আলোকিত মানুষের সংজ্ঞা কী আমি জানিনা। একজন মানুষ নিজে
আলোকিত হওয়া, নিজে শুদ্ধ, পবিত্র, বড় হওয়া নাকি এমন কিছু মানুষ তৈরী
করে যাওয়া যারা আলো ছড়ায় চারপাশে। আমি একজন মানুষের কথা বলব,
একজন নিবেদিত মানুষ, একজন নিঃস্বার্থ মানুষ -" আমার বাবা"। যার সাথে
আমরা সবসময় রাগ করেছি, সংসারের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেনি বলে
অভিযুক্ত করেছি, কিনতু সবসময় মনে মনে আশ্চর্য আশা পোষন করেছি -
কেমন করে এমন হওয়া যায়, যদি এমন হতে পারতাম!
গত সেপ্টেমবরে একদিন অনুমতি চাইলাম, আব্বা, আপনি সারাজীবন যে
স্কুল এর জন্য জীবন উৎসর্গ করে দিলেন, আমাকে সেই স্কুলে একটা চাকরী
দিয়ে দেন, আমিও আপনার মতো এমন ছাত্র পড়িয়ে পড়িয়ে গ্রামের মানুষের
সাথে জীবন কাটাবো। আব্বা হাসলেন, অন্য কথা বলে। তখন আমি তাকে
জোর করে ধরলাম, না আমি এমনই চাই। তখন আব্বা গম্ভীর হয়ে জবাব
দিলেন, দ্যাখো, আমি তো তোমার মতো প্লান করে এরকম হইনি। ১৯৪৭
সনে দেশ বিভাগের সময় আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে
বের হই, তখন নানারকম বড় বড় চাকরীর প্রস্তাব আসে। দেশ বিভাগের
পর বড় বড় অফিসাররা ইন্ডিয়া চলে যাচ্ছিল আর বড় বড় পদ খালি হয়ে
যাচ্ছিল। আমি ও ভাবছিলাম এরকম কোন চাকরীতেই যোগ দিবো। যখন
বাড়িতে গেলাম, গ্রামের মানুষ সব লাইন ধরে আমাকে দেখতে আসে,আর
বলে তুমি নাকি অনেক বড় শিক্ষিত হইছো। আমাদের এলাকায় প্রথম এম,এ
পাশ করেছিল আমার বাবা। তার রেজাল্ট ছিলো- মাধ্যমিকে মেধা তালিকায়
ত্রয়োদশতম, উচ্চমাধ্যমিকে সপ্তম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে প্রথম
শ্রেণীতে দ্বিতীয় এবং মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম। প্রাথমিক পরীক্ষায় বৃত্তি
পেয়ে মাধ্যমিক, মাধ্যমিকে বৃত্তি পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে
স্কলারশিপ পেয়ে অনার্স, অনার্সে স্কলারশিপ পেয়ে এম,এ পাশ। আট বছর
বয়সে তার বাবা মারা গিয়েছিলেন, শৈশবে সকালে নাসতা না খেয়ে,
পয়সা জমাতো কাগজ কলম কেনার জন্য। যে কথায় ছিলাম, আব্বা
বললেন, গ্রামে যে মাধ্যমিক স্কুলটি ছিলো, বাবুরা সে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা
করেছিল এবং তারাই তা চালাতো। দেশ বিভাগের পর বাবুরা ভারত চলে
যাবার সব ব্যবস্থা করে ফেললো, তখন লোনসিং স্কুলের বেহাল অবস্থা।
আমাদের স্কুলটির নাম "লোনসিং উচ্চ বিদ্যালয়"। স্কুল কমিটির সবাই মিলে
আমাকে ধরল স্কুলের হাল ধরার জন্য। গন্যমান্য ব্যাক্তি সবাই মিলে আমাকে
প্রধান শিক্ষক পদে বসিয়ে দিলো, সেই যে বসলাম আর নড়তে চড়তে
পারলাম না। বলে হাসলেন। কেন নড়তে চড়তে পারল না জিজ্ঞেস
করলাম। আব্বা বলল, যখন গ্রামের রাস্তা ধরে হাঁটতাম গ্রামের প্রায় বাড়ি
থেকে লোকজন আমাকে উঁকি মেরে দেখতো, গ্রামের মহিলারা বলত - দ্যাখ
দ্যাখ ছাইদ মাস্টার যায়, অনেক বড় "শিক্কাতাড়া" হইছে। তারা শিক্ষিত
বোঝাতে শিক্কাতাড়া বলতো। আব্বা বললেন, যখন হাঁটতাম মনে হতো-
এই গ্রামের রাস্তা দিয়ে কি কেবলমাত্র আমিই একমাত্র শিক্ষিত ব্যক্তি হাঁটব?
