কল্পনা করেন একটা পৃথিবী। যেখানে ধর্ম নাই, বর্ণ নাই, জাতি নাই, প্রভেদ নাই, বিভেদ নাই আছে শুধু বিশ্বাস। বিশ্বাসের জোরে প্রেম, ভালবাসা, হাসি, আনন্দ, খুশি। সেখানে সবাই সুখী। কোন দুঃখ নাই, কষ্ট নাই, স্বর্গের মত। প্রকৃতিও তার সমস্ত কিছু উজাড় করে দিয়েছে। প্রথমেই ভাঙলো বিশ্বাস। খন্ডিত হল সীমারেখা। আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেল পৃথিবী। নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে উঠে পরে লাগলো সবাই। উন্নত হল সভ্যতা। গড়ে উঠলো মিল-কারখানা। হাজির হল মনস্টার গ্লোবাল ওয়ার্মিং। পৃথিবী যত ভাগ হতে লাগলো প্রকৃতি তত কমজোর হয়ে গেল। শক্তিশালী হতে লাগল গ্লোবাল ওয়ার্মিং। শুরু হল মানুষে মানুষে প্রভেদ, বিভেদ। এল ধর্ম, বর্ন, জাতি গত বিভাজন। চলে গেল প্রেম, ভালোবাসা, মায়া-মমতা, হাসি, আনন্দ, খুশি। অবিস্বাসে বাড়তে লাগলো হিংসা, দুঃখ, কষ্ট। নরক হয়ে গেল দুনিয়া।
মনে করেন ৫০০ বছর পর পৃথিবীতে কোন মানুষ নেই, জন নেই, পশু নেই , পাখি নেই, কোন প্রাণী নেই। ভাগার হয়ে আছে বসুন্ধরা।
ধরেন ৫০০ বছর পর আমাদের ভবিষৎ প্রজন্ম থাকে চাঁদে, বুধে কিংবা মঙ্গল গ্রহে। তারা পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে হাসে, হাসে আর বলে- আমাদের আদি মানুষ গুলো কত বোকা ছিল। তারা যদি পৃথিবী ভাগ না করত, টুকরো টুকরো না করত, নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব লড়াইয়ে এমন বিভাজন না করত, যদি মানুষে মানুষে বিশ্বাস টা টিকে থাকত তাহলে প্রকৃতি কখোনো এত দুর্বল হয়ে পড়ত না, পৃথিবীটা এমন ভাগাড় হত না।
Raya and the Last Dragon এ আমি এই গল্পটাই দেখি। কুমুন্দ্রা একটা কল্পিত পৃথিবী। প্রকৃতি সেই জ্যাম আর মনস্টার গ্লোবাল ওয়ার্মিং।
যদি মুভির মত আমরা আমাদের বিশ্বাস ফিরে আনতে পারি তাহলে হয়তো আমরাও ফিরে পাব আমাদের সেই বসুন্ধরা। অবিস্বাসে কি মিলবে, শূন্যতা ছাড়া। বিশ্বাস করলে হয়তো ঠকবো, যেমনটা শরৎচন্দ্র বলে গেছেন-"এদের দান কর্লে এরা বোকা মনে করে; ভাল কর্লে গরজ ঠাওরায়। ক্ষমা করাও মহাপাপ; ভাবে—ভয়ে পেছিয়ে গেল!” কিন্তু দিন শেষে একটা সান্তনা থাকবে বিশ্বাস করেছিলাম তাই ঠকেছি। অবিস্বাসে হয়তো সাময়িক ভাবে ঠকতেছি না তবে ঠকে যাচ্ছি চিরতরে। কি রেখে যাচ্ছি আমাদের ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য, ভাগাড় ছাড়া?
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১২:২৮