somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রত্যাবর্তিনী [১]

৩০ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

***********(এই গল্পে সমাজের কিছু অন্ধকার কোণকে তুলে ধরা হয়েছে। চরিত্রদের ভাষা বা দৃষ্টিভঙ্গীকে আদর্শ বলে না ধরতে অনুরোধ জানাই। গল্পে প্রাপ্তমনস্ক বিষয়ের উল্লেখ আছে, নাবালকরা পড়বেন না।)***********

প্রত্যাবর্তিনী
(১ম পর্ব)
__________________________________________________

-শনিগিরিরত্নমালা ২৩ সর্গ, ২৯৮ শকাব্দ-

"রাজকুমারী উত্তরার সহিত যে বিশ্বাসঘাতকতা হইয়াছিল তাহা কূটনীতির জালে জড়াইয়া চিত্রল নদীর জলে ভাসাইয়া দেওয়া হইয়াছে, জনসাধারণে তাহার কথা ভুলিয়া গিয়াছে। কিন্তু দৈবের দণ্ড নামিয়া আসিতে বহুশতাব্দী বিলম্ব হইলেও তাহা চিরন্তনকাল অমোঘ রহিয়া যায়। মিথ্যা ঈর্ষা ও অহঙ্কারে অন্ধ হইয়া যাহারা ঘৃণ্য ছল করিয়া সেই ষোড়শবর্ষীয়া বীরাঙ্গনাকে নিষ্ঠুরভাবে গুপ্তহত্যা করিয়াছিল, দেবী বীরেশ্বরীর অভিশাপ তাহাদের লক্ষ বৎসর তাড়াইয়া ফিরিবে। কুমারী দেবীমন্ত্রে দীক্ষিতা, মৃত্যু তাঁহার কাছে কি? কালচক্র ফিরিতেছে, রাজকুমারী উত্তরা পুনরায় আসিবেন, জন্ম জন্ম ধরিয়া এক জন্মের পাপফল তাহার শত্রুদের দগ্ধ করিবে। মহাদেবী বীরেশ্বরীর মার্গশিষ্যার কপট রক্তপাত যাহারা করিয়াছে, সেই পাপীদের জন্মজন্মাতরেও ক্ষমা নাই।"


_______________________________________________________
-বাপ্পার ডাইরি-

আমি যখন স্কুলে পড়তাম তখনকার কথা বলছি। আমি ক্লাসের মধ্যে খুব পপুলার ছিলাম, খেলাধুলায় ভাল ছিলাম বলে। আমাদের পুরো গ্রুপটাই স্পোর্টসে ভাল ছিল। আমি, নরেশ, তপন, আর্য, বিক্রম, আমরা সবাই সবসময় একসাথে থাকতাম, ক্লাসের সবাই আমাদের মেনে চলত। জিমেও আমরাই রাজ করতাম, আমাদের সাথে টক্কর নেওয়ার সাহস কারো ছিল না। মেয়েদের মধ্যেও আমরা পপুলার ছিলাম। কিন্তু একজন মাত্র মেয়ের কথা এখনো আমাদের মনে পড়ে যাকে আমরা কোনোদিন কন্ট্রোল করতে পারিনি। যতবার ওর সঙ্গে আমাদের কিছু হয়েছে, আমরা প্রত্যেক বার অপমানিত হয়ে হেরে গেছি। আজকে সেই কথা লিখছি, হয়তো ও দেখবে। সেই মেয়ে আর কেউ না, আমাদের এক ক্লাস জুনিয়র, শনিগড় হাই স্কুলের হার্টথ্রব রোহিণী।

রোহিণী আমাদের স্কুলে এসেছিল ক্লাস এইটে যেদিন প্রথম ক্লাসে এল সেদিন থেকেই আমরা ওর নাম শুনতে পেয়ে গেছিলাম। টিফিনের সময় স্কুল গ্রাউন্ডে দূর থেকে দেখেছিলাম। অসাধারণ সুন্দরী মেয়ে। অন্য সব মেয়েদের থেকে লম্বা, দুধে-আলতা গায়ের রং। চুলের রং ঠিক কালো না, একটু বাদামী। তখনই মনে হয়েছিল ও পুরোপুরি ইন্ডিয়ান না। পরে শুনেছিলাম ওর পরিবারে ইরানি রক্ত আছে। সেদিন দূর থেকে ওইটুকুই দেখেছিলাম। পরে কাছের থেকে দেখে বুঝেছিলাম শুধু দেখতে সুন্দরী না, রোহিণীর ফিগারও অসাধারণ। ওর ক্লাসের ছেলেদের কাছে শুনলাম, ও নাকি নাচ শেখে, স্কুলের ডান্স টিমে প্রথম চান্সেই পেয়ে গেছে।

