।।ঈশ্বর মঙ্গলময়।।
-পালাশ কিশোর দে
..............................................................
চরিত্রসমুহ:
মহারাজ, মহামন্ত্রী, মহারানী
যুবরাজ, মন্ত্রীপুত্র, নাগরিকদ্বয়
রাজবৈদ্য, টিভলিকুমারী, সন্যাসি
ডাকাত সরদার, ডাকাতদ্বয়
................................................................
।।প্রথম অংক ।।
(ধস্তাধস্তিরত দুই নাগরিকের প্রবেশ।)
১ম: আজ মহামন্ত্রীর কাছে নালিশ করে তোর গুষ্টির শ্রাদ্ধ করে দেব।
২য়: উ.... আর আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখব ভেবেছিশ? আমিও নালিশ করে তোর পিণ্ডি চোটকে দেব।
(নেপথ্যে: সাবধান.... দীন-দয়াল, ধর্মার্থবিৎ, দেশহিতৈষী ফিসকেথর্ভ রাজ্যের মহান নির্মোহী মহামন্ত্রী পদার্পন করিতেছেন..
মহামন্ত্রীর প্রবেশ।.... সেতারের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক)
সকলে: প্রণাম মহামন্ত্রী।
মহামন্ত্রী: প্রণাম। ঈশ্বর মঙ্গলময়! বল তোমরা কেন আসিয়াছ?
১ম: ধর্মাবতার, সারা বছর খাটাখাটনি করে ফসল ফলিয়ে ছিলাম। আর ওর গরু আমার সব ফসল খেয়ে ফেলেছে।
২য়: গরু অবলা প্রানী, ধর্মাবতার।
মহামন্ত্রী: ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন।
১ম: ধর্মাবতার....
(নেপথ্যে: সাবধান.... মহানআর্যকুলগৌরব, দেবদ্বিজ প্রতিপালক, সুবিজ্ঞ, জনহিতৈষী, ফিসকেথর্ভ রাজ্যের একমাত্র অধিপতি সেই রকম পরাক্রমশালী মহারাজ পদার্পন করিতেছেন..... টুকুর টুকুর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক.........মহারাজের প্রবেশ।)
সকলে: মহারাজের জয় হোক।
মহারাজ: মহামন্ত্রী, বল কি সংবাদ। ইহারা এইখানে কেন?
মহামন্ত্রী: সবই ঈশ্বরের লীলা, মহারাজ।
মহারাজ: আহা, সে তো বুঝিলাম.. কিন্তু কি হইয়াছে?
মহামন্ত্রী: ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন, মহারাজ।
মহারাজ: আর পারি না। এই বল তোমাদের কি চাই..।
১ম: মহারাজ, ওর গরু আমার সব ফসল খেয়ে ফেলেছ।
২য়: গরু অবলা প্রানী, মহারাজ।
মহারাজ: হুম, তুমি তো অবলা নও। তুমি ওর যথাযথ ক্ষতিপূরন দেবে। সিপাহি.. উহাদের লইয়া যাও..।
১ম: মহারাজের জয় হোক।
মহারাজ: মহামন্ত্রী, যুবরাজের ড্রাইভিং কোর্স আর অস্ত্রশিক্ষার কি অগ্রগতি?
মহামন্ত্রী: আজ্ঞে, যুবরাজ শিক্ষা গ্রহন করছেন মহারাজ।
মহারাজ: যুবরাজ নিশ্চয় অস্ত্রবিদ্যায় পারদর্শি হইয়া উঠিয়াছে!
মহামন্ত্রী: ঘোড়ার ডিম্ব হইয়া উঠিয়াছে ...।
মহারাজ: হা.. ঘোড়ার কি হইয়াছে?
মহামন্ত্রী: আজ্ঞে মহারাজ, ঘোড়ার কিছু হয়নি। যুবরাজ সর্বক্ষণ ঘোড়ার সহিত, ঘুড়ির সহিত, ইহার সহিত, উহার সহিত সেলফি তুলিয়া বেড়ায়। আর এসবের মূলে কি আর বলিব....ঈশ্বরের লীলা.... আমার পুত্র, শোকুনসেন।
মহারাজ: মহামন্ত্রী, আমি এসব কি শুনিতেছি?
