somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রত্যাবর্তিনী [৩]

২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

***********(এই গল্পে সমাজের কিছু অন্ধকার কোণকে তুলে ধরা হয়েছে। চরিত্রদের ভাষা বা দৃষ্টিভঙ্গীকে আদর্শ বলে না ধরতে অনুরোধ জানাই। গল্পে প্রাপ্তমনস্ক বিষয়ের উল্লেখ আছে, নাবালকরা পড়বেন না।)***********

প্রত্যাবর্তিনী
(৩য় পর্ব)
___________________________________

-শনিগিরিরত্নমালা ২৩ সর্গ, ২৯৮ শকাব্দ-

"উত্তরা প্রত্যহ সন্ধ্যাকালে দেবী বীরেশ্বরী সমরসুন্দরীর মন্দিরে নিজে আরতি করিতেন, তৎপরে রুদ্ধদ্বার মন্দিরগর্ভে নৃত্যাঞ্জলি দিয়া একাকী দেবীর আরাধনা করিতেন। এই সময়ে মন্দির প্রাঙ্গনে অপর কাহারো উপস্থিত থাকিবার নিয়ম ছিল না। জগৎকুমার বহু চেষ্টা করিয়াও এই নিশ্ছিদ্র গণ্ডীর মধ্যে ছিদ্র বাহির করিতে পারেন নাই। অতঃপর তিনি ক্রীড়াভূমিতে মল্লযুদ্ধের ছল করিয়া রাজকুমারীর দেহস্পর্শ করিবার সুযোগ লহিতে চাহিয়াছিলেন। জগৎকুমার ধুরন্ধর মল্লবীর ছিলেন, রাজ্যে তাহার সমান দৈহিক বল কোনো পুরুষেরই সম্ভবত ছিল না। সম্ভবতঃ এই কারণে তাঁহার মনে ধারণা ছিল যে তিনি সহজেই অভীষ্টলাভ করিতে পারিবেন। সুতরাং শারদোৎসবের তৃতীয় দিবসে যখন তিনি মল্লভূমিতে কুমারী উত্তরার পদতলে শোচনীয়ভাবে পরাজিত স্বীকার করিতে বাধ্য হইলেন, তখন লজ্জায় ও ক্রোধে তিনি অন্ধ হইয়া গেলেন। জগৎকুমারের ক্রোধের সহিত কামও মিশিয়াছিল একথা নিশ্চিত, কারণ এই ঘটনার পর হইতেই তিনি কামজ বৃত্তিতে নির্লজ্জতর হইয়া উঠেন।"

 -শ্রীশ্রীচণ্ডী তৃতীয় অধ্যায় শ্লোক ৩৮

“গর্জ গর্জ ক্ষণং মূঢ় মধু যাবৎ পিবাম্যহম্‌।
ময়া ত্বয়ি হতেঽত্রৈব গর্জিষ্যন্ত্যাশু দেবতাঃ।।"


-নরেশের কথা- 

পুজোর সময় যখন এগিয়ে আসে তখন সবারই মনে অনেকরকম উত্তেজনা আসে, আমাদেরও সেরকম হত। আমাদের স্কুলে পুজোর ছুটি পড়ার আগে একটা কালচারাল ফেস্ট হত, ছুটি পড়ার আগের দিন। সেখানে গান, নাচ, সবকিছুই থাকত। রোহিণীকে তখন পুরো স্কুলে সবাই চেনে ট্যালেন্টেড ডান্সার বলে। ওকে প্রিন্সিপাল ম্যাডাম নিজেই বললেন যে এই বছরের প্রোগ্রামে যে মহিষাসুরমর্দিনী নাটক হবে তাতে ওকে দুর্গা করতে হবে। আমরা মনে মনে সবাই জানতাম এটা হওয়ারই ছিল, এখন সেই খবর স্কুলে ছড়িয়ে গেল।

রোহিণী নিজেও জানত যে এরকম কিছু হবে। ওর নাচ যেমন সব টিচার-স্টুডেন্ট সবার মুখে মুখে পরিচিত ছিল সেরকম ওর খেলাধূলার কথাও সবাই জানত। আর ওর ফিগার আর ক্ষমতা যে সবাই আড়চোখে দেখত তা তো আগেই বলেছি। পুজা ফেস্টে অন্য কেউ দুর্গা করবে এটা সম্ভবই ছিল না। তাছাড়া, আমরা সবাই জানতাম যে রোহিণীর নাচ আর শক্তি দেখার লোভ মনে মনে স্কুলের সবার আছে। টিচারদের কেউও এই সুযোগ কখনো ছাড়ত না। ওকে সিলেক্ট করার পেছনে সব টিচারের সাপোর্ট ছিল, তার মধ্যে অনেকেই রোহিণীর ক্লাসে পড়াত। তারা সবাই রোহিণী পায়ের যাদুতে মজেছিল। তারা কি চায় আমরা জানতাম, কারণ আমরা সবাই মনে মনে তো ওই একই স্বপ্ন দেখতাম।

সব সিলেকশন হয়ে যাওয়ার পরে একটা সমস্যা হল মহিষাসুর কাকে করা হবে সেটা নিয়ে। রোহিণী যতটা লম্বা সেইরকম তুলনায় লম্বাচওড়া অ্যাক্টিং করার ছেলে পাওয়া যায় না, যারা আছে তারা কেউ কোনদিন স্টেজেই ওঠেনি। শেষপর্যন্ত মিউজিক স্যার ঠিক করল যে সঞ্জয় চট্টরাজকে নেওয়া হবে।

সঞ্জয় চট্টরাজ আমাদের স্কুলের সিনিয়ার স্টুডেন্ট, দু বছর আগে পাশ করে বেরিয়ে গেছে। তখন সঞ্জয় শনিগড় কলেজে পড়ছে। কিন্তু পড়ার চেয়ে বেশি ও যেটা করত সেটা বডিবিল্ডিং। শনিগড় কলেজ আমাদের স্কুলের কাছেই ছিল, আর তার উল্টোদিকেই জিম ছিল। আমরা সঞ্জয়কে ভালই চিনতাম। পর পর দুবার বডিবিল্ডিং ডিস্ট্রিক্ট চ্যাম্পিয়ন হয়ে তখন সঞ্জয় আমাদের মধ্যে খুব বড়সড় নাম। অনেকে জিমে গিয়ে ওর কাছে ট্রেনিং নিতে চাইত। সঞ্জয়ের সাগরেদরা ওর চেস্ট, বাইসেপস, কাঁধ, অ্যাবস টিপে টিপে দেখত, ম্যাসেজ করে দিত। আমরা শুনেছিলাম যে ওর চেস্ট 53 ইঞ্চি। স্কুলের টিচারদের সঙ্গে ওর ভাল রিলেশনই ছিল। তাই মিউজিক স্যার ওকে যোগাযোগ করে মহিষাসুর করতে বলল, আর সঞ্জয়ও রাজি হয়ে গেল।