সেই বছর অ্যানুয়াল ডান্স কম্পিটিশনে রোহিণী মোহিনীয়ট্টম প্রেজেন্ট করেছিল। হালকা হলুদ রঙের কস্টিউম পরে, ফর্সা পায়ে আলতা মেখে যখন হাসতে হাসতে পায়ের ঠমক দিয়ে স্টেজে নাচছিল, আমার কান দপদপ করছিল। শুধু আমি না, আমাদের সবার। তপন আমার পাশে বসে ছিল, আমি দেখেছিলাম ও রোহিণীর মোহিনীয়ট্টম দেখতে দেখতে অস্থির হয়ে উঠছে। সেই কম্পিটিশনে রোহিণী ফার্স্ট প্রাইজ পেল। আর তখন থেকেই সারা স্কুল ওর প্রেমে মজে গেল।

রোহিণীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য ছিল ওর পা। আমাদের স্কুলে মেয়েদের ইউনিফর্ম ছিল স্কার্ট। রোহিণীর পায়ের শেপ ছিল ব্যালে ডান্সারদের মতো, কিন্তু আরো বেশী কার্ভি আর সুডৌল। ও যখন হাঁটত, ওর মোজায় ঢাকা কাফ দুটো ফুলে ফুলে উঠত, যেখান দিয়ে যেত সবাই আড়চোখে তাকিয়ে দেখত। অনেক ছেলেরা ফলোও করত পেছন পেছন, ওই ঢেউ খেলানো কাফের জাদুতে পড়ে। রোহিণী সেটা ভালভাবেই জানত। তাই, মাঝে মাঝে আমরা দেখতাম, ও কখনো স্কুলের করিডোরে দাঁড়িয়ে ওর বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে, ইচ্ছে করেই ওর পা ফ্লেক্স করে করে কাফ ফুলিয়ে তুলত। ও জানত যে তার এফেক্ট আমাদের ওপর কী হয়।

কিন্তু কয়েক মাস যেতে যেতেই আমরা রোহিণীর নতুন আর এক রূপ দেখতে পেলাম, আর এটাও বুঝলাম যে ওর ওরকম অসাধারণ ফিগার আর পায়ের শেপের রহস্য কি। সেটা দেখলাম ডিসেম্বর মাসে, স্পোর্টসের সময়।

তখনই আমরা প্রথম জানলাম যে রোহিণী জিমন্যাস্টিকস করে। শনিগড় হাই স্কুলে জিমন্যাস্টিকস ছিল না, কিন্তু তখন আমরা জানলাম যে ও প্রাইভেট কোচিং ক্যাম্পে জিমন্যাস্টিকস শেখে। এটা আমরা বুঝলাম যখন ও হাইজাম্প আর লংজাম্পে নাম দিল। সেই প্রথমবার, মেয়েদের হাই জাম্প আর লং জাম্পের রেকর্ড ছেলেদের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেল। কিন্তু তাতে আমাদের কোনো আপসোস ছিল না। গ্রাউন্ডে সবাই রোহিণীকেই দেখছিল। লাল শর্টস আর জার্সিতে ওকে যা লাগছিল, কি বলব। জিমন্যাস্টিক করা সুঠাম শরীর নিয়ে ও স্ট্রেচ করছিল, বডি আঁকিয়ে বাঁকিয়ে ওয়ার্ম আপ করছিল। খুবই ছোট শর্টস পরার জন্য ওর ফর্সা, স্মুথ পা দুটো খোলা দেখা যাচ্ছিল, আর সেই পায়ে মাসলের নড়াচড়া অপূর্বভাবে ফুটে উঠছিল। সবাই গেমস ইউনিফর্ম আর শর্টস পরে ছিলাম বলে ছেলেদের খুব অসুবিধা হচ্ছিল, আমরা কোনোভাবে আড়াল করছিলাম।