মহামন্ত্রী: ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন, মহারাজ।
মহারাজ: আমি আর কিছুই শুনিতে চাই না। এই মুহুর্তে উহাদিগকে আমার সাম্মুখে উপস্থিত কর।
মহামন্ত্রী: যথা আজ্ঞা মহারাজ।
(সকলের প্রস্থান....)
(নেপথ্যে: সাবধান.... সুদর্শন, সুপুরুষ, ড্যান্স মাস্টার, ফিসকেথর্ভ রাজ্যের একমাত্র যুবরাজ ফিসকে কুমার পদার্পন করিতেছেন..
যুবরাজ ও মন্ত্রীপুত্রের প্রবেশ.. (সেলফি নে না রে) গান ও নাচ....নাচ-গান শেষে সকলের প্রস্থান ও মহারাজ, মহামন্ত্রীর প্রবেশ )
মহারাজ: আজ ইহার একটা চুড়ান্ত ব্যাবস্থা করিতে হইবে।
মহামন্ত্রী: সবই তাঁহার ইচ্ছা, মহারাজ।
(যুবরাজ ও মন্ত্রীপুত্রের প্রবেশ)
যুবরাজ: আমায় স্মরণ করিয়াছেন পিতাশ্রী?
মহারাজ: বার বার তোমাদের সুযোগ দেওয়া সত্তেও তোমরা অস্ত্রশিক্ষায় অবহেলা করিয়াছ, আমার আদেশ অমান্য করিয়াছ.. যাও তোমাদের আগামি ৩ দিন ফেইস বুকিং বন্ধ।
(মহারাজের দ্রুত প্রস্থান)
মহামন্ত্রী: (পুত্রের প্রতি) কত বার বলিয়াছিলাম রাত্র- দিবস, যখন-তখন ফেইস বুকিং বন্ধ কর?!
সেলফি-স্টিকটি কোথায়?
মন্ত্রীপুত্র: মালটা হারাইয়া গিয়াছে।
মহামন্ত্রী: ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন।
(মহামন্ত্রীর প্রস্থান)
মন্ত্রীপুত্র: কি জ্বালা বলুন দেখিনি, মালটা কিছু বুঝিতেই চাইছে না..। তা একটা দুটো সেলফি তুললে কি এমন ক্ষতি!
যুবরাজ: না থাকিব না, চলিয়া যাইব এ রাজ্য ছাড়িয়া...।
মন্ত্রীপুত্র: ঠিক বলিয়াছেন যুবরাজ, আমিও চলিলাম আপনার সঙ্গে... বিদায় ফিসকেথর্ভ বিদায়...।
(যুবরাজ ও মন্ত্রীপুত্রের প্রস্থান ও ক্রন্দনরত মহারানির প্রবেশ)
মহারানি: ফিসকে কুমার..... ফিসকে কুমার....
( গান ও নাচ.... শুধু মারডালা অংশটুকু.... গান শেষ পর্যায়ে মহারাজ ও মহামন্ত্রীর প্রবেশ)
মহারাজ: মহারানি, মহারানি.. কি হইয়াছে আপনার?
মহামন্ত্রী: সবই তাঁহার লীলা মহারাজ।
মহারানি: যুবরাজ কোথায়?
মহারাজ: এই মাত্র সংবাদ পাইলাম সে নাকি রাজ্য ছাড়িয়া....
মহারানি: না.... (মহারানি মুর্ছা যাবে)
মহারাজ: মহামন্ত্রী, এখুনি রাজবৈদ্যকে সংবাদ দাও...
মহামন্ত্রী: যথা আজ্ঞা মহারাজ। রাজবৈদ্য .... রাজবৈদ্য ...
(থলেসহ রাজবৈদ্যের প্রবেশ)
রাজবৈদ্য: মহারাজের জয় হোক।
মহারাজ: এই যে রাজবৈদ্য, দেখ তো কি হইয়াছে মহারনীর।
রাজবৈদ্য: হুম.... নাড়ি দুর্বল চলিতেছে। সূূূূচপ্রয়োগ করিতে হইবে।
(থলে থেকে ড্রিল মেশিন, করাৎ, স্ক্র- ড্রাইভার এবং সব শেষে সাইকেল পাম্প বের করে হাতে ধরিয়ে দিয়ে প্রয়োগ করবে... এক বার পাম্পের সাথে সাথে মহারানি উঠে বসবে, ২ বারে উঠে দাড়াবে)
মহারানি: (কাদিতে কাদিতে) মহারাজ, আমার পুত্রকে আনিয়া দিন।
(মহারানির প্রস্থান)
মহারাজ: মহামন্ত্রী, প্রস্তুত হও। যুবরাজ আর তোমার পুত্রকে ফিরাইয়া আনিতে হইবে।
মহামন্ত্রী: যথা আজ্ঞা মহারাজ।
(সকলের প্রস্থান)
........................................
