বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিতে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে দেশ আর জনগণের বিষয় বাদ দিয়ে বেগম জিয়ার বাড়ি, তার বড় ছেলে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা, ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর প্যারোল বাতিল ইত্যাদি একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো জায়গা করে নিয়েছে। অর্থাৎ তাদের রাজনীতিতে এখন দেশ বা জনগণ একেবারেই গৌণ, মুখ্য হচ্ছে তাদের নেত্রীর একান্ত ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক স্বার্থ। বেগম জিয়ার বাড়ির বিষয়টি অনেক পুরানো। পরের দু'টি বিগত উপদেষ্টা সরকারের সময় যোগ হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু জিয়াকে সেনা বাহিনীর উপ-প্রধান হিসাবে নিয়োগদান করেন। সেনা বহিনীতে উপ-প্রধানের পদ এর আগেও ছিল না এখনও নেই। বলা হয় বঙ্গবন্ধু পদটি জিয়ার জন্যই সৃষ্টি করেছিলেন। জানা মতে, তিনিই প্রথম এবং তিনিই শেষ সেনাবাহিনীর উপ- প্রধান। কী প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু পদটি সৃষ্টি করেছিলেন তা এ মুহূর্তে বিস্তারিত বলতে চাই না। বললে বেগম জিয়ার অন্ধ অনুসারীরা মনো কষ্ট পাবেন। ৬ নং মহীদ মইনুল রোডের যে বাড়িটি নিয়ে অনেক দিন ধরে এত হৈচৈ সেই বাড়ির মালিক সামরিক ভূমি অধিদফতর তথা রাষ্ট্র। জিয়া সে বাড়িতে সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান হিসাবে জিয়া সস্ত্রীক প্রবেশ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জিয়া পর্যায়ক্রমে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতির জন্য (বঙ্গভবন) পৃথক বাড়ি আছে। জিয়া সে সব বাড়িতে না উঠে সেনা উপ-প্রধানের বাড়িতে থাকাটা পছন্দ করেছেন। তিনি হয়ত সেনানিবাসের বাড়িতে থাকাটা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য উপযুক্ত মনে করেছেন। আজকের প্রজন্মের হয়ত অনেকেই জানেন না যে জিয়া প্রায় দু'বছর রাতের বেলায় কার্ফু দিয়ে দেশ শাসন করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি জিয়া বঙ্গভবনে যেতে রাজি না হলে তার সেনানিবাসের বাড়িটাকেই বঙ্গভবনের অংশ হিসাবে গণ্য করা হয় যাতে বঙ্গভবনে প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা জিয়া এবং তার পরিবারের জন্য সেনানিবাসের বাড়িতেও সহজলভ্য হয়।
১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়ার মৃতু্যর পর বিচারপতি সাত্তার বেগম জিয়ার সার্বিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা বিচার করে তার নামে গুলশানে একটি বড় বাড়ি এক টাকা খাজনায় দীর্ঘমেয়াদি লীজ দেন এবং ব্যাংকে দশ লক্ষ টাকা স্থায়ী আমানত হিসাবে জমা রাখেন। একই সাথে তিনি সেনানিবাসের যে বাড়িটিতে জিয়া সপরিবার থাকতেন সেটাও এক টাকা খাজনায় বেগম জিয়াকে দীর্ঘমেয়াদি লীজ (৯৯ বছর) দেন। একই সাথে বেগম জিয়ার দুই ছেলের পড়ালেখার খরচও রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে যোগান দেয়ার ব্যবস্থা হয়। ধারণাটি ছিল বেগম জিয়া সেনানিবাসের বাড়িতে থাকবেন, গুলশানেরটা ভাড়া দিয়ে সংসারের ব্যয় মেটাবেন এবং ছেলেদের লেখাপড়ার প্রতি নজর দিবেন। এসময় সকলের ধারণা ছিল একজন গৃহিণী বেগম জিয়া তার সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষ করে তুলবেন। বাস্তবে এসবের কিছুই হয়নি। বেগম জিয়া গৃহিণী থাকাটাকেও হয়ত তেমন একটা পছন্দ করেননি। স্বামীর সাথে থাকতে থাকতে তিনি ক্ষমতার কিছুটা হলেও তো স্বাদ পেয়েছেন। তার উপর অনেকটা ছত্রভঙ্গ বিএনপিকে টিকিয়ে রাখতে সে সময় দলে তার প্রয়োজনও ছিল। তিনি হয়ে গেলেন দলের চেয়্যারপার্সন। দলে একচ্ছত্র ক্ষমতাধর ব্যক্তি। ক্রমান্বয়ে দল নেতা থেকে দশ বছরের কম সময়ে একেবারে দেশের প্রধানমন্ত্রী।
