somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বসুমতি কটেজ (পর্ব ১)

৩০ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হাঁফাতে হাঁফাতে গাড়িটা যখন বসুমতি কটেজে এসে পৌঁছাল, তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামি নামি করছে। সূর্যটা নিভু নিভু করছে। একটু পরেই পাহাড়ের খাঁদে আত্তহত্যা করবে। উঁচু পাহাড়ের ভিড়ে লুকিয়ে থাকা কটেজটা, তোফায়েলের পছন্দ হল। ওরই এক ভক্তের কটেজ। বলেছিলো- "আপনাদের তো নিরবতা, নির্জনতা পছন্দ। রাঙামাটিতে আমার একটা কটেজ আছে। চারপাশে উঁচু পাহাড় ছাড়া আর কিছু নেই। সবচেয়ে কাছের গ্রামও ৫কি:মি: দূরে। আপনি চাইলে যেতে পারেন। আপনার ভালো লাগবে। সেখানে আমাদের এক কাজের লোক আছে, নাম সুতং। কটেজটা ওই দেখাশোনা করে। সর্ব ঘাটের কাঁঠালি কলা, রান্নাবান্না সব পারে। আপনার কোন অসুবিধা হবে না।"

অফারটা শুনেই লোভনীয় লেগেছিলো তোফায়েলের। জিহ্বা বেরিয়েইছিলো কিন্তু সময় মিলছিল না। ৩০ বছর বয়সি তোফায়েল একজন লেখক, ব্যংকার। ওর বেশ কিছু উপন্যাস বাজারে ভালো খাচ্ছে। লেখক হিসাবে সফলই বলা যায়. একটি সরকারী ব্যংকেও জব করে। আপনারা ভাবতেই পারেন সরকারী ব্যংকে জব করে আর সময় পাচ্ছে না! জোকটা ওল্ড হয়ে গেল না! আসলে লেখক হিসাবে মিহি সুনাম আছে বলে এখানেও একটু দায়িত্ব দেখাতেই হয়। তবে এবার ভালো ফাঁস-ফেঁসে গিয়েছিলো। এক লোকের তিন কোটি টাকার সম্পত্তি ব্যংক সত্তর লাখে বিক্রি করে দিয়েছিলো। লোকটার ১ কোটি টাকা ঋণ ছিল বলে। ওটার কারণেই দেরী হচ্ছিল। নয়তো যেদিন অফার পেয়েছে সেদিনই চলে আসত। চারপাশে প্রকৃতি তার মাঝে একটা বাড়ি। আশেপাশে আর কিছু নেই। একজন লেখকের জন্য আর কী চাই!

গাড়ি থেকে নামল তোফায়েল। জিন্সের পকেট থেকে একটা সিগারেটের বের করে জ্বালালো। দুপুর থেকেই ভ্যাপসা গরম। অস্বস্তিটা এখন আরো বেড়েছে। পাহাড়ের বুকেও বাতাস নেই।
"স্যার" বলেই গড়িয়ে এলো মাঝারি গড়নের সুতং। সুতং বাঙালি। পাহাড়ে জন্ম বলে এই নাম। সুতং গাড়ির ডিকির কাছে গেল। ডিকি খুলে মাল নামাতে নামাতে বলল "আসতে কোন অসুবিধা হয়নি তো স্যার?"
"না তেমন কিছু না, গাড়িটা একটু বিগড়েছে। এখানে ভালো মেকার পাওয়া যাবে?" বলল তোফায়েল।
"হ্যা, বাজারেই একজন আছে। আমি বলে দেব, কাল সকালে এসে সারিয়ে দিয়ে যাবে।" মাল নামিয়ে কটেজের দিকে চলল সুতং।
সূর্যটা আকাশের কোলে ঢলে পড়েছে। একটু পরেই আত্তহত্যা করবে পাহাড়ের খাজে। রোজ আত্তহত্যা করে, একটি ব্যর্থ জীবনের মত।

"স্যার, আসুন।" সুতং এর ডাকে সম্মতি ফিরে পেলো তোফায়েল। মাথাটা ঘুড়িয়ে দেখল, সুতং দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। ছোট খাটো একটা মানুষ, ওকে দেখে বোঝা যায় না বাঙালী। হাতের সিগারেট টা ফেলে পা দিয়ে নিভিয়ে দিলো তোফায়েল। সুতং এর পেছেন পেছন কটেজে ঢুকলো। ব্যর্থ সূর্য ডুবে গেল।

