somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এসব গোল্ডেন ফোল্ডেনের কোন দাম নাই /:)

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এসব গোল্ডেন ফোল্ডেনের কোন দাম নাই যদি ভালো কোথাও চান্স না পাও , অনেক গোল্ডেন/এ+ধারী ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংল টাইপ সাবজেক্ট পড়তে বাধ্য হয় (কাউকে ছোট করতেছিনা , কিন্তু বাস্তবতা দেখাই দিলাম আর কি ) , আবার এ+ না পাওয়া পোলাপাইন ও পরবর্তীতে গিয়ে সাইন করে!

যাইহোক নিজের গল্প দিয়েই শুরু করি :

আমি আমার সময়ের দেশ সেরা সরকারি কলেজে পড়েছি , জীবনেও পড়াশোনা করতামনা ! পদার্থ,রসায়ন, অংক ,জীববিজ্ঞান , বাংলা , ইংরেজি সব প্রাইভেটে ভর্তি হয়ে থাকলেও প্রথম কয়েকদিন ছাড়া আর যাইনি , প্রাইভেটের জন্য যেই টাকা দিত বাড়ি থেকে সব মেরে খেতাম! একেবারেই উচ্ছন্নে গেছিলাম , জীবনটাকে ব্যপক ভাবে ইনজয় করতাম , ঘুরে বেড়াতাম , বন্ধুদের ভাষায় ব্যপক স্টাইলিশ ছিলাম তাই পোলাপাইন নিয়ে শো অফ করে বেড়াতাম , খেলাধূলা করতাম , এক কথায় পড়াশোনা ছাড়া দুনিয়ার সবকিছুই ভাল্লাগতো ! হাহা যাইহোক কলেজের যেই পরীক্ষা গুলা হতো প্রতিটাতেই কৃতিত্বের সাথে ফেইল করতাম বাংলা/ইংরেজী ছাড়া ( ইংরেজিতে এ+ ,আর বিজ্ঞানের সাবজেক্ট গুলাই পেতাম ১২/১৩/১৪ এরকম ) ! তো যখন এইচএসসি পরীক্ষা আসলো তখন তো চোখে সর্ষের ফুল দেখি , কিচ্ছু পারিনা! তো আমাদের বোর্ডে শর্টকাট সাজেশান পাওয়া যায় , সেটা দেখে এক প্রকার জোর করে মুখস্থ করলাম উত্তর গুলা (আমি আবার মুখস্থ পারিনা , পড়লাম আরেক বিপদে) ! এমনকি ১১ দিন ছুটি ছিলো অংক পরীক্ষার আগে ওই বলবিদ্যা/বিচ্ছিন্ন গনিত না কি যেন আর বালছাল আছে তাও মুখস্থ করতে বাধ্য হলাম! তো মুখস্থ করলে কি হয়রে ভাই? পরীক্ষার হলে গিয়ে সব ভুলে যাই , আর আমার আশেপাশের পোলাপাইনদের কাছ থেকে দেখা লাগে! যাইহোক শেষমেষ একটা ডিসেন্ট রেজাল্ট হলো ( যদিও গোল্ডেন ছিলোনা )! যাইহোক আমি উচ্ছাসে ভেসে যাবার অবকাশ পাইনি , কারণ জানতাম আমার যেই বেসিক জ্ঞান কম আর যেই পরিমাণ ঘাটতি আছে তা দিয়ে কোথাও চান্স হবেনা! তবে একটা ক্ষেত্র খুলে গেলো , সেটা হলো মেডিকেল এ পড়া! আমার বাবা মা আমাকে বরাবরই ডাক্তার হবার জন্য তাগিদ দিয়েছে , আর নিজের ও মাইন্ডসেটটাও অমন ছিলো যে ডাক্তার হবো! সেটাকেও স্বপ্ন মনে হচ্ছিল , হঠাৎ করেই ডিপ্রেস্ট হয়ে গেলাম! কিন্তু তখন মাথায় চিন্তা আসলো "আমার বন্ধুরা ভালো জায়গায় পড়ে আমার সামনে বুক ফুলায়ে ঘুরে বেড়াবে এইটা আমার দ্বারা মেনে নেয়া সম্ভব না" , হঠাৎ করেই জেদী হয়ে গেলাম যে আমাকে কিছু একটা করতেই হবে , আমি কারো কাছে ছোট হতে পারবোনা! কিন্তু হাতে মাত্র ২.৫-৩ মাস , কি আর করা? একেবারে প্রথম থেকে শুরু করলাম , কোপায়ে পড়ালেখা আরম্ভ করলাম! সব প্রিয় কাজ ভুলে খালি পড়াশোনা করতাম , ভেবে দেখলাম আজীবন তো কিছু পড়ি নাই এই ৩টা মাস একটু কষ্ট করি যেটা আমার লাইফ ডিটারমিন করবে! যাইহোক এমন ই কোপ দিলাম যে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটা কোচিংয়ের এক ব্রাঞ্চে সেকেন্ড হয়ে গেলাম ( ব্যাচে ফার্স্ট , ওভারঅল সেকেন্ড ) এমনকি আমার যেই বন্ধুরা কলেজে নিয়মিত ফার্স্ট হতো তাদেরকে হারাই দিলাম কোচিংয়ে এসে ! আত্নবিশ্বাস এতটাই তুঙে ছিলো যে ধরেই নিয়েছিলাম আমি ইন শা আল্লাহ ঢাকা মেডিকেলে চান্স পেতে যাচ্ছি , কোচিংয়ের টিচাররাও তা প্রেডিক্ট করতো! সেজন্য মেডিকেল ছাড়া অন্য কোথাও ফর্ম ও তুলি নাই ! যাইহোক আমাদের বেলাতেই নতুন ফরম্যাটের প্রশ্নপত্র হওয়াই এবং বিগত ৬-৭ বছরের থেকে সবচে আলাদা প্লাস কঠিন হওয়াই আমার চাওয়া পূরণ হয় নাই , পরীক্ষার হলে গিয়ে তো হাল ই ছেড়ে দিয়েছিলাম যে এবার আর হলোনা , পরে দাগানো শুরু করলাম , যেহেতু বেসিক ছিলো শুন্যের খাতায় আমার কাদোমাদো অবস্থা হয়ে গেছিলো , চান্স পাবোনা ভেবে রেজাল্ট ও দেখতে যাই নাই , পরে আমার বোন দেখে জানাই আমার চান্স হইসে! ঢাকাতে না পড়লেও দেশের প্রথম সারির একটা মেডিকেল এই পড়ি আল্লাহর রহমতে! ওইবার ই বুঝেছিলাম কঠোর পরিশ্রম আর সত প্রচেষ্টা থাকলে আল্লাহ কাউকে নিরাশ করেন না!

