somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

মৃত্যুর আগে যে ১০০ টি মুভি আপনাকে দেখতে হবে (চার)

০৩ রা মে, ২০১৫ রাত ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা কম-বেশি অনেকেই মূভি দেখে থাকি । কেউ এ্যাকশন,কেউ কাহিনী নির্ভর, কেউবা কমেডি, আবার অনেকেই ঐতিহাসিক সহ বিভিন্ন ধাঁচ/ ভাষার মূভি দেখতে পছন্দ করি । আমাদের মধ্যে আবার অনেকেরই পছন্দের মূভিগুলো নিয়ে একটি সংগ্রহশালা বানিয়ে রাখার অভ্যাস আছে । আমরা প্রায়ই কিছু সিনেমা দেখে থাকি । কিন্তু সবকটা আমাদের মন ছোয় না । আবার কিছু সিনেমা অনেকদিন মনে থাকে । কিছু সিনেমা আমরা সহজে ভুলতে পারিনা--- সেইসব সিনেমাই সেরা সিনেমা আমাদের কাছে ।

৩১। মোর দ্যান ব্লু (More than Blue) এটি একটি কোরিয়ান মুভি ।অসাধারণ একটি রোমান্টিক ছবি । ছেলে ও মেয়েটি একে অপরের খুব ভালো বন্ধু। কিন্তু ছেলেটির হাতে বেশী সময় নেই। সে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত। তাই সে মেয়েটির কাছে নিজের রোগের কথা ও নিজের ভালোবাসার কথা গোপন রাখে। মেয়েটিকে সে কখনো কষ্ট দিতে চায়না। তাই সে সেই মেয়েটির জন্য একসাথে মিলে খুব ভালো একজন মানুষ খুজতে থাকে। খুজেও পায়। ছেলেটি সবার সামনে খুব খুশি হবার ভান করে যায় সবসময়। কিন্তু মনে তীব্র কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছে। তারপর আসে মেয়েটির বিয়ের দিন। ছবিটি দেখার পর এক আকশ কষ্ট বুকে এসে জমা হবে ।

৩২। দ্য নোটবুক (The Notebook) অসম্ভব সুন্দর একটি প্রেমের ছবি। ২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত নির্ভেজাল প্রেমের ছবি। নিকোলাস স্পার্ক এর একি নামের উপন্যাস অবলম্বনে নিক ক্যাসাভেটাস সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন। ছবিটি বক্স অফিসে খুব বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করতে না পারলেও নিকটবর্তী সময়ের অন্যতম সেরা রোমান্টিক ফিল্ম হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে সিনেমা প্রেমীদের মাঝে।এই সিনেমার গল্প গড়ে উঠেছে উনবিংশ শতাব্দীর চল্লিশের দশকে আমেরিকার দুই উঠতি যুবক-যুবতির প্রেমের কাহিনীকে কেন্দ্র করে। সিনেমার শুরুটা হয় একটি নার্সিং হোম থেকে। নার্সিং হোমে চিকিৎসারত এক বৃদ্ধাকে এক বৃদ্ধা নিজের নোটবুক হতে একটি গল্প শোনায়। এই গল্পের প্রধান চরিত্র চল্লিশের দশকের দুই প্রাণবন্ত যুবক-যুবতি অ্যালি এবং নোয়া। অ্যালি হেমিলটন ধনী পরিবারের সুন্দরী স্কুল পড়ুয়া মেয়ে। সি ব্রুক নামক স্থানে আসে সামারের ছুটি কাটাতে। স্থানীয় মেলায় নোয়ার সাথে পরিচিত হয় অ্যালি। নোয়া স্থানীয় ছেলে এবং স্থানীয় একটা কারখানায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করে।

