somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দোযখের ছোট খাট সংস্করণ

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৬ ভোর ৪:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দোযখের ছোটখাট সংস্করণ

ঢাকা তো টানবেই আমাকে। 28 বছরের সমৃতি। যতই উষ্মা প্রকাশ করি এ নব্য মফস্বলে আমি, ঢাকায় কত সজীবতার আড়ালে টুকরো টুকরো হয়ে বন্দী এই জীবন। ওখানেই মা বাবা, কত ভাই বোন, আর বন্ধু বান্ধব তো আছেই ছড়ানো ছিটানো।
রমযান মাস , যে গাড়ীগুলোতে কক্সবাজারএ 1/2 দিন আগেও সিট খালি পাওয়া যায়না , সে বাসে আজ শূণ্য সিটগুলোর নিরব বিশ্রাম শীতল পরিবেশের কৃত্রিমতায়।
রাত 9টায় কক্সবাজার থেকে যাত্র শুরু করেছিলাম ঢাকার পথে। মাঝে ঘুমটা ভালই হয়েছিল। কখন চট্টগ্রাম পার হয়ে গেছে টেরই পাইনি। গতকাল রাতে যে ঘুমাইইনি। তার একটা রেশ তো আজ থাকবেই। চৌদ্দগ্রাম , হাইওয়ের একত ঝলমলে রেষ্টুরেন্ট....হঠাৎ এক চেনা মুখ, আমারই এক ক্লাশ মেট, চিটাগং অনলাইনের সিইও। চট্টগ্রাম থেক ঢাকা যাচ্ছে অন্য বাসে। ভাল হলো গল্প সল্পে সেহেরীটা সমাপ্ত করা গেলো। 3:30 এর মত হবে সময় যখন পুনঃ শুরু হলো যাত্রা।
পানি বোতাল টা দেখে ভাবলাম একটু পরে শেষ বারের মত খাব(পান করব)। হলোনা। ঘুম আবার নিয়ে গেল ভুবনের বাইরে।
হঠাৎ চোখ মেলেই দেখি নিথর , অনঢ় যেন বাস। সেটা কে জ্যাম বলা যাবে না। মহা মহাজ্যাম বলতে হবে। কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম থেকে ঢাকা ও যাত্রাবাড়ী পেঁৗছাতে 2:30 ঘন্টার বেশী লাগাটাই মহা অস্বভাবিক। সময় বয়েই যাচ্ছিল , শেষ হচ্ছিল না পথ।। ঘুম এর কাছে পরজিত না হয়ে উপায় ছিলনা।
ডেমরা রোডের মাঝে একজায়গায় চোখ মেলে অচেনা অচেনা মনে হলো ভীষণ চারপাশ। ঢিমতালে বাসের গতি আর দুলুনি বোঝা চিটাগং রোডের হাইওয়ে বাদ দিয়ে ডেমরার সরু এবং পুরাতন হাইওয়ে টা ধরে চলছে টুকটুক গতিতে বাস। যাত্রবাড়ীতে যখন পৌঁছালাম বাজে 8:30। 3 ঘন্টা লেট্ ।
এবং সত্যি যাত্রাবাড়ী নেমে দেখলাম চিটাগং রোড ,শনির আখড়া হতে পায়ে হেঁেট আসছে হাজার হাজার লোক..সম্ভবত অফিসে যাচ্ছে । রাতে তীব্র আন্দোলনে ফেঠে পড়েছিল অসহণীয় বিদ্যুৎ হীনতার যন্দ্রনায় ঢাকা বাসী। তারই জের বন্ধ চিটাগং হাইওয়ে।
একটু দূরেই ধোলইপাড় এর রাস্তায় দেখলাম পোড়া কংকাল একটা পিকআপ এর আর একটা সিএনজির।
মনে হতে লাগল বেশ কদিন পরে দেখা ঢাকার সে সকালের পথে পথে নেমে ...আমি যেন এসে পেঁৗচেছি দোযখের কোন ছোট খাট সংস্করণে।
বাসায় পেঁৗছে বুঝলাম। ভুল নয় সে ভাবনা। বিদ্যুৎ থাকা টায় যেন চমক। না থাকাটা স্বাভাবিক। আব্বা এক কাজে মতিঝিলে পাঠালেন। কিতভাবে যাব কোন রোডে ভাবছিলাম। ভেবে লাভ হলো না। হৃাঁটতেই হলো 2/3 কিমি। তারপর বাকীটুকু 35 টাকা রিকশা ভাড়ায় শত রিকোয়েস্টে। এদিকে 12 ঘন্টার জার্ণি ,পেটের পূজো বন্ধ রোযার কারণে, ক্লান্তি বাবাজী তো আসবেই। তার উপর চোখে আন্দোলনরত মানুষের কাতর অথচ হিংস্র চেহারা ভিন্ন মাত্রার দৃশ্য আনে পথে পথে।
একটুঢাকা ভার্সিটি গেলাম মতিঝিলের কাজশেষে ;এরই মধ্যে জ্যামের যন্ত্রনা এবং রিকশা ওয়ালাদের হাই রেট ও হাই ডিমান্ড সহ্য করে। । তারপর নিরিবিলি পথে কিছুক্ষণ একলা চলা কিছুক্ষণ দোকলা।
ফিরতি পথে বাসায় সি এনজিকে থামতে হলো যাত্রাবাড়ী মোড়ে। আর যাওয়া যায়না। আন্দোলন। বিদ্যুতের জণ্য এখনও সংগ্রাম। একটু আগের ঝম ঝম বৃষ্টির পরে কি করে রাজপথে টায়ার আর কাঠ এ আগুণ জ্বলে বুঝতে কষ্ট হলো। দোযখ বলেই হয়তো।
ভাকছিলাম ঐ দূরে ওতগুলো লোকজনের হট্টগোল আর হুলেলার দেখে কোন দিক দিয়ে যাই বাসায় , দক্ষিন না পূর্ব। একটি আর্মির পাজেরো ধোলই পাড়ের দিকে যেতে গিয়ে ঘুরিয়ে উল্টো পথে দৌড়। জনগণের সে কি উল্লাস , মুখে চিৎকার কারও নিরব কারও জোড়। সবাই মজা পেল আর্মিও গাড়ীও ভয় পায় দেখে। হঠাৎ কিছু বোঝার আগেই সে কি ভজঘট। বাতাসে ছোট বড় উটের টুকরো উড়ে উড়ে আসতে লাগল। চোখর নিমিষে দুতিনটা গাড়ীর চূর্ণ কাচ মাটিতে গড়াগড়ি খেতে লাগল।
এরই নাম আন্দোলন। 10টাকার রিকশা ভাড়া দিতে হলো 20টাকা। বললাম কেন?
আজকের জন্যই স্যার । শুধূ আজকের জন্যই।
আন্দোলনের লাভ বুঝিনি। ইফতারের সময় বিদ্যুৎ ছিলনা। ছিঠলনা রাতে সেহরীতেরও। খুব ভাল ঢাকায় এসে অন্ধকারে কৃত কর্ম সম্পাদনের সুন্দর মহড়া দিচ্ছি।
শুনলাম এবং দেখলাম খবরে মিরপুর, কেরানীগঞ্জে আন্দোলন ছিল আরও ভায়াবহ।
খবের দেখে আরও বুঝলাম এত সব আন্দেলনে যাদের টনক নড়ার কথাছিল তাদের টনক নড়েনি। ফ্যাবিকলের আঠ দিয়ে ফিক্সড তাদের টনক। কেউ কেউ বলল রাজিৈনতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