প্রথম যেদিন রিহার্সালের জন্য মিট-আপ হল, সেদিন সঞ্জয় আর রোহিণীর মধ্যে প্রথমবার দেখা হল। আমাদের পুরো গ্রুপটা কিছু না কিছু ভলান্টিয়ারিং করব বলে নাটকের গ্রুপের সঙ্গে ছিলাম, চোখের সামনে থেকে সবকিছু দেখেছিলাম। সঞ্জয় রোহিণীর থেকে অনেকটাই বড়, কিন্তু দেখলাম ওর চোখ তাও বার বার রোহিণীর দিকে চলে যাচ্ছে। রোহিণী স্কুল ইউনিফর্মেই ছিল। কিন্তু স্কার্টের তলায় তো পা দেখা যাবেই। আর ওর দেহসৌষ্ঠব গা ঢাকা থাকলেও যেভাবে ফুটে বেরুত, তাতে নতুন কারো তো মাথা ঘুরে যাওয়া স্বাভাবিক। রিহার্সালের ওখানে মিউজিক স্যার আর ডান্স ম্যাম দুজনেই ছিল, সিন বাই সিন স্ক্রিপ্ট বোঝানো হচ্ছিল। ক্লাইম্যাক্সটা বোঝানোর সময় ম্যাম যখন বলছিল দুর্গা কিভাবে মহিষাসুরের গায়ে পা রাখবে, তখন রোহিণী যেন ম্যামকে জিজ্ঞেস করছে এরকম ভান করে একটা পা ওরকম ভঙ্গী করে মেঝেতে রাখল। আমরা দেখলাম পা-টা বাঁকিয়ে ধরার সঙ্গে সঙ্গে তার কাফে ঢেউ খেলে উঠে মুহূর্তে সলিড হয়ে গেল... যেন দুধে-ডোবানো একটা মসৃণ শ্বেতপাথরের বল। রোহিণীর মুখে কোন ভাবলেশ নেই, যেন একেবারে স্বাভাবিক ভাবেই ম্যামের সাথে কথা বলছে। কিন্তু আমরা যারা বহুবার এই জিনিস দেখেছি তারা জানতাম রোহিণী কীভাবে তিল তিল করে শিকার খেলাতে পারে। সঞ্জয়ের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখলাম অবাক হয়ে রোহিণীর শরীরের নিচের দিকে তাকিয়ে আছে, নার্ভাসভাবে শুকনো ঠোঁট জিভ দিয়ে ভেজাচ্ছে। আমার বুক ধকধক করে উঠল। ডিস্ট্রিক্ট চ্যাম্পিয়ন, বুক-চেতানো মাসলওয়ালা, মহিষাসুর সঞ্জয়... জুনিয়র মেয়ে রোহিণীর দুর্গা-সাজা পায়ের দিকে তাকিয়ে কেমন যেন নার্ভাস হয়ে গেছে!

তখনো পুজো আসতে দু মাস বাকি। আস্তে আস্তে রিহার্সাল তো শুরু হল, কিন্তু আমরা দেখলাম যে রোহিণী আর সঞ্জয়ের মধ্যে তার বাইরেও মেলামেশা হতে লাগল। সঞ্জয়ের পেছনে মেয়েদের লাইনের অভাব ছিল না। কিন্তু কলেজের সব মেয়েদের ফেলে সঞ্জয় রোহিণীর পেছনে পাগল হয়ে উঠল। আমরা একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিলাম। সঞ্জয় যতই বড় হিরো হোক আর যতই চেলাদের মধ্যে গুরুগিরি করুক, রোহিণীর সঙ্গে থাকার সময় একদম লাভারবয় হয়ে থাকত। বয়েসে তিন-চার বছরের ছোট হওয়া সত্ত্বেও রোহিণী অনায়াসে ওদের সম্পর্কটাকে কন্ট্রোল করত এটা আমরা নিজের চোখে তো দেখতামই, এমনকি নিজেদের মধ্যে বলাবলিও হত। কিন্তু সঞ্জয়ের ওপর ভক্তি সেই জন্য কারো কম হয়ে যায়নি, কারণ যে যত অসাধারণ ছেলেই হোক, রোহিণীর পাশে তাকে খুব সাধারণের বেশি কিছু লাগবে না এটা সবাই মানতাম। এক দু সপ্তাহের মধ্যেই রোহিণী আর সঞ্জয় এলাকার টপ কাপল হয়ে উঠল। সঞ্জয়ের কাঁধ আর রোহিণীর কাঁধ সমান, সঞ্জয়ের যেমন মাসলপাকানো তাগড়া চেহারা রোহিণীর তেমন খাঁজে খাঁজে কাম-মাখানো চাবুকের মত চুম্বকশরীর। রিহার্সালের সময় ছাড়াও বেশিরভাগ ফ্রি সময় আমরা দেখলাম ওরা একসঙ্গেই সময় কাটাত। কখনো আমাদের চোখের সামনে, আর কখনো চোখের আড়ালে।

বিক্রম সঞ্জয়ের বেশ ক্লোজ ছিল। আমরা ওকে জিজ্ঞেস করলাম, কিরে, রোহিণী তোকে কি ছেড়ে দিল নাকি রে, এখন তো সঞ্জয়দার সঙ্গে আছে। বিক্রম শুনে প্রথম প্রথম সেরকম কিছু বলত না,খালি হালকা হাসত। পরে একদিন আমরা খুব চাপাচাপি করাতে আমরা জানতে পারলাম রোহিণীর আসল প্ল্যান। বিক্রমকে রোহিণী ছাড়িয়ে দেয়নি, ওকে আগের মতই চাকর রেখেছে। কিন্তু রোহিণীর ক্ষিদেকে স্যাটিসফাই করার ক্ষমতা বিক্রমের শরীরে নেই। রোহিণী বাড়িতে প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা নাচ আর জিমন্যাস্টিকস ট্রেনিং করে। ওর শক্তি এখন কয়েক মাস আগের থেকেও অনেক বেশি। যদি বিক্রমের ওপর রোহিণী সব ক্ষিদে মেটাতে যায়, বিক্রমের হাড়পাঁজর ভেঙে গুঁড়িয়ে যাবে। কিন্তু অমন কামিনী মেয়ের পিপাসা মেটানোর জন্য পুরুষ তো চাই। বিক্রমের থেকে শুনলাম, এর মধ্যে কয়েকবার পি.টি স্যারকে নাকি রোহিণী বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হেলাখেলা করেছে। নাচতে নাচতে পা দিয়ে দলেছে বার বার, কাফের ফাঁকে মুখ চেপে ধরে মুহূর্মুহূ দয়া চাইয়েছে। সঞ্জয়কে রোহিণী ধরেছে ওই জন্যই। কিন্তু এখনো ওকে নিজের পুরো ক্ষমতা দেখায়নি। যদিও রোহিণীর শরীর সামান্য নয় সেটা সঞ্জয়ের বুঝতে বাকি নেই। সামান্য আন্দাজ পেয়েছে, কীভাবে সেটা বিক্রমের মুখে শুনলাম, কারণ রোহিণী ওকে বলেছে।