।। দ্বিতীয় অংক ।।
(যুবরাজ ও মন্ত্রীপুত্রের প্রবেশ)
যুবরাজ: রাজ্যের সীমানা ছাড়াইয়া আমরা এখন গভির জঙ্গলে আসিয়া পড়িয়াছি।
মন্ত্রীপুত্র: যুবরাজ, আর পারিতেছি না। পথ চলিতে চলিতে ভোর হইয়া গেল, মালটা মানে পা টা আর চলিতেছে না।
যুবরাজ: ঠিক আছে এই খানেই থাকার ব্যাবস্থা করা যাক। আমি দেখি আশে-পাশে জলের কোন ব্যাবস্থা আছে কি না..
মন্ত্রীপুত্র: ঠিক আছে আমিও দেখি আশে-পাশে মাল মানে কিছু ফল পাই কিনা..
(যুবরাজ ও মন্ত্রীপুত্রের প্রস্থান...... পাত্র হাতে যুবরাজের প্রবেশ)
যুবরাজ: এতো দেখিতেছি সুন্দর বাধানো জলাশয়... নিশ্চয় আমরা অন্য কোন রাজ্যে আসিয়া পড়িয়াছি।
(তিতলিয়া .... মিউজিক সুরু ও রাজকন্যার প্রবেশ ও নৃত্য)
যুবরাজ: (চমকিত হয়ে) ওহ এতক্ষন তাহলে স্বপ্ন দেখিতেছিলাম! কে তুমি? তুমি এত সুন্দর কেন?
রাজকুমারী: (লাজুক ভাবে) জানেন আমার না... আজকে মেকআপটাই নেওয়া হয়নি। এনিওয়ে, আমি এই টিভলীরাজ্যের রাজকুমারী, তুমি..?
যুবরাজ: আমি ফিসকেথর্ভ রাজ্যের রাজকুমার। আমার হাতটা একটু ধর...(রাজকুমারি হাত ধরে রাখবে).. আমি তাহলে যাই?
রাজকুমারী: সে কি যেওনা!
যুবরাজ: কেন যাব না বল..
রাজকুমারী: কি করে বলবো! জাননা, মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না।
যুবরাজ: তাহলে একটু অন্যভাবে বল।
রাজকুমারী: ওকে.... মিউজিক হবে প্লিজ..
(তোমাকে চাই আমি আরও কাছে... গান ও নাচ)
যুবরাজ: ঠিক আছে টিভলীকুমারী, পিতার অনুমতি নিয়ে আমি তোমাকে নিতে আসিব। আমাদের স্বপ্ন পুরন হইবেই।
(যুবরাজ ও রাজকুমারীর প্রস্থান... অসুস্থ সন্যাসি ও যুবরাজের প্রবেশ)
সন্যাসি: আঃ...
যুবরাজ: উনস্কুল..
সন্যাসি: আঃ... কোন স্কুল?
যুবরাজ: না মানে, কি হইয়াছে আপনার দেখি। (সন্যাসির সশ্রুষা ও আরোগ্য লাভ)
সন্যাসি: আহঃ অনেক ভাল বোধ হইতেছে। বাছা, আমি তোমার উপর অতিব সন্তুষ্ট হইয়াছি। আমার সাধনা লব্ধ একটি মন্ত্র আমি তোমাকে দিতে চাই। এই মন্ত্র বলে তুমি মৃতদেহে প্রবেশ করিতে পারিবে। তবে সাবধান এ মন্ত্র কাউকে বলিবে না। (যুবরাজের কানে কানে সন্যাসির মন্ত্রদান ও সন্যাসির প্রস্থান, সন্যাসির উদ্দ্যেশে যুবরাজের প্রণাম)
(সন্যাসির মন্ত্রদান করার সময় মন্ত্রীপুত্রের প্রবেশ)
মন্ত্রীপুত্র: যুবরাজ, ঐ মালটা তোমার কানে কানে কি বলিয়া গেল?