আমাদের গ্রামে তখন কোন প্রাইমারী স্কুল ছিলোনা। কয়েক গ্রাম পর একটা
প্রাইমারী স্কুল ছিল, মেয়েদের লেখাপড়া করার সুযোগ ছিলো না। তখন
আব্বা ঠিক করলেন একটা প্রাইমারী স্কুল প্রতিষ্ঠা করবেন। গ্রামের এক ধনী
ব্যক্তি তাকে জায়গা দিলেন আর গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তুলে একটি
প্রাইমারী স্কুল প্রতিষ্ঠা করলেন - কলুকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্বপ্ন এবং কষ্ট শুরুর বীজ বুনলেন। তার প্রতিষ্ঠিত প্রাইমারী স্কুলের প্রথম ছাত্রী ছিলেন
আমার মা এবং আমাদের এলাকায় আমার মা’ই প্রথম ম্যাট্রিক পাশ করেন।
যে কথা বলছিলাম। আব্বাকে প্রায় সময় নানারকম অভিযোগ করতাম আমি।
একদিন রাগ করে বললাম, এত কষ্ট করে স্কুল করলেন, নিজের নামে করতে
পারলেন না? আব্বা হাসলেন, বললেন- শোনো, পৃথিবীতে বাঁচতে হয় চোরের মতো ।
চোরের মতো নিঃশব্দ পায়ে পৃথিবী থেকে চলে যেতে হয়। যত নিরবে নিজের
কর্তব্য পালন করে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়া যায় সে চেষ্টাই করা উচিত।
তার কথা ছিলো- মানুষ তোমাকে যত কম চিনল, তোমার পাপ তত কম
হলো। কারণ, খ্যাতি তোমার মনে অহংকার তৈরী করবে, আর তখন মানুষ
কাজ করে খ্যাতির মোহে, নিজেকে প্রকাশ করার জন্য, সে কাজে ভালোবাসা
এবং নিবেদন কম থাকে। "আমার আব্বা "- যিনি কাজ করে যেতেন নিরবে,
দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত থাকতেন, তার কাছে জ্ঞানের কথা শুনতে পেতাম না
সহজে। আমি তার সঙ্গে অনেক গল্প করতাম- আর যদি সে গল্পে ডুবে
যেতেন, তখনই কেবল তার চিন্তা ভাবনা প্রকাশ পেতো। যে সব কথা
এখন প্রতি ক্ষনে কানে বাজে।একটা বড় লম্বা টেবিল,দু পাশে দুটি বেঞ্চি,
তার একদিকে চেয়ারে আব্বা বসতেন। তার ছাত্ররা এবং আমরা তার
সন্তানেরা একসাথে এক বেঞ্চিতে বসতাম, আব্বা আমাদের পড়াতেন।
মূলত অংক আর ইংরেজী। আমরা জানতাম কোন ছাত্র পড়া না বুঝলে
বাড়িতে এসে শিক্ষকের কাছে পড়া বুঝে যায় এবং এর জন্য যে আলাদা
পয়সা দিতে হয় সেটা অনেক বড় হয়ে বুঝেছি। আমরা নয় ভাই-বোন, আয়
ছিলো কেবল আব্বার হাই-স্কুলের চাকরী। আমার দাদার জমি-জমা ছিল,
পুকুরে মাছ ছিল। আমার মাকে দেখেছি অমানুষিক পরিশ্রম করতে। মুসুরি,
চাল, ডাল, সরষে, গম, ধান, মরিচ সহ সকল ধরনের ফসল আসত সারা
বছর ধরে - সে সব সামলাতে হতো আমার মাকে। মূলতঃ বাজার থেকে খুব
কম জিনিস কিনতে হতো, তাই টাকা বেশী লাগতোনা। আর তাই কারো
অসুখ- বিসুখ হলে মা খুব বিপদে পড়তেন। তখন গ্রামে অসুখ বিসুখ হতোও
বেশী। মা অভিযোগ করে বলে, আমার পাঁচ বছরের ছেলেটা এত অসুস্থ,
তোর বাপের কোন খেয়াল নেই। সে বাগানের গাছ বিক্রি করে শিক্ষকের
বেতন দেয়, সংসারের দিকে তাকায় না। দেশ উদ্ধার করে বেড়ায়।
বেসরকারী স্কুল তখন, প্রায় সময়ই বেতন হতনা সময়মতো। আমাদের
বাড়িতে বড় একটা বাগান ছিলো, তাতে নানারকম বড় বড় গাছ ছিলো। সেই