পরের বছর থেকেই আমরা জানলাম রোহিণীর আসল পরিচয়। ও মোটেই সাধারণ মেন্টালিটির মেয়ে ছিল না। ও ছিল শরীর ও মনে পুরোপুরি বাঘিনী। আমরা তার প্রমাণ পেলাম প্রথম, বিক্রমের জন্য। যদিও বিক্রমের পক্ষে ঘটনাটা ভাল ছিল না।

বিক্রম আমাদের ক্লাসে পড়ত, রোহিণীর চেয়ে এক বছর সিনিয়ার ছিল। ও আমাদের ফুটবল টীমে ব্যাক খেলত। আমাদের মধ্যে ওর গায়ের জোর সবচেয়ে বেশী ছিল। আমরা জিমে দেখতাম, ও যে ওয়েট নিয়ে লিফটিং করত সেই ওয়েট স্কুলের আর কোন স্টুডেন্ট ওঠাতে পারত না। তখন আমাদের বয়েস ১৫-১৬, কিন্তু ওর তখনই কলেজের মত চেহারা ছিল। বিক্রম সবসময় হাফ-হাতা শার্ট পরত, আর হাতাও গুটিয়ে রাখত, যাতে ওর বাইসেপ বেরিয়ে থাকে। আমাদের কারো ওর মত বাইসেপ ছিল না।

আমরা তখন টেনে পড়ি। ক্লাস নাইনের ঐন্দ্রিলার ওপর বিক্রমের খুব টান ছিল। কিন্তু ঐন্দ্রিলার ওরকম ছেলে পছন্দ ছিল না, ও কালচারাল বাড়ির মেয়ে, একটু আর্টিস্টিক ইন্টেলেকচুয়াল টাইপের ছেলে পছন্দ করত। তো, একদিন, ঐন্দ্রিলা আর ওর বয়ফ্রেন্ড তরুণ বিকেলে ক্লাবের পাশ দিয়ে ফেরার সময় বিক্রম ওদের পথ আটকায়। আর তারপর, তরুণকে ধমকি দেয় ঐন্দ্রিলার থেকে দূরে থাকতে। আমরা পেছনেই ছিলাম, দূর থেকে মজা দেখছিলাম। এমনিতেও বিক্রমকে আটকানোর হিম্মত আমাদের ছিল না। কিন্তু তরুণ বোকামি করে ফেলে, ও বিক্রমকে উল্টে ধমক দিতে যায়। তখন বিক্রম ওকে কলার ধরে মারতে স্টার্ট করে দেয়। কয়েকটা ঘুসিতেই তরুণ রাস্তায় পড়ে যায়, ঐন্দ্রিলা তখন বিক্রমকে আটকাতে যায়, কিন্তু ওকেও রাগের মাথায় বিক্রম ঠেলে ফেলে দেয়। ঐন্দ্রিলার হাতে চোট লাগে। আমরা তখন গিয়ে ওকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসি। আসার আগে বিক্রম ঐন্দ্রিলাকে নোংরা গালি দিয়ে ওর পেটে একটা লাথি মারে। তরুণের তখন কোন জ্ঞান ছিল না, রক্তারক্তি অবস্থা।

আমরা তখন জানতাম না যে ঐন্দ্রিলা রোহিণীর গ্রুপের মেয়ে। আমরা সেটা টের পেলাম পর দিন, কিন্তু যখন জানলাম তখন অলরেডি অনেক দেরী হয়ে গেছে।

পর দিন হঠাৎ সন্ধেবেলা আমাদের কাছে খবর এল, তাড়াতাড়ি স্কুলের জিমে যেতে, বিক্রমের নাকি অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। আমরা তাড়াতাড়ি গিয়ে দেখি, বিক্রম জিমের এক পাশে দেওয়ালে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে, বিধ্বস্ত জামাপ্যান্ট, মুখের অবস্থা ফুলে গেছে, চোখ লাল, মুখের কোণে ফেনা শুকিয়ে আছে। হাত পা দেখে মনে হচ্ছে বিশাল ব্যাথা পেয়েছে, কোথাও কাটেনি কিন্তু যেন মচকে গেছে। ডান হাতের বাইসেপটায় একটা কালশিটের দাগ। চোখ দেখে মনে হচ্ছে কান্না শুকিয়ে আছে। আমরা তাড়াতাড়ি ওর চারদিকে বসে ওকে জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে। কিন্তু বিক্রম তখনও শকের মধ্যে ছিল, মুখ দিয়ে কথা বেরোচ্ছিল না। ঠোঁট কাঁপছিল, যেন খুব ভয়ের কিছু হয়ে গেছে। স্কুলের একজন গার্ড আমাদের খবর দিয়েছিল, ওকে থ্যাংকস দিয়ে বিক্রমকে আমরা তখনই ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম। পরে রাতের বেলা ও আমাদেরকে বলল কী হয়েছে।