যুবরাজ: আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমি আবার আমার রাজ্যে ফিরিয়া যাইব।
মন্ত্রীপুত্র: কিন্তু কেন?
যুবরাজ: আমি এ রাজ্যের রাজকুমারী টিভলীকুমারিকে ভালবাসিয়া ফেলিয়াছি। আমি পিতার অনুমতি নিয়ে তাহাকে বিবাহ করিতে চাই।
মন্ত্রীপুত্র: ও আচ্ছা। কিন্তু ঐ বৃদ্ধ মালটা তোমার কানে কানে কি বলিয়া গেল?
যুবরাজ: সে কথা থাক। চল আমরা প্রস্তুত হই।
মন্ত্রীপুত্র: না, কেন থাকিবে? তুমি আমাকে বল।
যুবরাজ: না বন্দ্ধু, আমাকে যে এ কথা বলিতে নিষেধ করিয়াছে।
মন্ত্রীপুত্র: বন্দ্ধুর চেয়ে তাহলে তোমার কাছে ঐ মালটাই বড় হইল। ঠিক আছে আজ হইতে আমি আর তোমার বন্দ্ধু নই শুধুই "মন্ত্রীপুত্র"।
যুবরাজ: ঠিক আছে, এসো তোমার কানে কানে বলিতেছি। (মন্ত্রীপুত্রের কানে কানে কথা)
মন্ত্রীপুত্র: এ্যার দে রিগটিগ! নাহ, এ আমি বিশ্বাস করি না। যদি সত্য হয় তবে ঐ মৃত পক্ষিটির মদ্ধ্যে প্রবেশ করিয়া দেখাও দেখি।
(মন্ত্র বলে যুবরাজের মৃতপক্ষিদেহে প্রবেশ.... মন্ত্র বলে মন্ত্রীপুত্রের যুবরাজের দেহে প্রবেশ)
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: হা হা হা.... আমি এখন যুবরাজ! "ঠ্যাঙ-ও নাচাইব খাইব সুখে- কি আনন্দ লাগছে বুকে"... ডিচক্যাউ।
যুবরাজ তাহলে তুমি যাও, পক্ষি হইয়া উড়িয়া বেড়াও। পিতাশ্রী আমি আসিতেছি। (গান গাইতে গাইতে) ....দয়াল বাবা কলা খাবা..
(সকলের প্রস্থান.. )
............................
।। তৃতীয় অংক ।।
(মহারাজ ও মহামন্ত্রীর প্রবেশ)
মহারাজ: আমরা এখন টিভলীর জঙ্গলে আসিয়া গেছি।
মহামন্ত্রী: ঈশ্বর মঙ্গলময়, মহারাজ।
মহারাজ: সাবধান মহামন্ত্রী, চতুর্দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখিতে হইবে..
মহামন্ত্রী: যথা আজ্ঞা মহারাজ।
মহারাজ: এই ঝা... আমার রাইসা কার্ডটা চেক-আউট করিতে ভুলিয়া গিয়াছি।
মহামন্ত্রী: ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন, মহারাজ। মহারাজ, আমার জি.পি.এস- টা একটু অন করি... হ্যা মহারাজ, আমরা বাম দিকে গেলে শিঘ্র পৌছাইতে পারিব।
মহারাজ: এই রে.. আমার আইফোন-৭ টা পাইতেছিনা কেন... হারাইয়া গেল নাকি!
মহামন্ত্রী: ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন, মহারাজ।
মহারাজ: দয়া করিয়া থাম। তোমার মঙ্গলের ঠেলায় আর পারিতেছি না...।
মহামন্ত্রী: যথা আজ্ঞা মহারাজ।
(তলয়ার দিয়ে মহারাজ ঝোপ কেটে রাস্তা বানাতে গিয়ে হাত কাটবে)
মহারাজ: ওহ সেট ম্যান... হাত কাটিয়া গেল।
মহামন্ত্রী: ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন, মহারাজ।
মহারাজ: (রাগিয়া) কি! আমার কাটিল হস্ত... আর তুমি বলিতেছ মঙ্গল হইয়াছে মস্ত! হ্যা... ঈশ্বর মঙ্গলের জন্য কাটিয়াছেন! যা ব্যাটা
গর্তে পড়িয়া থাক। (ধাক্কা দিয়ে মহামন্ত্রীকে ফেলে দেবে ও একা পথ চলবে)
মহামন্ত্রী: (কাতর ভাবে) আ... ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন, মহারাজ।
(দুই ডাকাতের প্রবেশ ও মহারাজ বন্দি )
উভয় ডাকাত: হা হা হা...