৩৩। লাইফ অফ পাই (Life of Pi) ছবির কাহিনী এই রকম- চার দিকে শুধু নীল জল। ওপরে নীল আকাশ। প্রশান্ত মহাসাগরে এ ভাবেই ২২৭ দিন ধরে লাইফবোটে ভেসে চলেছে পাই আর রিচার্ড পার্কার। রিচার্ড পার্কার কোনও মানুষ নয়, ৪৫০ পাউন্ড ওজনের হিংস্র এক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।পুদুচেরি বোটানিকাল গার্ডেনে পাইয়ের বাবার একটি চিড়িয়াখানা ছিল। ১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলিকে আমেরিকায় এক সার্কাস কোম্পানিকে বিক্রি করে কানাডার অভিবাসী হওয়ার কথা ভাবেন পাইয়ের মা-বাবা। জাহাজে বাঘ, ওরাংওটাং, জেব্রা সকলকে তোলা হয়। কিন্তু মাঝসমুদ্রে জাহাজডুবি। পাইয়ের মা-বাবা-দাদা সকলের সলিল সমাধি। লাইফবোটে পাইয়ের সঙ্গে একটি জেব্রা, ওরাংওটাং ও হায়না চলে আসে। কয়েক দিন পরে দেখা যায়, বোটের নীচে বসে আছে রিচার্ড পার্কার। অন্য জন্তুদের সে খেয়ে ফেলে। শুধু বেঁচে থাকে পাই। বাঘ মাঝে মাঝে আক্রমণ করতে চায়, কিন্তু কিশোর পাই বুদ্ধি করে তাকে পানীয় জল দেয়, সমুদ্রের মাছ ধরে খাওয়ায়। দুই ঘন্টা সাত মিনিটের মুভি টা দেখে অনেক আনন্দ পাবেন।

৩৪। দ্যা গড মাস্ট বি ক্রেজি (The God Must Be Crazy) ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে যে এত সুন্দর মুভি বানানো যায় তা এই মুভিটা দেখার আগ পর্যন্ত জানতাম না । কালাহারি মরুভুমির ছোট্ট একটা জংলি জাতি যারা পানির জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে আসছে কিন্তু তাদের মধ্যে কনো সংঘাত, কলহ নাই । অপরাধ বা অপরাধী বলে কোনো কিছু তাদের ভাষায় নাই । খুব শান্তিতেই কাটতো তাদের দিন । একদিন একটি প্লেন তাদের উপর দিয়ে যাচ্ছিলো । প্লেনের পাইলট কোক খেয়ে জানালা দিয়ে বোতল ফেলে দিল । তারা মনে করল ঈশ্বর তাদের জন্য এটা পাঠিয়েছে । এই বোতল তাদের দেখা সব থেকে শক্ত বস্তু । এটার বহুব্রিধ ব্যাবহার যখন শুরু হলো তখন এটা নিয়ে তাদের মধ্যে শুরু হয়ে গেলো ঝগড়া । তারা সিদ্ধান্ত নেয় বোতলটিকে পৃথিবীর শেষ প্রান্তে ফেলে আসবে । এখান থেকে মূলত মুভিটির কাহিনি শুরু । এর পর মজার মজার কাহিনি নিয়ে মুভিটি চলতে থাকে । এক কথায় অসাধারণ একটা মুভি ।

৩৫। ইনসেনডিস (Incendies) আমি বাজি ধরে বলতে পারি যে এই মুভি দেখার পর ‘ও মাই গড! এ কি দেখলাম?’ বলা ছাড়া আর কিছু ভাষা থাকবে না। মুভিটির শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আপনি একটি দো-টানা এর মধ্যে থাকবেন যে কি হচ্ছে ? আর শেষ হলে ত আপনি নির্বাক।
মা নাওয়াল মারওয়ান এর মৃত্যুর পর তার জমজ ছেলে-মেয়ে সিমন আর জেনার কাছে মায়ের শেষ ইচ্ছা উপস্থাপন করা হয়।মায়ের ইচ্ছা তার ছেলে-মেয়েরা যেন তাদের বাবা আর ভাইকে খুঁজে বের করে। মায়ের লেখা দুটি চিঠিও তাদের হাতে দেয়া হয় যেটা তাদের বাবা আর ভাইয়ের কাছে পৌছে দিতে হবে।

৩৬। ডেড পোয়েটস সোসাইটি (Dead Poets Society) কতগুলো মুভি আপনাকে আবেগে আপ্লুত করেই থেমে থাকেনা, স্বপ্ন দেখতে আমরা যারা ভুলে গিয়েছি, তাদের স্বপ্ন দেখতে অণুপ্রানিত, উদ্বুদ্ধ করে । আপনি মুভিটা যদি না দেখে থাকেন, তাহলে আমি বলবো অপেক্ষা না করে আজই ডিভিডিটা কিনে ফেলুন; Yes, don't rent it but buy it. কারন মুভিটা আপনি বারবার দেখতে চাইবেন ।