মাঝে মাঝে মেকআউটের সময় সঞ্জয়ের বডিটাকে পায়ের মধ্যে ফেলে রোহিণী চাপ দেয়, যতই শক্তি লাগাক, সঞ্জয় ছাড়াতে পারে না। ওই সময়ে কামের তাড়সে বুঝতেও পারে না যে শুশুকের মত মেয়েটার কাছে ও গায়ের জোরে পারছে না। রোহিণী খুব জোর দেয় না, আহত করার মতো চাপ দেয় না। দুপায়ের মধ্যে বডিটাকে ধরে নিংড়ানির মতো করে, কখনো কখনো বুকে পা দিয়ে দাবিয়ে ধরে হাসতে হাসতে, নাটকের রিহার্সালের ছলে যেন। কিন্তু তাও প্রকৃত শক্তি প্রয়োগ করে না। সঞ্জয় বুঝতে পারে যেন কোথায় একটা গোলমাল হচ্ছে, কোন মেয়ের সঙ্গে তো ওর এরকম হওয়ার কথা নয়! কিন্তু রোহিণীর সর্বগ্রাসী রূপের কবলে হাবুডুবু খেতে খেতে সেই সব কথা কোথায় যেন হারিয়ে যায়।

রোহিণীর কথাতেই সঞ্জয় জিমে মাসল বিল্ড করা বাড়িয়ে দিল। এক্সট্রা ওয়ার্কাউট করে করে বুকের ছাতির সাইজ আরো চিতিয়ে তুলতে থাকল দু মাস ধরে, যাতে অসুরের বুকের মাসলটা ভালো করে ফোটে - তাগড়া, মোটা পেশীর চাপবাঁধা শেপ হয় যাতে। প্রোটিন শেক আর সাপ্লিমেনটস নেওয়াও বাড়িয়ে দিল। এক মাস যেতে যেতেই আমরা বুঝতে পারলাম এফেক্ট - সঞ্জয়ের গায়ে শার্ট-গেঞ্জি যেন আর হচ্ছে না। এক মাস আগের শার্ট পরলে বোতামগুলো টান হয়ে ফেটে যেতে চাইছে, গেঞ্জি পরলে চাপ-চাপ মাসলের ওপর টাইট হয়ে থাকছে সারাক্ষণ। বডি নিয়ে অহঙ্কার বরাবরই ছিল সঞ্জয়ের, এখন মনে হল আরো বেড়ে গেছে। কিন্তু দেখতাম রোহিণী কাছাকাছি থাকলে সঞ্জয়ের চোখমুখে কেমন একটা অদ্ভুত ফ্যালফ্যালে দৃষ্টি, কিসের যেন একটা চাপা দিশেহারা ভাব। বিক্রম একদিন একটা অদ্ভুত কথা বলল। আমরা এমনি অন্য কথা বলছিলাম, বলতে বলতে সঞ্জয়ের বডি বানানোর কথা চলে এসেছিল। বিক্রম হঠাৎ বলল, 'সঞ্জয়দা বুঝতে পারছে না। ওর মধ্যে অসুর জেগেছে। যতদিন না দেবীর পায়ে অসুর মরবে - ততদিন সঞ্জয়দা ছাড়া পাবে না।' - কেমন অদ্ভুত কথাটা! আমরা শুনে জিজ্ঞেস করলাম, 'মানে? অসুর জেগেছে কি রে?' বিক্রম চুপচাপ মাথা নাড়ল। বাপ্পা আবার বলল, 'কি বলছিস ঠিক করে বল তো। ছাড়া পাবে না মানে কি?'

তখন সন্ধে হয়ে এসেছে, আমাদের ক্লাবহাউসের রুমটায় লাইট জ্বালানো হয়নি, দেওয়ালে চাপ চাপ ছায়া জমেছে ধীরে ধীরে। জানলা দিয়ে বাইরের ছাই-ছাই আকাশটা দেখা যাচ্ছে অল্প, আশেপাশের বাড়িগুলোর বারান্দায় বাল্বের আলো জ্বলছে একটা দুটো। বাপ্পার কথা শুনে কেমন একটা শিরশির করে উঠল গা। বিক্রম আস্তে আস্তে চোখ তুলে আমাদের মুখগুলোর দিকে তাকাল। তারপর বলল, 'তোরা কেউ পুনর্জন্ম মানিস? জানি, মানিস না। আমিও মানি না। বা, বোধহয় বলা উচিত মানতাম না।' আমরা কেউ কথা বললাম না। চুপচাপ অপেক্ষা করতে লাগলাম বিক্রম আর কি বলে তার জন্য। বিক্রম বলল, 'দেখ, কথাটা শুনে হয়তো কিছু বুঝবি না। বিশ্বাসও হবে না। কিন্তু জিজ্ঞেস করছিস বলে বলছি। ....সঞ্জয়দার ওপর মহিষাসুরের চিহ্ন লেগেছে।' বলে একটু থেমে বলল, 'কিছু বুঝলি না তো? ভূতের ভর হওয়ার মত নয়। এটা ওরকম কিছু নয়। অন্য জিনিস। দেখ আমিও সব জানি না, বুঝিও না। কিন্তু রোহিণী আমাকে যেটুকু বলেছে সেটা তোদের বলছি। রোহিণী যে দুর্গা করছে, ওটা জাস্ট একটা রোল করা নয়। আর সঞ্জয়দাও যেটা করছে সেটাও জাস্ট অ্যাকটিং হবে না। এটা অনেকদিনের পুরনো একটা অভিশাপ। রোহিণীর জন্য অভিশাপ নয়। অভিশাপ অন্যদের জন্য। আমি জানি না কি হবে। কিন্তু তোরা সঞ্জয়দাকে লক্ষ্য করিস, দেখবি ওর স্বভাবের মধ্যে একটা গুণ্ডামি চলে এসেছে। বডিটাও দেখবি কতটা চেঞ্জ হয়েছে। এগুলো নর্মাল না। এর শেষ হবে ওই প্রোগ্রামের দিন, স্টেজের ওপরে। কি হবে আমি জানি না।'

গুন্ডামি যে সঞ্জয়ের মধ্যে এসেছে সেটা আমরা সবাই দেখছিলাম। আমাদের সঙ্গে খুব রাফ বিহেভ করত। তপন একদিন আপেল এনেছিল সাথে করে, সঞ্জয় তখন ওয়ার্কআউট করে বেরোচ্ছে। 'কিরে তপন, কি আপেল দেখি?' বলে একটা আপেল হাতে নিয়ে, 'ছোঃ, ফালতু মাল' বলে একহাতের গ্রিপে চেপে ছাতু করে দিয়েছিল আস্ত আপেলটা। আমরা এসবে কিছু বলব সাহস ছিল না। একদিন চোখের সামনেই দেখলাম আর একটা ঘটনা। 