সেদিন নাকি টিফিনের সময় রোহিণী ওর সঙ্গে সিক্রেটলি দেখা করে। বিক্রম ভেবেছিল রোহিণীর ওকে পছন্দ হয়েছে। রোহিণীও ওরকম ভাব করছিল, যেন আলাদা কোনো ফাঁকা জায়গায় যেতে চায় ওর সাথে। ছুটির সময় বাকি সব স্টুডেন্টরা বেরিয়ে যায়, কিন্তু বিক্রম ওর জিনিস ফেলে এসেছে এরকম একটা অজুহাত দিয়ে জিমের দিকে যায়, কারণ ওই টাইমে স্কুলের ওই জায়গাটা একেবারে ফাঁকা থাকে, রোহিণীর ওখানেই ওয়েট করার কথা ছিল। রোহিণী ওখানে ছিলও। কিন্তু এর পরেই সব গোলমাল হয়ে যায়।

বিক্রম আমাদের বলে, যে প্রথমেই ও যেটা দেখেছিল সেটা হল রোহিণী ওর জুতো খুলে এক সাইডে রেখেছে। খালি পা। দেখেই মনে পড়ে ওর নাচের কথা। সেই পায়ে পাতলা নুপূর। বিক্রমের মনে হয়েছিল রোহিণী ওকে দেখানোর জন্য ওইভাবে রেডি হয়েছে। কিন্তু ও এগিয়ে কাছে যেতেই....

... রোহিণী প্রথমেই একটা লাথি মেরে ওকে মেঝেতে ফেলে দেয়। বিক্রমের গায়ে অত শক্তি, কিন্তু ও সেই লাথি সামলাতে না পেরে পড়ে যায়। আর সঙ্গে সঙ্গে রোহিণী তার ডান পাটা ওর গলায় চাপিয়ে দেয়। তারপর চাপতে থাকে। বিক্রমের মুখ দিয়ে 'ওক্..ওক্‌ক্...' করে আওয়াজ বেরোতে থাকে, আর সেই সাথে ও দুই হাতে রোহিণীর পা চেপে ধরে সরাতে চেষ্টা করে। এবং দেখে যে সরাতে পারছে না। রোহিণীর এক পায়ের চাপের শক্তি ওর সারা শরীরের চেয়ে অনেক বেশী।

