলায় অনেক ভাল ভাল লেখা আসছে । এভাবেই বিভিন্ন লেখা আর সেই সাথে বিভিন্ন সাইটের সাথেই একটা পরিচয় হয়ে গেল । আর সামুর কাছাকাছি আসাটা তখন সময়ের ব্যাপার মাত্র ।
একটা সময় আমি লক্ষ্য করলাম প্রায়ই সামুতে আসছি, তবে ব্যাপারটা অনেক অনিয়মিত ছিল । একসময় আসাটা নিয়মিত হল । সেটা ২০০৮ এর দিকে । আমি সামুতে আসতাম শুধু পড়ার জন্য । কখনও মনে আসেনি যে নিজে কিছু দেই । এমন না যে কিছু লিখি না । মাঝে মাঝেই আমার বাদামী ডায়েরীতে যে কিছু বস্তা পচা লিখা লিখি সেগুলো সবার সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছা হতনা । আর একটা বিষয় যে কিবোর্ড এর চেয়ে আমার কলমই ভাল লাগত । কিন্তু মাঝে মাঝে সামুতে এত দুর্দান্ত কিছু লেখা আসত যে কমেন্ট করতে খুব লোভ হত । সামুর সাথে আমার বন্ধনটা শক্ত হবার পেছনে কয়েকজন গুণী ব্লগারের লেখা কাজ করেছে এবং অবশ্যই ব্লগার নিজে । তাদের কয়েকজনের কথা না বলে পারছি না ।
১. ড়ৎশড়ঃ মানুষ এতো সুন্দর করে কিভাবে লিখে আমি জানিনা । আমি যখন ওনার গল্পগুলি পড়ি তখন মনেই হয়না যেন গল্প পড়ছি । মনে হত যেন আমার চোখের সামনে চরিত্রগুলোকে দেখতে পাচ্ছি । আমি সবচেয়ে বেশি আফসোস করতাম যে আমি এই মানুষটার লেখায় কিছু বলতে পারতাম না বলে । প্রিয় লেখক, আপনি কি জানেন আপনি কত উঁচু মাপের লেখক? আপনি কি জানেন আপনার সবগুলো লেখা আমার কয়েকবার করে পড়া? আচ্ছা ভালবাসার এত সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম অনুভূতি কিভাবে পারেন এত সহজে বলতে? প্রতি মাসে আপনার একটি গল্পের জন্য আমি কতটা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতাম আপনি জানেন না ভাই ।
এই অধমের লেখা যদি আপনার চোখে পরে তাহলে শুধু এটুকুই দাবী, লেখালেখি বন্ধ করবেন না কখনও প্লিজ । আর যদি সম্ভব হয় মাসে আপনার যেন একটি হলেও লেখা পাই ।
২. অপু তানভীর: খুব মজার মজার আর লুতুপুতু প্রেমের গল্পের জন্য তাকে ভাল লাগে । যদিও আমার লুতুপুতু গল্পে মেজাজ গরম হয়ে যায় কিন্তু কেন জানিনা এই লোকের লেখা আমার ভালই লাগে । দিনে একটা করে মন ভাল করে দেয়া গল্প কার না ভাল লাগবে? তবে এই ভাইজান ইদানিং ফাকিবাজি করতেছে, প্রতিদিন আর গল্প পাই না । ভাইজান যদি আপনি আবার আগের গতিতে লেখা শুরু করতেন এই অধম ধন্য হয়ে যেত ।
৩. চেয়ারম্যান০০৭: এই লোকের পুংটামি নিয়ে বলার কিছু নাই । লুল সম্রাট চেয়ারম্যানের সবগুলো লেখাই পড়েছি আর পেটে হাত চেপে হেসেছি । কিন্তু আফসোস যে চেয়ারম্যান আর চেয়ারম্যান নাই । মাইক্রোস্কোপ দিয়েও তার লিখা আমি খুজে পাই না । যেখানেই থাকুন ফিরে আসুন ।
৪. শায়মা : অন্যতম প্রিয় একজন ব্লগার । শুধু আমার না, এই ব্লগের এমন কাউকেই বোধ হয় খুজে পাওয়া যাবে না যে তার মুগ্ধ গুণগ্রাহী নয় । আপুটার “যখন আমার রাগ হলো, ইচ্ছে হলো দুহাত দিয়ে দেই টিপে তার গলা” এই লেখাটা পড়ে কি যে মজা পেয়েছিলাম বলে বুঝানো যাবে না । এই পরী আপুটাকে ধন্যবাদ যে আমার মত একটা নগণ্য ব্লগারের ফালতু লেখায় তার মন্তব্যের জন্য ।
৫. নাফিজ মুনতাসিরঃ প্রচুর মুভি দেখেন এবং আমাদের দেখান । অনেক মুভি দেখেছি শুধু তার সাজেশন এর কারনে । কখনও হতাশ হইনি ।
৬. দূর্যোধন : ব্লগিং করেন অথচ দূর্যোধনকে চেনেন না এমন মানুষ বোধ হয় নাই । ইদানিং অনিয়মিত । তার পোস্টগুলো খুব মিস করি ।
৭. নোমান নমি : নিজের সম্পর্কে তার অভিমত “এই শহর ব্যাস্ততার রোষানলে, সভ্যতা গড়ছে নাগরিক।
আমি তখন অলস মস্তিস্কে শয়তানের কারখানার একনিষ্ঠ শ্রমিক” । বহুমাত্রিক লেখক তিনি । তার সম্পর্কে বলার মত বিশেষণ খুজে পাচ্ছি না ।
৮. খেয়া ঘাট : ভাল ভাল অনেক ছোটগল্পের কারিগড় তিনি । আমার ব্লগে প্রথম মন্তব্য এই মানুষটার । শুভকামনা রইল তার প্রতি ।
আমার প্রিয় এই মানুষগুলোর পোস্টে কেন যেন মন্তব্য করতে পারি না সহজে । তাদের লেখাগুলোকে আমি বার বার পড়ি, যত পড়ি ক্ষুধা তত বাড়ে । ব্লগিং চলুক নিরন্তর ।
উৎসর্গঃ ইমন জুবায়ের ভাইকে, যার লেখা না পড়লে কোনদিন ব্লগে আসাই হত না ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




