প্রথম বিদেশ ভ্রমন ও বিড়ম্বনাঃ ২
দার্জিলিং ঘুরে শিলিগুড়ি ফিরে এলাম। ভেবেছিলাম আগের মতই এসে কোলকাতার ট্রেনের টিকিট ফরেন কোটায় পাব। কিন্তু পেলাম না। দালাল ধরেও কোন ভাবে ম্যানেজ করা গেল না। শেষে উপায় বাস। বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি বাসে টিকিট দুই ধরণের একটা সাধারন সিট (সিট বাঁকা করা যায় না), অন্যটা স্লিপার। একে তো চেয়ার কোচ না আর অন্যদিকে বাংলাদেশে বাসে স্লিপার নেই তাই আমরা স্লিপারের টিকিট কাটলাম অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য। বাস সন্ধ্যা ৬ টায় ছেড়ে সকাল ৬ টায় কোলকাতা পৌছাবে। ১২ ঘন্টা জার্নি।
সময় মত বাস ছাড়ল। বাসে হরেক রকম মানুষ, উপরে শুয়ে বসে তাদের কেচ্ছা কাহিনী দেখে সময় কাটতে লাগল। আমাদের কাছাকাছি একজোড়া ছিটে ছিল নতুন জামাই বৌ। বৌটা যেমন সুন্দরী, জামাইটা তেমন অসুন্দর। এমন বৌ পেয়ে জামাই তো আহ্লাদে আটখানা। সে মোটে বৌয়ের হাত ছাড়েই না। বৌটা মাঝে মাঝে ফিস্ফিস করে কিছু বলে, জামাইটা তার মুখের কাছে কান নিয়ে শোনে তারপর অর্ডার তামিল করতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পরে। এভাবে যাত্রা আগাচ্ছিল। রাতে একটা ধাবায় বাস থামিয়ে যাত্রীদের খাওয়ার সুযোদ দিল। এ ধাবার পরিবেশ আর খাবার ও আগেরটার মতই জঘন্য। কোনমতে কিছু খেয়ে এসে শুয়ে পড়ি।
রাত কাটে, সকাল হয়। ৬ টা, ৭ টা- ১০টা বাজে বাস আর কোলকাতা পৌছায় না, শুধু চলেই। বাসের অন্য যাত্রীদের জিজ্ঞেস করলে বলে এই তো এসে গেছে। কিন্তু কোলকাতা আর আসে না, ১০ টায় আবার নাস্তা বিরিতি। আবার বাস চলে। ২ টায় দুপুরের খাবার বিরিতি, আবার বাস চলে, কলকাতা আর আসে না। এদিকে শুয়ে, আধ শোয়া হয়ে, ঘার বাঁকা করে বসতে বসতে শরীর ব্যথা হয়ে গেছে। স্লিপার সিট আর ভাল লাগছে না। বিরক্তির চরমে পৌছে গেছি। তার পর সন্ধ্যা ৬ টায় ২৪ ঘন্টা পর কোলকালা পৌছলাম।
আমাদের দেশে তো ফেরি ঘাটে বসে দেরি হয়, কিন্তু এখানে কোন ফেরি নেই তারপরেও ১২ ঘন্টার রাস্তা কেন ২৪ ঘন্টা লাগল কে জানে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০২২ রাত ৯:৪১