জিমের সামনের রাস্তায় একটা ট্যাক্সি পার্ক করা ছিল বলে সঞ্জয় ট্যাক্সিওয়ালাটাকে গালিগালাজ করছিল। এটার কোন কারণ ছিল না, কারোর প্রবলেমও ছিল না। কিন্তু সঞ্জয়ের ইচ্ছে হয়েছিল বাওয়ালি করার, তাই যা মনে আসে করছিল। তো ট্যাক্সিওয়ালাটা বাঙালি ছিল না, চেহারাও বিশাল। অনেক নোংরা কথা শোনার পর কি যেন একটা গালি দিয়েছিল সঞ্জয়কে। সঞ্জয় চোখের পলকে লোকটার গলাটা এক হাতে ধরে মাটি থেকে তুলে দিল, তারপর লোকটাকে ছুঁড়ে ফেলল রাস্তার ওইপারে। তারপর হেঁটে রাস্তা পেরিয়ে গিয়ে লোকটাকে কলার ধরে আবার তুলল। লোকটা অলরেডি আছাড় খেয়ে টলছিল। সঞ্জয় লোকটার ঘাড় ধরে এক ঝটকায় দুহাতে মাথার ওপর তুলে ফেলল। তারপর এগিয়ে এসে ধড়াম্ করে ওর ট্যাক্সিটার উইন্ডশিল্ডের ওপর আছাড় মারল। ঝ্যানন করে কাঁচ ভেঙে ছড়িয়ে গেল গাড়ির বনেটে আর রাস্তায়। লোকটা কাটা পাঁঠার মত পিঠ বাঁকিয়ে ছটকাচ্ছিল। চোখগুলো ওল্টানো। সঞ্জয় ডানহাতে লোকটার কলার ধরে টেনে এনে কেমন একটা ভাবে যেন লোকটাকে জাপটে ধরল। হঠাৎ একটা বিশ্রী আর্তনাদ বেরোল লোকটার গলা দিয়ে। আমরা এতক্ষণ থমকে গিয়ে দেখছিলাম। এবার বুঝলাম সঞ্জয়কে না থামালে ও ট্যাক্সিওয়ালাটাকে চেপে হাড়গোড় গুঁড়ো করে মেরে দেবে। আমরা পাঁচ-ছয়জন গিয়ে আঁকড়ে ধরলাম সঞ্জয়কে, ছাড়ানোর চেষ্টায়। কিন্তু কার সাধ্য ওকে তখন থামায়! গায়ে হাত দিয়েই বুঝলাম - অসম্ভব। মনে হল কোন মানুষ নয়, চাপ চাপ লোহা দিয়ে বানানো কোন মূর্তির গায়ে হাত দিলাম। কি ভয়ানক ডুমো ডুমো আকৃতি, কি সাইজ, কি পাথরের মত কঠিন মাসলগুলো! যেন জামার তলায় গোল গোল কয়েকটা কংক্রিটের তাল ভরা আছে! - কোনমতে টানতে টানতে ডাকতে থাকলাম, 'সঞ্জয়দা ছেড়ে দাও...' 'ছেড়ে দে সঞ্জয়...' 'কি করছ সঞ্জয়দা..'। ভাগ্য ভাল আমাদের ডাকাডাকিতে হঠাৎ সঞ্জয়ের খেয়াল ফিরল। ছেড়ে দিল ট্যাক্সিওয়ালাটাকে। কিন্তু ততক্ষণে ওর চোখ উল্টে জ্ঞান হারিয়েছে। আমরা দুজন ধরাধরি করে জিমের ভিতরে নিয়ে গেলাম...

সঞ্জয় লোকটাকে খুন করল না ঠিকই, কিন্তু আমরা দেখে বুঝতে পারছিলাম যে সঞ্জয় আর আমাদের মত নেই। এই সঞ্জয় মানুষ নয়, এই সঞ্জয় দানব। আমরা যখন ট্যাক্সিওয়ালাটার মুখে জল দিচ্ছি, তখন দেখলাম সঞ্জয় জিমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে, ঘাম-চপচপে জামার নিচে ঠেলে ফুলে ওঠা বুকের ছাতিদুটোকে থাপড়ে থাপড়ে দেখছে, মুখে একটা নিষ্ঠুর গর্বের হাসি। হাতের বাইসেপসগুলো দিকে তাকিয়ে বুকের ভেতরটা গুরগুর করে উঠল... বাতাবির মত সাইজের দুটো মাসলের বল, শার্টের হাতাগুলোকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে ক্ষুধার্তভাবে বেরিয়ে আছে...

রোহিণীর দিকে যখনই তাকাতাম, বোঝার চেষ্টা করতাম যে কিছু বদল ওর মধ্যেও আসছে কি না। কিন্তু কিছু বোঝা যেত না। ওর দিকে তাকালে চিরকাল যেরকম লাগত, সেরকমই লাগত সবসময়। সূর্যের দিকে তাকালে মনে হয় তেজের বেশি-কম বোঝা যায় না। রোহিণী আর সঞ্জয়ের যখন প্র্যাকটিস চলত, আমাদের দেখে কেমন যেন ধাঁধালো লাগত। যেন বুঝতে পারতাম না ঠিক, কাকে কিভাবে মাপব। সঞ্জয়ের ওপর চোখ ফেললে মনে হত যেন একটা তাগড়া টগবগে ষাঁড় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, ভীষণ শক্তি, ভীষণ রোখ। আর তার পরেই রোহিণীর দিকে চোখ ফেললে মনে হত যেন ওই ভীষণ শক্তিটা এ মেয়ের পায়ের এক ঠমকে গুঁড়িয়ে ধুলো হয়ে যেতে পারে। রোহিণীর আর সঞ্জয়ের যুদ্ধের রিহার্সালের সময়ও মনে হত, সঞ্জয়ের বডিটা অনেক বেশি বিশাল সাইজের হওয়া সত্ত্বেও রোহিণীর তেজ আর শক্তি যেন ওই দানবাকৃতি শরীরটাকে সমানে সমানে পাল্লা দিচ্ছে। না, সত্যি সত্যি জোর কেউ লাগাত না, শুধু মুভমেন্টের প্র্যাকটিস হত। আমরা মনে মনে পাগলের মত ভাবতাম - সত্যি যদি দুজন জোর লাগায় তাহলে কি হতে পারে। - কিন্তু একটা জিনিস দেখেছিলাম। রোহিণী প্র্যাকটিসের সময় একবারও সত্যিসত্যি সঞ্জয়ের বুকে পা দেয়নি দুর্গার মত করে। বিক্রমের থেকে শুনেছিলাম যে ও সঞ্জয়কে বলে রেখেছিল যে ফাইনাল শো-এর দিনে চাপ দেবে একবারে..ততদিনে যতটা পারে রেডি হয়ে নিক। 

দিন চলে এল। আমরা যে কতদিন থেকে অপেক্ষায় ছিলাম দিনটার! মহালয়ার জন্য তো সবাই সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে! আমরা ওয়েট করছিলাম অন্য একটা মহালয়ার জন্য। তখনো জানি না কি দৃশ্য সেদিন হল-ভরা লোকের সামনে ঘটবে।