বাগানের পাতা ঝাড়ু দিয়ে আমাদের ছয় মাসের জ্বালানীর যোগাড় হতো,
আমরা সব ভাই বোনেরা মায়ের সাথে পাতা ঝাড়ু দিতাম।
প্রভাবশালী বাবুরা যে বিশাল সম্পত্তি দিয়ে গিয়েছিলো আমার আব্বার
জিম্মায়, দেশ বিভাগের সেই অস্হির সময় সে সম্পত্তি রক্ষা করতে বছরের
পর বছর কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে আমাদের। ডাকাতি করা, ঘরে আগুন
দেয়া, খুন করার চেষ্টা, সে সব গল্প করতে গেলে এক একটি আলাদা গল্প
হবে। একবার একদল ডাকাত শুধু আব্বাকে খুন করতে হামলা চালিয়ে
ছিলো আমাদের বাড়ি, আবার দিনের বেলায় তাদেরই কেউ কেউ আব্বাকে
দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু আব্বা কাউকে কিছু বলতে দেয়নি, তারা
এলাকারই প্রভাবশালী লোক ছিলো। সে সব সম্পত্তি রক্ষা করে স্কুলের নামে
দিয়েছেন তিনি। ছোটবেলায় দেখতাম, এক হিন্দু লোক মাঝে মাঝে ঘি নিয়ে
আসত আব্বার জন্য আর আব্বাকে আব্বা বলে ডাকত। লোকটির ছিল
ঘিয়ের ব্যবসা। হিন্দু লোক কেন আমার আব্বাকে আব্বা বলে ডাকত জানতে
চাইলে আব্বার এক ছাত্র, যে আব্বাকে নিজের বাবার মতো দেখতো,
আমাকে বললো, একাত্তরের সময় এই লোক তার সকল সম্পত্তি আমার
আব্বার নামে লিখে দিয়ে ইন্ডিয়া চলে গিয়েছিলো যাতে সম্পত্তি বেহাত না
হয়ে যায়। যুদ্ধ শেষে লোকটি ফিরে আসলে আব্বা সাথে সাথে তার সম্পত্তি
লিখে দিয়েছিলেন। তার সম্পত্তি কেউ দখল করতে পারেনি, নিজ সম্পত্তির
মতো আগলে রেখে তাকে আবার সম্পত্তি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন । এ সকল
গল্প আব্বা আমাদের সাথে কোন দিন করেন নি। কিছু আমার মায়ের মুখে
কিছু অন্য মানুষের মুখে শুনে আব্বাকে জিজ্ঞেস করলে তবেই কিছু কিছু
বলতেন, অন্যদের কাছে দূরে থাক, নিজ সন্তানের কাছেও স্বীকৃতি চাননি
কোনদিন। একদিন খুব রাগ করে বলেছিলাম, এই সব করে কি পেলেন সারা
জীবন? আব্বা বলেছিলেন, আমাদের এলাকায় যে সরকারী দলের এমপি
এবং বিরোদী দলীয় যে এমপি প্রার্থী - ওদের সাথে যখনই দেখা হয়, ওরা
গাড়ি থেকে নেমে পা ছুঁয়ে সালাম করে আমার। ওদের নিজেদের মধ্যে কত
বিরোধ, কিন্তু ওদের কাছে আমি সমান। কত বড় বড় জায়গায় রয়েছে আমার
ছাত্ররা, যেখানেই দেখা হোক পা ছুঁয়ে সালাম করে। এটুকুই আমার পাওয়া।
বি এন পি আওয়ামী লীগ দু দলের প্রার্থীই আমার ভাইয়ের বিয়েতে একই
সাথে এসেছিলেন, তারা দুজনেই আমার আব্বার ছাত্র ছিলো। মজার ব্যাপার
ছিলো তারা কেউই জানতো না আব্বা কাকে ভোট দিতেন। আসল কথা
হচ্ছে আমি নিজেও জানিনা আব্বা কাকে ভোট দিতেন, কিনতু তিনি সবসময়
ভোট দিতেন।
গত ১৩ জুন ২০০৯ আমাদের এলাকার এমপি ডেপুটি স্পীকার কর্ণেল
শওকত আলী এবং আব্বার ছাত্ররা মিলে তাঁকে ঢাকায় “আলোকিত মানুষ”
হিসেবে সম্বর্ধনা দিয়েছেন। আমি তাঁর কাছে কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ
আব্বা অনেক দিন পর তার প্রিয় ছাত্রদের একসাথে দেখে, তাদের সাথে