১ম ডাকাত: পেয়েছি আজ..
মহারাজ: একি, কে তোমরা...। জান আমি ফিসকেথর্ভ রাজ্যের মহারাজ।
২য় ডাকাত: হা হা হা... এটা ফিসকেথর্ভ নয়।
১ম ডাকাত: এটা কালা সর্দারের এলাকা।
২য় ডাকাত: এখন তুই আমাদের বন্দি, চল।
উভয় ডাকাত: হা হা হা...।
(সকলের প্রস্থান ও ডাকাত সর্দারের প্রবেশ)
সর্দার: জয় মা তারা। মা... মাগো দয়া কর মা, দয়া কর। আজ এই পূণ্য তিথীতে মায়ের চরণে নরবলি দেব।
(মহারাজসহ দুই ডাকাতের প্রবেশ)
১ম ডাকাত: হা হা হা... সর্দার, নিয়ে এসেছি।
সর্দার: বিয়ে খেয়েছিস! কার বিয়ে?
২য় ডাকাত: না না সর্দার নিয়ে এসেছি..
সর্দার: ও নিয়ে এসেছিস, কৈ দেখি। বাঃ খুব ভাল খুব ভাল...তুই কত ভাগ্যবান জানিস!
মহারাজ: জান আমি কে..!
সর্দার: কি রে এটা ফিস ফিস করে কি বলে? গলায় কি হয়েছে?
মহারাজ: গলা...!
সর্দার: ও কলা! এই তোরা শিগ্গিরি ওরে একটা কলা দে...।
মহারাজ: সমস্যা আমার গলা নয় তোমার কান।
সর্দার: এই মরেচে, এখন আবার বলে পান খাবে।
মহারাজ: এ তো দেখি মহামুস্কিল। পান নয় তোমার কান!
সর্দার: আমার গান!... না রে পাগলা, এখন গান নয়, আগে মায়ের চরণে তোর বলি হবে রে.. জয় মা তারা..
(মহারাজের শরীর পর্যবেক্ষণ করতে করতে চমকে উঠবে) একি, এর হাতে কাটা কেন?
উভয় ডাকাত: আমরা কিছু করিনি সর্দার..।
সর্দার: আ..হ... তোর মত হতভাগ্য আর নাই রে... ক্ষত শরীর মায়ের বলির অযোগ্য। যা, দুর হয়ে যা এখান থেকে...
(মহারাজের প্রস্থান) চল সবাই বলির শিকার খুজতে হবে.. (যেতে যেতে) এবার যেন আর ভুল না হয়..।
(সকলের প্রস্থান ও মহারাজের প্রবেশ)
মহারাজ: মহামন্ত্রী তো ঠিকই বলিয়াছিল! ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন..আমার হাত না কাটিয়া গেলে আজ আমার বলি হইয়া যাইত। আর ওদিকে অক্ষত শরীর মহামন্ত্রীকে আমি ফেলিয়া না আসিলে ওর বলি হইয়া যাইত। মহামন্ত্রী....(দৌড়) মহামন্ত্রী...।
মহামন্ত্রী: (গর্তে থেকে) মহারাজ...। (মহারাজ গর্ত থেকে মহামন্ত্রীকে টানে তুলবে)
মহারাজ: উনস্কুল মহামন্ত্রী
মহামন্ত্রী: ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন, মহারাজ।
মহারাজ: হ্যা, ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন। .... আমার মন বলছে যুবরাজ প্রাসাদে ফিরিয়া গিয়াছে, চল আমরাও ফিরয়া যাই।
মহামন্ত্রী: যথা আজ্ঞা, মহারাজ।
(সকলের প্রস্থান ও মহারানীর প্রবেশ)
মহারানী: আজ দুই দিবস অতিবাহিত হইয়া গেল তবুও কাহারও কোন সন্দেশ নাই। হা ভগবান, আমি এখন কি করি...
(যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্রের প্রবেশ)
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: পিতাশ্রী... মাতাশ্রী আমি ফিরিয়া আসিয়াছি..
মহারানী: জয় মা... কিন্তু একি যুবারাজ তুমি একা কেন? মহারাজ, মহামন্ত্রী কোথায়?
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: কৈ আমি তো ওদের দেখিনাই।
(মহারাজ ও মহামন্ত্রী প্রবেশ)
মহারাজ: এই তো আমরাও ফিরিয়া আসিয়াছি।
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: পিতাশ্রী.... (প্রথমে মহামন্ত্রীর দিকে পরে মহারাজকে আলিঙ্গন) আমাকে ক্ষমা করিয়া দিন।
মহামন্ত্রী: শোকুনসেনকে দেখিতেছি না...
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: ইয়ে মানে জঙ্গলে আমাদের সাথে এক সন্যাসির দেখা হইয়াছিল মালটা ওর সাথে চলিয়া গিয়াছে।
মহারাজ ও মহামন্ত্রী: (একত্রে) ঈশ্বর যাহা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন।
মহারানী: মহারাজ, অনেক হইয়াছে। এবার আপনি যুবরাজের বিবাহের ব্যাবস্থা করুন।
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: পিতাশ্রী, আমার কিন্তু একটা মাল...... মানে পছন্দ আছে।
মহারাজ: পছন্দ আছে মানে?
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: আজ্ঞে, জঙ্গলে গিয়া টিভলীকুমারীর সাথে আমার দেখা হইয়াছিল। ওর সাথে আমার ইয়ে হইয়া গিয়াছে..
মহারাজ: ও এই কথা! তা আগে বলিবে তো। দেখিয়াছ মহামন্ত্রী...
মহামন্ত্রী: ঈশ্বর মঙ্গলময়।(একত্রে)
মহারাজ: ঈশ্বর মঙ্গলময়। যাও তবে টিভলীকুমারীকে বিবাহ করিয়া লইয়া আস।
................
।। শেষ অংক ।।
(সকলের প্রস্থান ও টিভলীকুমারীর প্রবেশ)
টিভলীকুমারী: (গান গাইতে গাইতে..) মিলন হবে কত দিনে.... হে টিভলীর জনগন, গাছপালা, পশু-পাখি তোমরা সবাই আমার সাথে আছ
আমি জানি। কিন্তু কে আমায় বলে দেবে... (গানের সুরে) আর কত কাল একা থাকব... (এমন সময় পাখিবেশি যুবরাজের প্রবেশ)
পাখিবেশি যুবরাজ: (গান গাইতে গাইতে) ফাইসা গেছি, আমি ফাইসা গেছি.. ফাইসা গেছি মাইনকার চিপায়...।
টিভলীকুমারী: কে.. কে কথা বলে?
পাখিবেশি যুবরাজ: এই যে আমি...
টিভলীকুমারী: ওমা পাখি... তুমি কথা বলতে পারো!...সো কিউট.... তুমি আমার হইবে?
পাখিবেশি যুবরাজ: এত কষ্ট কেন ভালবাসায়....
টিভলীকুমারী: তোমার কিসের এত কষ্ট?
পাখিবেশি যুবরাজ: ধোকা রাজকুমারি, ধোকা..।
টিভলীকুমারী: কষ্ট, ধোকা .... এসবের মানে কি? আমি তো কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না।
পাখিবেশি যুবরাজ: আমিই ফিসকেথর্ভ রাজ্যের যুবরাজ..।
টিভলীকুমারী: ভ্যা সেয়া দু!
পাখিবেশি যুবরাজ: হ্যা রাজকুমারী, আমার বন্ধু মন্ত্রীপুত্র শোকুনসেন আমাকে ধোকা দিয়াছে।
টিভলীকুমারী: তাহলে এখন উপায়..?
পাখিবেশি যুবরাজ: উপায় একটা আছে.... (রাজকুমারীর কানে কানে কথা)
(যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্রের প্রবেশ)
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: আমি তোমাকে বিবাহ করিয়া নিয়ে যেতে আসিয়াছি, রাজকুমারী।
টিভলীকুমারী: তুমি আসিয়াছ...
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: একি এই পাখি.... (দর্শকের দিকে) এ যুবরাজ নয়তো।
টিভলীকুমারী: সেকি তুমি আমার পাখিটাকে এত শিঘ্রই ভুলিয়া গেলে?
