মানুষ যদি চোঁখে কাপড় বাঁধে,সে স্বভাবিকভাবেই কিছু দেখতে পাবেনা। কিন্তু নিজের তৈরী এই অন্ধকারে থেকে মানুষগুলো খুব সহজেই বেরিয়ে আসতে পারে। চোখের বাধন নিজের দুই হাত দিয়ে খুলে নিলেই হয়!!! কিন্তু যদি ব্যাপারটা এমন হয় সেই মানুষগুলোর হাতদুটিও বাঁধা তাহলে কিন্তু নিজেকে উদ্ধার করা নিজের পক্ষে সম্ভব না। কিন্তু আজকাল দেখা যাচ্ছে চোখ বাঁধা থাকার দরকার হয়না!!! কপাল ঢাকা থাকলেই আমরা অন্ধ হয়ে যাই। আমাদের কপালে হেফজতে ইসলাম এর কাপড়, আমরা অন্ধ। আমাদের কপালে গণজাগরন মঞ্চের কাপড় বাঁধা, আমরা অন্ধ। এইসব এক্সট্রিমিস্ট লোকজন যত না নিজেদের ক্ষতি করে তার চেয়ে বেশী ক্ষতি করে গোবেচারা ম্যাঙ্গো পিপলদের। কি ক্ষতি করছে ? আমাদেরকে কি বাঙ্গালী হঠাৎ করে এমন সেডিস্ট হয়ে গেল কেন? রানা প্লাজার ২৮ হাজার টন সভ্যতার বর্জ্য এখনও বুকে নিয়ে শুয়ে আছে কিছু লোক, কংক্রিটে চ্যাপ্টা হয়ে চিরনিদ্রায় গেছে অসংখ্য লোক। হাতে ছবি নিয়ে খুঁজে ফিরছে নিখোঁজ পরিজনের লাশ। এখনই আমাদের আরও লাশ দরকার হবে কেন?
ভাই এক্সট্রিমিসট বুঝি? চারদিকে যতদূর চোখ যায় (ভার্চুয়ালি)দেখি লক্ষ লক্ষ এক্সট্রিমিসট। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কে করছেনা আমাদের দেশে। জামায়েত করছে, লীগ করছে, বিএনপি করেছে, মঞ্চ করেছে, হেফাজত করেছে, বামরা করেছে, নাস্তিকেরা করেছে। কেউ দাঁড়িপাল্লার এক দিকে, আবার কেউ অন্য দিকে। মারাত্মক ধর্মবিদ্বেষী মনোভাব যতটুকু দেখেছি, একই সাথে প্রচণ্ড রকমের গোঁড়ামি দেখেছি। আমরা নিজেদের স্বার্থের জন্যে ধর্মের দোহাই দেই, নিজেদের কাজের বৈধতা প্রমাণ করতে ধর্ম ব্যবহার করি। ধর্ম টাকে আমরা দেখি শুধু ক্ষমতায় যাবার একটি পথ হিসেবে। কথায় কথায় লোকজন বলছে ইসলাম শান্তির ধর্ম। যারা এইসব ভাংচুর করছে তারা কি করে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবে বা করতে চায়? জাস্ট টু লেট ইউ নো বয়, দা পিস ইউ আর টকিং এবাউট ইস দা আউটপুট অফ ইসলাম। ব্যাপারটা একটু ব্যাখ্যা করি। ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আগেও অনেক যুদ্ধ হয়েছে, এতে অনেক লোক মারাও গেছে, ভবিষ্যতেও যে হবে সেটা যদি অবিশ্বাস করেন তবে বলব আপনি আপনার ধর্মের এই বিষয়টি সম্পর্কে হয়তো অবগত নন। অতীতের সেই যুদ্ধে বিজয়ের ফলে যেই ধর্মের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল,আর তাতেই সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। দ্যাটস হোয়াই ইসলাম শান্তির ধর্ম। এখন আমরা যদি মনে করি আমাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে এসে মার গুতা খেয়ে ফিরে যেতে হবে কারন তারা মুসলমান, তাদের ধর্ম ইসলাম শান্তির ধর্ম। তাই শান্তি রক্ষার্থে মার হজম করে ফিরে যাবে মসজিদে আর আমাদের মত এইসব অবুঝদের হেদায়েত দেয়ার জন্য আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করবে। তাহলেতো ভাই তাদের মহামানব হতে হবে। কিন্তু আল্লাহতো ঐরকম মহামানব একজনই পাঠিয়েছিলেন এই দুনিয়ায়।
