
ভোরের আলো ঠিক যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছিল আজকের এক অন্যরকম যাত্রায়।
ব্যাগ গোছানো হয়েছে আগেই...
জুতো বেঁধে, মনটা আরেকবার আঁটসাঁট করে, আমরা রওনা দিলাম—
Rope 4-এর এবারের পরিকল্পনা ছিল খৈয়াছড়া ঝর্ণার দ্বিতীয় ধাপে জুমারিং এবং র্যাপেলিং করার।
আমাদের অ্যাডভেঞ্চার ডকুমেন্টারি YouTube-এ দেখতে পারেন।
এরই মাঝে আকাশে মেঘ জমতে শুরু করল, চারপাশটা ধীরে ধীরে অন্ধকার হয়ে উঠল।
শুরু হলো তুমুল বৃষ্টির মধ্যে আমাদের পথচলা।
বৃষ্টির মধ্যে হাঁটতে বেশ ভালোই লাগছিল—একটা অন্যরকম অনুভূতি।
কাদামাখা ট্রেইল আর ঝিরিপথ পেরিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আমরা এগিয়ে চললাম দ্বিতীয় ধাপের দিকে।
এটা কোন কঠিন ট্রেক ছিল না, আবার একেবারে সহজও না।
বর্ষার দিনে ভেজা পাথর, পিছল আর কাদামাখা পথ—প্রতিটি ধাপেই লুকিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা, কিন্তু তাতেই ছিল মজা।
এই এলাকা বর্ষায় একটু বিপজ্জনক—প্রায়ই অসাবধানতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে, তাই আমরা ছিলাম খুবই সতর্ক।
অবশেষে পৌঁছে গেলাম দ্বিতীয় ধাপে।
আমরা এখানে এসেছি র্যাপেলিং আর জুমারিং করতে।
কারও জন্য ছিল এটা প্রথমবার,
কেউ আগেও করেছে, কিন্তু এবারের পরিবেশ ছিল আরও বেশি অ্যাডভেঞ্চারাস—
বর্ষা, পিচ্ছিল পাথর, আর ভেজা দড়ির টান।
টিম লিডাররা অ্যাঙ্করিং পয়েন্ট সেট করে প্রাথমিক ব্রিফিং দিলেন, যাতে কোনো ভুল না হয় এবং দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
সবার সাথেই ছিল সেফটি গিয়ার। নির্দেশনাও ছিল খুব পরিষ্কার।
দলের অভিজ্ঞ দুইজন কিনারায় এসে নিজেদের সেট করল, যাতে আমরা সবাই নিরাপদে কার্যক্রমগুলো করতে পারি।
দ্বিতীয় ধাপে দাঁড়িয়ে যখন নিচে নামার প্রস্তুতি নিই, তখন মনে হচ্ছিল… এটা কেবল শরীর না, মনকেও চ্যালেঞ্জ করছে।
বৃষ্টির জন্য ঝর্ণার ধারা ছিল প্রবল,
আর পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা পানি ও শেওলা মিলে জায়গাটা একেবারে পিচ্ছিল করে তুলেছিল।
পায়ে গ্রিপ রাখা ছিল সত্যিই চ্যালেঞ্জিং।
বৃষ্টি এখন একটু কমে এসে, মাঝে মাঝে আকাশে সূর্যের দেখা মেলে, আবার কিছুক্ষণ পরে আবার বৃষ্টি শুরু হয়।
এই রোদ-বৃষ্টি খেলার মধ্যে শুরু হলো র্যাপেলিং এবং জুমারিং।
র্যাপেলিং হলো পাহাড় বা উঁচু স্থান থেকে নিরাপদে নিচে নামার একটি প্রক্রিয়া, যেখানে বিশেষভাবে তৈরি করা রোপ এবং সেফটি গিয়ার ব্যবহার করা হয়।
জুমারিং হলো উঁচু জায়গায় ওঠার জন্য একটি টেকনিক, যেখানে রোপ এবং বিশেষ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে নিরাপদভাবে উঁচুতে ওঠা হয়।
একদম কিনারায় এসে,
কেউ একটু থেমে গেছে, কেউ বলেছে “তুই পারবি”, কেউ চুপচাপ এগিয়ে গেছে।
এটাই ছিল Rope 4—ভয়কে ভয় না পেয়ে, পাশে দাঁড়ানো একটা টিম।
যখন অ্যাডভেঞ্চার শেষ হলো, তখন কেবল ক্লান্তি না, আনন্দও ছিল—
…এইটা একটা অন্যরকম মজা, পরিশ্রমের মাঝে পাওয়া তৃপ্তির মজা।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:২১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




