জনাব ত্রাহিত্রাহি তাহার এক পোস্টে বাঙালী জাতির আত্মসমালোচনা করিয়া একটা কৌতুকের বর্ণনা করিয়াছেন। অবিকৃত অবস্থায় উহা নিম্নে তুলে দেয়া হইলো।
"এখন যে কৌতুকটির অবতারনা করব তা বাংগালী জাতিকে অবমাননার জন্য নয়, তা আত্মসমালোচনার জন্য।
একবার এক ভদ্রলোককে দোজখবাসীদের শাস্তির ভয়াভয়তা দেখানোর জন্য দোজখের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হল।
একজায়গায় গিয়ে উনি দেখলেন একটা বিশাল কড়াইয়ের মধ্যে অনেকগুলো লোককে গরম তেলে ভাজা হচ্ছে, আর যন্ত্রনায় লোকগুলো কড়াইয়ের গা বেয়ে যখনি বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে তখনি দোজগের প্রহরীরা বল্লমের খোচায় খোচায় তাদেরকে কড়াইয়ের গরম তেলে নামিয়ে দিচ্ছে। এভাবে দোজগের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দেখতে পেলেন ভদ্রলোক হঠাৎ এক কড়াইয়ের কাছে থমকে দাড়ালেন ভদ্রলোক, দেখতে পেলেন এখানে কোন প্রহরী নেই, কিন্তু অনেকগুলো মানুষ ঠিকই কড়াইয়ের তেলে পুড়ছে। দোজখের প্রহরীকে উনি প্রশ্ন করলেন এখানে প্রহরী নেই কেন। উত্তর এল, এরা বাংগালী এদের জন্য কোন প্রহরীর প্রয়োজন নেই, কেননা এ কড়াই থেকে যখনি একজন বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে তখনি নিচ থেকে আরেকজন তাকে টেনে নামিয়ে আনে। তাই বের হয়ে আসার সুযোগ থাকলেও এরা কখনো বেরিয়ে আসতে পারবে না।"
উনার কৌতুক থেকে প্রতীয়মান হয় যে বাঙলী জাতি সর্বদা এক অপরের দোষ খুঁজিতে ব্যস্ত। তাহার একে অন্যের ভালো দেখিতে চায় না। তাই কেউ একজন ভালো কিছু করিলেই অপরজন তাহাকে টানিয়া নামাইতে চেষ্টা করে।
আমি তাহার এ ধরনের সত্যবাদিতায় বড়ই প্রীত হইয়াছি। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হইলো, 'ভাবিয়া কহিও কথা কহিয়া ভাবিও না'
এই কথাটা সর্দার সাহেবের জানা নেই। তাই নতুন একটি ব্লগ (অবশ্য সচলায়তন দাবী করে উহা অনলাইন রাইটার্স কমিউনিটি) প্রতিষ্ঠিত হইলে, বাংলা চর্চার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হইলে, কিছু প্রতিষ্ঠিত ব্লগার নিজের মতো করে শান্তিতে ব্লগানোর সুযোগ পেলে তিনি উষ্মা প্রকাশ করিতে কুন্ঠিত হন না। তাই তিনি পোস্টের পর পোস্ট ছাড়িতে থাকেন ব্লগত্যাগীদেরকে মহাপন্ডিত আখ্যা দিয়া। সেইসব পোস্টে তাহার উষ্মা প্রবলভাবে প্রকাশ পায়।
জানিয়া রাখা ভালো, ফ্রাংকেনস্টাইনের তৈনি দানবের হাতেই ফ্রাংকেনস্টাইনের মৃত্যু হয়। জনাব ত্রাহিত্রাহি ও কৌতুকে উল্লেখিত বাঙালীদের একজন, শুধু একজনই নহে প্রতিনিধিই বটে।
আবারো বলিতে ইচ্ছা করিতেছে,
ব্লগ ভরিয়া গেলো হরিদাস পালে।