একপাশে একটি ডাইনিং টেবিল, তার পাশে কিচেন। আর এক পাশে ড্রইং। ড্রইং এ কয়েকটা সোফা সামনে একটা টি টেবিল। তোফায়েল কে যে রুমে থাকতে দেওয়া হল, রুমটা সুন্দর করে সাজানো। একপাশে একটি খাট, কাঁঠালি কালারের খাটের উপর আকাশি কালারের চাদরটা বেশ মানিয়েছে। যদিও এসব বিষয়ে ওর টেষ্ট ভালো না। একটা টেবিল, টেবিলে নতুন কিছু খাতা আর কলমদানিতে হরেক রকম কলম। এক পাশে টিভি, একটি সোফা, সোফার সামনে একটি টি-টেবিল, টেবিলে রজনীগন্ধা সুভাস বিলাচ্ছে। রজনীগন্ধা তোফায়েলের খুব প্রিয়। বোঝাই যাচ্ছে, তোফায়েলের সব রকম খেয়াল রাখা হবে।
মালপত্র রেখে সুতং জিজ্ঞাসা করলো "রাতে কী খাবনে, স্যার।"
খাওয়ার ব্যাপারে তোফায়েল বরাবরি উদাসিন। সামনে যে কোন কিছু হলেই খেতে পারে। খাওয়াটাকে ওর সময় অপচয় মনেহয়। উদাসি গলায় তোফায়েল বললঃ "তুমি যা খাওয়াবে।"
সুতং একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে বলল "জ্বী, আচ্ছা।" বলেই সে চলে গেল।

তোফায়েল সুটকেস থেকে টাওয়েলটা বের করে বাথরুমে গেল। গরমে সারা শরীর ঘেমে গেছে, চিটচিট করছে। লম্বা একটা সাওয়ার নিলো। এখন বেশ ফ্রেস ফ্রেস লাগছে। সুতং রান্না করছে।
লোকটার সাথে ভালোভাবে কথা বলা হয়নি। কি দিয়ে শুরু করা যায়! মানুষ নাকি তার নামকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। নিশ্চয় ওর নামের পেছনেও কোন গল্প আছে। তোফায়েল জিজ্ঞেস করল-
"তোমার নাম সুতং পড়ল কেন?"
"পাহাড়েই জন্ম বলে।" সংক্ষেপেই উত্তর দিলো সুতং।

