somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার প্রথম ষ্টেজ শো B-) B-)) ..... /:) :(( ..... X(

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একদিন আামার সিনিয়র ভাই (সিনিয়র হলেও আমরা ছিলাম ফ্রেন্ডের মতো) আমাকে খবর দিলো স্কুল মাঠে আসতে। আমি ভাবলাম কোন ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে আলোচনা করবে না হয় কারো ডাব চুরির প্লান করা হবে। ;) ;) গেলাম, গিয়ে যা শুনলাম আমিতো খুশিতে আত্মহারা। একদিকে খুশি আরেকদিকে টেনশনে কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়া আরম্ভ করলো।
আমাদের পাশের বাড়ীর কার জানি বিয়ে, উনার মেহেদী অনুষ্ঠানে আমাদের নাটক করতে হবে, ঠিক নাটক না, প্যাকেজ অনুষ্ঠানের মতো কিছু একটা করা। ওইরে আমাকে আর কে পায়, নাটক করা কথা শুনেই আমি মনে মনে বিরাট ভাব মারা আরম্ভ কইরা দিলাম। সাথে সাথে আমাদের স্কুলের নাছের সুন্দরী মেয়েটাকে নায়িকা বানিয়ে নায়ক ইসটাইলে কোমাড় ঘুরাইয়া দুএক লাইন নাছ মাইরা দিলাম। B-)) :#> :#> যদিও জিন্দেগীতে কোন ষ্টেইজেতো দুরে থাক, ৫জন মানুষের সামনে দাড়িয়ে একটা কেরাতও পড়তে পারিনাই। B:-) /:) কিন্তু দোস্তের কথা শুনে আমার দিবাস্বপ্ন ভঙ্গ হলো। ধপাস কইরা পড়লাম আসমান থেকে। বলে কিনা্ যার বিবাহ উনি আবার বুজুর্গ মানুষ। তাই কোন মেয়ে ছাড়াই বাদ্য বাজনা ব্যথীত অনুষ্ঠান করা লাগবে। শুনেতো আমার মেজাজ গেল বিগরাইয়া। চিক্কুর দিয়া বল্লাম ওই হুজুর হইলে আবার কিয়ের নাটক ফাটক??
বন্ধু আমাকে কোন রকমে বুঝালো যে যাইই হোক প্রথম অনুষ্ঠান করবো তাও কমকি??? আরে তোমার অনুষ্ঠানের কেতাপুরি, আমি করবোনা অনুষ্ঠান ফনুষ্ঠান।

দোস্তের জুড়াজুরিতে রাজি হলাম। অনেক্ষন বসে বসে বেশ কয়েকটা কৌতুক আর গান ঠিক করলাম কোন কোনটা করা যায়। পরদিন আরো কয়েকজন বজ্জাত পুলাপাইন হায়ার করে রাতের বেলা তা প্রাকটিস করে যথারীতি ডাব চুরি। তাও আবার যার বিয়ে তাদেরই গাছ থেকে। ;) ;)

এখন কৌতুকতো করা যায়, কিন্তু গানেতো তবলা ঢোল বাশিঁ কিছু একটা না হলে হয়না। তাই আমি বুদ্ধি করে প্রস্তাব দিলাম তবলা বদলে প্লেট (টিনের বাসন) ঢোলের বদলে বালতি (প্লাসটিকের) আর অন্য জনকে দিলাম একটা বাশি জোগার করতে। সব ঠিকটাক।

অনুষ্ঠান শুরুর আগে দেখি বাশিঁওয়ালা (যাকে বাশিঁর দায়িত্ব দিয়েছিলাম) উধাও। ওইরে নাটকতো পটে গেছে। :|| X( আমার মেজাজ এমনিতেই খারাপ, নায়ক হতে পারিনি বলে। তারুপর আবার বাশিঁ নাই। এদিকে সময় হয়ে আসছে। ঘামছি আর ঘামছি। অনেক্ষন পরে দেখি ওই বাশিঁওয়ালা ফুটবল খেলার রেফারির একটা বাশিঁ নিয়ে হাজির। বত্রিশ দাঁত বের করে আমাকে বলে বদ্দা আর পাইলামনা। ওরে বেটা এটাকি তোর ফুটবল খেলা পাইছোস X(X(( দিলাম এক কুইন্না।