রাতে শো ছিল। অসুরের কস্ট্যুম ছিল গাঢ় নীল ধুতি, আর ওপরে খালি বডি। গায়ে যে কিছু থাকবে না সেটা তো আমরা সবাই জানতাম।  স্টেজে ওঠার জাস্ট আগের আধঘন্টা ভারী ওয়েট তুলে তুলে শরীরের সব মাস্‌লগুলো আরো ফুলিয়ে নিয়েছিল সঞ্জয়, স্টেজের লাইটের তলায় যাতে মহিষাসুর-দেহের পেশী আসুরিকভাবেই সারা হল জুড়ে দেখা যায়।

দুর্গার কস্ট্যুম ছিল টকটকে লাল। রোহিণী আর ডান্স ম্যাম দুজন মিলে ঠিক করেছিল এই কস্ট্যুম, আর যেমন আমরা মনে মনে স্বপ্ন দেখেছিলাম সেরকমই। হাঁটু অবধি ঘাগরা, পাহাড়ী মেয়েদের মত পোশাক, পায়ে ভারী সোনালী পায়েল, চুল খোলা। স্টেজের ফ্লোরে মাইক ছিল, পা ফেলার ঠমকে ঠমকে পায়েলের আওয়াজে পুরো অডিয়েন্স ছম্-ছম্ শব্দ শুনতে পাবে - এমনভাবে সেট করা।

সারা শো-এর বর্ণনা দিয়ে লাভ নেই। যেমন সব বছর হয় তেমনই। এই বছর যে মহিষাসুর হিট করবে সবাই জানত। সঞ্জয় সারা নাটকটা ধরেই দাপিয়ে বেড়ালো স্টেজে। ওর অনেক ডায়লগও ছিল। দেবতাদের মারার সীন ছিল কয়েকটা। মহিষাসুর যখন স্টেজে দেবতাদের ফেস করে দাঁড়াচ্ছিল -  নীল ধুতি, আর কোমরে একটা লাল কাপড় বাঁধা, তার ওপরে জমাট তাগড়া বুক মাস্‌ল ফুলিয়ে আছে - তখন নাটক জেনেও মনের ভেতরটা থমথম করছিল আমাদের। ভয় হচ্ছিল, সঞ্জয় নাটক করতে করতে একটা কিছু করে ফেলবে না তো? 'মহিষাসুরের চিহ্ন লেগেছে...', বিক্রম বলেছিল...।  কিন্তু সেরকম কিছু হল না। তবে বডি দেখানো কাকে বলে সঞ্জয় বুঝিয়ে দিল সেদিন। মহিষাসুরের ওপর দেবতাদের অস্ত্রে কোন কাজ না হওয়ার পরে সঞ্জয়ের বুকের ছাতি ফুলিয়ে হাসার একটা সীন ছিল - সঞ্জয় বুকের মাসলদুটো এমন জমাট পাকিয়ে ওঠা-নামা করাতে শুরু করল ওখানটায়, হলের সবাই সিটি দিতে শুরু করে দিল! তার পর দেবতাদের মারার সীনেও বার বার করে, হুঙ্কার দিতে দিতে দুহাতের বাইসেপ ফুলিয়ে ফুলিয়ে দেখাল, আর তার সঙ্গে খ্যাপা মোষের মত হা-হা-হা-হা করে দৈত্যাকার হাসি! এসব কিন্তু রিহার্সালে আমরা একদিনও দেখিনি! কিন্তু অডিয়েন্স খাচ্ছে, কারো কিছু বলার নেই।  

আসল জিনিস শুরু হল দুর্গার অ্যাপিয়ারেন্সের পর থেকে। রোহিণী স্টেজে উঠলে অডিয়েন্সের অবস্থা পাল্টে যায়, এটা আমরা আগেও দেখেছি। কিন্তু সেদিন যেন হলের মধ্যে একসঙ্গে পাঁচশো লোকের চাপা নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। হাঁটু-পর্যন্ত লাল ঘাগরা পরে রোহিণী এক-পা এক-পা করে মঞ্চে ঢুকল... দেখলাম সাক্ষাৎ রাজরাণীর মত যেন লাগছে রোহিণীকে, গনগনে সূর্যের মত উজ্জ্বল মুখ, কুচকুচে সাপের মত কালো লম্বা চুল কাঁধ-পিঠ ছাপিয়ে নেমেছে, লম্বা দীর্ঘ শরীরে বন্যার মত যৌবন ভেসে যাচ্ছে, লাল আঁটোসাটো সিল্কের নীচে গর্বোদ্ধত উঁচু বুকদুটো যেন দৃঢ় পাথর-দিয়ে কোঁদা, সারা দেহে ফেটে পড়ছে দপদপে আগুনের মত দৃপ্তি আর শক্তি..... তাকিয়ে যেন দিশেহারা দিশেহারা লাগে, রূপ না তেজ, কাম না ভয় যেন বোঝা যায় না! বিহ্বলভাবে নিচের দিকে চোখ নামালাম। বুকের ভেতর পাগলের মত ঢিপঢিপানি শুনতে শুনতে দেখলাম --- ঘাগরার তলায় টকটকে ফর্সা সুঠাম পায়ের গোছ, প্রতি পা-ফেলার সঙ্গে সঙ্গে গোল হয়ে ফুলে উঠছে ডাবের মত নিটোল বৃহদাকার, মসৃণ সাদা শঙ্খের মত নিখুঁত দুটো কাফ...! গোড়ালীর ওপরে জড়িয়ে ঝুম্..ঝুম্.. করছে সোনালী মলের গোছা.. পদ্মের পাপড়ির মত পুরু আর সুঠাম পায়ের পাতা দুটো.. মঞ্চের ফ্লোরে পাগুলো রাখছে যেন মনে হচ্ছে আমাদের বুকের ওপর পা রেখে হেঁটে যাচ্ছে!........ অডিয়েন্সের মধ্যে কোনোশব্দ নেই....... সবাই চুপ, সবাই যেন কাঁপছে, সবাই যেন রোহিণীর ওই দু-পায়ের ওপর লুটিয়ে পড়ে নিঃশব্দে চীৎকার করছে.. 'দয়া...দয়া..দয়া... আর না... আর না.. আর না...!'