সেনানিবাসের যে বাড়িটি একজন বিধবা অসহায় গৃহিণী বেগম জিয়াকে দেয়া হয়েছিল তা রাতারাতি হয়ে গেল প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন। বেগম জিয়ার প্রথম শাসনামলে তিনি তার দপ্তর হিসাবে সাতটি ভিন্ন ভিন্ন বাড়ি বা দপ্তর ব্যবহার করতেন। ১৯৯১ সানের প্রথম দিকে তিনি নজিরবিহীনভাবে বঙ্গভবনেও মন্ত্রিসভার একাধিক সভা করেছেন। কিন্তু তিনিও ঘুরে ফিরে রাত কাটানোর জন্য তার সেনানিবাসের বাড়িতেই ফিরে- এসেছেন। অভ্যাসবশত: তিনি সিভিলিয়ান এলাকায় থাকতে স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন না। পকিস্তানী ধ্যান ধারণায় বেড়ে ওঠা অনেক সেনা অফিসার এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে সিভিলিয়ন মানেই 'বস্নাডি সিভিলিয়ন।' এদের সানি্নধ্যে বেশিক্ষণ থাকা যায় না। বেগম জিয়ার শাসনামলে তাকে বরাদ্দ করা সেনানিবাসের বাড়িটি আর আগের অবস্থায় থাকেনি। সংলগ্ন আরো কিছু খালি জমি এবং বাড়ির গার্ড হাউজটাকেও বাড়ির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে পুরো বাড়িটি প্রায় একশত পঁয়ষট্টি কাঠার উপর প্রতিষ্ঠিত। জানা মতে, ঢাকা শহরে বঙ্গভবন আর গণভবন ছাড়া এতো বিশাল এলাকা জুড়ে অন্য কোন বাড়ি নেই। তিনি ক্ষমতায় থাকতে কোটি টাকা ব্যয় করে এই বাড়ির পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন, সংযোজন ইত্যাদি কাজ করিয়েছেন। তখন এখানে বসে তিনি বিনা বাধায় রাজনীতি করেছেন। এ সময় এটি ছিল প্রধানমন্ত্রীর অঘোষিত বাসভবন।
জিয়ার মৃতু্যর পর মানবিক কারণে তার বিধবা স্ত্রীকে একটি বা এমন কী প্রয়োজনে দু'টি বাড়ি দেয়ার মধ্যে তেমন আপত্তির কিছু ছিলনা। আপত্তি হয় তখনই যখন রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার জন্য নির্ধারিত বাড়িটিই তাকে দিয়ে দেয়া হয়। বেগম জিয়াকে গুলশানের যে বাড়িটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সে বাড়ি নিয়ে তা সরকার কোন কথা বলছে না। ১৯৮১ সালে যখন বেগম জিয়াকে সেনানিবাসের বাড়িটি বরাদ্দ দেয়া হয় তখনকার বেগম জিয়া আর ২০১০-এর বেগম জিয়া এক নয়। ২০১০-এর বেগম জিয়া অনেক বিত্ত বৈভব ও ক্ষমতার মালিক। সেনানিবাসের বাড়ি তার দখলে না থাকলে তার ইগো ছাড়া আর কোন কিছুরই ক্ষতি-বৃদ্ধি নেই।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে তার পূর্ববতর্ী সরকারের মেয়াদকালে যখন গণভবন বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল তখন সকল মহল থেকেইে তার সমালোচনা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা পুরো বিষয়টার গুরুত্ব অনুধাবন করে ২০০১ সালের নির্বাচনের পূর্বেই গণভবন ছেড়ে সুধা সদনে উঠেছিলেন। সে সময় বঙ্গবন্ধুর অপর কন্যা শেখ রেহানাকেও ধানমন্ডি এলাকায় একটি বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। বেগম জিয়া ক্ষমতায় এসে কোন সময় ক্ষেপণ না করে সে বরাদ্দ বাতিল করেন এবং সে বাড়িতে ধানমন্ডি থানা স্থাপন করে নজিরবিহীন ভাবে তিনি তা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে উদ্বোধন করেন। এটি ছিল বেগম জিয়ার এক ধরনের প্রতিহিংসা পরায়নতার বহিঃপ্রকাশ।
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করার পর বেগম জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি খালি করার জন্য আহ্বান জানালেও তাতে তিনি বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেননি। অথচ সে সময় যদি বেগম জিয়া বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে বাড়িটি খালি করে দিতেন তাহলে তাতে তার প্রজ্ঞার পরিচয় মিলতো এবং এমন কী তার এবং তার দলীয় রাজনীতির জন্যও তা মঙ্গল হতো। তখন এই সহজ কাজটি না করে তিনি একটি কৌশলগত ভুল করেছেন।