আচ্ছা আমি তো কোন দল করিনা। আমার বাসায় যে বিদ্যুৎ থাকনা । থাকে নিরব অন্ধকার। খুবই ভয়ের কথা এখন যে দলই সরকারে থাকুক না কেন। । উদ্দেশ্য প্রণোদনের খাতিরে সবর্দাই যে তাহলে অন্ধকারে থাকতে হবে।
ভয় পাচ্ছি দোযখের এ ছোট সংস্করণে ছুটির বাকী কদিন কিভাবে কাটাবো?
আমার পরিচিত অপরিচিত আর সবাই এ ঢাকার কি করে সহ্য করনছেন দোযখের প্রাথমিক ধাপ গুলো...
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৬ ভোর ৪:৫৮
২০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দুশ্চিন্তা দূর করার ১০ টি আমল: জেনে নিন

লিখেছেন মোঃ ফরিদুল ইসলাম, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৬

দুশ্চিন্তা দূর করার ১০ টি আমল:
১. ভালো-মন্দ তাকদিরের ওপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস রাখুন। কেননা তাকদিরের ওপর পূর্ণ আস্থাবান ব্যক্তিকে দুশ্চিন্তা কাবু করতে পারে না। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৌলবাদ: ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যর্থ প্রযুক্তি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫১




মজার বিষয়—

আজকের মৌলবাদীরা রোকেয়া বেগমকে মুরতাদ ঘোষণা করে বুক ফুলিয়ে হাঁটে, অথচ নিজেদের অস্তিত্ব টিকেই আছে যাদের ঘৃণা করে— সেই “কাফেরদের” বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে। ইতিহাস পড়লে এদের বুকফুলা হাওয়া বের... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতী এখন পুরোপুরিভাবে নেতৃত্বহীন ও বিশৃংখল।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩



শেরে বাংলার নিজস্ব দল ছিলো, কৃষক প্রজা পার্টি; তিনি সেই দলের নেতা ছিলেন। একই সময়ে, তিনি পুরো বাংগালী জাতির নেতা ছিলেন, সব দলের মানুষ উনাকে সন্মান করতেন। মওলানাও জাতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট

লিখেছেন আরোগ্য, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৬



ওসমান হাদী অন্যতম জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, স্পষ্টবাদী কণ্ঠ, প্রতিবাদী চেতনা লালনকারী, ঢাকা ৮ নং আসনের নির্বাচন প্রার্থী আজ জুমুআর নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর গুলিবিদ্ধ হয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×