নাহ, ভালো পরতা করতে পারলো না তোফায়েল। লোকটা স্বল্পভাষী অথবা তোফায়েলের আসতে সে বিরক্ত। ওর ভক্ত বলেছিলো "সর্ব ঘাটের কাঁঠালি কলা", আসলে সেটাও ঠিক না। গাড়ি সারাতে পারে না।
"আমি আসতে কি তুমি বিরক্ত?" সরাসরি জিজ্ঞেস করল তোফায়েল।
"না, স্যার।" লজ্জিত হয়ে বলল সুতং। "আসলে আমার মিসেস পোয়াতি। হাসপাতালে আছে, একা। এর আগে চারটা হয়ে মারা গেছে, এটা পঞ্চমবারের চেষ্টা। "
এতক্ষণে বুঝলো সুতং এর বিরক্তির কারণ।
"তো তুমি এখানে কী করছ, তোমার তো ওয়াইফ এর কাছে থাকার কথা?"
"আপনি আসবেন, তাই......"
এবার তোফায়েল নিজেই যেন লজ্জায় পড়ল। বড় অসময়ে এসে পড়েছে সে। ওর ঐ ভক্ত, যার এই কটেজ, সে তো কিছু বলেনি, তোফায়েল জানবে কীভাবে!
"এক কাজ কর, তুমি কি চলে যাও। "
সুতং যেন কথাটা শুনতে পারেনি। সে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তোফায়েলের দিকে তাকিয়ে রইল।
"এই মুহূর্তে তোমাকে তোমার ওয়াইফ এর বেশি প্রয়োজন। "
"কিন্তু আপনি...... একা থাকবেন ?"
"একা থাকব বলেই তো এসেছি। কেন, তোমার স্যার তোমাকে কিছু বলেনি?"
ঠিক এই মুহূর্তে সুতং এর চোখে, মুখে যে খুশির ঢেউ খেলছে, তোফায়েল মুগধ হয়ে দেখছে। মানুষ কত অল্পতেই খুশি হয়, কত দু:খে কাঁদে। সুতং এর চোখ গড়িয়ে কয়েক ফোঁটা অশ্রু পড়ল কি! মানুষ নাকি অধিক খুশিতে কাঁদে আবার অধিক দু:খে হাসে! হাসপাতালে গিয়ে যদি রেখে ওর এবারের বাচ্চাটাও মারা গেছে তাহলে কি হাসবে?
ধুর, কীসব ভাবছি। কাল যেন ওর কোলে ওর বাচ্চাটা খেলে। ঠিক এখন যেমন ওর চোখে, মুখে খুশির ঢেউ খেলছে। সুতং চোখের জল মুছতে মুছতে বলল "আপনার যা লাগে বলবেন, এখানে সব পাওয়া যায়।"
"আপাতত তোমার নামের গল্পের বল?"
রান্নায় মনোযোগ দিয়ে সুতং বলে চলল"আমার বাবা মা বাঙালি। মাকে দেখে বাবার পছন্দ হয়, তারপর পেছেনে লাগে। এক সময় মাও মেনে নেয়। মা দেখতে ভীষণ সুন্দরী ছিল। কিন্তু বিয়ে কোন পরিবারই মেনে মেনে নিলো না, একদিন মা বাবার হাত ধরে পালিয়ে এলো। এই পাহাড়েই আমার জন্ম। তাই এই নাম। মা রেখেছে। বাবা তো এই গল্পই বলত।"
"আর তোমার মা?"
"মা তো জন্মের সময় মারা গেছে।"
তোফায়েলের মনটা খারাপ হয়ে গেল। জন্মের সময় মাকে হারিয়েছে আর এখন একে একে সন্তান। তোফায়েল একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
"তোমার দাদা-দাদি, নানা-নানী কে দেখেছো? তারা কখনো যোগাযোগ করেনি?"
"বাবা বেঁচে থাকতে কাকারা আসত, জায়গার ভাগাভাগি নিয়ে। বাবা কিছু রাখেনি, সব দিয়ে দিয়েছে। তারপর থেকে আর আসেনা। "
সুতং এর জন্য মায়া হল তোফায়েলের। নিয়তির চাদর কাকে কীভাবে জড়িয়ে রেখেছে।
"বাদ দাও, তোমার ওয়াইফ এর গল্প বলো। তোমার বিয়ের গল্প শুনি।"
সুতং লজ্জায় মাথা নিচু করে বলল" মেয়েটা খুব ভালো, পাহাড়ি। রোজ বাজার থেকে আসার সময় ওর সাথে দেখা হত। একদিন এসে বলল- আমাকে বিয়ে করবি? আমাদের বিয়েও ওদের পরিবার মেনে নেয়নি। তারপর থেকে আমরাই আছি , একটি সন্তানের আশায়। "
তোফায়েল দেখতে পেল একজন বাবার চোখে একটি সন্তানের ক্ষুধা।
"তোমার ওয়াইফ তোমাকে ভালোবাসে?"
সুতং যেন লজ্জায় কুঁকড়ে গেল।
"একবার রাগ করে বলেছিলাম- বাড়ি ছেড়ে চলে যাব, সেকি কান্না।"
"রাগ করেছিলে কেন ?"
"এমনি স্যার, ওর সাথে রাগ করতে ভালো লাগে। রাগলে ওর শরীর জ্বলে ওঠে। মুখ ভার করে বসে থাকে। ওকে রাগাতেও ভালো লাগে, হাসতেও ভালো লাগে।"
সুতং এর চোখে-মুখে লজ্জা আর খুশি যেন একসাথে ভাসছে। গল্প করতে ভালোই লাগছিলো কিন্তু ব্যাগড়া দিলো ফোনটা। রফিক ফোন করেছে, ওরি ভক্ত, যার এই কটেজ। ফোনটা ধরল তোফায়েল-

