তিল হচ্ছে তেল উৎপাদক এক প্রকার সপুষ্পক উদ্ভিদ। তিল বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান তৈলবীজ ফসল। তেলের জন্যই প্রধানত তিলের চাষ হয়।
তিল ফুল
Common Name : Black sesame flower, Sesame flower, Malabar Sesame, Sesame.
Scientific Name : Sesamum indicum
ভারতবর্ষ ও চীনে প্রাচীনকাল থেকেই তিলের চাষ হয়। তিলের অনেকগুলো স্বজাতি আফ্রিকায় এবং কয়েকটি ভারতের বিভন্ন স্থানে পাওয়া যায়।
তিল একবর্ষজীবি উদ্ভিদ। তিল গাছে ২ থেকে সাড়ে ৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হযতে পারে।
গাছের মূল কান্ড শক্ত ও সোজা। কান্ডের চারদিকে ছোট ছোট শাখা হয়।
পাতার রং ঘন সবুজ। পাতার আকাঁর লম্বাটে ভল্লাকার। পাতা ১.৬ থেকে ৫.৫ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা এবং ২ ইঞ্চি পর্যন্ত চওড়া হতে পারে। পাতার ঠিক গোড়ায় সাদা বা গোলাপি ফুল হয়। প্রতিটি ফুলে একটি করে ফল থাকে। ফলগুলি চার বা ততোধিক প্রকোষ্ঠে বিভক্ত থাকে। ফল পাকলে সেগুলির ভিতরে প্রচুর ক্ষুদ্র বীজ হয়। বীজগুলির আবরণ কালো। সাধারণভাবে বীজ থেকে স্বাদহীন ও বর্ণহীন খাদ্যোপযোগী তেল পাওয়া যায়।
তিল দেশের সর্বত্র জন্মালেও খুলনা, ফরিদপুর, পাবনা, বরিশাল, রাজশাহী, যশোর, কুমিল্লা, ঢাকা, রংপুর, সিলেট এবং ময়মনসিংহ প্রধান উৎপাদনকারী এলাকা।
বাংলাদেশের নানান খাবারে তিলের ব্যবহার রয়েছে।
কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজার খবর আমরা সকলেই জানি। বার্গারে বনরুটির উপরে তিলের খাজা দেয়া হয়। কালো তিলের ভর্তা দিয়ে গরত ভাত অতি উপাদেয়।
তিলের অনেক ভেষজগুণ রয়েছে। কবিরাজি শাস্ত্রে কেশতেল হিসেবে এর বেশ কদর রয়েছে।
তিল রক্ত আমশয় ও সাধারণ আমাশয় ভাল করতে সাহায্য করে।
তিল ফোড়ার দূর করতে সাহায্য করে।
তিল পঁচা ক্ষত দূর করতে সাহায্য করে।
তিল দাঁত ও মাড়ির রোগ দূর করে।
তিল পবিত্র ও মাঙ্গলিক পঞ্চশস্যের অন্যতম। হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তিলের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য।
তিল নিয়ে বাংলায় অনেক প্রবাদ প্রবচন, বাগধারা চালু রয়েছে। যেমন-
তিল কুড়িয়ে তাল হয়।
তিলকে তাল করা।
হয় যদি তিলটা, কয় তবে তালটা।
তিল খাওয়া কঠিন বটে, কিন্তু মিষ্টি মুখ থেকে ফেল আরো কঠিন।
তাল প্রমাণ বাড়ে, তিল প্রমাণ কমে।
বুনলাম ধান, হল তিল, ফললো রুদ্রাক্ষ, খেলাম কিল।
ইত্যাদি।
ছবি তোলার স্থান : মুন্সিগঞ্জ, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ১৯/০৫/২০১৭ ইং