কি ভাই আমাকে কি হেফাজতে ইসলামের লোক মনে হচ্ছে নাকি? সেটা ভাবলে ভুল করবেন। আমি হেফাজতে ইসলামের কর্মী না ভাই। আমি বড্ড স্বাধীনচেতা মানুষ। আমি লীগের কর্মী না ভাই, আমি দলের কর্মীও নই। আমি ভাই সাধারন জনগন। অন্য ভাষায় যাহাকে বলা হয় ম্যাঙ্গো পিপল। যাহারা সবসময়ই অসহায়। আসলে আমরা সকলেই অসহায়। আমরা সকলেই মেরুদন্ডহীন প্রাণীতে পরিণত হয়েছি। আমি নিজেও হয়েছি। হয়তবা আর কিছুদিন পরে মুখ দিয়ে কোন কথা বের হবেনা, হয়তবা কোন প্রাণীর মত কুৎসিত আওয়াজ বের হবে। সেই আওয়াজ হবে একেকটা নোংরা গালি যার সবগুলোই রাজনীতিকদের উদ্দেশ্য দেয়া। হতাশার সময় অনেকেই বলেন দেশটা শেষ। আসলেই শেষ। এই খুন হওয়া মানুষগুলোর রাজনৈতিক বিশ্বাস কি ছিল তাতে আমি বিন্দুমাত্র আর আগ্রহী নই। মরে যাওয়া মানুষ আর আওয়ামী-বিএনপি-জামাত থাকে না। এই খুন বা খুন হওয়াদের প্রিয়জনের কান্না মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে গেল না বিপক্ষে গেল, ইসলামের পক্ষে গেল না বিপক্ষে গেল, এই নিয়ে আমি বিচলিত নই। আমার কাছে এই কান্না আমি খুন হলে আমার মা-স্ত্রী-পুত্র-বন্ধুর কান্নাই। আমার কাছে খুন হচ্ছে খুন, এর বাইরে আর কিছু না। আমার কাছে খুন ইতিহাসের আদি অপরাধ। ‘কোলেটারাল ড্যামেজ’/‘অ্যাক্সিডেন্ট/উচিত শিক্ষা’ যে ভাষাই এইসকল মৃত্যুকে আপনি জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেননা কেন আমি বলবো দ্যাটস নট ফেয়ার এনাফ টু জাস্টিফাই দা কিলিং।
উইথ ডিউ রেসপেক্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওনার বাকশাল নীতির কারনেই হয়তো আমরা তাকে হারিয়েছিলাম। তার অবুঝ নাবালিকা মেয়ের সেই একই চাওয়া আজ দেশকে নরকের একটা স্যাম্পল বানিয়েছে!!! আশা করি উনি খুব শীঘ্রই সাবালিকা হয়ে উঠবেন। আর একজনের কথা না বললেই নয়। আমাদের পাঞ্জাবীওয়ালা ইমরান এইচ সরকার !! পাঞ্জাবীর উপরে ভাই একটা মুজিব কোট গায়ে চাপাইয়া নেত্রীর আশীর্বাদ নিয়ে পলিটিক্সে যোগ দেন সেই দরজা আপনার জন্য খোলা ভাই। আপনার নেত্রীরে গিয়া বুঝান বিএনপির দাবি মাইনা নেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থা এনে নিদেনপক্ষে বিএনপির লোকগুলোকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নিন। তাতে হেফাজত ঠেকানি তেমন কঠিন কিছু হবেনা ভাই। শতহোক আপনারা এন্টি ইসলামিক ব্লাগারদের (বলছিনা সবাই এন্টি ইসলামিক কিংবা সরকার যাদের ধরেছে তারা সবাই এন্টি ইসলামিক) সাপোর্ট করেছেন, তাই আস্তিক-নাস্তিক ব্যপারটা এতদূর গড়িয়েছে। সেখান থেকেই হেফাজতে ইসলামের উদ্ভব হইছে। আই গেস ইটস টাইম টু ডূ সাম এক্সপিয়শন মাই ফ্রেন্ড!!!