"হ্যালো?"
ওপাশ থেকে রফিক বলল - "পথে কোন অসুবিধা হয়নি তো?"
"না.....শেষে এসে গাড়িটা একটু বিগড়েছে। এক প্রকার ঠেলেই এসেছি এইটুকু।"
"সুতং কে ফোন করেননি কেন? নাম্বার তো দিয়েছি।"
"তুমিতো এটা বলে দাওনি, ওর ওয়াইফ প্রেগনেন্ট।"
"আজকেই ডেলিভারি নাকি? শিট.....আমিতো ভুলেই গেছি। সরি, এই এম এক্সট্রিমলি সরি। "
"ঠিক আছে সরি হতে হবে না।"
"সুতং কি চলে গেছে?"
"নাহ....রাঁন্না করছে। চলে যেতে বলেছি।"
""আপনি একা থাকবেন?"
"সমস্যা হবে না, একা থাকার জন্যই তো এসেছি।"
"সুতং খুব ভালো রান্না করে, খেয়ে আরাম পাবেন।"
"কিন্তু তুমি তো একটা কথা ঠিক বলনি। ও তো সর্ব ঘাটের কাঁঠালি কলা না। গাড়ি সারাতে পারেনা।"
"ওকে বললেই মেকার ডেকে দিবে। "
"হ্যা, বলেছে। কাল নিয়ে আসবে।"
"কটেজ টা আপনার পছন্দ হয়েছে?"
"হ্যা...ভালোই।"
"থাকুন যতদিন ইচ্ছা, লিখুন মন খুলে।"
"লিখব বলেই তো এসেছি। "
"এবার কী নিয়ে লিখবেন? আপনার থ্রিলার কিন্তু একটাই "সর্ব ঘাটের কাঁঠালি কলা। " পড়ে বেশ রোমাঞ্চ হয়েছিলাম। শেষে ওর মাকে মারে না! পরকীয়া প্রেমের জন্য বাপকে মেরে ফেলায় মায়ের উপর যে প্রতিশোধ নেয়!"
"হ্যা, এবারও থ্রিলার লিখব ভাবছি।।'
"তাই লিখুন। ওসব সস্তা প্রেমের গল্প ম্যারম্যরে হয়ে গেছে।"
"কিন্তু পাঠক তো ওগুলোই খাচ্ছে, আমার থ্রিলার কয়েকপি বিক্রি হয়েছে বল?"
"এখনকার ছেলে-মেয়ে গুলো প্রেমে পড়ছে আর উঠছে। নভেল বলতে এরা বোঝে- একটা ছেলে বা মেয়ে থাকবে যার খুব দু:খ। তারপর প্রেম হবে আবার দু:খ। বাংলা ছবি হয়ে গেছে। মধ্যবিত্তটাকেও একদম ম্যারম্যারে করে ফেলেছে।"
"পাঠক যা চায় আমাদের সেটাই লিখতে হয়। আর যত উদ্ভট হয় ততই ভালো। এবার একটা থ্রিলার নিয়েই ভাবছি, মাথায় প্লট দাঁড়িয়েই আছে শুধু লেখা বাকি।"
" ঠিক আছে, আপনি লিখুন আপনাকে আর ডিস্টার্ব না করি। পরে কথা হবে।"
"ঠিক আছে, বাই।"

ফোনটা রেখে তোফায়েল টেবিলের দিকে এগোলো। নতুন খাতার গন্ধ নিলো। কলম গুলোরও। এখন থেকে এই ওর সঙ্গী। খাতা খুলে কলম ছোয়াতেই লেখা যেন হড়বড় করে বেরিয়ে এলো। নতুন খাতার সাদা পাতার পর পাতায় কালো কলমের কালির দাগ লেগে গেল। মাঝখানে একবার সুতং এসে বলে গেল "স্যার , আমি বেড়চ্ছি। খাবার টেবিলে রাখা আছে, খেয়ে নিবেন। দরজাটা লাগিয়ে দিন। "
তোফায়েল জবাবও দিয়েছিলো "ঠিক আছে, তুমি চিন্তা করো না। আমি খেয়ে নেব, তুমি যাও। "
"আপনাকে একা ফেলে যেতে খারাপ লাগছে, কিন্তু......."
"চিন্তা করো না, তুমি যাও। আমিতো একা থাকার জন্যই এসেছি। এই মুহূর্তে তোমাকে তোমার ওয়াইফ এর সবথেকে বেশি প্রয়োজন। "
"দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন এবার মুখ তুলে তাকায়। "