মেইন লড়াইয়ের সীনের আগে একটা দৃশ্য ছিল, দেবতারা দুর্গার পায়ে শরণ নিয়ে লুটিয়ে পড়ছে, আর মহিষাসুরের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রার্থনা করছে। তখন দুর্গা ইন্দ্রের মাথায় ডান পায়ের পাতা তুলে স্থাপন করে। সেটা রোহিণী যখন করল... ছম্‌ম্‌...- করে শব্দ করে, - তখন দেখলাম সারা হলে হাততালি ফেটে পড়ল। মনে মনে ভাবছিলাম, এর পরে তো এখনো সবকিছু বাকি!-- 

দুর্গার সঙ্গে মহিষাসুরের প্রথম যখন দেখা হচ্ছে, সেই সীনটা এমনভাবে লেখা হয়েছিল - সঞ্জয়ের কথামত - যে মহিষাসুর নিজের বুকের ছাতিদুটো দুই হাতে চাপড়ে চাপড়ে গর্জন করে অহঙ্কার প্রকাশ করবে। সঞ্জয় স্যারের সঙ্গে কথা বলে নাকি আলাদা করে বলেছিল ওই জায়গাটা ওরকম রাখতে, রোহিণীকে ইমপ্রেস করবে বলে। একে সিনিয়ার স্টুডেন্ট, তার ওপরে সঞ্জয়ের কথা ফেলার মত ক্ষমতা তখন কারোরই ছিল না। সেরকমই হল। মহিষাসুর দুর্গাকে নিজের রাণী করে রাখার প্রস্তাব দিয়ে মহাগর্বে নিজের পরিচয় দিচ্ছে - সেখানে লাইনগুলো বলতে বলতে সঞ্জয় হাত ভাঁজ করে শরীরের সামনে এনে একটা দম নিয়ে বুকের ছাতিটা ঠেলে বার করল। ইয়া চওড়া তাগ্‌ড়া বুকের ওপরে গোলাকৃতি পাথরের চাঁইয়ের মতো টাইট দুটো মাসল, ঘাম-মাখানো শিরা-বার করা লোহার মত পেশী.. পায়ের তলায় যেন মাটি সরে যেতে যেতে টের পেলাম.... মহিষাসুর!! এ মহিষাসুর!!!.... মোটা ময়াল সাপের মত পাকানো পাকানো বাইসেপ, কাঁধ-ঘাড়ের মাসল জমাট করে ফুলিয়ে একটা কুৎসিত কুটিল মুখভঙ্গী করে আছে সঞ্জয়--- আর চোখের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে যেন নেশায় মত্ত মোষের চোখ - উন্মাদ ভাঁটার মত লাল-- গলায় গর-গর করে একটা চাপা গর্জন উঠছে পেশী ফুলিয়ে ধরার সাথে মিশ খেয়ে। - আর তাই দেখে-

-গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে শুনলাম - সঞ্জয়ের গর্জানির মাঝে হঠাৎ করে রোহিণী হা-হা করে তীব্র হাসিতে ফেটে পড়েছে! - মহিষাসুরের মুখটা কুটিল থেকে কেমন যেন ছোট হয়ে গেল, চোখদুটোয় দেখা গেল যেন একটা কিসের দোলাচল -- আর সারা গায়ে লাস্যের তরঙ্গ তুলে, সমস্ত শরীর দিয়ে অসুরের দিকে অদ্ভুত তাচ্ছিল্য আর কৌতুক ছুঁড়ে দিয়ে হা-হা করে মঞ্চ কাঁপিয়ে অট্টহাসি হাসতে লাগল দুর্গা। আর হাসতে হাসতেই, যেন কিছু না ভেবেই, বাম পা-টা বাড়িয়ে দিয়ে আঙুলগুলোর চাপ দিল স্টেজের ওপরে........ সঞ্জয়ের চোখ থমকে গেল সেই পায়ের দিকে তাকিয়ে, থমকে গেল আমাদের বুক, স্তব্ধ হয়ে দেখতে থাকল সারা ফাংশন-হল। রোহিণী হাসতে হাসতে যেন গড়িয়ে পড়ছে কিসের কৌতুকে, আর ওর চেপে রাখা বাম পায়ের পাতায় সোনালী পায়েলটা ঝিকিয়ে ঝিকিয়ে উঠছে, আর ঘাগরার তলায় নগ্নমসৃণ প্রস্তরপিণ্ডের মত সুগোল হয়ে ফেঁপে উঠেছে দুর্গারূপিণী মেয়ের বাম কাফ......

শেষ দৃশ্যের সময় ঘনিয়ে এল। যুদ্ধ চলতে চলতে দুর্গা মহিষাসুরকে মাটিতে ফেলবে এটা জানা কথা, আর সেটায় লাথির সিন থাকবে, স্বাভাবিকভাবেই এটাও সবাই জানতাম। এখানেই শুরু হল আসল জিনিস। অডিয়েন্স বুঝতে পেরেছিল কিনা জানিনা - কেউ কেউ বলে পেরেছিল, কিন্তু আমরা যারা পরে গল্প শুনেছি তারা জানি আসলে কি হয়েছিল, আর কতটা কি হয়েছিল।

মহিষাসুর আর দুর্গার লড়াই চলছে, অস্ত্র নিয়ে লড়াই শেষ হয়ে গেছে, এবার মল্লযুদ্ধ হচ্ছে। সঞ্জয় আর রোহিণী, নাচতে নাচতে স্টেজের একধারে এসেছে দুজনেই, এবার লাথির জায়গাটা হওয়ার কথা। এমন সময় হঠাৎ এক পা এগিয়ে গিয়ে রোহিণী ডান পা তুলে সঞ্জয়ের বুকের ছাতির ওপর *থেই* করে একটা লাথি মারল, সঞ্জয় প্রায় চার ফুট দূরে গিয়ে চিৎ হয়ে পড়ল ফ্লোরের ওপর। আমি টের পেলাম এক ঝটকায় আমার কন্ট্রোল আমি হারিয়ে ফেলেছি। - সঞ্জয় জানত এইজায়গাটা রোহিণী নিজের মতো করবে, তাই প্রথমটায় ও নিজের মতো করে ইমপ্রভাইজ করার চেষ্টা করতে গেল। চিৎ অবস্থা থেকে হাত ভর দিয়ে উঠতে যাবে, কিন্তু রোহিণী ওর কাছে চলে গেছে ততক্ষণে -- হেঁটে নয়, নাচতে নাচতে... পায়ে পায়ে তা-তা-থেই তা-তা-থেই করতে করতে, সারা হলে পায়েলের শব্দ তুলে। আর তারপর - যেন স্লো মোশনে দেখলাম - রোহিণী ওর বাঁ পা-টা তুলে -- সঞ্জয়ের বুকটার ওপর *থেই!!* করে বসিয়ে দিল। সঞ্জয়ের মুখ থেকে একটা "আগ্" করে একটা বিকৃত আওয়াজ বেরোল, পায়েলের "ছম্" শব্দটার সাথে সাথে। আর তারপর রোহিণী শুরু করল রগড়াতে।