আমার মেডিকেলের আমার ব্যাচের যে ফার্স্ট বয় তার কোনোটাতেই এ+ ছিলোনা , ৪.৬৩/৪.৫০ এমন ছিলো! বাট ও এখন এতই ভালো পারে যে ও যে অনেক ভালো ডাক্তার হবে আর অনেকগুলা ডিগ্রী অর্জন করবে তা নিয়ে কোনই সন্দেহ নাই!

এইটাই বলতে চাচ্ছি যারা রেজাল্ট খারাপ করেছে বা এ+ বা গোল্ডেন পাইনি বা আমার মত বাজে অবস্থা যাদের তারা যদি ভাবে যে তার দ্বারা কিছু হবেনা তবে মারাত্মক ভুল করতে যাচ্ছো!

কাজেই যারা খারাপ রেজাল্ট করেছো বা যারা এ+ বা গোল্ডেন পাও নাই তারা নিজেদের ছোট ভাবা বন্ধ কর ! বরং ধরে নাও তোমার ভেতরে কিছু একটা আছে , তুমি চেষ্টা করলেই হবে , নিজের ভেতরের সুপ্তশক্তিটা জাগিয়ে তোল , আত্নপ্রত্যয়ী আর আত্নবিশ্বাসী হও ! লাক বলতে কিছু নাই ভাই , মনে রাখবা ভাগ্য শুধুমাত্র সাহসীদেরকেই ফেভার করে , কাজেই অনেস্ট চেষ্টাটা দাও , নিজের সর্বোচ্চটা দাও , নিজের লক্ষ্য পূরনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হও , নিজের জেদটা জাগ্রত কর , কারো কথায় পিছপা হবানা আর সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস রাখো! ইন শা আল্লাহ তুমি পারবেই , তুমি পারবেই সবাইকে দেখিয়ে দিতে!
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×