২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়ার জন্য নোটিস দেয় সামরিক ভূমি অধিদফতর। বেগম জিয়ার অত্যন্ত প্রিয়ভাজন সাকাচৌ সাংবাদিকদের তার বাসায় ডেকে বললেন, বেগম জিয়ার সেনানিবাসের বাসার বিষয়টি একান্তভাবে সেনাবাহিনীর। সেনাবাহিনী না চাইলে তিনি সেখানে থাকবেন না। ইচ্ছা করলে সেনাবাহিনী তিন দিনে তাকে সেখান হতে উৎখাত করতে পারে। প্রথমেই বলে নেয়া ভাল সেনাবাহিনী সরকারের ভিতর কোন সরকার নয়। এটি আর দশটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো একটি সরকার প্রতিষ্ঠান। সাকাচৌর এটি না বোঝার কথা নয়। সামরিক ভূমি অধিদফতরের নোটিসের বিরুদ্ধে বেগম জিয়ার আইনজীবীরা ৩ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন দাখিল করেন। এরপর বেগম জিয়াকে আরো দুবার বাড়ি ছাড়ার নোটিস দেয়া হয়। গত বছর ২৭ মে হাইকোর্ট সে রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নোটিসের কার্যক্রম স্থগিত করে। এদিন বেগম জিয়ার আইনজীবীরা আদালতের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভি চিহ্ন দেখিয়ে বলেন, তারা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। রিটটি চূড়ান্ত শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হলে বেগম জিয়ার আইনজীবীরা নানা অজুহাত তুলে শুনানি করতে বিলম্ব করেন। দুটি আদালত সম্পর্কে বলেন এই আদালতে তারা ন্যায় বিচার পাবেন না। একাধিক বার সময় প্রার্থনা করেন। চারবার চারজন বিচারপতি শুনানিতে বিব্রত বোধ করেন। শেষতক শুনানি শেষে মহামান্য আদালত তাঁদের দীর্ঘ রায়ে বলেন বেগম জিয়াকে বাড়িটি বরাদ্দ দেওয়া ছিল আইন বহিভর্ূত সিদ্ধান্ত। সুতরাং সামরিক ভূমি অধিদফতরের নির্দেশ অনুযায়ী এবার বেগম জিয়াকে ৩০ দিনের মধ্যে বাড়ি খালি করতেই হবে। এবার বেগম জিয়ার সেই একই আইনজীবীরা বললেন তারা ন্যায় বিচার পাননি। একজন বিজ্ঞ আইনবিদ জানালেন তিনি অনেকটা হতবাক। তবে সব চাইতে অবাক করার কথা বলেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন।
এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বেগম জিয়ার অন্যতম আইন বিষয়ক পরামর্শদাতা। সেনানিবাসের বাড়ি বিষয়ক মামলার সাথেও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। বেগম জিয়ার কাছের মানুষ যারা তাঁদের অধিকাংশই প্রতিথযশা আইনজীবী। তিনিও তাঁদের অন্যতম। ১৫ অক্টোবর শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের অবতারণা করলেন। এর মধ্যে ছিল (১) বেগম জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়ার বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে আদালতের বাইরে মীমাংসা করারা জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ; (২) এটি না হলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে; (৩) আইনের মারপঁ্যাচ অথবা অন্য যে কোন কারণেই হোক হাইকোর্ট বেগম জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়ার নোটিসটা বহাল রেখেছে; (৪) বাড়ি বিষয়ক জটিলতার কারণে দেশ এক ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে পতিত; এবং (৫) সরকার বিভিন্ন বিতর্কিত ও স্পর্শকাতর বিষয় আদালতে এনে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে
এডভোকেট মাহবুব হোসেন একজন বিজ্ঞ আইনজীবী। তার কাছ হতে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ আরো প্রজ্ঞাপ্রসূত বক্তব্য আশা করে। বেগম জিয়া যদি একজন দুস্থ বিধবা হতেন তাহলে মানবিক দৃষ্টিকোণের বিষয়টি বিবেচনা করা যেত। তিনি ১৯৮১ সনে যখন স্বামীহারা হয়েছিলেন তখন হয়ত তিনি তা ছিলেন। আলস্নাহ্র রহমতে তিনি এখন সে পর্যায় পার হয়ে এসেছেন। তিনি এদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন দুবার। দেশের অন্যতম একটি বড় রাজনৈতিক দলের তিনি অত্যন্ত ক্ষমাতাধর প্রধান। বিত্ত বৈভবের অভাব নেই। কোন অবস্থাতেই মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে ১৬৫ কাঠার উপর একটি বাড়ি তিনি দাবি করতে পারেন না। এমন একটা বাড়ি দেওয়ার অধিকারও সরকারের নেই। এটি দেশের জনগণের সম্পত্তি। বলা হয় এটি জিয়ার স্মৃতি বিজড়িত। জিয়া যেহেতু সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশে একাধিক স্থানে তার স্মৃতি বিজড়িত আরো অনেক বাড়ি আছে। এগুলিও কী বেগম জিয়ার নামে বরাদ্দ দিতে হবে ? তাহলে শেখ হাসিনার নামে গণভবন লিখে দেওয়াতে অসুবিধা কী ছিল ? ওই ভবনের প্রতিটি ইটের সাথেতো বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি লেগে আছে। বাড়ি বিষয়ে সুরাহা না হলে আন্দোলনের হুমকি একেবারেই শিশু সূলভ। খন্দকার দেলওয়ার দিলে তা মেনে নেওয়া যায়। একজনের বাড়ি বাঁচাতে কেন দেশের মানুষ রাজপথে আন্দোলন করবে। এডভোকেট মাহবুব হোসেন বলেছেন হাইকোর্ট আইনের মারপঁ্যাচে বা অন্য যে কোন কারণেই হোক বেগম জিয়ার বাড়ি ছাড়ার নোটিস বহাল রেখেছেন। আদালত দেশের প্রচলিত আইনের উপর ভিত্তি করে তার সিদ্ধান্তে পেঁৗছে। বাদী বিবাদির যুক্তি তর্ক আদালতকে সহায়তা করে। আদালতে আইনের মারপঁ্যাচ কষেণ আইনজীবীরা। এটি তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব। আদালতের নয়। আদালতকে যদি এ দোষে অভিযুক্ত করা হয় তাহলে আদালতের প্রতি অবিচার করা হয়। আদালত অবমাননাও হতে পারে। তা আদালত বুঝবে। আর বেগম জিয়ার বাড়ির মামলা নিয়ে আদালতে সরকার যায়নি। বেগম জিয়াই এই বিষয়ে মীমাংসা চেয়ে আদালতে গিয়েছেন। দেশে হয়ত অনেক ধরণের সংকট আছে তবে নিশ্চিত করে বলা যায় তা বেগম জিয়ার বাড়ি নিয়ে নয়। বিষয় বিতর্কিত হলে এবং তা আদালতের বাইরে মীমাংসা না হলে তা আদালতে নিয়ে আসাটাই স্বাভাবিক। সে জন্যই আইন আদালত। ক'দিন আগে ভারতের লাক্ষ্নৌ হাইকোর্টের এলাহাবাদ বেঞ্চ পৌরণিক চরিত্র ভগবান রামচন্দ কে পর্যন্ত স্বীকৃতি দিয়ে দিল। কোন বিষয়টি স্পর্শকাতর আর কোনটি নয় তা ব্যক্তি বিশেষের দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভরশীল। যেমন যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টাকেও বিএনপি-জামায়াত জোটের অনেকে স্পর্শকাতর হিসাবে দেখেন। জিয়ার হত্যাকান্ডকে হয়ত বিএনপি স্পর্শকাতর হিসাবে দেখে বলে তার বিচার হয়নি।
বেগম জিয়ার আইনজীবীদের একটি অংশ বলেছেন তারা রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন। সাকাচৌর মতে বেগম জিয়ার উচিত সেনানিবাসের বাইরে এসে বসবাস করা। এতে তার রাজনীতির উপকার হবে। খন্দকার দেলওয়ার এবং তার সমমনাদের মতে রাজপথেই এর ফায়সালা হওয়া উচিত। এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন মনে করেন বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখে আদালতের বাইরেই তার মীমাংসা হওয়া উচিত। এবিষয়ে বেগম জিয়া কী ভাবছেন তা জানা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে তিনিই সব চাইতে বুদ্ধিদীপ্ত ও দূর দৃষ্টি সম্পন্ন সিদ্ধান্তটি নিতে পারেন আর তা হচ্ছে সসম্মানে বাড়িটি সেনা কতর্ৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে সেনানিবাসের বাইরে এসে স্বাভাবিক জনকল্যাণকর জন মানুষের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়া। এক বেগম জিয়ার বাড়ি নিয়ে দলের নতেৃবৃন্দ যে আচরণ করছেন তারা হয়তো তাঁদের অজান্তেই তাঁদের দলের বারাটা বাজাচ্ছেন। আশা করি সময় শেষ হওয়ার আগেই তারা বাস্তবতাটা উপলব্ধি করবেন।
আবদুল মান্নান
[লেখক:সাবেক ভিসি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।]
সূএ:httpView this link tt
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১:৪৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




