মালয়েশিয়ায় আমি যে উইনিভারসিটিতে পড়াই, ছবিগুলি সেই ক্যাম্পাসের একটা জায়গার। ক্লাশে যাওয়ার সময় প্রতিদিনই দৃশ্যটা দেখি; খুব ভাল লাগে ....। বিষয়টির কি নাম দেওয়া যায় বা মালয়েশিয়ান ভাষায় এর কোন নাম আছে কি না জানি না। সহজ করে বলি... ক্যাম্পাসে বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে যে বিল্ডিঙয়ে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাশ হয় সেখানে সিড়ির পাশে ছোট ছোট বক্সে করে কিছু খাবার; পানীয় আর টুকটাক ষ্টেশনারী রাখা। এখান থেকে ছাত্রছাত্রীরা প্রয়োজন মত স্ন্যাক্স বা টুকটাক জিনিস কিনতে পারে। পাশে একটি বক্স আছে টাকা রাখার জন্য। প্রায়-ই দেখি ছেলেমেয়েরা যার যার পছন্দ মত জিনিষ ওখান থেকে নিয়ে নিচ্ছে আর বক্সে টাকা রাখছে। কোন দোকানদার বা টাকা গুনে নেওয়ার জন্য কোন লোক সেখানে নেই।
দৃশ্যটা যতবার-ই দেখি ততবার-ই আমাদের দেশের ভার্সিটির ছাত্রছাত্রদের কথা মনে পড়ে যায়। যেসব ছ্যাচ্চড়-ছুচো গুলো ক্যান্টিনে ফাও খায় তাদের কথা বাদ-ই দিলাম, আমাদের দেশের উচ্চ-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়া সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা কি এতটুকু সততা অর্জন করতে পেরেছি যে, ক্যাম্পাসে মালিকবিহীন দোকান থেকে খাবার কিনে নিজ দায়িত্বে তার দাম রেখে যাব???
এখানে দেখেছি, অসংখ্য পাবলিক টয়লেটের সামনে টাকা নেওয়ার জন্য কোন মানুষ বসে থাকে না। একটা টেবিলের উপর শুধু একটা কৌটা রাখা হয়, আর একটা কাগজে লেখা থাকে পায়খানা করলে কত টাকা আর প্রস্রাব করলে কত টাকা – অধিকংশ লোক ই তো দেখি টাকা রেখে যাচ্ছে!!
মালয়েশিয়া আমাদের দেশের চেয়ে আহামরি কোন ধনী দেশ না, বা মালয়েশিয়ার মানুষগুলো আমাদের থেকে বিশাল কিছু যোগ্যতা সম্পন্ন নয়; কিন্তু সততায় ওরা মনে হয় আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। সততা, মূল্যবোধ, নৈতিকতাবোধ এসব ব্যাপারে আমরা সবসময় অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে আত্মতৃপ্তিতে থাকার চেষ্টা করি; কিন্তু আসলে নিজে সৎ না হলে সমাজটা কখনো পরিবর্তন হবে না।
আস, ভিতরের মানুষটাকে আগে সৎ করি! কোন খারাপ কিছু করার আগে একবার ভাবি, "আর কেও না দেখুক আমি তো দেখছি"। নিজের কাছে ছোট হয়ে যাওয়া সবচেয়ে বড় লজ্জার!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:২১