
ভারতের এক হাসপাতাল ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কোন রুগিকে তারা চিকিৎসা দিবে না। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যে হাসপাতাল থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে সেই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার জন্য বাংলাদেশের লোক তো দূরের কথা ভারতের লোকজনও যায় না, আবার যারা সেখানে চিকিৎসা নিতে যায় তারা নাকি সুস্থ্য হওয়ার পরিবর্তে জান নিয়ে ফিরতেই কষ্ট হয়ে যায়। এতো দেখি পাগলের সুখ মনে মেনে। যে হাসপাতালে বাংলাদেশের কোন রুগি মনের ভুলেও যায় না সেই হাসপাতাল করেছে চিকিৎসা বয়কট। সেইটা আবার ভারতীয় মিডিয়ারা ফলাও করে প্রচার করছে। এই ঘোষণা যদি চেন্নাইয়ের হাসপাতালগুলো দিতো বা বাঙ্গালোরের দেবী সেঠির হাসপাতাল দিত তাহলে বুঝতাম ভারতের চিকিৎসকরা সত্যি সত্যিই বাংলাদেশিদের বয়কট করেছে।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো কোলকাতার কিছু হাসপাতালসহ চেন্নাই এবং বেঙ্গালোর হাসপাতালগুলোর বেশিরভাগ রুগি বাংলাদেশের। এই বড় বড় হাসপাতালগুলো কিন্তু এই ব্যাপারে কিছুই বলে নাই। না বলার কারণ হলো-- বাংলাদেশের রুগির উপর ভিত্তি করেই হাসপাতালগুলোর সেটাপ অনেক বড় করেছে। বাংলাদেশের রুগি না গেলে তারা অনেক ক্ষতির মুখে পড়বে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। যেমন বেঙ্গালোরের দেবী সেঠির নারায়ানা হাসপাতালে প্রায় ছয় হাজার কর্মী আছে তার মধ্যে বাংলাদেশের লোকজনের জন্যই প্রায় শতখানেক বাংলা ভাষী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশি যদি না যায় তখন এই লোকগুলোর কাজ থাকবে না আর কাজ না থাকলে বাংলাদেশ যত না ক্ষতিগ্রস্ত হবে তার চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে হাসপাতালসহ নিয়োগকৃত লোকগেুলো।
ভারতের অতি উৎসাহী লাফাংগারা হয়তো মনে করেছে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করলে বাংলাদেশ অনেক ক্ষতির মুখে পড়বে। তাদের এই ধারণা ভুল। বরঞ্চ ভারতে বাংলাদেশের রুগি না গেলে বাংলাদেশের হাজার হাজার কোটি টাকা সেভ হবে। এতে বাংলাদেশের চিকিৎসাসহ অন্যান্য খাতে আরো অনেক উন্নতি হবে। যেমন, ভারত যখন হঠাৎ করে বাংলাদেশে গরু সাপ্লাই বন্ধ করে দেয় তখন বাংলাদেশ সাময়িক সমস্যায় পড়েছিল কিন্তু সেই সমস্যায় বেশি দিন ভুগতে হয় নাই। বরঞ্চ উল্টো লাভ হয়েছে। ভারত যখন গরু সাপ্লাই দিত তখন প্রত্যেকটা ঈদেই ভারতীয় গরুর জন্য অপেক্ষা করতে হতো। তখন বাংলাদেশে খুব একটা খামারি ছিল না, সারা দেশে সর্বমোট গরুর খামার ছিল মোটে পাঁচ শতটি। ভারত গরু সাপ্লাই বন্ধ করার পর দেশের চাহিদা অনুযায়ী সেই পাঁচ শতটি খামার থেকে বর্তমানে সাড়ে সাত লক্ষ খামার তৈরি হয়েছে। এখন আর কোরবানির জন্য আগের মতো ভারতের গরুর দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় না। বরঞ্চ কোরবানির গরুর পর্যাপ্ত পরিমাণ চাহিদা মিটে আরো অনেক বাড়তি থেকে যায়।
গরুর খামার হওয়ার কারণে দেশের বেকার সমস্যার যেমন সমাধান হয়েছে তেমনি জাতীয় অর্থনীতিতেও অনেক আয় বেড়েছে। শুধু গরু কেনার জন্যেই তখন প্রায় চল্লিশ হাজার কোটি টাকা ভারতকে দিত হতো। বর্তমানে পর্যাপ্ত পরিমাণ খামার হওয়ায় এখন আর হাজার হাজার কোটি টাকায় ভারত থেকে গরু কিনতে হয় না।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