সুতং চলে যেতেই তোফায়েল আবার লেখায় ডুবে গেল। তারপর কতক্ষন চলে গেছে তোফায়েল জানে না। হটাৎ একটি নারী মিহি কণ্ঠ এসে তোফায়েলের ধ্যান ভাঙলো। তোফায়েল বাহিরে বেড়িয়ে দেখলো- একটা মেয়ে প্রায় পুরোটাই ভিজে গেছে। দরজা খোলা। বৃষ্টির ছাট আর বাতাস পাল্লা দিয়ে ঢুকছে। তোফায়েল এগিয়ে গেল দরজা বন্ধ করতে। মেয়েটা নিজ থেকেই বলতে শুরু করলো- "দরজা খোলায় ছিল, কাউকে দেখলাম না তাই না বলেই ঢুকে পড়েছি, সরি। আপনি বোধয় ব্যস্ত ছিলেন!"
তোফায়েল দরজা বন্ধ করতে গিয়ে দেখলো- বাহিরে রীতিমত ঝড় শুরু হয়েছে। জামাট বাধা অন্ধকারের বুকে বিদ্যুৎ চমক দিয়ে উঠছে। তোফায়েল পেছনে ঘুরে মেয়েটার দিকে তাকালো।
"সমস্যা নেই, আপনি তো ভিজে গেছেন। ফ্রেস হয়ে নিন।"
"আমার সাথে তো কোন কাপড় নেই। "
তোফায়েল স্মিত হেসে বলল - "আমারটা পড়তে পারেন যদি আপনার আপত্তি না থাকে। "

মেয়েটা রাজি হল। ভিজা কাপড় শরীরের সাথে লেপ্টে গেছে। এই অবস্থায় বেশিক্ষন থাকাও যাবেনা। ঝড়টা কখন শেষ হয় কে জানে!
তোফায়েল রুমের দিকে চলল, পেছন পেছন মেয়েটাও। মেয়েটা কৈফৎ দেয়ার ভঙ্গিতে বলল- "হটাৎ গাড়িটা খাদে পরে গেল। আসেপাশে আর কিছু দেখলাম না, আপনার বাড়িটা ছাড়া। দরজা খোলায় ছিল তাই ঢুকে পড়েছি।"
"ঠিক আছে, সরি হতে হবে না। আর কোন কৈফৎ ও দিতে হবে না। ঐ যে বাথরুম, টাওয়াল বাথরুমেই আছে। "

মেয়েটা স্মিত হেসে বাথরুমে গেল। তোফায়েল একটা সটর্স আর টি-শার্ট বের করল। বাথরুমের দরজায় নক করে বলল- "একটা সর্টস আর টি-শার্ট বের করে রাখলাম। আমি দেখি খাবারের কী অবস্থা। "
মেয়েটা ভেতর থেকে জবাব দিলো- "আপনাকে ব্যস্ত হতে হবে না, আমি খেয়েছি।"
"কিন্তু আমার তো খাওয়া হয়নি। "
"এখনো খাননি? কী নিয়ে এত ব্যস্ত ছিলেন?"
"লিখছিলাম। "
"আপনি লেখক?"
"সামান্য। "
"সরি, আপনার প্রাইভেসি নষ্ট করে দিলাম। "
"নাহ.....ঠিক আছে। বললাম তো সরি হতে হবে না। আপনি ফ্রেস হয়ে কাপড় পরে নিয়েন। "
মেয়েটা হাসতে হাসতে বলল- "যেন আপনি না বললে পরব না। "
তোফায়েল লজ্জা পেল। কী গাধার মত কথা বলে ফেলেছে। সে আমতা আমতা করে বলল- "না তা না, আসলে আমি বলতে চাইছিলাম....."
"ঠিক আছে- কাপড় পরে নেব, থ্যাংকযু। " মেয়েটা ভেতর থেকে জবাব দিলো। তোফায়েল যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল। এই মেয়ের সাথে সাবধানে কথা বলতে হবে। এমন রাতে একজন সঙ্গী পেলে খারাপ কী! ঝড়ের রাত, একটা মেয়ে, এমনটা শুধু উপন্যাস বা মুভিতেই পাওয়া যায়। আজ তোফায়েলের জীবনেও এমন ঘটনা ঘটছে। তোফায়েল ডাইনিং টেবিলের দিকে এগোলো।

চলবে.......
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:০২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×