যারা অল্প জানেন তারা বেশি বলেন। বুদ্ধিজীবী হিসেবে নিজেকে জাহির করেন। বুঝেন কম, বুঝান বেশি। এই শ্রেণীর পন্ডিতে দেশ ভরে গেছে। এখন রমজান মাস। তারাবীহর রাকাত নিয়ে এখন কিছু পন্ডিত নানা ফতোয়া দেয়। অথচ ফতোয়া দিতে যেসব যোগ্যতা লাগে সেসব তাদের মাঝে আছে কিনা তারা নিজেকে প্রশ্ন করে না।
বিপরীতে মাতাব্বরি করে যুক্তি দেখায়-ইসলামে মাযহাব নাই। রাসূলের (স) যুগে মাযহাব ছিল না, ইত্যাদি ইত্যাদি।
এ নিয়ে কেউ কিছু বলতে চাইলে তারা বলেন, আপনি মুসলমান না হানাফি?
নির্বোধের মত প্রশ্ন।
আচ্ছা, কেউ যদি আপনাকে প্রশ্ন করে আপনি কিশোরগঞ্জের না বাংলাদেশের। তাহলে আপনি কি বলবেন?
পবিত্র কুরআন ও হাদীসের বিভিন্ন বিষয় গবেষণা (ইজতেহাদ) করে ইমাম আবু হানিফা (রহ) ও অন্য ইমামগণ বিভিন্ন মাসআলা প্রণয়ন করেছেন। ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতে দেয়া তাদের মতামত বিশ্বজনবীদিত।
ইসলামের শরীয়তে ফিকাহ শাস্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু এই (লা-মাজহাবি) বলদগুলো ফিকাহ শাস্ত্রকে অবজ্ঞা করে নিজেদের পছন্দনুসারে হাদীস বের করে তা দিয়েই পান্ডিত্য জাহির করতে চায়। হাজার বছর ধরে চলে আসা মুসলমানদের রীতি নীতিকে তারা ভুল হিসেবে আখ্যা দিতে চায়। কী লাভ তাতে? [তাদের এ কর্মকান্ডে ইহুদী-খৃষ্টানরা ব্যাপক খুশি]
কথিত আহলে হাদীস নামের ওই অনুসারীরা লক্ষ লক্ষ হাদিসের মধ্যে কয়টি হাদিস জানে? আমার বোধগম্য নয়। তারা ইমাম আবু হানিফা (রহ)-এর চেয়ে বেশি হাদীস জানে না-এটি তো সবাই অপকটে স্বীকার করবে।
আর দেশের লক্ষ লক্ষ উলামা-মাশায়েখ যেখানে একমত সেখানে মাযহাব মানা অন্যায় কেন?
ডাক্তারি বিদ্যা তো ইন্টারনেটেই পাওয়া যায়, তবে আমরা কেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যাই?
কেন নিজে নিজে মাতাব্বরি করি না। অথচ কুরআনের ৬ সহস্রাধিক আয়াত আর লক্ষ লক্ষ হাদীসের নির্যাস থেকে বিভিন্ন মাসআলা বের করা ইসলামী গবেষকদের অনুযায়ী চলাই অন্যায়!
তাদের দেয়া ফতোয়া বা মাসআলা মেনে নিতে পারি না!!
আচ্ছা, ২০ রাকাত তারাবীহ পড়তে যাদের শক্তি নাই, তারা না পড়েন অসুবিধা নাই। কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো বা অনৈক্য সৃষ্টির অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে?
পুনশ্চ : ইমাম আবু হানিফা রহ. একজন বিখ্যাত তাবেয়ী। কোন মুসলমানের নিকট ইমাম আবু হানিফা রহ. এর পরিচয় উল্লেখের কোন প্রয়োজন নেই।
আল্লাহ পাক ইমাম আবু হানিফা রহ. কে এমনভাবে কবুল করেছেন, তার খেদমতকে এমনভাবে গ্রহণযোগ্যতা প্রদান করেছেন, দীর্ঘ তের শ' বছর যাবৎ মুসলমান সমাজের একটি বড় অংশ তার ফিকহ অনুসরণ করছেন।