অনেকদিন হয়ে গেল, নতুন পরিবেশ, আবহাওয়া, পরিস্থিতি সকলের থেকে অনেক দুরে থেকে যতটা না কষ্ট হচ্ছিল, তার চেয়েও বেশি কষ্ট হচ্ছে বাংলায় কারো সাথে কথা বলতে না পারায়। উফ্। দেশে থাকতে এসব কিছুই বুঝতে পারিনি যে এতটা ভালোবাসি আমরা আমাদের বাংলাকে। সত্যিই তো এর জন্যই না ৫২ - তে কত রক্তের বন্যা বয়ে গেল।
এমিরেটস্ এয়ার লাইনস্ এর ফ্লাইট যখন দুবাই নামিয়ে দিল, তখন থেকেই হালকা হালকা অনুভব করছিলাম, এর একটু পরই তে হারিয়ে যাবে আমার গানের সুর, কথা । তার ঘন্টা খানেক পরই ট্রানজিট এ ম্যানচেষ্টার এর উদ্দেশ্যে রওনা করতে হলো। ব্যস। ডান পাশে আমার পাকিস্তানি, বাম পাশে আমেরিকান। এ মুহুর্তটা কেমন ছিল, ভুক্ত ভোগী ছাড়া কেউ বুঝতে পারবে না। এখন থেকে ফোন করে তবে শুনতে হবে মায়ের কাছ থেকে বাংলায় কথা গুলো। চারিদিকে শুধু ইংরেজী ভাষা ! এত ভাষার মাঝে আমার বাংলা খুজে পাওয়াটা সত্যিই খুব কঠিন এদেশে। তার পরও খুজেঁ ফিরি কোন বাঙ্গালী ভাইকে, যদি একটু বাংলা বলা যায়।
এভাবেই চলে গেল ২ টা মাস, বাঙ্গালী কিন্তু খুজে পেলাম ঠিকই, কিন্তু সবাই এতটাই ব্যস্ত, যে যার ঠিকানায় ছুটে চলছে অবিরত, কারো দাঁড়ানোর সময় নেই। খোঁজ পেলাম কিছু বাঙ্গালী আছেন গ্লাসগোতে, সেখানেও ঘুরে এসেছি, কিন্তু না, যে পরিমাণ ঠান্ডা ওখানে, তার তুলনায় লিভারপুলে অনেক ভালই আছি। এই ঠান্ডার কারনে হলো না তেমন আড্ডা দেওয়া।
পরিশেষে, ক্লান্ত হয়েই ফিরে এলাম সামুতে - এখানে আমার বাঙ্গালী ভাইদের পাবো সবসময়েই, বাংলায় হাজারো কথা বলা যাবে এখানে, ঠান্ডা এবার আর কোন রকমের বিরক্ত করতে পারবে না। জীবনের বাকিটা সময় হয়তো এভাবেই আমাকে বাংলাকে খুজে নিতে হবে, সামুর অলিতে গলিতে।
অথচ, বাংলাদেশে আমরা ইংরেজী শেখার জন্য বাংলাকে ছুড়ে ফেলে দেই অনেক্ই । তাদের বলছি , একটি বার প্রবাসী হয়েই দেখ... তখন বুঝবে.. মায়ের ভাষা কি জিনিস। বাংলা কত মধুর।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