কি আর করা অনুষ্ঠা আরম্ভ করলাম। যাকে উপস্থাপনার দায়িত্ব দিলাম সেইই শুরুতেই করে ফেল্ল গলত। B:-) :|| X( :(( শুরুতে হবে গান সে ডিকলার করলো কৌতুক। মরছি, কি আর করা তাড়াতারি উঠে পড়লাম কোন রকমে করে নেমে এসে উপস্থাপককে দিলাম দুই কুইন্না। বেক্কেল বেটা। আগে কোনদিন দেখছস শুরুতে কৌতুক হতে?? X( এরপর গানের পালা। তাকে বল্লাম যা ঠিক ঠিক বলবি। এবার যদি কাওয়ালির কথা কস তাহলে তোর মরন। X(
সে বেটা আমার ধকম খেয়ে কোন স্টেইজে উঠে বলে আসলো। মনে হচ্ছে যেন স্যারের কাছে পড়া হাজিরা দিচ্ছে =p~

আমরা চার জন উঠলাম গান করতে। আমি প্রধান গানের। মানে শুরু করবো আমি। ঢোল তবলা আর বাশিঁওয়াকে ইশারা করলাম। ইশারা করার সাথে সাথেই ওরাবালতি আর বাসন পিটানো আরম্ভ কইরা দিলো। আর বাশিওয়ালা মনে হয় জিন্দেগীতেও বাশি দেখেনাই জনমে। ফ্রুত ফ্রুত ফ্রুত করে বাজাইতেই আছে। তাদের এলোপাতারি আওয়াজে আমি গান গেলাম ভুলে। প্রথম থেকে আরম্ভ না করে করলাম মাঝখান থেকে। আমি গাই এক লাইন বাকিরা গায় আরেক লাইন। পুরা এক চেড়াবেড়া অবস্থা। বড় ভাইটা ইশারা করলো চোখ দিয়ে, মানে ওই বেটা কাগজ কই?? আমি উনার ইশারা পাইয়া পকেটে হাত দিয়ে দেখি কাগজ নাই। এপকেট ও পকেট হাতড়িয়েও কাগজ পাইলামনা। গান কিন্তু থামাথামি নাই। কেউ আগে কেউ পরে গাইতেই আছি। আর ওই গাধা বাশিঁ বাজাইতেই আছে।

এ অবস্থায় আমি করলাম কি (বুদ্ধিটা হঠাৎই মাথায় আসলো) যে বাশিঁ বাজায় তারে গিয়ে দিলাম এক থাপ্পর। বেটা জনমে বাশিঁ বাজাসনাই?? X( তোর বাশিঁর আওয়াজে আমি গান পুরাই ভুলে গেলাম। আর বড় ভাইটাকে দিলাম আরেক থাপ্পর, বল্লাম ওই বেটা তোকে না বল্লাম গানটা ভাল করে মুখস্থ করতে। যা ভাগ এখান থেকে। তোদের দিয়ে গান হবেনা। এই বলে সবাইকে স্টেইজ থেকে নামিয়ে দিলাম।

আজব কান্ড সাথে সাথে দেখি তালির বন্যা। তালি আর তালি। সবাই ভাবছে এটাই কৌতুক। আমিতো পুরাই বেকুব। দুলা এসে বাহবা দিযে গেল আমাকে। দারুন হয়েছে। গুড গুড। এদিকে বড় ভাইটি ফুঁস ফুস করতেছিল আমার দিকে চেয়ে চেয়ে। সবার এ অবস্থা দেখে বেচার আর কিছু করতে পারলোনা। ;);)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ৮:০৮
৮১টি মন্তব্য ৮৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×