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: না না ভুলি নাই। এই পাখি কেমন আছ? মরিচ খাবে.. কলা দুটো?
পাখিবেশি যুবরাজ: তুই খা..
টিভলীকুমারী: আমি কিন্তু এখন বিবাহ করিতে পারিব না, আমার মনটা ভিষন খারাপ।
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: কেন রাজকুমারী, তোমার কি হইয়াছে?
টিভলীকুমারী: আমার অনেক, অনেক অনেক প্রিয় ছাগলটা মরিয়া গিয়াছে.. হু...(কান্না)
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: কান্না করিও না, প্লিজ। এটা কোন ব্যাপারই না, এস আমি মন্ত্র দিয়া মালটা ঠিক করিয়া দেই।
টিভলীকুমারী: ওমা তাই, তুমি মন্ত্র জান।
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: হ্যা জানি তো। কৈ, মালটা কোথায়?
টিভলীকুমারী: এই যে, দেখ তো ওকে বাচাতে পার কি না?
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: তোমার জন্য আমি সব করিতে পারি। আমি এখন শুয়ে শুয়ে মন্ত্র পড়িব, তুমি আমায় ডাকিবে না কিন্তু।
টিভলীকুমারী: (একটু অপেক্ষা করে) .. কৈ ছাগলটা ওঠে না তো।
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: (হঠাৎ করে উঠে) হা হা হা ... কৈ মালটা ওঠেনাই?
টিভলীকুমারী: না।
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: দেখি... (একটু দেখে) ইহার তো মাল ফুরাইয়া গিয়াছে।
টিভলীকুমারী: মানে!
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: মানে ব্যাটারি ফুরাইয়া গিয়াছে।
টিভলীকুমারী: তুমি পারিবে না তাই বল।
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: চল আগে আমরা বিবাহ করি তারপর তোমাকে একটা নতুন ছাগল আনিয়া দিব।
পাখিবেশি যুবরাজ: প্যাক...প্যাক...প্যাক...
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: আরে বাপরে থাম, থাম... মালটা মাঝে মাঝে ক্ষেপিয়া ওঠে।
টিভলীকুমারী: না, আমার এই ছাগলটাই চাই, নইলে আমার মনটা ভাল হইবে না।
যুবরাজবেশি মন্ত্রীপুত্র: ঠিক আছে, আমি আবার মন্ত্র পড়ে দেখি কি হয়।
(.....একটু শুয়ে থেকে তারপর হঠাৎ করে উঠে পাখিকে আক্রমন)
টিভলীকুমারী: থাম, থাম, কি করিতেছ... ওকে মেরো না
যুবরাজ: ও তো আগে থেকেই মৃত রাজকুমারী। ঐ ধুর্ত যেন পাখির দেহে প্রবেশ করিয়া পালাইতে না পারে তাই ঐ দেহ নষ্ট করিতে হইল।
(ছাগলের দেহের আস্ফলন)
টিভলীকুমারী: ও আমার যুবরাজ, আজ আমার এত আনন্দ, আমি এত খুশি...।
যুবরাজ: চল তাহলে সবাইকে নিয়ে বিবাহটা সেরে ফেলি....
টিভলীকুমারী: চল..।
(গান: আমার স্বপ্ন যে সত্যি হল আজ..।)
সকলে একত্রে স্টেজে এসে: ঈশ্বর মঙ্গলময়।।
.......................... সমাপ্ত ...............................
১। মহামন্ত্রী এন্ট্রি থিম: https://www.youtube.com/watch?v=bYogc83y3l0 (৩০ সেকেন্ডস)
২। মহারাজ এন্ট্রি থিম: https://www.youtube.com/watch?v=0-ggsgFh5TI (৩৮ সেকেন্ডস)
৩। যুবরাজ এন্ট্রি থিম: https://www.youtube.com/watch?v=SXbzlLusL_4 (১:১২-১:৩৯ সেকেন্ডস)
৪। মহারানী এন্ট্রি থিম: https://www.youtube.com/watch?v=fVg6Ehu1VXY (০:৪২-০:৫৫ সেকেন্ডস)
৫। রাজকুমরী এন্ট্রি থিম: Click This Link (০:২৮-২:০৪)
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