দুর্গা একটু পায়ের চাপ দেবে এটা এমনিই নাচের মধ্যেই ছিল, আর অসুর একটু ছটফট করবে এটাও ছিল। অডিয়েন্স মনে হয় সেটাই হচ্ছে বলে ভাবছিল। কিন্তু রোহিণী যেটা করছিল সেটা তো অভিনয় নয়! তীব্র গরম ধকধকানি বুকে চেপে রেখে দেখলাম, রোহিণী সঞ্জয়ের বুকের ছাতিটা চেপে দাবিয়ে বসিয়ে দিচ্ছে, দিতে দিতে হাসছে। সঞ্জয় সর্বশক্তি দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বুক শক্ত করার চেষ্টা করছে, দুই হাতে পা-টা ধরে ঠেলছে - প্রাণপণ চেষ্টায় ঠেসে বেরোচ্ছে মোটা মোটা বাইসেপসগুলো, কিন্তু বৃথা চেষ্টা- রোহিণী অডিয়েন্সের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে পা-টা দিয়ে ডলে যাচ্ছে ওর চেতানো ছাতির ওপর। 

কতক্ষণ এরকম চলল জানি না, পরে শুনেছিলাম রোহিণী ওই প্রথম দলনটা নাকি প্রায় এক মিনিট ধরে করেছিল। তারপর যখন দেখল সঞ্জয় আর পারছে না, চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ, পেটাই লোহার মত হাত-পাগুলো ছটকাতে ছটকাতে অসহায়ভাবে কাকুতিভরে দয়া চাইছে প্রায়, তখন মেয়ে নূপুরপরা পা-টা তুলে নিল বুক থেকে। তারপর আবার নাচ শুরু করল। দর্শকরা দেখছে - দুর্গার সে কি রক্ত জল-করা নৃত্য ভঙ্গিমা! নাচতে নাচতে এক একবার ভূলুণ্ঠিত মহিষাসুরের কাছে আসছে, আর পায়ের পাতা দিয়ে আঘাত করছে শরীরটায় - ধিতিকা-ধিতিকা-থেই.. .... থেই থেই তাত্-থেই--!! - আর সঞ্জয় সেই পায়ের লাথি খেতে খেতে বিকট চীৎকার করে উঠছে, বার বার উঠতে গিয়ে আবার লাথির ধাক্কায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে যাচ্ছে মাটিতে, বিশাল একটা কাটা মোষের মত আছাড়িপিছাড়ি খেয়ে গ্যাঙাচ্ছে যন্ত্রণায়! আর সেই গোঙানি অগ্রাহ্য করে নেচে নেচে কাছে এসে, অসুরের বুকের ফোলানো মাসলে পা দিয়ে বার বার - বারংবার -  তা-তা-থৈ! তা-তা-থৈ! করে পদাঘাত হানছে লাস্যের দেবী মহিষমর্দিনী দুর্গা!  

কতরকম ভাবে যে সঞ্জয়ের শরীরটাকে দলে দলে পিষলো রোহিণী, তার বর্ণনা বোধ হয় কেউ দিতে পারবে না। হিপনটাইজডের মত হয়ে সবাই দেখছে - মহিষাসুরের শরীরের লোহার মত পিন্ডাকৃতি পেশীগুলো ব্যথায়, ঘামে চকচক করছে, তাতে দুর্গা পায়ের পাতা দিয়ে ডলে ডলে আঘাত হানছে হা-হা করে হাসতে হাসতে।  বিদ্রূপ করে অসুরকে বলছে, "গর্জন কর!! গর্জন কর, অসুর!! দেখা তোর শক্তি!!" --- আর পায়েল বাজিয়ে বুকের মাঝখানে চেপে ধরছে পা। সঞ্জয়ের তখন আর সাধ্য নেই, মহিষাসুর-রূপী নরদানব সঞ্জয় তখন কাতরভাবে গুঙিয়ে যাচ্ছে, "ইয়াগ্‌... হিয়াহ্‌গ্‌গ্‌গ... আআগ্গ্হহ...!" - একেক বারের থেই--থেই পদাঘাতে কাতরে কাতরে মোচড়াচ্ছে অত শক্তির, অত গর্বের পেশী-ফোলানো বডিটা। গত দেড়মাস ধরে যাকে পাড়ার মধ্যে বাঘের মত দাপট দেখাতে দেখেছি, তার দুর্দশা দেখতে লাগলাম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। সঞ্জয়ের ওই পাথরের মতো শক্ত বুকের ছাতি, তাগ্‌ড়া জমাট মাসল দিয়ে ঠাসা, তাতে পায়ের পাতা রেখে আস্তে আস্তে দাবিয়ে.. চেপে.. থেঁতে দিতে দিতে যেন ওর মুখ দিয়ে রক্ত উঠিয়ে দিতে চায় রোহিণী!

হঠাৎ রোহিণী এক অদ্ভুত কাজ করল।

সঞ্জয়কে ছেড়ে দিয়ে নাচতে নাচতে মঞ্চটা জুড়ে একবার ঘুরে এল, তার পর শিকারের কাছে গিয়ে, দম-ওগরাতে থাকা অসুরের দিকে তাকিয়ে একটা পা তুলে, শরীরটার ওপর নিয়ে এসে, বুকে যেন বসিয়ে দেবে এইভাবে শূন্যে তুলে ধরে -- পায়ের পাতাটা রিমঝিম করে নাড়তে থাকল, নুপূর বাজাতে বাজাতে। পায়ের পাতা থেকে কয়েক আঙুলমাত্র নীচে সঞ্জয়ের ঘর্মাক্ত, কঠিন পেশীবহুল বুকটা কাঁপছে, - সঞ্জয় জানে যে ওই পায়ে কি দশা হতে পারে ওর, ওই পা......ওই নুপূর-পরা নর্তকীচরণ.... কি-ভা-বে পিষে দলে রগড়েছে ওকে-! --সে আতঙ্কে কাঁপতে কাঁপতে দেখতে থাকে রোহিণীর পায়ের আন্দোলন..! আর তারপর - আবারও - যেন মূর্তিমান নিয়তির মত রোহিণী পায়ের পাতাটা ধীরে ধীরে বসায় ওর ফোলানো বুকের শক্ত মাংসে... আসুরিক মাসলটা চেপ্টে যেতে থাকে পায়ের তলে। দাঁতে-দাঁত চাপা, দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছে যেন দাঁতের ফাঁকে চুঁইয়ে ঠেলে বেরোতে চাইছে রক্ত......  বিস্ফারিত চোখে মাথা ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে 'না-না' বলছে মহিষাসুর-সঞ্জয়, পাগলের মতো আতঙ্কে ঝাঁকাচ্ছে মাথা, পারছে না সহ্য করতে... দুর্গার পদদলন.... পারছে না....