৩৭। আইপি ম্যান (IP Man) IP Man এর পার্ট দুটো। ব্রুজ লির নামতো সবাই শুনেছেন। তিনি হলেন বিশ্বের সেরা কুং ফু মাস্টার। কিন্তু তার মাস্টার কে?
হ্যা তার মাস্টার হলেন yip man . আর এই yip man ম্যানকে নিয়েই ip man এর কাহিনি ।
তার সংসার জিবন,সমাজ,প্রাক্টিস,পারিবারিক টানাপোড়েন। সব কিছু খুব সাজিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। ভালো লাগবে এই নিশ্চয়তা আমি দিলাম। ফাইটিং গুলো নতুনত্ব আনা হয়েছে। Wing Chun নামের একটা ফাইটের ব্যাবহার করা হয়েছে। মুভিটি দেখার সময়ে আমার বারবার মনে হচ্ছিল যে মুভিটি যেন শেষ না হয়।

৩৮। সিনেমা প্যারাডিসো (Cinema paradiso) এই ছবিটা না দেখে মরে যাওয়া ঠিক হবে না। ইতালির এই ছবিটি ১৯৮৯ সালে সেরা বিদেশি ভাষার ছবির অস্কার পেয়েছিল। এক সিনেমা পাগল মানুষের ছবি। কিন্তু এর সঙ্গে যুক্ত আছে নানা ঘটনা।
ইতালির নামকরা পরিচালক সালবাতোর ডি ভিটা ১৯৮০ সালের একটি দিনে রোমের নিজের বাসায় ফেরার পর জানতে পারে তার মা ফোন করেছিলেন। জানাতে বলেছেন যে, আলফ্রেডো মারা গেছে। তারপরই সিসিলির ৩০ বছর আগের ঘটনার মধ্যে চলে যায় সিনেমা।

৩৯। টুয়েলভ অ্যাংরি মেন (12 Angry Men) ১২ জন পুরুষ একটি রুমে তর্ক বিতর্ক করে। ১২ জন মানুষ জুরি হিসেবে যায় একটি ছেলের রায় দেবার জন্য। ১১ জন নিশ্চিত থাকে ছেলেটিই দোষী। কিন্তু একজনের মাথায় কিছু সন্দেহ থাকে। কিঞ্চিৎ অনিশ্চয়তা। তিনি নিশ্চিত নন আসলেই সে দোষী কিনা। তাঁর মাথায় শুধু কিছু প্রশ্ন আছে। সেই প্রশ্ন গুলা তিনি করেন। আস্তে আস্তে দেখা যায় বাকি ১১ জনের মাথাতেও বিষয়টা ঢুকে। ছেলেটা হয়ত সত্যিই অপরাধ করে নি। ১৯৫৭ সালে মুক্তি পেয়েছিল।
মুভিটা দেখে থাকলে আবার দেখুন। চিন্তাভাবনা শুদ্ধ করাটা অনেক বেশি জরুরি।

৪০। বয়হুড (Boy Hood) ৫-১৮ বছর পর্যন্ত একটা ছেলের জীবনে যা ঘটে, তা অতি দারুণভাবে উঠে এসেছে এ চলচ্চিত্রে। পরিচালক রিচার্ড লিঙ্কলাটার ১২ বছর ধরে সিনেমাটির শুটিং করেছেন। মানুষের ডেডিকেশন কোন পর্যায়ের হতে পারে, সেটা বয়হুড দেখলে বুঝা যায়।

মানুষের পছন্দ নানান রকম । কেউ বই পড়তে ভালোবাসে, কেই ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসে, কেউ মুভি দেখতে ভালোবাসে আবার কেউ আড্ডা দিতে ভালোবাসে । খুব অল্প কিছু মানুষ সব কিছু করতেই ভালোবাসে । হাজার ব্যস্ততার মধ্যেও সময় বের করে মুভি দেখেন-ঘুরে বেড়ান-আড্ডা দেন-বই পড়েন । আপনারা সময় পেলে ভালো ভালো মুভি গুলো দেখে নেবেন । ভালো মুভি না দেখাটাই একটা অপরাধ । অবশ্যই ভালো মুভি একা একা দেখবেন না । প্রিয় মানুষের কোলে মাথা রেখে দেখবেন । গল্প করবেন, চা খাবেন চিপস খাবেন । দেখবেন জীবন কী রকম আনন্দময় হয়ে উঠে ! প্রিয় মানুষকে ভালোবাসুন এবং প্রিয় মানুষের কাছ থেকে জোর করে ভালোবাসা আদায় করে নেন ।
১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×