খানিকক্ষণ চাপার পর রোহিণী গলা থেকে পা সরিয়ে নেয়। তারপর মাটিতে পড়ে থাকা বিক্রমের দিকে তাকিয়ে বলে, 'ওঠ্! ওঠ্ ক্ষমতা থাকলে!' বিক্রম যেই উঠতে যায়, রোহিণী ওর বুকে এক লাথি মেরে ওকে আবার ফেলে দেয়। বুকে পা তুলে দেয় তারপর। বিক্রমের দম বন্ধ হয়ে আসে, বুক যেন রোহিণীর পায়ের চাপে মুচড়ে ভেঙে যাচ্ছে মনে হয়। ও দুই হাত দিয়ে রোহিণীর পা ঠেলতে থাকে, কিন্তু চেষ্টা বৃথা। রোহিণী ওর নিষ্ফল চেষ্টা দেখে খিলখিল করে হাসতে হাসতে আরো চাপ দিতে থাকে ওর বুকে। চাপতে চাপতে বলে, 'কাল কি করেছিলি ঐন্দ্রিলা আর ওর বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে? মনে পড়ছে?' বিক্রমের উত্তর দেওয়ার দম নেই, ও যত জোর আছে সব দিয়ে শুধু ঠেলে যাচ্ছে রোহিণীর পা, সরাতে পারছে না। বুকের হাড় যেন বেঁকে যাচ্ছে, ছাতিটা যেন নুপূর-পরা পায়ের চাপে দাবিয়ে দিচ্ছে রোহিণী। বিক্রমের হাতদুটো প্রাণপণ ক্ষমতায় চেষ্টা করতে থাকে, সর্বশক্তি দিয়ে, মুখ দিয়ে 'আ-আ-আহ্-হ্=হ্-' করে চাপা কাতরানি বেরোতে থাকে অসহায়ের মত, কিন্তু সেই সঙ্গে রোহিণী নরম স্মূুথ পায়ের ছোঁয়া, আর সেই পায়ে যেন মার্বেল পাথরের মত মসৃণ কঠিন কাফ ফুলে উঠেছে, তাতে সে দুই হাতে চেপে ধরতে থাকে দয়া ভিক্ষা করতে করতে। রোহিণী বলে, 'ক্ষমা চা, শয়তান.. আমার এই পায়ে ধরে ক্ষমা চা..' বলতে বলতে বিক্রমের বুকে পা দিয়ে চেপে ডলতে থাকে। বিক্রম গোঙাতে গোঙাতে, হাত জোড় করে বলে - 'ছে-ছেড়ে দাও- আ-হ্-হ্-আ-র ক-র-ব না-আ.. আ-হ্-গহ্'.. কিন্তু রোহিণী তখনো ছাড়ে না। বুক থেকে পা নামিয়ে নিয়ে এবার সে বিক্রমের চুলের মুঠি ধরে ওকে টেনে তোলে। তারপর মুঠি ধরে ওর ভয়ার্ত মুখটা নিজের মুখের কাছে নিয়ে এসে ফিসফিস করে বলে, 'সবে তো শুরু করলাম বেবি, এখনো অনেক বাকি।' বলে মাথাটা টেনে নামিয়ে ওর দুই থাইয়ের মধ্যে চেপে ধরে।

বিক্রম কোনদিন ভাবতেও পারেনি ওর এই অবস্থা হবে। এক ক্লাস জুনিয়র এক সুন্দরী মেয়ের হাতে ওর এই দুর্দশা হতে পারে, এ যেন কল্পনারও বাইরে। রোহিণীর জিমন্যাস্টিক-করা পায়ের ফাঁকে চাপা হয়ে বিক্রম অসহায়ের মত ছটফট করতে লাগল। রোহিণী দুই উরু দিয়ে ওর মাথার দুপাশে চাপ দিতে দিতে বলে, 'বল, আর কোনদিন কারো গায়ে হাত তুলবি?' আর হাসতে থাকে। তার দুই উরুর মধ্যে বিক্রম বন্দী জন্তুর মত দাপাতে দাপাতে চেষ্টা করতে থাকে ছাড়া পাওয়ার, ওর এতদিনের জিম-করা ক্ষমতা, এত গর্বের বাইসেপ - সবকিছু লাগিয়ে প্রাণপণে রোহিণীর দুই থাই আঁকড়ে ধরে টানতে থাকে মুক্তি পাওয়ার জন্য, কিন্তু মেয়েটার পায়ে যেন বাঘিনীর শক্তি, নির্মম পেষণে যেন বিক্রমের মাথাটাই চূর্ণ করে দেবে হেলাভরে। অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যেও বিক্রম টের পায়, রোহিণীর পায়ের মাসল ঢেউ খেলিয়ে ফুলে উঠেছে। মসৃণ ত্বকের তলায় যেন ইস্পাতের মত পেশী খেলা করছে, শক্তিভরে ফুলে উঠে ঘিরে ফেলেছে ওর মাথা, ঘাড়। শুনতে পায় রোহিণী বলছে, 'তোর ঘাড়টা মটকে দিতে আমার এক সেকেন্ডও লাগবে না, বুঝতে পারছিস?' ভয়ে বিক্রম চীৎকার করতে শুরু করে। কিন্তু চীৎকার বেরোনোর রাস্তা নেই, শুধু বেরিয়ে আসে - "ম্-ম্-ম্-হ্-হ্! হর্ম্-ম্-ম্-র্ম্-র্ম্-ম!!" --- রোহিণীর থাইয়ে ওর মুখ চাপা, তাতেই সেই আর্তনাদ চাপা পড়ে মিশে যায়। বিক্রমের দুই চোখ লাল অন্ধকারে ভরে যায়...