তখনই রোহিণী দেখাল ওর ড্রামা - যেন মনে করিয়ে দিল সবাইকে ওর পরিচয়। বুকের ওপর পা রেখে যেন নুপূরটা ঠিক করার জন্য ঝুঁকল রোহিণী। সঙ্গে সঙ্গে ওরকমভাবে ঝোঁকার জন্য পায়ের চাপ বেড়ে গেল, আর সঞ্জয়ের জিভ বেরিয়ে এল সেই চাপে -'ওয়্যা-হ্যাক-ক-ক!!!' -- রোহিণী মুখ টিপে হেসে উঠল সেই দেখে। তারপর বাঁকা হাসি হাসতে হাসতে বুকে-চাপানো পায়ের গোছটা দুহাতে ধরে সকৌতুকে যেন কাফটা আলগোছে টিপতে লাগল, পায়ের পাতার চাপ বাড়াতে বাড়াতে। দুর্গা যেন মহিষাসুরের বক্ষমর্দন করতে করতে বলছে, 'এই পায়ে পদমথিত হতে কেমন লাগছে, অসুর? কেমন লাগছে এক নারীর পদতলে পাঁজর-ভাঙা হয়ে দয়াভিক্ষা করতে?' ঠোঁটে হাসি চেপে কাফ ফুলিয়ে দেখাতে দেখাতে দলতে লাগল রোহিণী, আর অসহায় আঙুলগুলো দিয়ে কাতরভাবে রোহিণীর পা চেপে ধরে সঞ্জয় বিকট গোঙানি তুলতে থাকল -"গিঅ্যা-অ্যা-য়্যা-ক্-ক্-ক্....হি-অ্যা-অ্যা-ককক্....."


আমাদের গা-হাতপা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল দেখতে দেখতে। বাকি অডিয়েন্স যা ভাবুক, আমরা ততক্ষণে বুঝে গেছি যে সঞ্জয়ের একটুক্ষণের মধ্যেই এবার রক্তবমি আরম্ভ হয়ে যাবে। রোহিণী কি সত্যি মেরে ফেলবে ওকে? - বিক্রম বলেছিল, যতক্ষণ না দেবীর পায়ে অসুর মরবে ততক্ষণ সঞ্জয় মুক্তি পাবে না। তাহলে কি.....? 

কিন্তু না, ঠিক যখন সঞ্জয়ের গলা দিয়ে প্রায় রক্ত-ওয়াক উঠে আসার উপক্রম, ঠিক তখন ওর বুক থেকে পা সরিয়ে নিল রোহিণী। সোজা হয়ে মুখে একটা অদ্ভুত হাসি মেখে অডিয়েন্সের দিকে তাকিয়ে অভয় মুদ্রা নিয়ে দাঁড়াল। পায়ের কাছে সঞ্জয় আধমরা পশুর মত অস্ফুট ধড়ফড় করছে, মুখ হাঁ করে কোনোক্রমে হু-হ্..হু-হ্... করে দম টানতে টানতে। ধামসানো বুকটা থরথর করে কাঁপছে যন্ত্রণায়। এবার রোহিণী ওর বাঁ পা-টা সঞ্জয়ের মুখের সামনে বাড়িয়ে ধরে বলল - "দয়া ভিক্ষা কর, অসুর!" বলে পায়ের পাতা রাখল মুখের ওপর চেপে। সঞ্জয় পাগলের মতো "অ্যা-হ-হ...অ্যা-অ্যা-অ্যা--!!!" করে একটা বিকট গোঙানি ছাড়ল, আর রোহিণী শরীরে দমক তুলে হাসতে হাসতে পদদলিত করতে থাকল অসুরের গোঙাতে থাকা মুখ! বিদ্রূপভরে হেসে উঠে পায়ে করে মুখের ওপর তাল ফেলল - থিয়া... থিয়া.. থেইয়া...!! তারপর এক লাথি মেরে উল্টে দিল সঞ্জয়ের বিরাট শরীরটা... তার পরে বাঁ পা ওর পিঠের ওপর দিয়ে, এক হাতে ওর মাথার চুলের মুঠি ধরে পিছন দিকে টেনে ধরল ভয়ঙ্কর শক্তিতে। সেই মুহূর্তে যেন আর আমরা রোহিণীকে দেখছিলাম না, সঞ্জয়কেও দেখছিলাম না - মনে হচ্ছিল যেন হাজার-হাজার বছর আগেকার এক নাটকীয় দৃশ্য যেন দেখতে পাচ্ছি এক অদ্ভুত জাদুবলে - দেখছি সাক্ষাৎ দুর্গা আর মহিষাসুর, নৃত্যদেবী আর নরদানব! মহিষাসুরের পিঠটা ধনুকের মতো বেঁকে গেছে পিছনের দিকে, ইয়া তাগড়া ঘাম-তেলতেলে বুকটা সামনে দেখা যাচ্ছে, দমের সাথে ওঠা-পড়া করছে, - আর দুর্গার এক পা তার পিঠে চাপ দিচ্ছে অনায়াসে। সঞ্জয়ের ঠোঁটমুখ বেঁকে গেছে বীভৎস হাড়-ভাঙা ব্যাথায়। হঠাৎ গলা চিরে একটা বিকট টানা আর্তনাদ বেরোল, - "ন্যা-অ-আআআআআহহহ---"..... নর্তকীর পদভর নিতে না পেরে, মর্দিত-পিষ্ট শরীর নিয়ে মহিষাসুর-সঞ্জয় প্রাণভয়ে চীৎকার করতে লাগল - "না-আ-আ-না- আগ্‌গগ- নাহহহ--!!!"

এটাই ছিল শেষ সীন। এরকম চলাকালীন স্টেজ অন্ধকার হয়ে এল, লাস্টে একটুখানি স্পটলাইট শুধু ওদের ওপর। তখন রোহিণী চুলের মুঠিটা ছেড়ে দিল, সঞ্জয়ের মাথাটা হুমড়ি খেয়ে পড়ল সামনের দিকে, উপুড় হয়ে পড়ল ওই মস্ত বুক... রোহিণী বাঁ পা-টা এগিয়ে নিয়ে ওর মাথার ওপর রাখল। পায়েলটা ঝলমল করছে স্টেজের লাইটে। ব্যাস।
* * * * * *
সেদিন শো-এর পরে অডিয়েন্স রিঅ্যাকশন কি ছিল, রোহিণীকে সবাই কিভাবে প্রশংসা করেছিল, লোকেরা কি বলেছিল, - এসব আমরা কিচ্ছু জানি না। কারণ আমরা শো শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আর ওখানে থাকতে পারিনি। থাকা সম্ভব ছিল না। ওরকম অলৌকিক কুহক আর ওই উন্মত্ত শক্তিলীলা দেখার পর, আমার মনে হয়, হলের কোনো পুরুষমানুষই ঠিক ছিল না। 

সঞ্জয়কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেদিন রাত্রেই। শুনেছিলাম যে কোনো হাড় ভাঙেনি, কিন্তু বুকের পুরো মাসকুলার সিস্টেম নাকি থেঁতো হয়ে গেছে। তিন মাস রিহ্যাবে ছিল সঞ্জয়। তারপর দুবছর মেন্টাল কাউন্সেলিং। আর কোনদিন জিমে পা রাখেনি সঞ্জয় চট্টরাজ। শুনেছি নাকি মেয়েদের দিকে কখনো আর তাকাত না, তাকাতে আতঙ্ক ফিল করত। কোন মেয়ের সঙ্গে কথা বললে বা দেখা হলে নাকি চোখ নামানো থাকত সবসময় তার পায়ের দিকে।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:০২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×