বাসে করে উত্তরা যাচ্ছি।
আজ ভাগ্য বেশ ভালো, সিট পেলাম। বাস ছাড়ার আগে খুব সুন্দরী এক মেয়ে উঠলো কিন্তু বাসে আর সিট খালি নেই।
আমি লাফ দিয়ে উঠে বললাম, আসসালামুয়ালাইকুম, নিন এইখানে বসুন।
মেয়েটি হাসি মুখে আমার সিটে বসল। বলল, আপনি কি সব সময় মেয়েদের এই রকম সিট ছেড়ে দেন?
আমি বললাম, জ্বী ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু আমাকে দেখে কেউ কোনোদিন সিট ছেড়ে দেয়নি।
বিশ্ব রোড দিয়ে শাঁ শাঁ করে বাস চলছে।
বাসের জানালা খোলা, মেয়েটার চুল বাতাসে উড়ছে। একটু পরপর মেয়েটা আমার দিকে আর আমি মেয়েটার দিকে তাকাচ্ছি।
মেয়েটা চোখে খুব সুন্দর করে কাজল দিয়েছে। কপালে একটা ছোট টিপ। ঠোটে হয়তো হালকা গোলাপী লিপস্টিক দিয়েছে। দুই হাত ভর্তি কাঁচের চুড়ি। কোনো কারন ছাড়াই মেয়েটাকে আপন আপন লাগছে। কিছু মানুষ থাকে না- প্রথম দেখায় আপন আপন লাগে।
সময় তখন মধ্যদুপুর।
চারিদিকে কাঁচের মতোন স্বচ্ছ রোদ। তবে প্রচুর বাতাস আছে। ঘটনা চক্রে আমরা একই জাগায় দু'জন নামলাম।
মেয়েটি বলল, আমার খুব ইচ্ছা করছে আপনাকে একটা বার্গার আর কোক খাওয়াই।
আমি বললাম, নিশ্চয়'ই। চলুন।
আমরা একটা খুব বড় ফাস্টফুডের ঢুকলাম। দোকানে ঢুকার সাথে সাথে সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল। এসি এত বাড়ানো!
আমরা কোনার দিকে একটা টেবিলে বসলাম। এদিকটায় ভিড় কম। দোকানে একটা ইংলীশ গান বাজছে। গায়ক চিৎকার করে গাইছে। মনে হয় যেন ঝগড়া করছে। গানের কথা গুলো এই রকম, ''Sag, wer will Beef? Neun in den Jeans, Renn oder schieß, yallah, fuck the police''
আমি আরাম করে বার্গার আর কোক খেলাম।
সকালে নাস্তা করা হয়নি। বেশ ক্ষিধে পেয়েছিল। মেয়েটি কিভাবে বুঝলো কে জানে! মায়ের জাত বলেই- মেয়েরা অনেক কিছু বুঝতে পারে।
মেয়েটি বলল, আপনার হাতে কাজ না থাকলে আমার সাথে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকুন। আমি মেয়েটার আন্তরিকতায় মুগ্ধ! এই যুগে এরকম মেয়েও আছে! অল্প সময়ে মেয়েটির সাথে আমার খুব ভাব হয়ে গেল। রাস্তা পার হওয়ার সময় মেয়েটি বলল, আমার হাত ধরো। আমি রাস্তা পার হতে পারি না। আমি মেয়েটির হাত ধরলাম। খুব নরম হাত। বললাম, ভয় নেই, আমি আছি।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:৩৬