যে গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশের জন্ম সে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলই গণতন্ত্র নিয়ে সাফাই গায়। অথচ তারাই গণতন্ত্রের বদলে নিজেদের নেত্রীকে ঘিরে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিভোর।
প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান পৃথক দুইজন হবেন-এ নীতির ঘোরতর বিরোধী দু'দলই। কারণ খালেদা ছাড়া বিএনপি আর হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগ কল্পনা করা যায় না।
এটা কি গণতন্ত্রের নমুনা?
দলে গণতন্ত্র নেই। সমাজে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্র শুধুই ফাঁকা বুলি। ক্ষমতায় যাওয়ার শ্লোগান।
জনগনের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা কি নিজেদের কোন বক্তব্য (দলের বিপক্ষে গেলে) প্রকাশ করতে পারেন?
পারেন না।
নিজেদের দলের করা কোন বিলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন ?
পারেন না। এ করতে গেলে দলীয় পদ চলে যায়। আর দলীয় পদ গেলে সংসদ সদস্য আর থাকে না।
কী সুন্দর গণতন্ত্রের নমুনা!
মনে করুন, বিএনপি ক্ষমতায় গেল। আর খালেদা জিয়া চিন্তা করলেন-ঢাকা শহরের যত ওভারব্রিজ ও ফ্লাইওভার ভেঙে দেয়া হবে। এনিয়ে তিনি একটি বিল সংসদে দলের পক্ষ থেকে তুললেন।
এ বিলটি নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা যা-ই হোক খালেদার চিন্তাধারাই সবশেষে দলীয় বলে গণ্য হবে। একই অবস্থা আওয়ামী লীগেরও। হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগ নেই। তার চিন্তাধারা বাস্তবায়নই দলের নীতিনির্ধারকদের কাজ। নইলে 'সংস্কারপন্থী' জাতীয় তকমাটি লেগে যাবে।
এখন যদি কোন বিএনপির সচেতন এমপিরা এর বিপক্ষে ভোট দেন তাহলে উল্টো তাদের সদস্যপদ বাতিল হবে।
আইন তাই বলে। বাংলাদেশের সংবিধান তা্-ই বলে!
একে গণতন্ত্র বলবেন না একনায়কতন্ত্র?