কিন্তু না, ছেড়ে দেয় তাকে রোহিণী। থাইয়ের বন্ধন থেকে মুক্তি দিয়ে, বুকে এক লাথি মেরে আবার শুইয়ে দেয় মেঝেয়। কাটা জানোয়ারের মত বিক্রমের বিশাল বডিটা জিমন্যাসিয়ামের মেঝেয় পড়ে ছটকাতে থাকে যন্ত্রণায়, দম নিতে থাকে পাগলের মত। এবার রোহিণী এগিয়ে এসে বিক্রমের বুকে উঠে দাঁড়ায়.. 'ঊয়া-গগ-হ--' - একটা আওয়াজ করে বিক্রমের দম বেরিয়ে আসে রোহিণীর পায়ের চাপে। 'আমার নাচ দেখেছিস কখনো, বিক্রম?' বিক্রম ওপরের দিকে তাকিয়ে দেখে, ওকে আরেকটু হলেই চেপে পিষে দিত যে পা দুটো - তারাই দাঁড়িয়ে আছে.. ফর্সা মাসকুলার দুটো থাই.. ডাবের মত দুটো কাফ ফুলে আছে শক্তিতে ঠাসা হয়ে.. রোহিণীর মুখে একটা বাঁকা হাসি। 'কি, আরো দেখবি আমার পা?' বিক্রম আতঙ্কে পাগলের মত মাথা নাড়তে থাকে, হাত জোড় করতে যায় দয়া ভিক্ষার জন্য। রোহিণী হা-হা করে হেসে ওঠে, তারপর ওর বুকের ওপর থেই-থেই করে পা ফেলে নাচতে শুরু করে। প্রতিবার পা ফেলার সাথে সাথে বিক্রমের মনে হয়, যেন বুকটা কেউ আছড়ে আছড়ে ভেঙে দিচ্ছে পায়ের আঘাতে। 'হ্যাক-ক্-ক্! -হ্যা-য়্যা-গ্-গ-গ!!' - আওয়াজ উঠতে শুরু করে ওর মুখ দিয়ে.. জিভ বেরিয়ে আসে রোহিণীর ধিতিকা-ধিতিকা পায়ের তালে তালে। একসময় রোহিণী বাম পা দিয়ে ওর ডান হাতের বাইসেপটা মেঝের সঙ্গে চেপে ধরে পিষতে থাকে-- "আ-আ-ঈ-ঈঈঈ..না-প্লিজ না- না রোহিণী-ঈঈঈঈ-আ-আ-ঈঈ..." - ঝটকাতে ঝটকাতে চেঁচাতে থাকে বিক্রম, কিন্তু সব বৃথা.. কেউ শোনার নেই সেই চীৎকার.. স্কুলের সবচেয়ে তাগড়া ছেলে অসহায়ভাবে আর্তনাদ করতে থাকে রোহিণীর থৈ-থৈ পায়ের তলায়।

কতক্ষণ এরকম চলে বিক্রমের মনে নেই। ওর শুধু মনে আছে রোহিণীর পায়ের আওয়াজ, ওর বুকে একের পর এক পায়ের চাপ, আর ভয়ে, ব্যাথায় কাঁদতে কাঁদতে পাগলের মত ক্ষমা চেয়ে যাওয়া। শেষে রোহিণী ওর ঠোঁটের ওপর পায়ের পাতা চেপে ধরে, যাতে চীৎকার না বেরোয়। কান্নার জন্য বিক্রম ভাল করে দেখতেও পাচ্ছিল না, কিন্তু মনে হয় যেন রোহিণী বলছিল, 'পরের বার সবার সামনে তোকে দিয়ে এই পা চাটাব.......'

---- বিক্রমের কাহিনী শুনে আমরা সবাই পাথর হয়ে যাই। মনে মনে আমরা সবাই জানতাম, রোহিণীর ওই চেহারা আর মোহিনী শক্তির পেছনে একটা রহস্য আছেই, কিন্তু সে যে এরকমভাবে আমাদের সামনে আসবে, আমরা কেউ ভাবিনি। এ যেন কোন অসুরমর্দিনী দেবী, -- রূপেরও দেবী, শক্তিরও দেবী! - বিক্রমের মত ছেলেকে যে এরকম সহজে শরীরে ও মনে সম্পূর্ণ চুরমার করে দিতে পারে, তাকে নিয়ে জীবন কেমন কাটবে, কে জানে!



সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৩
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×