সময় কাটিয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন, তৃপ্ত হয়েছিলেন তারা কত বড় বড়
জায়গায় গিয়েছে দেখে, পরিতৃপ্ত হয়েছেন তারা তাঁকে ভুলে যাননি দেখে।
তাদের কথা বলতে গিয়ে আনন্দ ঝরে পড়েছিলো তার কন্ঠে।
গত ২০ জুলাই সোমবার আমার আব্বা স্কুল শিক্ষক এ, এফ, এম ছাইদ
(ছাইদ মাস্টার) আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। সারাজীবন নিজের কাজ নিজে
করেছেন, সবসময় চেয়েছেন তার জন্য কারো যেন কষ্ট না হয়, ঠিক সে
ভাবেই কাউকে ব্যাতিব্যস্ত না করে নিরবে চলে গেছেন। দূর প্রবাসে বসে
তার অসুস্থতা নয়, তার চলে যাবার খবর শুনেছি। তার মিলাদে অসংখ্য
মানুষ, তার নিজের হাজার হাজার ছাত্র বিনা দাওয়াতে শরীক হয়েছেন,
ডেপুটি স্পীকার শওকত আলী তার স্ত্রী সহ বিনা দাওয়াতে তার সকল কাজ
ফেলে ঢাকা থেকে শরীয়তপুরের এক প্রান্তের ছোট্ট কলুকাটি গ্রামে
গিয়েছেন দোয়ায় শরীক হওয়ার জন্য এবং তাঁর সর্ম্পকে কিছু বলতে গিয়ে
বড় বড় কথা বলার চেয়ে কেঁদে বুক ভাসিয়েছেন। বক্তৃতা নয়, বিবৃতি নয়,
এই ভালোবাসা চেয়েছিলেন মানুষের কাছ থেকে সারা জীবন। আমার এক
আত্নীয় সম্মানিত( ? )চাকরীজীবী আব্বাকে বলেছিলেন, এত পড়াশুনা করে কি
করলেন, সারা জীবন জংগলেই পড়ে রইলেন। কি পেলেন জীবনে। আব্বা স্নিগ্ধ
হেসে বলেছিলেন- "আমিতো কিছু পাবার জন্য কিছু করিনি"। সারাজীবন কষ্ট
করেছেন , পয়সা গুনে গুনে সংসার চালিয়েছেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত
ঝড়-বৃষ্টি রোদে পুড়ে পুড়ে একটা সাইকেল চালিয়ে চালিয়ে সব কাজ
করেছেন, কিছুই পাননি জীবনে। আজ মনে হয় সব পেয়েছেন তিনি, কিংবা
সবচেয়ে বেশীই পেয়েছেন। সারাজীবন বলেছেন, যত সাধারণভাবে জীবন
কাটানো যায়, মানুষ ততই অসাধারন হয়ে উঠে।
অনেক বড় বড় কথা বলেন নি। সাম্যবাদের বুলি আওড়াননি, কিন্তু সকল
গরীব অনাথ এতিম আত্নীয় স্বজনদের মাথায় হাত রেখেছেন, নিজ বাড়িতে
স্থান দিয়েছেন, পড়াশুনা করিয়েছেন। আমি যখন লন্ডনে চলে আসি,
আমাকে দেয়া তার শেষ উপদেশ ছিলো, সৎপথে থাকিয়ো। সারাজীবন তাঁর
ছাত্রদের তাঁর সন্তানদের শেখাতে চেয়েছেন, সৎপথে জীবন-যাপন করো,
অনেক বড় না হও কিনতু অসৎপথে যেয়োনা।
অনেক পেয়েছি আমরা, তবু হাহাকার জন্মে কিছু না পাওয়া,বড় চাকরি না
করা, আরাম আয়েশে জীবন না কাটানো বাবার মতো যদি হতে পারতাম -
আমরা অনেক জামা কিনে দেয়া সত্ত্বেও ছেঁড়া জামা সেলাই করে যিনি
পরতেন।
I can still remember him well
He taught me of life and taught it so well
He spoke about the Beggars and Kings
But said the best of all things
Be wise for wisdom sets a man free
অ.ট. আমার বাবার মৃত্যুর দু'মাস পর বাংলাদেশ সরকার তাকে "হাজি শরিয়তুল্লাহ স্বর্ণপদক" প্রদান করে।বাংলাদেশের সরকারের এই এক পরিহাস,তাদের বেশিরভাগ স্বীকৃতি ব্যক্তি নিজে দেখে যেতে পারেনা।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১০ রাত ২:২৬